এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • ভাটিয়ালি

  • এ হল কথা চালাচালির পাতা। খোলামেলা আড্ডা দিন। ঝপাঝপ লিখুন। অন্যের পোস্টের টপাটপ উত্তর দিন। এই পাতার কোনো বিষয়বস্তু নেই। যে যা খুশি লেখেন, লিখেই চলেন। ইয়ার্কি মারেন, গম্ভীর কথা বলেন, তর্ক করেন, ফাটিয়ে হাসেন, কেঁদে ভাসান, এমনকি রেগে পাতা ছেড়ে চলেও যান।
    যা খুশি লিখবেন। লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়। এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই। সাজানো বাগান নয়, ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি। এই হল আমাদের অনলাইন কমিউনিটি ঠেক। আপনিও জমে যান। বাংলা লেখা দেখবেন জলের মতো সোজা। আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি।
  • আর জি কর গুরুভার আমার গুরু গুরুতে নতুন? বন্ধুদের জানান
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ১৯:০৯498347
  • ইউক্রেন, রাশিয়া ও ডায়াবলিক মনন
    শাহআব আহমেদ লিখেছেন।
    (রাশিয়ার প্রাক্তন, এখন আমেরিকাবাসী।)

    রুশ ও ইউক্রেনিয়ান এই দুই জাতির মধ্যে বিভাজন ঘটানোর প্রয়োজন ছিলো আমেরিকার, যাতে রাশিয়া, ইউক্রেনও বেলারুশিয়া আর কখনও একজোটে আবদ্ধ হতে না পারে। তাই এই ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ ঠাণ্ডামাথার পুতিনের মাথাআউলিয়ে শুরু করিয়েছে পশ্চিম। যেহেতু সারা বিশ্বের মিডিয়া পশ্চিমের হাতে, তাই পুতিন আজ ভিলেন ( আমিতার সমর্থক নই), কিন্তু গণহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সে নয়, বরং আমেরিকা ও তার তাবৎ তাবেদার গোষ্ঠি। কিন্তুতাদের বিরুদ্ধে কে বলবে, বা বললেই কে শুনবে?
    আজকের সাপ্তাহিক বাঙালীতে এ নিয়ে আমার একটি লেখা।
    ইউক্রেন, রাশিয়া ও ডায়াবলিক মনন 
    শাহাব আহমেদ
    রাশিয়া অন্যায়ভাবে ইউক্রেন ও ইউক্রেনের জনগণকে ধ্বংস করছে। অপরাধ- দেশটি ন্যাটোতে যোগ দিতেচেয়েছিল। 
    একটি দেশ কি তার নিজের পছন্দমত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সে কার সাথে বন্ধুত্ব করবে, কার সাথে করবে না?
    অবশ্যই পারে।
    আমরা তো ইওটোপিয়ান সমাজে বাস করি, তাই না? যেখানে বিগত দশহাজার বা দশলক্ষ বছরেও মানুষ কোনোঅন্যায় করে নাই, বড়দেশ তার প্রতিবেশি ছোট দেশকে গ্রাস করে নাই, শোষক নাই, শোষিত নাই, চারিদিকে বিরাজকরেছে একচ্ছত্র ন্যায়, শান্তি, আর পছন্দের স্বাধীনতা। এখানে মন্দাকিনী নদী বয় কুলুকুলু, অপ্সরিরা নাচে, ঘনসবুজপ্রান্তরে কামধেনু ঘাস খায়, অশ্বিনীকুমারদ্বয় দেবতাদের পাত্রে সযত্নে সোমরস ঢালে, আর গন্ধর্বরা ডানে বামেসঙ্গম করে, গান গায় আর মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে।
    আমরা দেবতা নই, অন্তত গন্ধর্ব, তাই তো?
    এবং ইউক্রেন রাশিয়া আমেরিকা ইংল্যান্ড জার্মানি ফ্রান্স চীন জাপান সবাই সেই মহান ইওটোপীয়ার সদস্য। 
    “প্রতিটি দেশের তার নিজের মত চলার অধিকার আছে” এটা এই দেশগুলোই বলে। বলে আমাকে, তোমাকে, তাকেএবং সর্বাপরি আমাকে ধাপ্পা দেবার জন্য। আমরা আসলে বাস্তব পৃথিবীতে বাস করি যেখানে এই বাক্যটি একটিসুবর্ণ মুখোশ, প্রয়োজনে তারা তা পরে, প্রয়োজনে নামিয়ে রাখে। তারা যখন চিলিতে গিয়ে আয়েন্দেকে হত্যা করে, বাবাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে, ইরাকে সাদ্দাম হোসেনকে, লিবিয়ায় মোয়াম্মার গাদ্দাফিকে…… বা তারা যখন জাপানে এটমবোমা ফেলে, ভিয়েতনামে , আফগানিস্তানে বা সার্বিয়ায়….. মানুষ মারে, তখন কিন্তু এই কথা বলে না। এ কথাতাদের মনেও থাকে না। আমরা যারা বিবেকবান ও বিজ্ঞ, আমরা কিন্তু সবসময় বলি। কিন্তু সত্য হলো, একচ্ছত্রক্ষমতার পৃথিবীতে যদি ১৬০টি দেশের প্রতিটি মিডিয়ায় তারা দিন রাত, রাত দিন, সকাল সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা ওসকাল, একই সাথে, একই মিথ্যা পুনরাবৃত্তি করে, মিথ্যা ছবি বা ভিডিও দেখায়, তারা কি দানবকে দেবতা ওদেবতাকে দানব বানাতে সক্ষম নয়? 
