<>আচ্ছা, "অনুগামী" শব্দটা বদলে নিয়ে যদি একটি বিশেষ শৈলী বা ধারার কথা বলি?
যেমন কয়েক দশক আগে একটি প্রবন্ধে প্রয়াত সাংবাদিক/লেখক অসীম রায় বলেছিলেন যে বাংলা উপন্যাসের দুটো ধারা--বহির্মুখী আর অন্তর্মুখী।
উদাহরণ বলতে বঙ্কিম এবং রবীন্দ্রনাথ।
বিষবৃক্ষে কুন্দনন্দিনী যখন প্রথম ওই জমিদারবাড়িতে ঢুকছে তখন তার বিস্ময়ভরা চোখ দিয়ে বঙ্কিম বাইরের বাড়ি আর রান্নাঘর দেখিয়ে রাঁধুনীদের কোন্দল এবং পরজীবী বোষ্টম বোষ্টুমীদের জীবনযাত্রা (সিধে নিয়ে দাসীর সঙ্গে ঝগড়া এবং তিলক কেটে খোল বাজিয়ে "কথা কইতে যে পেলেম না, বলাই দাদা সঙ্গে ছিল" ইত্যাদি) যে চিত্রময় বর্ণনা করেছেন তাতে বাংলার এক নিশ্চিত সময়ের বিশিষ্ট শ্রেণীর চমৎকার ছবি ফুটেছে।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসে চরিত্রের ভাবের মধ্যে পাঠকেরা ডুব সাঁতার কাটে। এই ঘটনা এবং চরিত্রগুলো অন্য স্থানে কালেও ঘটতে পারত। ব্যতিক্রম 'যোগাযোগ' উপন্যাস।
আমরা উপন্যাসের চরিত্রকে প্রাধান্য দিই।
অসীম রায়ের আফশোস --পরবর্তী বাংলা উপন্যাসের ধারা মূলতঃ রবীন্দ্রনাথের পথ ধরে হেঁটেছে, বঙ্কিমের পথে নয়।
আমি এই অর্থে 'অনুগামী' কথাটা বলতে চেয়েছিলাম, অক্ষম অনুকরণ অর্থে নয়।
যেমন, করুণানিধান, বিজয়লাল, মোহিতলাল দের যদি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের দলে ফেলি, আর কালিদাস রায়কে ওই ধারার অক্ষম অনুকরণ?
যেমন, শুধু জীবনানন্দ নয়, সমর সেনের ধারার কোন কবি কি এসেছেন? আমার জানা নেই।
হুতো, প্লীজ খেপে যেও না। জানি তোমার কালিদাস রায় ভালো লাগে। এই আলোচনায় ওনাকে প্লেস-হোল্ডার রাখছি। আর সাহিত্যের অন্য যে কোন শাখার চেয়ে কবিতার আস্বাদন অনেক বেশি ব্যক্তিগত।