এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • ভাটিয়ালি

  • এ হল কথা চালাচালির পাতা। খোলামেলা আড্ডা দিন। ঝপাঝপ লিখুন। অন্যের পোস্টের টপাটপ উত্তর দিন। এই পাতার কোনো বিষয়বস্তু নেই। যে যা খুশি লেখেন, লিখেই চলেন। ইয়ার্কি মারেন, গম্ভীর কথা বলেন, তর্ক করেন, ফাটিয়ে হাসেন, কেঁদে ভাসান, এমনকি রেগে পাতা ছেড়ে চলেও যান।
    যা খুশি লিখবেন। লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়। এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই। সাজানো বাগান নয়, ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি। এই হল আমাদের অনলাইন কমিউনিটি ঠেক। আপনিও জমে যান। বাংলা লেখা দেখবেন জলের মতো সোজা। আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি।
  • আর জি কর গুরুভার আমার গুরু গুরুতে নতুন? বন্ধুদের জানান
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 2601:84:4600:5410:2818:c604:ced6:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩১522885
  • অরিন, রিগড মানে কি ইভিএম ট্যাম্পারিং ? 
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৫522884
  • "সন্দেহ হয় সাধারণ মানুষের ভোটে আদৌ সরকার পরিবর্তন হয় কিনা। সবটাই হয়ত ভেতরে ভেতরে অন্য কায়্দা করা"
     
    সন্দেহের কিছু নেই, ভারতের সমস্ত ইলেকশন রিগড। দেশটা নামেই গণতন্ত্র, শুনতে ভাল লাগে বলে দায়ে রেখেছে। ভারতের ভোট ব্যাপারটাই একটা তামাশা, একটা সার্কাস।
    মানুষকে প্রতারণা আর জালিয়াতির একটা বিশাল আয়োজন। 
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১১522883
  • ক্যাণ্ডিডেটদের কাছ থেকে মাইনের টাকা কেড়ে নেওয়াটা আপত্তিকর, আপনারা কেউ তা নিয়ে লিখছেন না কেন? আপনারা কি ব্যাপারটা সমর্থন করেন? মানুষকে বেগার খাটানোর আপনারা সমর্থক?
  • ছবি এল না কেন | 2401:4900:733c:76c8::424:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০৭522882
  • https://ibb.co/frG4jB4
  • কে জানে, কে উকিল আর কে নয় | 2401:4900:733c:76c8::424:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০২522881
  • অতএব কিছু কথা বলতেই হয়। লেখাটা বেশ বড় হলেও দরকারি। 

    আদালতের রায়, ভিলেন এবং রক্ষাকর্তা !!!!
    -------------------------------------------------------------------

    হাইকোর্টের রায় বেরোনোর পর খুব সুকৌশলে যোগ্য বনাম অযোগ্যের একটা বাইনারি তৈরী করে পরিকল্পিত প্রচার শুরু হয়েছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই চাকরি হারানো অনেক চাকুরীরত প্রার্থীর আবেগকে ব্যবহার করে একটা বিতর্ক তৈরি করে আলোচনার কেন্দ্র থেকে দুর্নীতির মূল অপরাধীদের ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এবং সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে এইভাবে বয়ান তৈরী করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

    এইসকল বয়ানের একটা হলো বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে ভিলেন বানানোর। তিনিই নাকি যোগ্য প্রার্থীদেরও বাদ দেওয়ার কথা বলেছেন, গোটা প্যানেলকেই বাতিল করার দাবী করেছেন। 

    একটু দেখে নিই, সত্যিটা কী?

    মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে প্রথমেই বলে নি, যোগ্য ও অযোগ্য - এই দুটি শব্দ ব্যবহার ভুল। আইনের প্রেক্ষিতে আসল শব্দদুটি হলো বৈধ ও অবৈধ। হাইকোর্টের রায়ের ৩ নং থেকে ২১ নং পয়েন্টে বিকাশবাবুর আদালতে তুলে ধরা সওয়ালকে নথিভুক্ত করা হয়েছে। সেগুলোই পয়েন্ট ধরে ধরে দেখি।

    ৩. মূলতঃ তিনি বিভিন্ন রিট পিটিশনের উদাহরণ দিয়ে যুক্তি সহকারে দেখালেন যে, রিট পিটিশনের রক্ষণাবেক্ষণযোগ্যতার বিষয়টি ডিভিশন বেঞ্চ দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এবং ডিভিশন বেঞ্চ রিট পিটিশনগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য বলে মনে করেছে। এই উল্লেখ করলেন যে তদন্তের রিপোর্টে আপিল আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলিতে গুরুতর অনিয়ম খুঁজে পেয়েছেন এবং বলেছেন যে একটি সাংবিধানিক আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিষয়টির গভীরে যেতে পারে এবং সেই অনুযায়ী উপায় তৈরি করতে পারে। 
    [ 3. ….. The learned single Judge by an order dated November 21, 2021 passed in WPA 12266 of 2021 had appointed the Central Bureau of Investigation (CBI) to investigate the illegalities and the money trail, if any. An appeal had been carried against such order dated November 21, 2021 when the Appeal Court by an order dated December 6, 2021 found serious irregularities in the recruitment process and held that a constitutional Court can go deeper into the matter in the interest of justice and mould the relief accordingly. He has contended that, the issue of nonmaintainability of the writ petitions had been decided by the Division Bench and that the Division Bench had found the writ petitions to be maintainable. ]

    ৪. মেন্টেইনিবিলিটির দিকটি নিয়ে, শ্রী ভট্টাচার্য যুক্তি দিলেন যে, এই ধরনের ইস্যুটি কার্যপ্রণালীর এই পর্যায়ে আর যুক্তিযুক্ত নয়, যেহেতু আদালত ভারতের সংবিধানের ১৪ এবং ১৫ অনুচ্ছেদগুলি যে লঙ্ঘন করা হয়নি, তা নিশ্চিত করার জন্য সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সমস্ত প্রক্রিয়া চালিয়েছিল। 
    [4.…On the aspect of maintainability, Mr. Bhattacharya has contended that, such issue is no longer germane at this stage of the proceeding, as the Court proceeded all throughout in exercise of constitutional powers, in order to ensure Articles 14 and 15 of the Constitution of India were not violated.]

    তিনি দাবি করেছেন যে, বর্তমান মামলার বাস্তবতায়, যেহেতু জনসাধারণের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি কেলেঙ্কারি আবিষ্কৃত হয়েছে, একটি সাংবিধানিক আদালতের ভারতের সংবিধানের ১৪ নং অনুচ্ছেদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হিসাবে কার্যকর করতে দ্বিধা করা উচিত নয়।

    [...He has contended that, in facts of the present case, since a scam relating to public appointments has been discovered a Constitutional Court should not hesitate to enforce compliance with Article 14 of the Constitution of India.]

    ৫. তিনি এই প্রসঙ্গে হাইকোর্ট নিযুক্ত রনজিত কুমার বাগের সভাপতিত্বে চার সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিটির সুপারিশ ও ফলাফল তুলে ধরলেন।

    [5....Mr. Bhattacharya has submitted that, the Division Bench appointed a four-member committee consisting of a representative of SSC, a representative of the Board, a practising advocate of the Court under the Chairmanship of Justice Ranjit Kumar Bag (retired) for a thorough investigation with regard to the selection process. Such committee had made a thorough investigation and made several recommendations. ]

    ৬. বিকাশ ভট্টাচার্য জানালেন যে, এসএসসি অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করে বিভিন্ন বিষয়ে হলফনামা দাখিল করেছে এবং অনিচ্ছাকৃত ভুলের আড়ালে তাদের ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি হাইকোর্টে বিভিন্ন সময়ে এসএসসি-র দেওয়া হলফনামাগুলির উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি এসএসসির একটি প্রতিবেদনের উপরও নির্ভর করেছেন যেখানে তার মতে, এসএসসি কার্যকরভাবে প্রার্থীদের মেধা তালিকায় না থাকার বিষয়ে অবৈধতা স্বীকার করেছে কিন্তু তারপরও তাদের প্যানেলে জায়গা করে দিয়েছে। এসএসসি এও স্বীকার করেছিল যে, এই ধরনের অবৈধ কাজের সুবিধাভোগীদের এটিকে চ্যালেঞ্জ করার কোনও আইনি অধিকার নেই।

    [6. Mr. Bhattacharya has submitted that, SSC filed several affidavits in the matters admitting illegal appointments and sought to justify them under the garb of inadvertent mistakes. In this regard, he has referred to the affidavit of SSC  ….. He has also relied upon a report of SSC where according to him, SSC effectively admitted the illegality with regard to candidates not being in the merit list at all but still made it to the panel. SSC had admitted that, the beneficiaries of such illegal act did not have any legal right to challenge the same. ]

    ৭. বিকাশ বাবু বলছেন যে নিয়োগের চারটি বিভাগের উপর বিভিন্ন রিট পিটিশন সম্পর্কিত সিঙ্গল বেঞ্চের একজন বিচারপতির বিভিন্ন আদেশের বিরুদ্ধে একটি আপিল বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই ধরনের আপিল ১৮ মে, ২০২২ তারিখের একটি রায় এবং আদেশ দ্বারা খারিজ করা হয়েছিল।
    [৭.... an appeal was preferred against various orders of the learned single Judge pertaining to different writ petitions relating to the 4 categories of the recruitment. Such appeal had been dismissed by a judgement and order dated May 18, 2022.]