    অবশ্যই। 
    তীক্ষ্ন মনন ও জ্ঞানের আধিক্য দিয়ে আমরা তর্ক দিয়ে উড়িয়ে দিতে পারি। কিন্তু উত্তরটি তারপরেও অবশ্যই, হাজারবার এবং লক্ষবার অবশ্যই। দানব ও দেবতা সে-ই, যাকে পৃথিবীর মোড়লরা পছন্দমত চিহ্নায়িত করে।
    ন্যাটো ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ওয়ারশ জোটের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
    এখন ন্যাটোর শত্রু কে?
    রাশিয়া।
    কিন্তু রাশিয়ার তো কোনো জোট নেই, তারা সমাজতন্ত্রিক ও নয়, পৃথিবীকে পুঁজিবাদমুক্ত করার শ্লোগানও তারা আরদেয় না। তারা অন্য সবার মতই লুটপাট করে, মিথ্যা বলে এবং জনসাধারণকে শোষণ করে ছোবড়া করে দেয়। তারাতো এখন সব ধার্মিকের মাসতুত ভাই! তবে চুক্তি ভেঙে ন্যাটো কেন সম্প্রসারিত করে চারিদিক দিয়ে রাশিয়াকে ঘিরেফেলতে চায়?
    কেন তাদের ইউক্রেন দরকার?
    প্রতিবার কি রাশিয়া পোল্যান্ড ও ইউক্রেন দিয়ে আক্রান্ত হয়নি? পৃথিবী স্বীকার করুক আর না করুক, ইউক্রেনেরন্যাটোতে যোগ দেয়া হলো রাশিয়ার অস্তিত্বের জন্য বিশাল হুমকি। ২০০৪ সালের দুর্বল রাশিয়া পোল্যান্ড, লিথুনিয়া, লাতভিয়া ও এস্টোনিয়ার ন্যাটোতে যোগদান মেনে নিতে বাধ্য হলেও, ২০২২ সালের তুলনামূলকভাবেসবল রাশিয়া তা মেনে নেবে? 
    ইওটোপিয়ান বলবে- “হ্যাঁ, অবশ্যই, ন্যায় তো তাই।” কিন্তু বাস্তববাদীরা বলবে, “না, মেনে নেবে না।” এবং এ নিয়েবিস্মিত বা বোকার ভান করে কোনো লাভ নেই।
    রাশিয়া ক্রিমিয়া কেড়ে নিয়েছে? 
    হ্যাঁ, ১৭৭৪ সালে। অটোমানদের কাছ থেকে, তীব্র যুদ্ধ কর, বহু জীবনের বিনিময়ে। 
    ১৯৫৪ সালে ইউক্রেনের ক্রুশ্চেভ মদ্যপান করে, রাশিয়ার জনগণ বা কাউকে জিজ্ঞেস না করে, ইতিহাসের প্রতিবৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া উপহার দিয়েছিল। 
    কবি হাফিজ নাকি প্রেমিকার গালের তিলের জন্য তৈমুরের সমরখন্দ বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তৈমুর সৈন্য পাঠিয়েহাফিজকে বেঁধে এনে প্রশ্ন করেছিলেন, “তোমার এতবড় সাহস, যে সাম্রাজ্য আমি এত রক্তের বিনিময়ে জয় করেছি, তুমি তা কোথাকার কোন্ মেয়ের গালের তিলের জন্য বিলিয়ে দিতে চাও!”
    হাফিজ কুর্নিশ করে বলেছিলেন, “মহারাজ এই অর্বাচীনতার জন্যই তো আমার এই দীন দশা!”
    ক্রুশ্চেভ তো কোনো মেয়ের জন্য দিওয়ানা হয়ে তা করেনি, মাতাল অবস্থায় করেছিল। তার  ভাগ্য ভালো যে, সেইহিরকরাজার দেশে তাকে প্রশ্ন করার বা তার গর্দান কাটার কোনো তৈমুর ছিল না।
    ক্রিমিয়া ছাড়া কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া কানা, তার নিজের দেশ রক্ষা করার ক্ষমতাও থাকে না। তারপরেও ১৯৯১ সালেসোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর তারা উচ্চবাচ্য করেনি। ইউক্রেন ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ, হাজার বছরের ভ্রাতৃত্ব, একইধর্ম, একই শ্লাভিয়ান শিকড়। তারা ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলার পে করে ক্রিমিয়া লিজ নিয়ে কাজ চালাবে।
    কিন্তু না, হাজার বছরে প্রোথিত সেই শিকড় উৎপাটন করে, লাখো লাখো রাশিয়ান, ইহুদি, ইউক্রেনিয়ান হত্যাকারীনাৎসি কোলাবরেটর স্তেপান বান্দেরার সমর্থকদের কাঁধে ভর দিয়ে আসা নেতৃত্ব যখন সেই ক্রিমিয়ায় ন্যাটোকে ঘাঁটিবসাতে দিতে চায়, তখন রাশিয়ার সামনে পথ কী থাকে?
    আমেরিকা কী করতো? ইংল্যান্ড? জার্মানি? ফ্রান্স? চীন? জাপান?
    সবাই যা করতো, রাশিয়া তা-ই করেছে, তাহলে অন্যায়টা কোথায়? অন্যায়টা হল তাবৎ দুনিয়ার সাথে সাথেআমাদেরও চিন্তার ইওটোপিয়ানায়।
    আমি এই যুদ্ধ সমর্থন করি? হলোই তা না, বা হলোই তা হ্যাঁ, কিন্ত তাতে কী আসে যায়? আমার ইচ্ছা অনিচ্ছায়সূর্য কি পশ্চিমদিক থেকে উঠবে?  
    কিন্তু আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব আগামিকাল যদি পুবকে পশ্চিম বলা শুরু করে তাদের সমস্ত মিডিয়ায়, স্কুলেকলেজে এবং ধর্মগ্রন্থে, তাহলে কিন্তু ঠিকই পশ্চিম দিকেই সূর্য উঠবে।
    তাই, বুদ্ধিমানের বাপের, বা বাপের বাপের চেয়ে  বুদ্ধিমান হলেও আমাদের মননের ক্ষমতা, মেধা, বুদ্ধিবৃত্তি, টনটনেন্যায়-অন্যায় বোধ, মানবিকতা, মানুষের দুঃখে কষ্টে কেঁদে ফেলার ক্ষমতা বা অক্ষমতা আসলে তারাই মোল্ড করে।তারাই অতি সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্মভাবে তাদের মত ভাবতে, বিচার করতে, বিশ্লেষণ করতে ও ব্যখ্যা করতে শেখায়। আমরাযখন ভাবি এটা আমার সম্পূর্ণ নিজস্ব ও মৌলিক মতামত, শয়তান হেসে লুটোপুটি খায়। 
    তাই পাকিস্থানীরা যখন বাংলাদেশে গণহত্যা চালায় তখন পৃথিবী একাট্টা হয়ে হিংস্র গর্জন তুলে বয়কট ঘোষণাকরে না, আমেরিকা যখন দেশে দেশে গিয়ে বোমা ফেলে ইওরোপের সব “সিউডো গণতন্ত্র” মুখে শুধু কুলুপই মেরেথাকে না, বরং আমেরিকার সাহায্যে এগিয়ে যায়। “সব শেয়ালের এক রা” এবং আমরা তো শেয়ালশা পীরেরইদরগার মুরিদ। কোনো না শেয়ালের প্রথম “রা” টি তো তুলতে হবে, অন্য সবার তাতে যোগ দেবার জন্য, যদি কেউকোনো “রা” না করে, তার মানে ঘটনা ঘটে নাই। যেমন ইউক্রেনে আমেরিকার ধ্বংসাত্বক “বায়োল্যাব” নিয়ে কেউকোনো “রা” করছে না,
    তাই আমরাও চুপ করে আছি। অমন একটা ল্যাব পঞ্চাশটা ইওরোপকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে, কিন্তু ওটা যেআমেরিকার!  
    বেশি দিন হয়নি যখন আমেরিকা সার্বিয়ায় গণহত্যা চালিয়েছে। সেটাও তো ইউক্রেনের চেয়ে কম ইওরোপ নয় কিন্তুতখন সবকিছু চুপচাপ ছিল কেন? কারণ ওটা করেছে বিল ক্লিনটন। বৃটিশ, জার্মান, ফরাসি বা আমেরিকানরাঅন্যায় করে নাকি? 
    করেছে কখনও?  
    সিএনএন বাইবেল ছুঁয়ে বলবে, করে নাই, কোনো দিনও না। এবং আমরা বিশ্বাস করবো। 
    কিন্তু পুতিন সোনার দেশ ইউক্রেন ধ্বংস করে ফেলছে, তাই দেখে কত শোরগোল, মানুষ মরছে, হাসপাতালে, মাতৃসদনে বোমা পড়ছে, বিল্ডিংগুলো ধ্বংস হচ্ছে, আমরা বিচলিত, মর্মাহত এবং ইউক্রেনের জনগণের প্রতিসহানুভূতিশীল এবং পুতিনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। এটা আমাদের শেখানো মানবিকতাবোধ, আমরা নিজেদের যতটামানবিক মনে করি, তারচেয়ে অনেক বেশি অমানবিক আমরা, অনেক বেশি সুবিধাবাদী ও খল। আমরা একইভাবেসোচ্চার নই লেবানিজ, প্যালেস্টাইনিয়ান, ইয়েমেনি, আফগান বা সিরিয়ানদের কষ্টে। কারণ ওদের চামড়া শাদা নয়, চোখ ব্লু নয়, চুল ফর্সা নয়, ওদের অশ্রুগুলো কদর্য, রক্তও নীল নয়, বরং অসভ্য লাল, অবিকল রাশিয়ানদের রক্তও লাল পতাকার মত।
    পুতিন বলে, সে ইউক্রেনকে “ডি নাজিফাই” করবে। এবং সিএনএন নিষ্পাপ প্রশ্ন করে, “জেলেনস্কি তো ইহুদি, সেনাৎসি হয় কী করে?”
    নির্বোধের জন্য দারুন প্রশ্ন! 
    যেন ইহুদিরা নাৎসি হতে পারে না, যেন পৌনে এক শতক ধরে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্যালেস্টাইনীদের হত্যা করে চলছেনা অবিকল নাৎসি কায়দায়। 
    ইউক্রেনের জনগণের সিংহভাগই রাশিয়ানদের সাথে সন্মান ও সদ্ভাবের সম্পর্ক রক্ষা করে এসেছে চিরকাল। শুধুপশ্চিম ইউক্রেনের ল’ভিভ, ইভানা ফ্রান্কভস্কসহ কয়েকটি পোলিশ বর্ডার সংযুক্ত শহরের অধিবাসিরা ছাড়া। ওরাসব সময়ই ছিল কট্টর রুশবিরোধী। আমরা তা সোভিয়েত ইউনিয়নেও দেখেছি। ওরা বেশিরভাগ সময় ছিলরাশিয়ার বাইরে, পোলিশ, লিথুনিয়ান ও হাঙ্গেরির অধীনে। রুশদের সাথে ওদের কোনো বন্ডিং নেই। স্তেপানবান্দেরার জনপ্রিয়তা ও কর্মকাণ্ডের স্থান ছিল এখানেই। রুশবিরোধী কট্টর এই ফ্যাসিবাদি শক্তিগুলো শক্তি অর্জনকরতে থাকে ইউক্রেন স্বাধীন হবার পর পর, কিন্তু ওরা ক্ষমতায় আসে ইউশেন্কোকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে জিতিয়েআনার পর। তাই প্রেসিডেন্ট হয়ে ইউশেন্কো নাৎসী বান্দেরাকে মরনোত্তর “ইউক্রেনের বীর” উপাধি দেয় ২০১০সালে, পোস্টাল স্ট্যাম্প বের করে তার নামে। ইওরোপ আমেরিকার ক্ষমতাচক্র একজন নাৎসির এই পূনর্জন্মে চুপকরে থাকে। কিন্তু রাশিয়ানরা ২ কোটি মানুষ হারিয়েছে নাৎসিদের হাতে, সুতরাং তাদের জন্য নাৎসি যা আমেরিকাজার্মানি ইংল্যান্ডের জন্য তা নয়। তাদের কাছে মিত্র নাৎসি হলেও মিত্রই। যাদের এ নিয়ে সন্দেহ আছে, তারা গুগলে“স্তেপান বান্দেরা” সার্চ দিলেই বর্তমান ইউক্রেনের এই বীরকে খুঁজে পাবে এবং 
    “মাইদান পিকচার্স ২০১৪” বলে সার্চ দিলেই দেখতে পাবে এই “মহান ঘাতকের” পুষ্পমুখের ছবিসহ অসংখ্য পোস্টার, ফেস্টুন এবং বিশাল বিশাল “হরাইজন্টাল” ব্যানার। ওরা ক্ষমতায় বসে দিনরাত এন্টিরুশ প্রচার প্রপাগান্ডারমাধ্যমে রুশদের প্রতি জাতিগত ঘৃণার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে ইয়ং জেনারেশন, যাদের রুশদেরসাথে কমন কোনো ইতিহাস নেই। তারা রাশিয়ার সাথে সৌহার্দ বজায় রাখতে আর ইচ্ছুক নয়। ভবিষ্যতে রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশিয়া যাতে সম্মিলিতভাবে ইওরোপের শক্তিশালী জোট হয়ে দাঁড়াত না পারে, তার জন্য পশ্চিমমরিয়া হয়ে ইউক্রেনকে ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে।
    এবং অপশক্তিগুলোই ২০১৪ সালে নির্বাচত প্রেসিডেন্টকে ন্যাটোর অস্ত্রহাতে উৎখাত করে আইন করে রুশভাষাকেরাষ্ট্রভাষার থেকে খারিজ করে দেয়, রাশিয়ানদের এবং ৪০ জন রাশিয়ানকে ওডেসার বিল্ডিংএ বন্দি করে আগুনেপুড়িয়ে মারে। আমেরিকা তার নাগরিকদের এভাবে হত্যা করতে দিতো? 
    জার্মানি?
    ইংল্যান্ড?
    এরা নাৎসী নয়? তাহলে নাৎসিদের চেহারা কেমন? এদের কাঁধে ভর করা জেলেনস্কির কি এর চেয়ে বড় নাৎসি হবারপ্রয়োজন আছে? যাদের বান্দেরা বীর, তাদেরই তো বীর জেলেনস্কি। এবং তারাই বাধ্য করে পূর্ব ইউক্রেনেরাশিয়ানদের অস্ত্রহাতে নিয়ে রুখে দাঁড়াতে এবং দানেৎস্ক এবং লুহান’স্কে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে। ইউক্রেনসেখানে যুদ্ধ ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ২০১৪ সাল থেকে কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের এ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। রাশিয়ানেররক্ততো ইউক্রেনিয়ানের রক্ত নয়।
    ফিরে আসি প্রতিটি দেশের নিজস্ব পছন্দের প্রসঙ্গে। ধরা যাক, আগামিকাল বা পরশু বা তারপরের দিন বা পরেরবছর সুবোধ শ্যাম চাচা বা দয়ালু চীন মামা এসে আমাদের দেশকে বলল, “তোমাদের সোনার পাথরবাটি দেব এবংউন্নতি ও সাফল্যের সাপের পাঁচ পা দেখাবো, যদি আমাকে ভারতের দোরগোড়ায়, তাদের দিকে তাক করে, দূর ওঅদূরপাল্লার কিছু মিসাইল বসাতে দাও।”
    ধরে নিলাম আমাদের সেই সময়ের নেতারা ডারউইনের বংশধর বুদ্ধিমান প্রাইমেট এবং তারা লেজ নাচিয়ে লাফাতেলাফাতে মিছিল করে, মিটিং করে, মিডিয়ায় দ্রাম দ্রাম দ্রিম দ্রিম ট্রাম্পেট বাজিয়ে সমস্ত হেফাজতি, জামাতী, বিএনপি, যদু, মধু, আওয়ামী একচোখা এন্টি ইন্ডিয়ানদের সংহত করে বিশাল জনমত তৈরি করে ফেলল। 
    জনগণ চায় মিসাইল আসুক, প্রতিবেশি হারামজাদাদের স্কাই দেখিয়ে দেয়া হোক। 
    এটা তো ঠিকই আছে তাই না? জনগণের নিজস্ব পছন্দের গণতান্ত্রিক অধিকার, অসুবিধা কোথায়?
    ভারত বললো, “আমাদের দোরগোড়ায় বিদেশি মিসাইল আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি, তোমরা এক পা ওআগাবে না।”
    সুবোধ শ্যাম চাচা বা দয়ালু চীন মামা বললো, “না না, আমরা তোমার জন্য মোটেও হুমকি নই, আমরা শুধুনিজেদের নিরাপদ করতে চাচ্ছি।”
    ভারত বলে, “কার থেকে নিরাপদ? আমাদের থেকে? আমরা কি মিসাইল নিয়ে তোমাদের দরজায় গিয়েছি?
    সুবোধ শ্যাম চাচা বা দয়ালু চীন মামা আকর্ণ হাসি দিয়ে বলেন, “না মানে, হে হে, বাংলাদেশ তো আমাদের মিত্র, হোক ওরা ফ্যাসিবাদী, কিন্তু মিত্র বুঝলেন না? ”
    ভারত দিনের পর দিন হুশিয়ারী দেয়া সত্ত্বেও আমাদের নেতারা লাফায়, আমাদের জনগণ কাছা খুলে পেশি দেখায়, “আমাদের দেশ, যাকে ইচ্ছা তাকে চাই, কারো কোনো নাক গলাবার অধিকার নাই।”
    উপায়হীন ভারত তার ট্যাংক নিয়ে, এয়োরোপ্লেন নিয়ে, মিসাইল নিয়ে আমাদের দেশে এসে দেশটিকে ধূলিতেমিশিয়ে দেয়, শুধু তাই নয় আমাদের দেশের স্ট্র্যাটেজিক বহু জায়গা তাদের দেশের চিরন্তন অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণাকরে। 
    আগ্রাসী কে? 
    ভারত, তাই না?
    ধ্বংস হল কে? আহা, সেই প্রশ্ন থাক! 
    শ্যাম চাচা বা চীন মামা? পেয়ারের মিত্র। তারা তো যুদ্ধ বাঁধায় নাই, যুদ্ধ বাঁধিয়েছে ভারত।” 
    সুবোধ শ্যাম চাচা বা দয়ালু চীন মামা সারা বিশ্বব্যাপী শোরগোল তুলে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিকস্যাংকশন দেয়। 
    অথচ সেটা আর আমাদের বিষয় নয়, ভারত ও সুবোধ শ্যাম চাচা বা দয়ালু চীন মামার ব্যাপার, তাদের কে মরে কেবাঁচে, কে হারে কে জিতে, তারাই বুঝবে। আমাদের “যা হইবার তা হইয়াই গেছে!”
    আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আছে? 
    অবশ্যই আছে, অন্যের কথায় লম্ফ ঝম্প করে, ধ্বংস হয়ে যাবার অধিকার থেকে  আমাদের বঞ্চিত করে কে? 
    ইউক্রেনের যেমন রাশিয়ার অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করার অধিকার আছে, রাশিয়ারও তেমনি তার নিরাপত্তানিশ্চিত করার অধিকার আছে। তার জন্য যদি প্রতিবেশিকে গ্রাস করতে হয়, করবে, ক্রাস করতে হয়, করবে, আমাদের কথা, আমাদের প্রতিবাদ এর এক বিন্দুও ব্যত্যয় ঘটাবে না।  
    অথচ রাশিয়ার দুয়ারে তুলনামূলকভাবে ছোট দেশটি ফিনল্যান্ড, সুইডেন ইত্যাদি দেশগুলোর মতই ন্যাটোর বাইরেথেকেই “ধনধান্যে পুষ্প ভরা” দেশ হতে পারতো। 
    রুশ প্রবাদ বলে, “শিষ্ট বাছুর দুই মায়ের ওলান চোষে।” শিষ্ট প্রতিবেশি হয়ে ইউক্রেন রাশিয়া
    ও পশ্চিমের দুধ পান করে অপরিসীম লাভবান হতে পারতো। কিন্তু পশ্চিমের অন্ধত্ব ও ফ্যাসিবাদী শক্তির কাঁধে ভরকরা অর্বাচীন নেতৃত্ব এতসুন্দর একটি দেশ, সুন্দর জনগোষ্ঠি ও সংস্কৃতির মহান পাদপীঠকে কতদিনের 
    জন্য ধ্বংস করল তা শুধু সময়ই বলতে পারবে।
    ইউক্রেনের জনগণের যদি কোনো মূল্য পশ্চিমাদের কাছে থাকতো তবে এভাবে উস্কানি দিয়ে যুদ্ধে নামিয়ে হঠাৎকরেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধূঁয়া তুলে সরে দাঁড়াতো না। কোনঠাসা ভাল্লুক আর উত্যক্ত পাগলা কুকুর কোনো আইনমেনে বা হ্যান্ডবুক পড়ে যুদ্ধ করে না। অস্তিত্বের যুদ্ধে তাদের কাছে অন্যায় কিছু নেই। ইউক্রেনে রাশিয়ার পরাজয়তার নিজের অস্তিত্বের বিধ্বংসন, সুতরাং পুতিন ও তার নষ্টচক্র ওই দেশটিকে ধ্বংস না করে বা নিজেরা ধ্বংস না হয়েঘরে ফিরবে বলে মনে হয় না।
    ২০২০ সালে আমেরিকায় নির্বাচনের আগে  নভেম্বর মাসে সাপ্তাহিক বাঙালীতে প্রকাশিত “ভাল্লুক, হরিণ ও গাঁজারপল্লীতে নির্বাচনী হাওয়া” নামে একটি প্রবন্ধে আমি উল্লেখ করেছিলাম যে, নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাইডেন ইউক্রেনে যুদ্ধবাঁধাবে। এক বছরের বেশি সময় সে নেয়নি যুদ্ধটি বাঁধাতে। 
    শয়তান কিন্তু যুবক নয়, শয়তান বৃদ্ধ ( তবে যুবাবয়সী হতেও তার কোনো বাধা নেই), কিন্তু চিরকালই সে নিষ্পাপশিশুর মত হেসে মানুষকে বিভ্রান্ত করে এসেছে এবং সে তা করতেই থাকবে। ন্যায় অন্যায় পছন্দ অপছন্দেরস্বাধীনতার যুক্তিগুলো হলো “ডায়াবলিক” যুক্তি। পৃথিবীতে সবসময় বড় দেশগুলোই নির্ধারণ করে তার পাশেরদেশগুলোর জন্য ন্যায় কী, অন্যায় কী এবং তাই সূত্রবদ্ধ করে “মনরো ডকট্রিন” নামের অভ্রান্ত বাইবেলে। 
    We should consider any attempt on their part to extend their system to any portion of this hemisphere as dangerous to our peace and safety.
    আমেরিকার জন্য যা সত্য, রাশিয়া বা চীন বা ইন্ডিয়ার জন্য তা সত্য হবে না, এ কথা বিশ্বাস করার দিন ছিলগতকাল, পৃথিবী খুব দ্রুতগতিতে আগামীকালের দিকে ছুটছে। 
    তবে তা রৌদ্রময় হবে, না মেঘাচ্ছন্ন হবে আমরা এই মুহূর্তে বলতে অক্ষম।
     
  • < | 2402:3a80:196f:3114:235:c7a7:299c:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ১৮:৩৫498346
  • রামপুরহাটে জেনোসাইড! রাশিয়ান এটাক ?
  • dc | 122.178.***.*** | ২২ মার্চ ২০২২ ১৪:৫৩498344
  • হেডিং পড়ে ভাবলাম পান্তাভাত থেকে বিলিতি সুরা বানানোর কায়দা আবিষ্কার হয়েছে বুঝি! 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০৭:২২498342
  • ওদিকে চীনে করোনা আবার বাড়ছে খবরে বলছে । পুরনো ভ্যারিয়ান্টই । আর আমেরিকায় এক নতুন ভ্যারিয়ান্ট উদয় হয়েছে।
    এ যে কী দুনিয়া হল!
  • S | 2605:6400:30:fa88:c11e:f74c:6f81:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০৬:৫৭498341
  • কতদিন পাঁঠা খাইনা। ধুর।
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০২:৫৮498339
  • বন্ধুরা বেশি পেজোমি করে না। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০২:১১498338
  • আমার সীমিত অভিজ্ঞতায় দেখেছি দূরের লোকের তুলনায় কাছের লোকেরাই ঝামেলা বেশি করেন। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব-যাঁরা সবচেয়ে বেশি সমর্থন ও সহায়তা দিতে পারতেন, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা, সমালোচনা, আঘাত ইত্যাদি করেন।
  • kk | 2600:6c40:7b00:1231:acf4:ee15:2035:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৫৭498337
  • দুত্তোর কোটেশানের মধ্যে লাইনগুলো এলোনা কেন? এটা বলতে চাইছিলাম -- "সবচেয়ে বেশি এবং প্রধান সাপোর্ট দেবে নিকটজনেরা, পরিবারের সবচেয়ে কাছের মানুষেরা। সেখানেই তো গলদ থাকে। সবচেয়ে আপনেরা পর করে দিলে পিঠ ঠেকে যায় দেওয়ালে।"
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৫৭498336
  • একদম। এর নাম জিন্দেগী। :-)))
  • kk | 2600:6c40:7b00:1231:acf4:ee15:2035:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৫৪498335
  • সে'র পোস্টে বলা এই লাইন --
    এটা বড় সত্যি। কাছের লোকেরাই যখন এই প্রসঙ্গ অ্যাভয়েড করেন, ভান করেন যেন এমন কিছুই হয়নি, অথবা ভাব দেখান যেন "এটা জাস্ট একটা খেয়াল, ও আপনিই কেটে যাবে", তখন শক্ত পায়ে দাঁড়িয়ে থাকাটাই খুব কঠিন কাজ হয়ে যায়। আর তত কাছের নয়, বা দূরের লোকেদের কথা তো ছেড়েই দিলাম। জাজ করা, তীর ছোঁড়া, লাঠিপেটা করা তাঁদের কাছে আরো সহজ হয়ে যায়। ক্লোজেট থেকে বেরোনো খুব কঠিন কাজ। না বেরোলেও কষ্ট, বেরোলেও কষ্ট। তবে কষ্টের নানা রকম লেয়ার দেখাও এক এক্সপেরিয়েন্স বৈকি! পুরো জীবনটাই তাই।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৪৭498334
  • আমারও তারাপদ রায়কে মনে পড়েছে। তারাপদ রায়ের কবিতা আমার খুবই প্রিয়। সহজ সাধারণ কথা দিয়ে কোথায়, কোন গহীনে যে নিয়ে চলে যায়!
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৩৫498333
  • অ্যান্ডর বলার পর আমিও পড়লাম। এলসিএমের পদ্য তারাপদ রায়কে মনে করালো। মানে, কবিতা আমি খুবই কম বুঝি, তবুও মনে হল ঐরকম একটা ব্যাপার।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:৩১498332
  • এল সি এম, টইতে আপনার কবিতা পড়ে আমি স্তব্ধবাক, রুদ্ধশ্বাস, স্তম্ভিত। অসাধারণ কবিতা।
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:১৭498331
  • হ্যাঁ। হিন্দিতে বলে — বাপ সে বঢ়া রুপাইয়া!
  • lcm | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:০৬498330
  • সে-এর দেওয়া চার্চিলের গপ্পোটা আগে শুনি নি, হেব্বি !
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০১:০২498329
  • "বাচ্চা মানুষ করার জন্যে বাবা মা দুইই "দরকার" এটাকে গজাল মেরে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া " — এটা তো কদিন আগেই এই এখানেই কে যেন আমাকে একটু অন্যরকম বাক্যে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন।
    তাহলে বিপত্নীক/বিধবাদের সন্তানদের কী হবে? শুধু সমকামী নয়।অথবা ডিভোর্সীদের বাচ্চাদের কী হবে? বাচ্চা মানুষ না হয়ে অমানুষ হবে? দুজন বাবা বা দুজন মায়ের কাছে সন্তান স্নেহে যত্নে বড়ো হতে পারে, মানুষ হতে পারে, সেটা আজও দুনিয়ার প্রচুর মানুষ বুঝতে নারাজ। অনেক মুশকিলের মধ্যে এটাও খুব বড়ো রকম মুশকিল। 
    সমাজের চোখে ধুলো দেবার জন্য এমন বিয়ে করা সমকামী আমি দেখেছি। সব ক্ষেত্রে যে উভয়েই সমকামী তা নয়, এবং বিয়ের আগে একপক্ষ হয়ত জানতোই না যে অন্যজন সমকামী। 
    এসবের জন্য যেটা দরকার সেটা সহজ নয় সকলের পক্ষে —এক ঝটকায় ক্লোজেট থেকে বের হওয়া। সমাজের অত্যাচারে জীবন দুর্বিষহ হতে পারে, মৃত্যু হতে পারে, হয় খুন হয়ে যাওয়া বা আত্মহত্যার প্ররোচনা, চাকরি না পাওয়ার চান্স। তবে যত বেশি দাপটের সঙ্গে সাহস দেখিয়ে মানুষ এসব প্রতিরোধ উপেক্ষা করবে, তত সহজ হবে বেঁচে ৎাকা। 
    সবচেয়ে বেশি এবং প্রধান সাপোর্ট দেবে নিকটজনেরা, পরিবারের সবচেয়ে কাছের মানুষেরা। সেখানেই তো গলদ থাকে। সবচেয়ে আপনেরা পর করে দিলে পিঠ ঠেকে যায় দেওয়ালে।
  • | 2603:300a:1a45:8000:d47c:be85:2954:***:*** | ২২ মার্চ ২০২২ ০০:০০498328
  • আমি দেখেছি বাধাই দো।
    গল্প যেমনই হোক কটা পয়েন্ট লিখে রাখি। 
    ১) সমাজের চোখে ধুলো দিতে সমকামী দুজন মানুষ একটা মিছিমিছি বিয়ে করে ফেলে এবং এক বাড়িতে দুজন একসাথে থাকে। 
    এটাকে দুটো দিক থেকে দেখা যায়।
    এক হলো,কী বস্তাপচা সিনেমা বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠান কে মাথায় তুলে নাচতে দেখাচ্ছে! সমাজের ভয়ে থরহরি কম্পমান। যাচ্ছেতাই।
    ২) আমাদের মত শহুরে লোকজন ছাড়া সমকামীদের যে একটা বিরাট অংশ দেশের ছোট শহর, মফঃস্বলে থাকেন,তাদের মধ্যে বহুলোক আত্মপরিচয় গোপন করে থাকেন। সকলের পরিবার থেকে বেরিয়ে যাবার মত সাহস,সঙ্গতি থাকে না। তারা কী করবেন? 
     এরকম একটা বোঝাপড়ায় এসে যদি বিয়ে করে একসঙ্গে থেকে যে যার পছন্দের সঙ্গীর সাথে সময় কাটাতে পারেন মন্দ কী?
    বিয়ে করে কাছাকাছি থাকলে সম/ বিসম পরিবারে বাকিদের নাকগলানো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা বিরাট সমস্যা।এক্ষেত্রেও তাই।বাচ্চা নেই কেন, কবে হবে, না হলে কেন হচ্ছে না এ প্রশ্নের মুখে যাকে পড়তে হয়নি তিনি ভাগ্যবান/বতী।মূল চরিত্র দুজনেই অবশ্য যখন সুযোগ পেয়েছে না হবার দায় অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়েছে। 
     
    আমার যেটা ভাল্লাগেনি সেটা হলো বাচ্চা মানুষ করার জন্যে বাবা মা দুইই "দরকার" এটাকে গজাল মেরে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া ( সিনেমা দেখে জানলাম সমকামী দম্পতিরা দত্তক নিতে পারেন না, যেটা সত্যি নয়) 
     
    কাউকে প্রথমবার দেখেই প্রেমে পড়ে যাওয়ার মত অসহ্য ন্যাকামি,মহিলা চরিত্রের অতিনাটকীয় ঈর্ষা,অবিমিশ্র হাঁদামো এসব বাদ দিয়ে অনেক নির্মেদ আর টানটান হতে পারতো সিনেমাটা।আমার রাজকুমার রাওকে খুব ভাল্লাগে। সিনেমাটা দেখার এটাও অন্যতম কারণ । 
     
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২৩:১৫498327
  • ঠিক। অক্সিমোরন হয়ে গেছে।
  • S | 2a10:8a40:f313::***:*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২৩:১২498326
  • বলিউডে অরিজিনালিটি? সেরেছে।
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২২:৪৬498325
  • "বচ্চন পাণ্ডে" তে নাম ভূমিকায় অক্ষয় কুমারের বাঁ চোখ পাথরের, তাতে আবার ছুরি দিয়ে টোকাও মারে। গ্যাংস অফ নিউ ইয়র্ক থেকে টুকেছে মনে হয়। বিশ বছর আগে গ্যাংস অফ নিউ ইয়র্ক দেখেছিলাম হলে গিয়ে। পাথরের চোখে ছুরি দিয়ে টোকা মারা দেখে... কী আর বলব। খ্যাহ খ্যাহ। ঝুল মুভি বচ্চন পাণ্ডে।
  • Abhyu | 47.39.***.*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২২:০৭498324
  • সোমনাথ থ্যাঙ্কু
  • kc | 188.236.***.*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২১:৫৭498323
  • মেমোরিস ইন মার্চ' খুবই ভালো মুভি, বাংলায় এরকম হয়নি মনে হয়, সব কিছু ছাপিয়ে উঠে আসা পিওর ভালোবাসার সিনেমা 'মেমোরিস ইন মার্চ'।
     হাঁ করে দেখি ঋতুপর্ণ, দীপ্তি নাভাল আর রাইমা'কে।
    মাঝে মাঝেই দেখি।
     
    ' বাধাই দো' টোটাল বোর এবং অর্থহীন ভাঁড়ামো।
  • Abhyu | 47.39.***.*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২১:১৫498322
  • এখন টইতেও এতো হাজার হাজার হাজরা যে মাস্টারি টিঁকছে না। :(
  • | ২১ মার্চ ২০২২ ২১:০৯498321
  • তৃণমুলী রিবর্তনকামী বুদ্ধিজীবিদের ভূমিকা 
     
    অভ্যু যে কিনা টইমাস্টার সেও জানে না?! 
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:d8c4:9655:26a5:***:*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২০:৫১498320
  • তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গের বুড়ো ভূত?
  • Abhyu | 47.39.***.*** | ২১ মার্চ ২০২২ ২০:৪২498319
  • তৃ-প-বু-ভূ পুরো কথাটা কী?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত