একদিক দিয়ে এটা ভালোই। বাড়িতে বসে বসে কাজ করলে মানসিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। বাইরে বের হলে মন মেজাজ সুস্থ থাকে। কোলিগদের সামনাসামনি দেখা, কথাবার্তা, গল্পগুজব, হাঁটাচলা এসবের দরকার আছে বৈকি। মাসের পর মাস ঘরে বসে কাজ করলে মাথা বিগড়ে যাবে, শরীরও খারাপ হবে। সিরিয়াসলি।
সরকারী স্কুল যা সব আজও আছে, সেইগুলোই তো দেখতে দেখতে অর্থহীন মূল্যহীন হয়ে গেল মধ্যবিত্তের ও সাধ্যবিত্তের কাছে। এটা পরিকাঠামোগত কারণ শুধু নয় বলেই মনে হয়। প্রাইভেট স্কুলগুলোর বাজার তৈরী হয়ে ওঠার পেছনে অন্য নানা কারণও আছে বা ছিল। তবে একটা কারণ মনে হয় খাল কেটে কুমীর আনার কালচার।
তবে বাঙালিদের স্বর্ণযুগে মানে ব্রিটিশ আমলে বাঙালিরা যে নেপালি , আসামি , বিহারি , ওড়িয়া এদের এক্সপ্লয়েট যে করেনি তাতো নয়। সবই ইকোনমির ওঠানামার ব্যাপার আর কি। সময়ের সাথে কে কোনদিকে দাঁড়িয়ে সেটাও পাল্টে পাল্টে যায়।
এই ধরেন বাংলাদেশের পার ক্যাপিটা ইন্ডিয়াকে ছাপিয়ে গেলো গত বছর। অথচ দেশটা কি স্ট্রাগল এর মধ্যে দিয়ে গেছে গত ৭০ বছর। এবার আগামী ২০-৩০ বছরে কিহবে কে বলতে পারে।
সরকারী স্কুলের উল্টো চিত্র বেসরকারি ইংরেজী মাধ্যমে স্কুল গুলো তে। আমার স্ত্রী স্হানীয় একটি ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে
প ভড়ান। ছেলে রা আসছে না। কিন্তু ওদের স্কুলে গিয়ে ক্লাশ নিতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে নিলে চলবে না। অদ্ভুত দাবি।
একদম পাতি চা। মোটা কাচের গ্লাসে। পাতি স্হান মাহাত্ম্য। টুক করে গলা টা কেটে নিচ্ছে।
টিভি সিরিয়ালের জুনিয়র আর্টিস্টদের অবস্থা অসম্ভব খারাপ।
ওরা এক লাইনও সৎভাবে করে না। গোড়া থেকেই অসৎপথে এগোয়। বাঙালিদেরও দোষ আছে। খাল না কাটলে কি কুমীর আসতে পারতো?
বাঙালিরা নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি করে মরল। নইলে কল্পনা করা যায় কি পাঞ্জাবে গুজরাটে বা ওরকম হিন্দি বলয়ে একজন বাঙালি বস তার মহিলা এমপলয়ীদের কুৎসিত ভাষায় রোজ গালি দিচ্ছে, তেড়ে মারতে আসছে, মাইনে দিচ্ছে না চার পাঁচমাস, সর্বক্ষণ খাটাচ্ছে, মানসিক অত্যাচার করছে? স্থানীয় লোকেরা মেনে নেবে সেসব স্টেটে?