    ৮. এখানে বিকাশ ভট্টাচার্য সওয়াল করলেন যে, অপটিক্যাল মার্কস রিকগনিশনের বা ওএমআর শিটের হেরফের হচ্ছে আরেক ধরনের অসঙ্গতির বিষয়ে সিবিআই একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যা এসএসসি, বোর্ড বা রাজ্য সরকার সহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী যারা 2021 সালের WPA 13700-এ ব্যক্তিগত উত্তরদাতা, CBI-এর এই ধরনের হলফনামাকে চ্যালেঞ্জ করেনি। 

    [8. Mr. Bhattacharya has submitted that, CBI produced an interim report with regard to another kind of discrepancy being the manipulation of the Optical Marks Recognition (OMR) answer scripts. The learned single Judge has passed an order dated September 20, 2022 with regard thereto. CBI has filed an affidavit dated December 7, 2022 which stated that scanning of all original OMR sheets had been done at the office of the SSC by M/s NYSA. He has pointed out that, SSC, Board or the state government including several candidates who are private respondents in WPA 13700 of 2021 did not challenge such affidavit of CBI. ]

    ৯.  বিকাশ ভট্টাচার্য উল্লেখ করলেন যে, সিবিআই সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারকের সামনে বেশ কয়েকটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিল করেছে যার ভিত্তিতে বিচারক এসএসসিকে হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তারপরে এসএসসি ২০২৩-এ একটি হলফনামা দাখিল করে স্বীকার করে যে যেখানে এটি স্বীকার করেছে যে এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত OMR উত্তর স্ক্রিপ্টগুলি স্ক্যান এবং মূল্যায়নের জন্য মেসার্স NYSA কে নিয়োগ করেছে৷ এই ধরনের হলফনামায় স্বীকার করা হয়েছে যে ২৮১৯ টি ওএমআর শীট এবং চারটি উত্তর স্ট্রিং এসএসসির সার্ভারে রাখা প্রার্থীদের নম্বরের চেয়ে কম ছিল। নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্য ৩টি বিভাগের ক্ষেত্রে অনুরূপ হলফনামা দাখিল করা হয়েছে।

    [9.... Thereafter SSC has filed an affidavit affirmed on 2023 wherein it admitted that SSC appointed M/s NYSA for scanning and assessing the OMR answer scripts in relation to the recruitment processes. Such affidavit had also acknowledged that 2,819 OMR sheets and four answer strings were lesser than the marks of the candidates kept in the server of SSC…]

    ১০. বিকাশ বাবু উল্লেখ করলেন যে, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের সামনে একটি হলফনামা দাখিল করেছে এবং স্বীকার করেছে যে এসএসসির চেয়ারম্যান নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে ওএমআর, উত্তরের স্ক্রিপ্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র এক বছরের মধ্যে ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন … এই ধরনের সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি এবং তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫ এর ধারা ৮(৩)এর লঙ্ঘন।

    [10. Mr. Bhattacharya has pointed out that, SSC has filed an affidavit before the Supreme Court admitting that the Chairman of SSC in exercise of executive powers directed destruction of the OMRs, answer scripts and other papers within a year after keeping a mirror image of the same. He has contended that, such decision was arbitrary and illegal and in violation of Section 8 (3) of the Right to Information Act, 2005.]

    ১১. তিনি দাবি করলেন যে, এসএসসি এখনও প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ওএমআর শীটের মিরর ইমেজ নিজের কাছে গচ্ছিত রেখেছে, এসএসসি ডাটাবেসে সংরক্ষিত ডেটা থেকে ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪-এ OMR-এর কপি সরবরাহ করেছে। ২০১৮ সালে ডাটাবেস থেকে কমপক্ষে একজন প্রার্থীর জন্য এই ধরনের ওএমআর দেওয়া হয়েছিল। এসএসসি ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখের আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ওএমআর শীট প্রকাশ করেছিল। ২০১৮ এবং ২০২২ সালে প্রকাশিত ওএমআরগুলি একই এবং অভিন্ন। অর্থাৎ, এখনও ওএমআর উত্তরপত্র এসএসসি’র দখলে রয়েছে।
    [11.....SSC supplied copy of OMR on January 18, 2024 from the data stored in the SSC database. Such OMR for at least one candidate had been given from the database in 2018. SSC had published some OMR sheets in terms of the order of the Court dated December 14, 2022. OMRs published in 2018 and 2022 are the same and identical. He has contended that, SSC is still in possession of the OMR answer sheets. ]

    ১২. বিকাশ ভট্টাচার্য দেখিয়েছেন যে আদালত ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখের একটি আদেশের মাধ্যমে মামলার সমস্ত আগ্রহী পক্ষকে সিবিআই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওএমআর শীটগুলি পরিদর্শন করার সুযোগ দিয়েছে। এই ধরনের পরিদর্শন করার পরে, কেউই সিবিআই-এর দখলে থাকা ওএমআর শীটগুলির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক করেনি। বিপরীতে, একজন প্রার্থী ওএমআর শীটটিকে আসল বলে স্বীকার করেছেন এবং ওএমআর শীটের সাথে পার্থক্য করে সেই নির্দিষ্ট প্রার্থীকে দেওয়া নম্বরের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
    [12..... contended that, the Court by an order dated February 5, 2024 gave opportunity to all interested parties in the litigation to inspect the OMR sheets from the CBI authorities. After taking such inspection, none has disputed the veracity of the OMR sheets in possession of CBI. On the contrary, one of the candidates had admitted the  OMR sheet to be genuine and questioned the authority of marks awarded to that particular candidate in variance with the OMR sheet.]

    ১৩. তিনি বললেন কোর্টে সিবিআই এর রিপোর্ট অনুযায়ী ওএমআর শিটে গুরুতর বেনিয়মের জন্য সিঙ্গল বেঞ্চ সমস্ত বেআইনি সুবিধাভোগীদের তালিকা দিয়ে বলে, এবং এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করে দেখা যায় শূন্য পেলেও তাদের নম্বর অনেক বাড়িয়ে তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। 

    [13....CBI from time to time filed several reports which disclose that OMR sheets recovered were shown to the SSC who checked and found serious manipulations. Accordingly, the learned single Judge had directed SSC to publish the list of beneficiaries of such manipulations. List of beneficiaries of manipulations had been directed to be published in respect of appointments for classes IX and X as well as for Group C and D. He has pointed out that, the list published by SSC shows that candidates who secured zero in the OMR sheets were given more than qualifying marks and subsequently appointed.]

    ১৪. তিনি জানালেন যে এসএসসি নিয়মের ১৭নং বিধি প্রয়োগ করে অবৈধভাবে সুবিধাভোগীদের নিয়োগ বাতিল করেছে। এসএসসি একটি হলফনামায় বলেছিল যে আরও প্রার্থী থাকতে পারে যারা এসএসসি দ্বারা নিয়োগের জন্য ভুলভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল এবং রেকর্ডগুলি যাচাই করার জন্য সময় প্রার্থনা করেছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, আজ পর্যন্ত, এসএসসি চূড়ান্তভাবে মোট অবৈধ প্রার্থীর সংখ্যা চিহ্নিত করতে পারেনি।

    [14. Mr. Bhattacharya has pointed out that, SSC terminated the appointments of the beneficiaries of the illegalities by invoking Rule 17 of the Rules. SSC had also stated in an affidavit that there may be more candidates who were wrongly recommended for appointment by SSC and prayed for time for verifying the records. In this regard, he has referred to page 334 of volume 2 of the compilation. He has pointed out that, till date, SSC did not conclusively identify the total number of illegalities.  …. SSC was still in the process of identifying the illegal appointments.]

    ১৫. বিকাশ ভট্টাচার্য দাবি করলেন যে, বিধি ১৭ এর প্রয়োগ আইনের লঙ্ঘন কিনা তা নিয়োগকারীদের দ্বারা চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়েছে, অর্থাৎ vires চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে যদি নিয়মটি পেরেন্ট আইন লঙ্ঘন করে এবং যদি ইচ্ছামত করা হয়। তাঁর মতে, বিধি ১৭ বিশেষত প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতি লঙ্ঘনের কারণে কোনও দুর্বলতায় ভুগছে না কারণ সরকারী চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও প্রাক-সিদ্ধান্তমূলক শুনানির সুযোগ নেই যা জালিয়াতি বা অবৈধতার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    [15....the vires of Rule 17 had not been challenged by appointees. Appointments had been cancelled…..can be challenged if the Rule was in violation of the parent statute and if the same was arbitrary. According to him, Rule 17 does not suffer from any infirmity especially on the ground of violation of the principles of natural justice since there is no scope for any pre decisional hearing in case of appointments made in public employment which was vitiated by fraud or illegalities. ]

    ১৬. তিনি আরও বলেন, ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ এর ধারা ৬৫বি (৪) উল্লেখ করে  দাবি করেছেন যে, এসএসসি সিবিআই এর তদন্তের উপর ভিত্তি করে কাজ করেছে। তিনি দাবি করেছেন যে, প্রাথমিক নথি হল ওএমআরের স্ক্যান করা কপি এবং এই ধরনের স্ক্যানিং এসএসসির অফিসে প্রস্তুত করা হয়েছিল। এই ধরনের স্ক্যান কপির ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, ধারা ৬৫বি(৪) এর অধীনে শংসাপত্রের প্রয়োজনীয়তা প্রক্রিয়াগত প্রকৃতির ছিল এবং যেখানে ন্যায়বিচারের স্বার্থ ন্যায়সঙ্গত হয় সেখানে আদালত দ্বারা শিথিল করা যেতে পারে। অর্থাৎ, যে, যদি আদালতের বিবেক সন্তুষ্ট হয় যে সাক্ষ্যগুলি প্রাসঙ্গিক, আদালতের যথাযথ রায়ের জন্য নথিগুলির হলফনামা রেকর্ডে নেওয়ার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে (মার্ফি অন এভিডেন্স)। 

    [16... Referring to Section 65B (4) of the Indian Evidence Act, 1872, Mr. Bhattacharya has contended that, SSC acted upon the disclosures made by CBI. He has contended that, primary document is the scanned copy of the OMR and that such scanning was prepared at the office of SSC. Assessment had been made on the basis of such scanned copy. ….He has contended that, requirement of certificate under Section 65B (4) was procedural in nature and can be relaxed by the Court wherever the interest of justice so justifies … if the Court’s conscience is satisfied that the evidence is relevant, the Court has inherent powers to take the affidavit of documents on record for proper adjudication. ]

    ১৭. বিকাশ বাবু দেখালেন, যে এসএসসি তদন্ত চলাকালীন সিবিআই দ্বারা উদ্ধার করা ইলেকট্রনিক ডেটা গ্রহণ করেছিল। এসএসসি এসএসসির সার্ভারে উপলব্ধ ডিজিটাল রেকর্ডের সাথে এই জাতীয় ডেটা তুলনা ও পরীক্ষা করেছে এবং পুনরুদ্ধার করা ওএমআরের সত্যতা স্বীকার করেছে। সুতরাং, তাঁর মতে, ভারতীয় সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ধারা ৬৫বি (৪) এর বিধানগুলির সাথে যথেষ্ট সম্মতি রয়েছে। 

    [17 …powers under Section 165 of the Indian Evidence Act, 1862 should be exercised by a Constitutional Court in order to effectively adjudicate the disputes, without even deciding on the question of admissibility of evidence…. SSC had accepted the electronic data seized by CBI during the course of the investigation. SSC had compared and checked such data with the digital records available in the servers of SSC and admitted the genuineness of the retrieved OMR. … According to him, there has been sufficient compliance with the provisions of Section 65B (4) of the Indian Evidence Act, 1872. He has pointed out that, requisite certificate had been produced by CBI and filed by way of an affidavit affirmed on January 15, 2024.]

    ১৮.  তিনি মন্তব্য করলেন যে সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় সিবিআই-এর রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করার কোনও ভিত্তি নেই যা হেরফেরগুলির প্রকৃতি এবং বৈচিত্র্যকে প্রকাশ করেছিল এবং যা শেষ পর্যন্ত স্নোবল প্রভাব ধারণ করেছিল এবং স্কুল শিক্ষক এবং নন-টিচিং কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি পাবলিক কেলেঙ্কারিতে রূপ নিয়েছে। একই সঙ্গে, তাঁর মতে, ঘোষিত রিজার্ভেশন নীতির লঙ্ঘনের কারণেও নিয়োগগুলি অবৈধ হয়েছে।
    [ 18. Mr. Bhattacharya has contended that, appointments to any post under the control of a statutory authority is bound to be in conformity with Articles 14 and 16 of the Constitution. There is no ground to challenge the report of the CBI which had exposed the nature and variety of the manipulations and which ultimately snowballed and took the shape of a public scam relating to appointments of school teachers and nonteaching staff….According to him, the appointments have been vitiated also due to infractions of the declared reservation policy.]

    ১৯. বিকাশ ভট্টাচার্য বললেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আদালতের দায়িত্ব সত্য প্রকাশ করা। সত্য প্রকাশের জন্য, আদালতকে সর্বদা পদ্ধতিগত সূক্ষ্মতা দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না।
    [19... court has the duty to reveal the truth to ensure justice. For revelation of truth, the Court may not always be shackled with the procedural niceties. …]

    ২০. তিনি উল্লেখ করলেন যে, এসএসসি অবৈধ নিয়োগ রক্ষার জন্য ক্যাবিনেটের সুপারিশে সুপারনিউমারারি পোস্ট তৈরি করে একটি আবেদন করেছিল। পরে পিটিশনার দের দ্বারা প্রতিবাদ হওয়ায় এসএসসি এই আবেদন প্রত্যাহার করতে চাইলে ডিভিশন বেঞ্চ ২৪ নভেম্বর, ২০২২ তারিখের আদেশ দ্বারা এসএসসি দ্বারা করা এই জাতীয় আবেদন প্রত্যাহারের অনুমতিকে খারিজ করে। ফলে তার মতে, এই আবেদনের মধ্যে দিয়েই এসএসসি অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করেছে।

    [20. Mr. Bhattacharya has pointed out that SSC filed an application to protect illegal appointments by creating supernumerary post. He has pointed out that, due to the opposition of the writ petitioners, such application was not allowed to be withdrawn. He has also pointed out that, on appeal from the order refusing to grant permission to withdraw such application, the Division Bench was pleased to decline the permission for withdrawal of such application made by SSC by the order dated November 24, 2022. A special leave petition had been preferred in which an order dated November 25, 2022 was passed which did not grant permission to withdraw the application. Therefore, according to him, SSC had admitted illegal appointments.]

    ২১. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিকাশ ভট্টাচার্য যা বললেন, বর্তমান মামলার বাস্তবতা ও পরিস্থিতিতে, আদালতের সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে একপাশে রাখা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। এই ধরনের বিতর্কের সমর্থনে, তিনি ২০২১ ভলিউম ১৬ সুপ্রিম কোর্ট কেস ২১৭ (তামিলনাড়ু রাজ্য এবং অন্য বনাম এ. কালাইমানি এবং অন্যান্য) ইত্যাদি রায়ের উদগরণ দিয়েছেন। বিকল্পভাবে, তিনি এও বললেন যে আদালত পূর্বের সমস্ত নিয়োগকে, যা আজ পর্যন্ত কলঙ্কিত প্রক্রিয়া দ্বারা তৈরি, তাকে সরিয়ে রেখে স্ক্যান করা ওএমআর-এ প্রতিফলিত প্রার্থীদের সঠিক পারফরমেন্সের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে এবং এই নতুন মেধাগত র‌্যাঙ্কিংয়ের উপর ভিত্তি করে সরাসরি নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য নির্দেশ দিতে পারে। 
    [21. Mr. Bhattacharya has contended that, in the facts and circumstances of the present case, the Court has no option but to set aside the entire selection process. In support of  such contention, he has relied upon 2021 Volume 16 Supreme Court Cases 217 (State of Tamil Nadu and Another vs. A. Kalaimani and Others). Alternatively, he has submitted that the Court will be pleased to direct preparation of the merit list on the basis of the performance of the candidates reflected in the scanned OMR and direct issuance of appointment letters in terms of the new merit ranking after setting aside all appointments made by the tainted process till date.]

    সুতরাং বিকাশ ভট্টাচার্য একজন আইনজীবী হিসাবে তার মক্কেলের হয়ে আইনগত সাওয়ালই করেছেন, এবং দাবী করেছেন