১৯৮১ সালে পশ্চিমবঙ্গের জনসমখ্যা ছিল ৫.৪ কোটি, ২০১১ সালে ৯.১ কোটি। এখন ২০২১ সালে আনুমানিক ১০ কোটি।
এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সরকারি স্কুল, পরিকাঠামো কিছুই বাড়ে নি।
এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, সমস্ত দেশে এই সমস্যা আছে।
ফেসবুক/ট্যুইটারের বাইরে কঠিন বাস্তবের কথা বলেছেন সে - প্রাইভেট স্কুলের টিচারের জায়্গায় টিভি সিরিয়ালের কর্মী, বা, বড় হোটেলের স্টাফ - বসিয়ে দিন - একই অবস্থা -
তাই ভাবছি, এই অবস্থা যদি আশি নব্বই এর দশকে হত, অন্যের কী হত জানি না, আমার নিজের হয়তো লেখাপড়াই আদৌ হত না। অত দামী প্রাইভেটে গাঁটগচ্চা দেবার মতন অবস্থা ছিল না। আর সরকারী ব্যবস্থা যদি এখনের লঙ্গর স্কুলের মত হত, সেখানে পড়লেই কী না পড়লেই কী? ওখান থেকে বেরিয়ে হয়তো মাফিয়া টাফিয়া র দলে ঢুকে পড়তে হত। লোকে ৩৪ বছরের নিন্দা করে বটে, কিন্তু আমার তো মনে হয় হরে দরে ঐ চৌত্রিশ বছর মরূদ্যানই ছিল। অন্ততঃ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলশিক্ষাটুকুর ব্যাপারে।
কিন্তু শক্ত দল সরকারে এসে যে ফর্মা দেখাচ্ছে গত কয়েক বছরে, এর থেকে তো নরম দল হলে ভালো ছিল হয়তো।
তবে একোনিমিকালি একটা স্টেট্ দুর্বল হয়ে পড়লে তার কালচারে এফেক্ট পড়বেই। বাঙালির পুরো ইকোনমি এখন অবাঙালিদের হাতে। সেটা শিফট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা।
:) :)
শক্ত কি নরম হস্তক্ষেপ লাগবে জানি না। করাপটেড লোকগুলো য় দেশ ছেয়ে যাচ্ছে। খুব শীঘ্র পশ্চিমবঙ্গে শুধু গরীব লোক হিসেবেই হয়ত বাঙালিরা টিকে থাকবে। বা আরও খারাপ উন্টারমেনশ হয়ে যাবে তারা। সেরকম ব্যবস্থার দিকেই যাচ্ছে ব্যাপারটা।
করোনার টাইমে প্রাইভেট ইস্কুলের বেশ কিছু টিচারের চাকরি চলে গেছে। যেমন গানের টিচার, নাচেক টিচার, স্পোর্টসের টিচার।
অশোক হল ইস্কুল এর একটি উদাহরণ।
একেবারে নাম করে করে বলতে পারি প্রাইভেট ইস্কুলের টিচাররা খুবই কম বেতন পায়। তাহলে কেন তারা চাকরি করে? তাদের সাজগোজের খরচই বেতনের চেয়ে বেশি। যেমন হেরিটেজ স্কুল। স্টেটাস দেখানোর চাকরি। বড়লোকের বউরা টিচারি করে। টিফিনে ননভেজ নিষিদ্ধ।
কোলকাতা শেষ হয়ে গেছে। বাঙালিরা বাংলা বলতে লজ্জা পাচ্ছে। হিন্দি বলছে জাতে ওঠার জন্য। অনেক অল্প বয়সি ছেলে মেয়ে বাংলা বলে না। হিন্দি বলে। স্টেটাস।
খুব শক্ত হস্তক্ষেপ ছাড়া এই ঘোরালো অবস্থার কোনো সমাধান হবার নয়। সরকারে খুব শক্ত একটি বা একাধিক রাজনৈতিক দলের জোট এলে এবং তারা খুব শক্তভাবে এসবের বিরুদ্ধে কামড় দিয়ে পড়লে তবে কিছু ভালো হবার সম্ভাবনা আছে।
ইন্ডিয়ার সোশ্যাল বা ইনকাম ইনকোয়ালিটি একটা সাংঘাতিক লেভেলে পৌঁছচ্ছে এখন । চিরকালই ছিল নানা ভাবে। কিন্তু কোরোনার দৌলতে একেবারে চরম এখন। এই ট্রিটমেন্ট করাতেই যে কত লোক ফতুর হয়ে গেছেন ইয়ত্তা নেই। আমার নিজের খুব কাছের লোকজনই আছেন তার মধ্যে। আর যারা মারা গেছেন তাঁদের ফ্যামিলির যে কি হাল সে বলার নয়।
অন্যদিকে এই দোকান গুলো। পুরো পোলার অপোজিট।
লকডাউনের বাজারে এদের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। বাইরের দেশ থেকে শয়ে শয়ে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর এনে চারগুন মুনাফায় বেচেছে। ইমপোর্ট ডিউটি লাগেনি এগুলোর জন্য।
আরও নানারকম জিনিস মাস্ক পিপিই কিট এসবের ব্যবসা, হাওলা, সম্পত্তি দখল, এসব ব্যবসা করে। বডিগার্ড নিয়ে ঘোরে। এমপ্লয়ীরা রবিবারেও কাজ করে। ভিক্ষে চাইবার মতো করে মাইনে চায়।
তবু খাবার, পোশাক কি অন্য শখের জিনিসে ব্যবসা করছে, সে একরকম। কিন্তু শিক্ষাদীক্ষাও নিজেদের পকেটে পুরেছে। বাঙালি মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্তও ছেলেপিলেদের টেকনো ইন্ডিয়া টাইপের প্রাইভেট স্কুলে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে কারণ সরকারী স্কুলগুলো চোখের সামনে একেবারে লঙ্গরখানায় পর্যবসিত হয়েছে। সেখানকার পড়াশোনা, পরীক্ষা বা ডিগ্রিও মিনিংলেস হয়ে গেছে জীবিকার বাজারে। ফলাফল এই দাঁড়িয়েছে যে একগাদা টাকা গচ্চা দিয়ে প্রাইভেট স্কুলের বুকনি শিখতে যেতে হচ্ছে। যেসব স্কুলে আবার শিক্ষক বা অশিক্ষক কর্মচারীরা প্রচন্ড এক্সপ্লয়েটেশনের শিকার। অতি কম বেতনে তাদের খাটানো হয়, কিছু ন্যায্য অভিযোগ করলে শুনতে হয় না পোষায় চলে যান। এ শাঁখের করাত হয়েছে। ভয়ংকর অবস্থা।
যত না কফির জন্যে তার থেকে বেশি স্টেটাস সিম্বল। সে বললেন না এক শ্রেণীর হাতে আসলে অনেক অনেক টাকা। কিভাবে খরচ করবে ভেবে পায়না।
কোথায় আধুলি? মাইনে দেয় না। মহিলা এমপ্লয়িদের সামনে শব্দ করে দুর্গন্ধময় বাতকর্ম করে। গালি দেয়। মা বাপ তুলে খিস্তি করে।
তবু তারা কাজ করে। চাকরির বাজার খুব খারাপ।
একেবারে শেষ করে দিল সব। কর্মচারীদের বলদ বানিয়ে জোয়াল কাঁধে দিয়ে খাটিয়ে পিটিয়ে সব প্রফিট পকেটে তো ভরছেই, দিনের শেষে দুটো আধুলি ছুঁড়ে দিচ্ছে। আবার অন্য খদ্দেরের গলা কেটে পয়সাও নিচ্ছে। যাকে বলে তেনাদের উইন উইন।
আরো নেবে, আরো খুলবে। আরো রেস্টু খুলবে। গলা কেটে ঝুড়ি ভরবে।
শুনুন ব্যবসায়ীর হাতে কেমন টাকা। লোকটার বিজনেস এবং বাড়ি সল্টলেকে। তবুও প্রতিমাসে আইটিসি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামক হোটেলে দুতিনদিন করে থেকে আসে। এরকম নামের হোটেল আছে সেটাই জানতাম না। অথচ অফিসে নিজের কর্মীদের তিন চার মাসের বেতন বাকি। চাইতে গেলে দাঁত খিঁচিয়ে গালি দেয়, মারতে আসে। বাঙালি কর্মীরা হিন্দিতে কথা বলে মালিকের সঙ্গে। মালিক তাদের তু তু করে সম্বোধন করে। এরা পান কেনে ফাইভস্টার দোকান থেকে।
গলাকাটা কফিই বটে! ঃ-)
আমি তো সল্টলেকে সিটি সেন্টার টু - এর স্টারবাকস এ ঢুকে জিগ্গেস করেছিলাম -- উইথ ট্যাক্স এন্ড এভরিথিং হাউ মাচ ইজ দ্যাট গলাকাটা কফি?
মেয়েটি প্রথমে বুঝতে পারে নি, হিন্দিভাষী সম্ভবত, কিন্তু ওপাশের একটা ছেলে শুনে হেসে ফেলেছিল।
কিছু লোকের হাতে দেদার টাকা। ইন্টারন্যাশানাল প্রাইসিং এ তাদের কিস্যু এসে যায় না। ডিম্যান্ড আছে বলেই তো দোকানগুলো চলছে। এত শপিং মল, এত গলাকাটা দামওলা রেস্টুরেন্ট, কোনোটা কি খদ্দেরের অভাবে লাটে উঠছে? বরং দিনকে দিন আরও শাখা খুলছে।
হ্যাঁ, ঐ দামের ওপর আরও কিসব নেয়। কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউস তো এটা সেটা ভুজুং ভাজুং ট্যাক্স সব জুড়ে ৩০ টাকার কফি প্রায় ৪০-৫৪ এ নিয়ে ফেলে
আর আপনি যদি অমিতের মতন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রফিট মডেলে বীতশ্রদ্ধ হন, অথবা, সে যেমন বলেছেন - ফ্লুরিস এর মতন ঐতিহ্যশালী দোকান পছন্দ করেন, তাহলেও ভাববেন না যে খুব কম কিছু হবে, এই যে পার্ক স্ট্রিটে ফ্লুরিস এর দাম - কফি/চা ১৮০ টাকা থেকে
স্টারবাক্সে এই দামের ওপর ভ্যাট নেয় না?
নেয় মনে হয়। ভারতে রেস্টুরেন্টে দামের মধ্যে ট্যাক্স ইনক্লুড করে লেখে না। ফলে বিল চোকানোর সময় বেশি দিতে হয়। ট্যাক্স ইনক্লুড করে দাম লিখলেই পারে।
এই ইকো পার্ক কি নিকো পার্কের নতুন নাম? ব্রতীনের বানান যেহেতু তাই ঠিক বুঝতে পারছি না।
বাপরে। এরা তো গলা কাটা বেওসায়ী ! সেই "কেশব কেশব গোপাল গোপাল" কেস। হরি হরি। হর হর। খদ্দেরও পায় সেরকম। ঃ-)