    ১। আদালত তার মক্কেলের করা রিট পিটিশনের যোগ্যতা খুঁজে পেয়েছেন, তাকে গ্রহণ করেছেন।
    ২। তদন্তের রিপোর্টে আপিল আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলিতে গুরুতর অনিয়ম খুঁজে পেয়েছেন এবং বলেছেন যে একটি সাংবিধানিক আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিষয়টির গভীরে যেতে পারে।
    ৩। আদালত ভারতের সংবিধানের ১৪ এবং ১৫ অনুচ্ছেদগুলি যে লঙ্ঘন করা হয়নি, তা নিশ্চিত করার জন্য সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সমস্ত প্রক্রিয়া চালিয়েছিল। এবং বর্তমান মামলার বাস্তবতায়, যেহেতু জনসাধারণের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি কেলেঙ্কারি আবিষ্কৃত হয়েছে, একটি সাংবিধানিক আদালতের ভারতের সংবিধানের ১৪ নং অনুচ্ছেদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হিসাবে কার্যকর করতে দ্বিধা করা উচিত নয়।
    ৪। বাগ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বিস্তারিত দুর্নীতি হয়েছে।
    ৫। এসএসসি অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করে বিভিন্ন বিষয়ে হলফনামা দাখিল করেছে।
    ৬। ওএমআর শিটের হেরফের হয়েছে বলে সিবিআই একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনকে এসএসসি, বোর্ড বা রাজ্য সরকার সিবিআই-এর এই ধরনের হলফনামাকে চ্যালেঞ্জ করেনি। অর্থাৎ স্বীকার করেছে। 
    ৭। এসএসসির হলফনামায় স্বীকার করা হয়েছে যে ২৮১৯ টি ওএমআর শীট এবং চারটি উত্তর স্ট্রিং এসএসসির সার্ভারে রাখা প্রার্থীদের নম্বরের চেয়ে কম ছিল। নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্য ৩টি বিভাগের ক্ষেত্রে অনুরূপ হলফনামা দাখিল করা হয়েছে। আবার কোর্টের নির্দেশে এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করে দেখা যায় শূন্য পেলেও তাদের নম্বর অনেক বাড়িয়ে তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল।
    ৮। এসএসসি বেআইনি ভাবে সুপ্রিম কোর্টের সামনে  হলফনামায় স্বীকার করেছে যে এসএসসির চেয়ারম্যান নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে ওএমআর, উত্তরের স্ক্রিপ্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র এক বছরের মধ্যে ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি এবং তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫ এর ধারা ৮(৩)এর লঙ্ঘন।
    ৯। এসএসসি এখনও প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ওএমআর শীটের মিরর ইমেজ নিজের কাছে গচ্ছিত রেখেছে, কিন্তু কোর্টে পেশ করেনি। কিছু আবেদনকারীকে অবশ্য দিয়েছে।
    ১০। আদালত ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখের একটি আদেশের মাধ্যমে মামলার সমস্ত আগ্রহী পক্ষকে সিবিআই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওএমআর শীটগুলি পরিদর্শন করার সুযোগ দিলে কেউই সিবিআই-এর দখলে থাকা ওএমআর শীটগুলির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক করেনি। বিপরীতে, একজন প্রার্থী ওএমআর শীটটিকে আসল বলে স্বীকার করেছেন এবং ওএমআর শীটের সাথে পার্থক্য করে সেই নির্দিষ্ট প্রার্থীকে দেওয়া নম্বরের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
    ১১। এসএসসি একটি হলফনামায় বলে যে আরও প্রার্থী থাকতে পারে যারা এসএসসি দ্বারা নিয়োগের জন্য ভুলভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল এবং রেকর্ডগুলি যাচাই করার জন্য সময় প্রার্থনা করেছিল। অথচ আদালত বারবার চাইলেও আজ পর্যন্ত, এসএসসি চূড়ান্তভাবে মোট অবৈধ প্রার্থীর সংখ্যা চিহ্নিত করতে পারেনি। 
    ১২। এসএসসি আইন ধারা ১৭ ও দেশের সাক্ষ্য আইনের নানা ধারার উল্লেখ করে বলা যায়, যদি আদালতের বিবেক সন্তুষ্ট হয় যে সাক্ষ্যগুলি প্রাসঙ্গিক, আদালতের যথাযথ রায়ের জন্য নথিগুলির হলফনামা রেকর্ডে নেওয়ার অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে (মার্ফি অন এভিডেন্স)। 
    ১৩। সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় সিবিআই-এর রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করার কোনও ভিত্তি নেই যা স্কুল শিক্ষক এবং নন-টিচিং কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি পাবলিক কেলেঙ্কারিতে রূপ নিয়েছে। একই সঙ্গে, ঘোষিত রিজার্ভেশন নীতির লঙ্ঘনের কারণেও নিয়োগগুলি অবৈধ হয়েছে।
    ১৪। এসএসসি প্রথমে অবৈধ নিয়োগ রক্ষার জন্য ক্যাবিনেটের সুপারিশে যেসকল সুপারনিউমারারি পোস্ট তৈরি করেছিল, পরে পিটিশনারদের দ্বারা চ্যালেঞ্জ হওয়ায় এসএসসি এই আবেদন প্রত্যাহার করতে চাইলে ডিভিশন বেঞ্চ এই জাতীয় আবেদন প্রত্যাহারের অনুমতিকে খারিজ করে। অর্থাৎ এই আবেদনের মধ্যে দিয়েই এসএসসি অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করেছে।
    এবং সর্বোপরি, 
    ১৫। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বর্তমান মামলার বাস্তবতা ও পরিস্থিতিতে, আদালতের সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে একপাশে রাখা ছাড়া আর কাছে কোন বিকল্প নেই, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট কেস ২১৭ (তামিলনাড়ু রাজ্য এবং অন্য বনাম এ. কালাইমানি এবং অন্যান্য, ২০২১) এই রায় দিয়েছেন। 
    ১৬। এর জন্য আদালত পূর্বের সমস্ত নিয়োগকে, যা আজ পর্যন্ত একটি গুরুতর কলঙ্কিত প্রক্রিয়া দ্বারা তৈরি বলে প্রমাণিত, তাকে সরিয়ে রেখে স্ক্যান করা ওএমআর-এ প্রতিফলিত প্রার্থীদের সঠিক পারফরমেন্সের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করে এবং এই নতুন মেধাগত র‌্যাঙ্কিংয়ের উপর ভিত্তি করে সরাসরি নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া একমাত্র বিকল্প।

    অর্থাৎ, খুব স্পষ্ট করে বললে বিকাশ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, যে তিনি গোটা প্যানেলকে খারিজ করার কথা বলেছেন, তাই জন্য কোর্ট এরূপ নির্দেশ দিলো … কথাটি ভুল এবং অর্ধসত্য। শুধু ২১ নং পয়েন্টের কিছু লাইনকে উদ্ধৃত করে কথাগুলি তুলে ধরা হচ্ছে, বিকাশ ভট্টাচার্যের সওয়ালের সামগ্রিকতায় নয়। বিকাশবাবুর গোটা সওয়ালকে বিচার করলে একদম স্পষ্ট হয় যে, তিনি বারবার এসএসসি, তার সাথে বোর্ড ও রাজ্য সরকারের দ্বারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতির প্রমাণ দিয়েছেন, কোর্টের মাধ্যমে এসএসসি-র কাছে প্রকৃত অবৈধভাবে চাকুরীরত প্রার্থীদের সঠিক সংখ্যা চাইলেও তা না জানানোর কথা বলেছেন, সমস্ত পরীক্ষার্থীর ওএমআর শীটকে বেআইনি ভাবে নষ্ট করে তথ্যপ্রমাণ লোপের কথা তুলে ধরেছেন … এবং সিবিআই এর দ্বারা উদ্ধার করা আংশিক পরিমাণ স্ক্যানড ওএমআর কে একমাত্র সাক্ষ্য হিসাবে ধরলে একমাত্র বিকল্প হিসাবে বর্তমান প্যানেল বাতিল করে সেইসব স্ক্যানড ওএমআর এর ভিত্তিতেই নতুন ভাবে মেধার র‍্যাংকিং করে (শুধুমাত্র নতুন র‍্যাঙ্কিং, অন্য কোনো কিছু বা চাকরি বাতিল বা বেতন ফেরতের কথা বলেন নি) নিয়োগ দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বলেই বলেছেন। 
    অর্থাৎ, যেহেতু সমস্ত তথ্যকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, এবং যেটুকু আংশিক তথ্য উদ্ধার হয়েছে তার ভিত্তিতে এটা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না, যে ঠিক কতজন অবৈধ ভাবে চাকুরী পেয়েছে, কারণ এসএসসি নিজেই হলফনামায় জানায় যে আরও প্রার্থী থাকতে পারে, (পয়েন্ট ১৪) … এবং আজ পর্য্যন্ত আদালতে জানায় নি, অতএব সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে আদালতের সামনে আর কোনো রাস্তা খোলা থাকবে না, প্যানেল বাতিল করা ছাড়া (তবে গোটা পরীক্ষা নয়, শুধুই প্যানেল বাতিল ... এটাও একটা সাফল্য) এবং পুনরায় নতুন র‍্যাঙ্কিং করা ছাড়া। আদালতও তার রায়ে ঠিক এটাই বলেছেন। 

    এক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে দায়ী এসএসসি, যারা নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার ও সুপারিশ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা, নিয়োগকর্তা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং অবশ্যই রাজ্য সরকার। প্রথমে বেআইনি ভাবে অযোগ্য সংস্থাকে টেন্ডার দিয়ে, যে আবার অন্য একটি অজানা সংস্থাকে সাব লিজ যে নাকি এসএসসির অনুমতি ছাড়াই, অর্থাৎ তাদের দ্বারা গোটা মূল্যায়নই প্রশ্নের মুখে থাকছে, ওএমআর পুড়িয়ে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করেছে এবং বারবার চাওয়া সত্ত্বেও অবৈধভাবে নিযুক্তদের প্রকৃত সংখ্যা তারা আদালতকে জানান নি। ফলে  আদালতের সামনেও আর কোনো রাস্তা খোলা রাখেননি। হয়তো তাদের পরিকল্পনা এটাই যে সবকিছু এমনভাবেই ঘুলিয়ে দেওয়া হোক যে দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও অবৈধ চাকুরি রিট প্রার্থীদের যেন সহজে চিহ্নিত করা না যায় … বৈধ এবং অবৈধ মিশে গেলে, সমান শাস্তি পেলে, আক্রমণের মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া সহজ হবে, এবং বৈধ প্রার্থীদের বিপর্যয়কে ব্যবহার করে মূল প্রশ্নকে ঘুলিয়ে দেওয়া যাবে। গত কয়েকদিন ধরে টিভিতে, কাগজে, সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে, বিশেষ করে শিক্ষকদের, পাতায়… এইভাবেই ন্যারেটিভ সেট করা হচ্ছে, প্রচার করা হচ্ছে … মুখ্যমন্ত্রী ও তার দল মঞ্চ থেকে সংবাদ মাধ্যমে, সামাজিক মাধ্যমে নিরন্তর এইসব কথা বলে যাচ্ছেন। পাবলিক কনসেন্ট তৈরী করে দেওয়া হচ্ছে প্রচার যন্ত্রের সাহায্যে। এবং তাতে যে বা যারা দুর্নীতি করল তারা ভিলেন হলো না, ভিলেন হয়ে উঠলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য … একমাত্র যার জন্য এই অপরিসীম দুর্নীতি সামনে এলো। 

    একজন প্রসিকিউটর হিসাবে বিকাশবাবু আইনি যুক্তি ও তথ্য দেবেন এটাই প্রত্যাশিত। তিনি তো দিয়েছেন। এবং কোথাও বৈধভাবে চাকরি করা প্রার্থীদের নিয়োগের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি … বরং যেখানে দেখা যাচ্ছে আদালতের সামনে অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই যে পুরো প্যানেল বাতিল করা, তখনও বিকাশবাবু সেই স্ক্যানড ওএমআর থেকেই বৈধ প্রার্থীদের পুনরায় র‍্যাঙ্কিং করার প্রস্তাব দিলেন। আদালত সেই মত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন, এটা বিকাশবাবুর জয় নয়, বরং সেইসকল বৈধ প্রার্থীদের জন্য একটা সুযোগের অধিকার, যখন গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার সম্ভাবনাই বেশী ছিল। ত্রিপুরায় কিন্তু চাকুরিহারাদের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। যদিও সেখানে আর্থিক দুর্নীতি প্রমাণিত হয় নি, কেবল কেন্দ্রীয় শর্ত মেনে নিয়োগ হয়নি বলে তাদের চাকরি বাতিল হয়। এই সুযোগ ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। নইলে বৈধ চাকুরীরতদের ত্রিপুরা বা এইরকম অসংখ্য দুর্নীতির দায়ে গোটা পরীক্ষাই ও প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনার সম্মুখীন হতে হতো কোনো পুনর্মূল্যায়ন ছাড়াই। তাতে চূড়ান্ত বিপর্যয় হতো। 

    হ্যাঁ, এই গোটা ঘটনায় আরেকটা পক্ষও আছে। যে স্বাভাবিক ন্যায়ের কথা আইনের ভিত্তি, সেই স্বাভাবিক ন্যায়ের যুক্তিতেই প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের বাইরেও যে বিরাট সংখ্যক পরীক্ষার্থী ছিলেন যাদের একটা অংশের এই দুর্নীতির কারণে মেধাতালিকায় র‍্যাঙ্ক পিছিয়ে গেছে বলে তারা প্যানেল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের প্রতি ন্যায় করতে হলে শুধু প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদেরই যোগ্য বলা যাবে না। তথাকথিত যোগ্যতার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে … ফলত সমস্ত পরীক্ষার্থীরই মেধাতালিকার র‍্যাঙ্কিং পুনর্নির্ধারণ করা দরকার। বিকাশবাবু তাই দাবী করেছেন, এবং আদালত তার বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েছেন। 

    বাকিটা, রাস্তায় নেমে সত্যি কথাটা তুলে ধরা। এবং সর্বশক্তি নিয়ে বিকাশবাবুদের মত সমস্ত আইনজীবী এবং হার না মানা আবেদনকারীদের পাশে থাকা যাতে সমস্ত বৈধ প্রার্থীরা ন্যায্য বিচার পায়, এবং অপরাধীরা, তারা যেই হোক না কেন, সবাই উপযুক্ত শাস্তি পায়। 

    নিচের ছবিটা সুপ্রিম কোর্টের ২০২১ সালের একটি রায়ের।
     
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০০522880
  • "এ ব্যাপারে অবৈধতার দায়, যদি কোর্টের রায় ঠিক হয়ে থাকে, তো সরকারের। সেক্ষেত্রে সরকারি কেউ ইচ্ছাকৃত নিয়ম করে থাকলে তার শাস্তি হওয়া উচিত। এবং এদের চাকরি গেলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। অন্য কারোর গাফিলতিতে এরা কেন পয়সা দেবে"
     
    একেবারেই তাই।
     
     
  • ? | 2401:4900:733c:76c8::424:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৪522878
  • বিকাশ আদালত না মিডিয়া? রায়ে illegal/legality এইসব আছে। unqualified তো দেখা দিল না।
  • সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:০৯522877
  • যাদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে তারা যে অযোগ্য এরকম না। প্যানেলের মেয়াদ শেষ হবার পর কারো নিয়োগ হয়েছে, অতিরিক্ত পদে কারো নিয়োগ হয়েছে। কোর্ট নিয়োগটাকে অবৈধ বলেছে। 
     
    এ ব্যাপারে অবৈধতার দায়, যদি কোর্টের রায় ঠিক হয়ে থাকে, তো সরকারের। সেক্ষেত্রে সরকারি কেউ ইচ্ছাকৃত নিয়ম করে থাকলে তার শাস্তি হওয়া উচিত। এবং এদের চাকরি গেলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। অন্য কারোর গাফিলতিতে এরা কেন পয়সা দেবে? 
     
    পুরো আলোচনাটাই যোগ্য অযোগ্য ঘিরে চলছে, থ্যাংকস টু বিকাশ এবং আদালত। আসলে হওয়া উচিত বৈধ নিয়োগ এবং অবৈধ নিয়োগ। আমি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে চাকরি পেয়েছি। নম্বরের দায় আমার কেন হবে, পরীক্ষকের। আমি ঘুষ দিয়ে থাকলে অন্য কথা। কিন্তু ঘুষ-টুষ প্রসঙ্গে একটি কথাও নেই রায়ে। সিবিআই এত বছর ধরে ওসবের ধার-পাশও মাড়ায়নি, যা বুঝলাম।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৪৮522876
  • সন্দেহ হয় সাধারণ মানুষের ভোটে আদৌ সরকার পরিবর্তন হয় কিনা। সবটাই হয়ত ভেতরে ভেতরে অন্য কায়্দা করা। কারণ কোরাপশন চূড়ামণিরা যেভাবে সাধারণ খেটে খাওয়া লোকের লাইফ হেল করে চলেছে বছরের পর বছর, তাতে এদের অনেক আগেই ভোটে হেরে ভূত হয়ে পালানোর কথা। খেটে খাওয়া লোক ইজম টিজমের ফ্যাশন বোঝেন না, তাদের কাছে দিনের রোজগারটুকু দিনে ঘরে আনতে পারার সুযোগটাই বিরাট ব্যাপার। এইটুকু জিনিসও এরা পারছে না, অনেকটাই গচ্চা দিতে হয় স্থানীয় ড্যাশদের কাছে, অথচ তারপরেও এই কোরাপশন চূড়ামণিরা থাকে কেমন করে গদিতে?
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৪৩522875
  • সেটাই তো।
    কেউ স্বীকার করবে নাকি যে ঘুষ দিয়েছে? কেউ স্বীকার করবে সে ঘুষ খেয়েছে? কলেজ
    স্টুডেন্টদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার  করে ধরা পড়ে কেস খাওয়ার মত অনেকটা। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৪০522874
  • ঘুষের ঘাপলা ধরারও তো সেরকম কোনো উপায় নেই। কোনো পরীক্ষা টরীক্ষার ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট ইত্যাদি থাকে, কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে। কিন্তু ঘুষের ক্ষেত্রে তো আর প্রমাণ রেখে ঘুষ দেওয়া নেওয়া হয় না। সেসব 'পারিতোষিক' এর ব্যাপার। নেহাৎ যদি ব্যাপারটা উঠেও আসে, বখশিস, দান, ডোনেশান, 'আমাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যকলাপে মুগ্ধ হইয়া ব্যক্তিগত উপহারস্বরূপ দিয়াছেন'--- এরকম কতরকম ইন্টারপ্রিটেশন আছে!
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩১522873
  • "এমনও হতে পারে ২৬ হাজারের দেওয়া ঘুষের প্যাকেট আছে। অর্থাৎ পরীক্ষার ফলাফলে ঘাপলা অথবা ঘাপলা নয়, সব ক্ষেত্রেই 'পারিতোষিক' দিয়ে চাকরি পেতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে ঘুষ যারা নিয়েছে তাদের শাস্তির দাবী ওঠা সবচেয়ে আগে দরকার।"
     
    একদম।
    ৫০০০, ২৬০০০ এসব বাজে গল্প, সব বেসিকালি কোরাপশনের কারবার।
    তাহলেও এরা আট বছর কাজ করেছে, এদের কাজে কোন মানুষের সরাসরি ক্ষতি বা মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল না, তদুপরি সরকারীভাবে কাজ পেয়েছে, এদের শাস্তির ব্যাপারটা সত্যিই অদ্ভুত। 
    আসল অপরাধীদের কোন পাত্তা নেই কেন?
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:২২522872
  • "আমি ভাবছি আমি যদি ডিপ্লোমা জাল করে বা অন্য কোন অনিয়ম করে হাসপাতালে বছর কয় ডাক্তারি করে তারপর ধরা পড়ি। তখন যদি এমপ্লয়ার পয়সা ফেরত চায় সেটা অন্যায় হয় কিনা। "
    তখন আর ব্যাপারটা এমপ্লয়ারের একতিয়ারের বাইরে। সেক্ষেত্রে জালি লোক শ্রীঘরে যাবেন। তার একটা বড় কারণ, ডাক্তারির ব্যাপারটা অন্যগুলোর থেকে আলাদা এই কারণে যে, ডাক্তারির লাইসেন্স পাওয়া মানে licence to kill, আপনি সার্জারি করার অধিকার পাবেন, তারপর এমন ওষুধ ব্যবহার করার লাইসেন্স পাবেন যেগুলো সাধারণ মানুষের এক্তিয়ারের বাইরে। 
     
    মিথ্যা কথা বলে, জালি করে ডাক্তারি করে ধরা পড়লে যতদিন যা যা করে এসেছেন সমস্তটাই অপরাধযোগ্য, কারণ আপনি মানুষ খুনের অভিপ্রায়ের কেস খাবেন, সে অপরাধের পারিশ্রমিক বলে কিছু আইনত হয় না। 
     
  • যোষিতা | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:০৯522871
  • বামফ্রন্ট আমলেও ঘুষ দেবার চল ছিল। পার্টিফাণ্ডে টাকা দিতে হতো। লোন দিয়ে ঘুষ দিত অনেকে। দুবছর কি দেড় বছর ধরে প্রত্যেক মাসের মাইনে পুরোটাই চলে যেত লোনের কিস্তি বাবদ।
    আজকাল সব মেসেজ/খবর পড়া হয় না, টি-২০ চলছে, নিয়ম করে ক্রিকেটটা দেখি।
  • যোষিতা | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:০৫522870
  • পরীক্ষায় ভালো ফল করবার পরেও ঘুষ দিয়েছে এমন  একজন শিক্ষককে আমি চিনি। শুধু তাই ই নয়, ভালো জায়গায় ট্রান্সফারের জন্যেও সাত লাখ অবধি ঘুষ দিতে হতো। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০২:১৯522869
  • এমনও হতে পারে ২৬ হাজারের দেওয়া ঘুষের প্যাকেট আছে। অর্থাৎ পরীক্ষার ফলাফলে ঘাপলা অথবা ঘাপলা নয়, সব ক্ষেত্রেই 'পারিতোষিক' দিয়ে চাকরি পেতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে ঘুষ যারা নিয়েছে তাদের শাস্তির দাবী ওঠা সবচেয়ে আগে দরকার।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:e446:560e:8461:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০২:০০522868
  • সরি, দ। বক্তব্য মনে আছে, কিন্তু বক্তাদের নাম কিছুতেই মনে পড়ছে না। স্মৃতির অবোস্তা খুবি খ্রাপ :-(
  • lcm | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩২522867
  • ওহ! মাইনে ফেরত সকলের জন্য নয়। আচ্ছা।

    কিন্তু তাহলে, চাকরি খোয়ানো ২৬০০০ এর জন্য কেন, সেটাও তো শুধু যাদের গোলমালের প্রমাণ আছে তাদের জন্য হওয়া উচিত।

    কনফিউজিং !
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:2754:c43b:f012:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০১:০৯522866
  • লসাগুবাবু, ওই মাইনে ফেরত দেবার ব্যাপারটা কিন্তু 26000 এর জন্য নয়। ওটা শুধু যাদের ব্যাপারে পরিষ্কার গোলমালের প্রমান আছে তাদের জন্য। এই যেমন যারা প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর চাকরি পেয়েছে।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:2754:c43b:f012:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০১:০৭522865
  • এরকম একটা ব্যাপার নিয়ে উল্লাসের কথা বলাটা অশোভন। কেউ যদি বলে আমার উল্লাস হচ্ছে তো আমিও উল্টো চোর বাঁচানোর মরিয়া প্রচেষ্টা নিয়ে অনেক কথা বলতে পারি।
     
    যাই হোক, আমার এখন অবধি মত পুরোটাই তৃণমূল মন্ত্রিসভার দোষ। আর কিছু না হোক, কোর্টেএফিডেভিট করে কারা নির্দোষ জানাতে এসেসসিকে বাধ্য করতে পারত। সেটা করেনি কেন? যত ছাত্র, চাকরিপ্রার্থী ভুগছে তাদের চোখের জল ওই নীল সাদা শাড়িতে।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:2754:c43b:f012:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০১:০২522864
  • ট্যাক্স কম দেওয়াটা সবসময় ক্রিমিনাল অফেন্স নয়। বেশীরভাগই সিভিল অফেন্স। কিন্তু সুদ ওই ৮%। 
     
    সংখ্যার বিচারেও ট্যাক্স সুদ অনেক লোক দেয়। 
     
    এটাও দেখুন, পিসীর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বলছে।
     
  • lcm | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৪৮522863
  • "... পয়েন্টটা ছিল অপরাধের ক্ষেত্রে জন্য মার্কেট রেটের চেয়ে বেশী সুদ নেবার চল ..."

    হ্যাঁ, ঠিক। এখন সেটাই তো প্রশ্ন। এক্ষেত্রে এটা কি "অপরাধ" বা "ক্রাইম"-এর জাজমেন্ট, মানে ক্রিমিনাল ট্রায়াল গোছের জিনিস। সেটা যদি হয়, তাহলে তো ফাইন না দিলে কি হবে সেটাও পরিষ্কার করে বলে দেওয়া উচিত। হয়ত বলা আছে। দেখলাম একটা ডেডলাইন দিয়েছে যে চার নাকি পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে টাকা (১২% সুদ সহ) ফেরত দিতে হবে - নইলে কি জেল? কতদিনের জেল? ২৬০০০ "অপরাধী"-এর মধ্যে অনেকেই যদি টাকা দিতে না পারে তাহলে হঠাৎ এত মানুষকে জেলে ভরবেই বা কি করে।

    টিপিক্যাল ক্লাস অ্যাকশন লস্যুট বা মাস লস্যুটে যেটা হয় সেটা হল - হাজার হাজার ভিক্টিম একসঙ্গে কেস ঠোকে কোনো কোম্পানি বা মানুষের বিরুদ্ধে, কোর্টের রায়ে ফাইন ধার্য হলে সেই টাকা সকল ভিকটিমের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হল, ফাইন না দিলে অপরাধীর জেল।

    এক্ষেত্রে উল্টো - এখানে ২৬০০০ অপরাধী - তাদেরকে ফাইন না দিলে জেলে ভরে দেওয়া হবে।

    মিলিটারি ট্রায়ালে এরকম হয় শুনেছি।
  • ;) | 2409:40e6:d:2085:f890:b8ff:fe1b:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৩০522862
  • সেকি, &/ , সৃষ্টিছাড়া, যোষিতা,  পলিটিশিয়ান,  আর কাদের জানি এই রায় নিয়ে এত যে  উল্লাস হচ্ছিল,  গেল কই? 
     
    এটা পড়ে হচ্ছেনা? 
    SLST, 2016
    যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো…

    ডিসেম্বর, ২০১৮।
    জুলিয়েন ডে স্কুল, কল্যাণীর তিনতলার একটি খোলামেলা ক্লাসঘর। শীতের সকালে গাঢ় চকোলেট বাদামি রঙের ব্লেজারে সেজে চুপচাপ সামনে বসে রয়েছে সারি সারি বিষণ্ণ কিশোর মুখেরা। মাথা নীচু, চোখে জল। সামনে অপরাধী মুখে দাঁড়িয়ে শিক্ষিকা। 
    "তোরা এভাবে কাঁদলে কী করে হবে?"
    উত্তর নেই। জলে ভরা চোখেরা মুঠি শক্ত করছে।
    "শীতের ছুটি পড়ছে, আনন্দ করবি। কাঁদছিস কেন, কী মুশকিল!"
    "স্কুল খুলে তোমায় দেখতে পাব না আর? তুমি ক্লাসটিচার থাকবে না? কে পড়াবে আমাদের?"
    শিক্ষিকা মাথা চুলকে বলছেন, "কে জানে, পেতেও পারিস। জয়েনিংটা দিক। আর আমার ফোন নম্বর তো রইল। কিছু অসুবিধা হলে ফোন করবি।"
    "ড্যাফোডিলস কে পড়াবে? ওটা বাকি আছে।"
    "তোদের এত বড় স্কুলে টিচারের অভাব?"
    "তুমি শুনেছ, টিচাররা এইভাবে বছরের মাঝখানে ক্লাস ছেড়ে চলে যাচ্ছে? আমরা তোমার কাছেই পড়ব। তুমি যাবে না।"

    জানুয়ারি, ২০১৯।
    ছুটির পর স্কুল খুলেছে। শিক্ষিকার জয়েনিং এসে যাচ্ছে শিগগিরই। এসএলএসটি পিজির পোস্টিং এসেছে আগেই। বাবা অসুস্থ, যা বোঝা যাচ্ছে, টার্মিনালি অসুস্থ, বাড়ির কাছে থাকাই সুবিধা। পরিবারের মানুষকে দেখার অন্য মানুষ নেই। ফলে, পিজি ছেড়ে একটু কম স্যালারিতে ইউজি লেভেলের চাকরি বেছে নিয়েছেন তিনি। তারই জয়েনিং সামনে। আবেগ বুকে রেখে তিনি খালি করছেন ভরা কাবার্ড, খাতা, বইপত্র। সারেন্ডার করছেন আই কার্ড। জমা দিচ্ছেন রেজিগনেশন। যাঁদের তিনি পড়িয়েছেন এতদিন, তাঁরা কেউ কাঁদছে, কেউ অভিমান করছে, কেউ গলা জড়িয়ে ধরছে পিছন থেকে, কেউ কেউ তৈরি করছে ফেয়ারওয়েল কেক আর কার্ড। আবার কেউ কেউ সেদিন স্কুলেই অনুপস্থিত। হোয়াটসঅ্যাপে এসে গেছে সেই দামালদের বড্ড চুপচাপ বার্তা, "যেদিন স্কুলে তোমার শেষ দিন, সেদিন আমি আর স্কুল আসতে পারলাম না, মিস। বাড়িতে গিয়ে দেখা করে আসব।"
    আর, কাজের ফাঁকে, সিঁড়ির ধারে, স্টাফরুমের বাইরে -
    "চলে যাচ্ছ?"
    "চলেই গেলে শেষ অবধি?"
    প্রিন্সিপালের অফিসে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের চিঠি জমা দেওয়ার মুহূর্ত। প্রিন্সিপাল হাত বাড়িয়ে চিঠি নিচ্ছেন, শিক্ষিকার দিকে স্থির তাকিয়ে বলছেন,
    "উইথ অল মাই হার্ট, সহেলী, লেট মি টেল ইউ দিস, আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু অ্যাকসেপ্ট দিস। বাট আই কান্ট। আই হ্যাভ টু লেট ইউ গো। ইটস দ্য কোয়েশ্চেন অফ ইওর ফিউচার। দিস জব কান্ট অফার হোয়াট আ গভর্নমেন্ট জব ক্যান। বাট, ইয়েস, ইফ ইউ এভার উইশ টু কাম ব্যাক, দ্য ডোর অফ জুলিয়েন ডে স্কুল উইল বী ওপেন ফর ইউ, অ্যাট লিস্ট, টিল আয়াম হিয়ার অ্যাজ দ্য প্রিন্সিপাল। উইশ ইউ গুড লাক।"

    সেদিন জানতাম, যোগ্যতায় চাকরি করতে যাচ্ছি। আজ মনে হয়, ভাগ্যটাই হয়তো সব। ভাগ্য, বা দুর্ভাগ্য, যাই বলি। জীবনে যতবার ছাত্রছাত্রীরা পা ছুঁতে এসেছে, দু'হাত দিয়ে বুকে টেনে ধরেছি। আজও, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে, হঠাৎ করে "মিইইইইস", বা "ম্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যাম" বলে কেউ কেউ ছুটে এসে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে গত পরশু অবধি উত্তর চব্বিশ পরগনার যে মফঃস্বলটি আমার কর্মক্ষেত্র ছিল, সেখানে স্কুল থেকে স্টেশন অবধি ফেরার যে হাঁটার পথটুকু, তাতেও, মাঝে মাঝেই সামনে "ম্যাডাআআআআম" ঘ্যাঁচ করে ব্রেক চেপে দাঁড়িয়ে পড়ত ব্যস্ত সাইকেলরা। তার আরোহীদের মুখে নতুন ওঠা দাড়ি বেশ ভরাট। ভরা বৃষ্টিতেও তারা কাদা লাগা বর্ষার জুতো নীচু হয়ে টুক করে ছুঁয়ে ফেলত বাধা দেবার আগেই।
    "আঃ, কী করছিস কী, ওতে ধুলো-কাদা!"
    "ধুলোটাই খুঁজছি ম্যাডাম!"

    খবরে যখনই দেখি, ছাত্র-শিক্ষক সংঘর্ষ, আমার আটপৌরে শিক্ষকমন ত্রস্ত হয়, ব্যথিত হয়। সারা জীবন হয়ে এসেছে। আমি এত ঢালাও ভালোবাসা পেয়েছি; আর এমন আটপৌরেভাবেই ক্লাস নিয়ে এসেছি বরাবর, আমি অন্তরেই জেনে এসেছি, আমি সন্তানস্নেহে ছাত্রছাত্রীদের পড়াই। বইয়ের পৃষ্ঠা ওল্টাতে ওল্টাতে আলগা হয়ে আসা খোঁপার কাঁটা ঠিক করে নিই, ইচ্ছে হলে সারা ঘর ঘুরে পড়াই, ইচ্ছে হলে একটু বসি, ইচ্ছে হলে পড়ানোর পরে পাঁচ মিনিট গল্প করি। পড়ানোর আনন্দে পড়িয়েছি, আর শাসনও যা করেছি, ঐ, যতটুকু নিতান্ত প্রয়োজন মনে হয়েছে। ওদের বেশি বকে ফেলে নিজেই মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছি, আর মনে মনে হেসে ফেলেছি, যে আমার আর কড়া দিদিমণি হওয়া হয়ে উঠল না।

    আজ জানছি, আমার তো দিদিমণিই হয়ে ওঠা হয়নি। আমার এ কর্মক্ষেত্রে সেই যখন জয়েন করি পাঁচ বছর আগে, সেখানে দীর্ঘ প্রায় ছ'বছর ইংরেজির কোনো স্থায়ী শিক্ষক নেই। ক্লাসঘরে ঢুকে পড়াতে গিয়ে দেখতে পেলাম, মুখে ইংরাজি নিয়ে কেবল ভয়ের ছাপ। কিছু জিজ্ঞেস করলেও সংকোচে কেউ উত্তর দিতে চাইছে না। মাসখানেকের মধ্যে সমীকরণ পাল্টে গেল। ক্লাসে যেতে পাঁচ মিনিট লেট হলে, কচিকাঁচা মুখেরা উঁকি দিত স্টাফরুমে,
    "ম্যাডাম? আসবেন তো?" 

    এই যে আসবেন তো ম্যাডাম? বা, আজ একটা গল্প শোনাবে? আজকে একটা ফ্রি পিরিয়ড প্লিজ…. এসব দাবির অমোঘ আবদার কোনোদিন ঠেকাতে পারিনি। প্রথম সারির ইংরাজি মাধ্যম আইসিএসই স্কুল থেকে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে ইংরাজি (সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ) শিক্ষিকা হয়ে যোগ দেবার পরে গল্পচ্ছলে পড়িয়ে পড়িয়ে কেবল তাদের ইংরেজির ভয় কাটাবার চেষ্টা করে গেছি। একটু যদি পাশের হার বাড়ে, একটু যদি লিখে আসে কম্পোজিশন, একটু যদি ড্রপ আউট কম করে! স্কুলের দায়িত্ব, মাধ্যমিকের দায়দায়িত্ব, যা যা যখন এসেছে, আনন্দের সাথে, অক্লান্তভাবে করে যেতে চেষ্টা করেছি, যাতে ধুঁকতে থাকা শিক্ষাব্যবস্থা একটু হলেও উঠে দাঁড়াতে পারে, যাতে একটু হলেও যুদ্ধ করে নেওয়া যায় "সরকারি স্কুলে তো পড়াশোনা হয় না" - এ গর্জনের বিরুদ্ধে। 

    আর ইতিমধ্যে আমার ফোন, আমার ইনবক্স, আমার ঘর ভরে যেতে থেকেছে। নিজের ছাত্রাবস্থায়ও যাদের পড়িয়েছি, তাদেরও কিন্তু মেসেজ আসে আজও,
    "আজ বাড়ি আছো? আসব?"
    "নতুন গার্লফ্রেন্ড হয়েছে, মিস। এই যে ছবি। আমরা কত ঘুরলাম ভ্যালেন্টাইনস ডে'তে!"
    "তোমার লেখা ভীষণ ইন্সপায়ার করে, অন্য ভাবে ভাবি লেখাগুলো পড়তে পড়তে, মিস!"
    "একটা সমস্যায় পড়েছি, একটু সল্যুশন চাই, কবে সময় দিতে পারবে?"

    আমার পুরনো ছাত্রী অদিতি বলত, দিদি, মাধ্যমিকের আগে সব্বাই যখন ভীষণ ভয় দেখাচ্ছে, সব টিচার বলছেন দিনরাত এক করে পড়ে যাও, তুমি বলেছিলে, পড়বি তো বটেই, কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষায় বসবি। তাতে যেমন হওয়ার হবে। এমনিও খুব বেশি কিছু এতে আসে যায় না। আর মনে রাখিস, জীবনের সব চাইতে বড় পরীক্ষাগুলো খাতায় কলমে হয় না। এ কথাটা আমি সারা জীবন মনে রাখব।

    ঠিকই। এ কথা কেবল অদিতিকে কেন, আমি আমার সব ছাত্রছাত্রীদের সারাটা জীবন বলে এসেছি। এ কথা বলতে বলতেই ২০১৬ সালের পুজোর পরে সারাটা দিন জুলিয়েন ডে স্কুলে পড়িয়ে এসে, সন্ধেয় ব্যাগ ভরে নিয়ে আসা ওদের পেন্ডিং খাতাগুলো দেখে, আমি গভীর রাতে বসতাম পড়াশুনো নিয়ে। এসএলএসটি ২০১৬। জীবনের সব পরীক্ষা সত্যিই খাতায় কলমে হয় না। যাদের জন্যে আমি আজ শিক্ষক, যাদের ভালোবাসা আমায় ভরিয়ে তুলেছে এই এতগুলো বছর, যাদের ভ্যালিডেশন আমার সব চাইতে বড় পুরস্কার, তাদের সবাইকে বলতে চাই - মহামান্য আদালত তোমাদের মিস/ম্যাম/ম্যাডামকে যোগ্য বলে মনে করেননি। ২০১৬ এসএলএসটি দুর্নীতি মামলায় ৫৫০০ জনের বেশি কিছু অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়ার সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়ে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট গত পরশু সর্বমোট ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। 

    মহামান্য আদালত, পরীক্ষা দিয়ে, ইন্টারভিউ দিয়ে, পাওয়া যে চাকরি, তার শুরুতেই ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন হয়েছিল। আমি, এবং আমার মত আরও ১৯০০০ শিক্ষক এই দুর্নীতি মামলা শুরু হওয়ার পর প্রথম ধাক্কা খান এ জেনে যে তাঁদের র‍্যাংক শুরু থেকেই পিছিয়ে গেছে, পোস্টিং দূরে হয়েছে, কারণ প্যানেলে অনেক অযোগ্য প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। অনেকে ওয়েটলিস্টেড রয়ে গেছেন যোগ্য হয়েও, চাকরি পাননি। তাঁরা আজও বেকার। আর এরপর শুরু হয় পরীক্ষা। ভেরিফায়েড ডকুমেন্টসও আমাদের বারংবার ভেরিফিকেশনে দিতে হয়েছে। আমাদের কনফার্মেশন প্রক্রিয়া হোল্ড করা হয়েছে। সিবিআইয়ের তদন্তে বারংবার জমা দিয়ে আসা ডকুমেন্টস আবারও জমা দিয়ে এসেছি। বাড়ি ফিরে, অপমানে অভুক্ত থেকেছি। যাঁরা দুর্নীতি কী হয়েছে, কতটা হয়েছে না জেনে, দিনরাত এক করে পড়াশোনা করে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে সে পরীক্ষায় পাশ করেছেন, তাঁরা যে সত্যিই জাল নন, যোগ্য প্রার্থী, পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের পরেও তাঁদের সে প্রমাণ বারংবার দিতে হয়েছে। ২০১৬ মানেই দুর্নীতি। ২০১৬ মানেই টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া। মহামান্য আদালত, আমার মতো এমন ১৯০০০ শিক্ষক, এই কদর্য দুর্নীতির কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি গায়ে মেখেও প্রতিটি দিন ক্লাসরুমে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, পড়িয়েছেন, সিলেবাস শেষ করেছেন, হাসিমুখে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার যে সহকর্মী সহযোদ্ধা আজ এই মুহূর্তে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তিনি কিছুদিন আগে অবধিও রোজা করতে করতে, একটি ফোঁটা জল মুখে না দিয়ে, চূড়ান্ত সিনসিয়ারিটি নিয়ে নাগাড়ে ফিজিক্স এবং অঙ্ক ক্লাস নিয়ে গেছেন। বারংবার প্রমাণ দিয়েও, এবং আমাদের বিরুদ্ধে কোনো রকমের কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও আজ ইন্ডিয়ান পেনাল কোড দেশে আইনের রুলবুক হওয়া সত্ত্বেও আমার মত ১৯০০০ নিরপরাধ শিক্ষককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা যোগ্য নই। আমাদের শিক্ষকতার যোগ্যতা নেই। 

    আমার, আমাদের, যে ছাত্রছাত্রীরা গরমের ছুটির পর স্কুল খুললে নিষ্পাপ মুখে এসে আমাদের সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করে যাবে কেন ওদের স্যার বা ম্যাডাম আসছেন না, কেন ইংরেজি ক্লাস হয় না, কেন ফিজিক্স ক্লাস হয় না, কেন অঙ্ক ক্লাস হয় না, তারা কোনোদিন আমাদের অযোগ্য মনে করেছে কিনা, একবার খতিয়ে দেখবেন, মহামান্য আদালত? আমার মা নামী গৃহশিক্ষিকা। আমার বাবা একজন সরকারি অফিসার ছিলেন। আমার দাদু ঠাম্মা ছিলেন এগ্রিকালচারে। এ জীবনে আজ অবধি আমি কোনো দুর্নীতির আশ্রয় নিইনি। কোনো প্রয়োজনও পড়েনি। পিএসসির কনফার্মড চাকরি আমি এই চাকরিতে জয়েন করার পর নিইনি, পিএসসিতে ফার্স্ট হয়েও নয়, কারণ, সে পোস্টিং ভীষণ দূরে ছিল। পরিবারের প্রয়োজনকে আগে রেখে এ চাকরিটিই নিয়েছিলাম। আমার মতন আরও এমন হাজার হাজার শিক্ষক রয়েছেন, যাঁদের যোগ্যতার প্রমাণ তাঁদের কাজ, তাঁদের দেখা খাতা, তাঁদের ক্লাস লেকচার, তাঁদের ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। আজ এক কথায় সাড়ে পাঁচ হাজার জনের দুর্নীতির দায় বাকি ১৯০০০ এর উপর ঠেলে দেওয়া হল। জানিয়ে দেওয়া হল, সব নিয়োগ অবৈধ। অথচ, সবকটিই যে অবৈধ নয়, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠই বৈধ, তা আদালতের রায়ের কপিতে স্পষ্ট। আর যা অবৈধ, সেই অবৈধতা যারা করল, সেই দুর্নীতিতে যারা যুক্ত, তারা তো এখনও মাথা উঁচু করেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

    তাতে কী? মহামান্য আদালত, তাতে আপনার কী? সৎ শিক্ষক, সৎ নাগরিক আমরা; তাদের গায়ে আপনারা ছুঁড়ে দিলেন দুর্নীতিবাজদের জড়ো করা সবটুকু কাদা। আমার শিক্ষকতা আমাকে যে প্রবল সম্মান দিয়েছে, তা ধুলোয় মিশিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায়। আমার জীবন, জীবিকা, রুজিরুটি, ভালোলাগা, আমার মতন এমন হাজার হাজার শিক্ষকের রুজিরুটি কেড়ে নিয়ে সেই আপামর ফুঁসতে থাকা জনগণের সামনে আমাদের নগ্ন করে ছেড়ে দিলেন, যাঁরা আজও মনে করেন বিচার মানে জাস্টিস। বিচার মানে ন্যায়। 

    আমার আজ মনে পড়ছে শুধু একটিই কথা, বহুদিন আগে পড়েছিলাম। কমলাকান্তের দপ্তরের লাইন, বঙ্কিমের লেখা। 

    "আইন! সে তো"....

    আর মনে পড়ছে একটি বহুবার শেয়ারিত কোটেশন, যাতে আমার প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা আমায় বহু, বহুবার ট্যাগ করেছে, 

    "ট্যাগ দি ইংলিশ টিচার হু চেঞ্জড ইয়োর লাইফ"....

    লিখেছে, Saheli Sengupta,  আমার দিদি। আমার দেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা, অন্যতম শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইস্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অবধি অসাধারণ উজ্জ্বল যার পরীক্ষার মানপত্র। বিগত ছয় বছর মফ:স্বলের বাংলা মাধ্যম স্কুলে, অসংখ্য প্রথম প্রজন্মের দরিদ্র শিক্ষার্থীকে সন্তানস্নেহে আগলে রেখেছে যে। শুধু ভাষা-সাহিত্য শেখায়নি, শিখিয়েছে মানবতার পাঠ, গড়েছে নাগরিক রোজ। আজ রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে হওয়া এই ভয়াবহ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম বলি সে৷
  • পাপাঙ্গুল | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৩০522861
  • র২হ , জলসমস্যা নিয়ে লুরুর এইসব আলোকপ্রাপ্তরা কোনো বক্তব্য রাখেন নি?
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:০১522860
  • ঘুষ নিয়েছিল যারা এই সাদাখাতাওয়ালাদের থেকে, তাদের ধরা হবে না? ওরাই তো ঢোকালো এদের? তাদের অপরাধ কম কীসের?
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:2754:c43b:f012:***:*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৫২522859
  • লসাগুবাবু, পয়েন্টটা ছিল অপরাধের ক্ষেত্রে জন্য মার্কেট রেটের চেয়ে বেশী সুদ নেবার চল পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও আছে। যেমন ট্যাক্স ফাঁকি দিলে আমেরিকার সরকার ৮% সুদ নেয় যদিও মার্কেটে কোথাও এত সুদ পাওয়া যায় না।
     
    ড্রাকোনিয়ান। অবশ্যই। কিন্তু আশ্চর্য্যের নয়।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২১522858
  • কিছুদিন আগে খবরে শোনা যাচ্ছিল ২০১৪ না কত সালের পর থেকে যারা স্কুলে চাকরিতে ঢুকেছে, টেট বা এসএসসি দিয়ে, তাদের সবারই নাকি ঘাপলা ছিল। সেসব ব্যাপার যদি উঠতে থাকে আবার ...
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৭522857
  • তার উপরে এরা যদি ঘুষ দিয়ে ঢুকে থাকে, সেটার অ্যামাউন্ট কত ছিল, কে বা কারা নিয়েছিল... এইসব নানা জটিল ব্যাপার
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৪522856
  • এতো প্রচুর! ১২% তো অনেক। মানে ধরুন সব মিলিয়ে মোটামুটি চল্লিশ লাখ যদি আসল হয়, তাহলে সুদই তো দাঁড়াবে ...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত