আমরা টোপাকুলকে বড়ই আর কাশীর কুলকে কুল বলি। জাম্বুরাকে জাম্বুরা আর আখকে আখ বলি! ত্রিপুরায় আবার নানান রকম ডায়ালেক্ট মিলে মিশে অন্য একটা রকম হয়েছে। ওদিকে সিলেট বা নোয়াখালির প্রাচীন লোকজন অনেকটা নিজেদের ডায়ালেক্টে স্টিক করে থাকতেন। আগরতলায় প্রচুর সংখ্যক পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা রাজকর্মচারীদের ভাষার প্রভাবও পড়েছে ভালো রকম। শুধু কী আর স্থান, কালের প্রভাবেও ভাষা পাল্টেছে।
sm, লেবু তো আমি আর অভ্যুবাবু কচলাচ্ছি :-)। কি নেই তালিকায় বাতাবিলেবু, লেমন, লাইম সব ......।
এই ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে একটু বেশি লেবু কচলানো চলছে। এলেবেলে বাবু নিজেই অতীতে কোন ফ্ল্যাটের রেট সম্পর্কিত আলোচনা তে জানিয়ে ছিলেন, যদুপুরে ওনার একটি ফ্ল্যাট আছে। এই নিয়ে,ব্রতীন কে এতো চটকানোর কিছু নেই। কার একটা ফ্ল্যাট আছে, কার দুটো জাঙ্গিয়া আছে, কার বাড়িতে ট্রেডমিল আছে; এগুলো ব্যক্তিগত তথ্য হলো! এগুলো ওপেন ফোরামে বললে মুশকিল?
ভিলেনটি হল furanocoumarin জাতীয় যৌগগুলি। গ্রেপফ্রুটে এটি থাকে বলে জানি। মুসম্বি বা বাতাবীলেবুতে থাকে কিনা জানা নেই আমার। যারা এই ফলগুলির phytochemical investigation করেছেন তারা বলতে পারবেন হয়ত। গ্রেপফ্রুটের মত অত বেশীমাত্রায় না হলেও সিট্রাস ফ্রুটগুলিতে furanocoumarin থাকা অস্বাভাবিক নয়। লাইমে বা লেমনেও থাকে এটি। তবে কেউ যেহেতু গ্লাসভর্তি পিওর লাইমজুস বা লেমনজুস খায়না তাই এর থেকে ক্ষতির আশ্ঙ্কা কম।
স্যান্ডি আপনার অযথা সঙ্কোচ বোধ করার কোনও কারণ নেই। আমি আপনার ইন্টেনশন অনেক আগেই বুঝেছি। এটা ওই উদ্ধত উচ্চারণের পাল্টা মাত্র।
তবে কথ্যভাষা দুটো নয়, অসংখ্য এবং সেখানে কোনও ঘটি-বাঙালের সীমারেখা টানা নেই। বর্ধমানের মানুষ সাইকেল 'বাগিয়ে' নিয়ে আসেন, 'সারিয়ে' নিয়ে আসেন না। ইন ফ্যাক্ট দু ক্রোশ অন্তর বাংলা ভাষা বদলে যায়। কাজেই ভাষার এই ঘটি-বাঙালও এক ধরণের কেন্দ্রিকতা।
হ্যাঁ, দ-দি আপনি কলকাতাকে 'দক্ষিণবঙ্গের বাথরুম' বললেও আপনার সাত খুন মাফ হয়। আমার হয় তিন মাসের জেল আর সাত দিনের ফাঁসি। কী আর করা যাবে!
আমার জাম্বুরা সংক্রান্ত পোস্টটি কোনভাবেই আমার ঘটি কালচারাল সুপিরিয়রিটিজনিত নয়। আমার গলায় ছুরি ধরলেও আমি বিশ্বাস করবনা যে বাঙালদের কথ্য় ভাষা ঘটিদের ভাষার চেয়ে কোন অংশে ইনফিরিওর। কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই যে দুটি কথ্য ভাষার অনেক টার্মই আলাদা। প্রসঙ্গত আমার পিসীমা থাকেন জলপাইগুড়িতে। ওনার ছেলেমেয়েদেরকে আমি বরাবর বাতাবীলেবু, কুল বলতেই শুনেছি। অবশ্য আমার জানার সার্কল দিয়ে সমগ্র জলপাইগুড়িবাসীর কথ্যভাষা জানা যায় না।
তাই সেফ সাইডে থাকার জন্য় বাতাবী লেবু, মুসম্বি, গ্রেপফ্রুট জুস না খাওয়াই ভাল মেডিকেশন চলাকালীন।
আমি বাঙাল এবং মফস্বলী।
কাল না পরশু 'তিন পুরুষের ঘটি'-র উদ্ধত উচ্চারণ শুনেছি। মাইরি মাইরি।
হুঁ, ওই কারণেই তো লিখেছিলেন ওগো কাঙাল, আমারে কাঙাল করেছ। এটা তাঁর বাঙাল প্রেমিকাকে লেখা, না?
ঠিক বলেছেন, এটা ফার্মাসিস্টের বলে দেওয়ার কথা আর ওষুধের লেবেলেও লেখা থাকা উচিত। কিন্তু এটা বোধ হয় ইওরোপ-আমেরিকাতেই হয়। দেশে তো ওষুধের দোকান দিতে কোন ডিগ্রি বোধ হয় লাগে না, তাই ফার্মাসিতে তাঁদের জ্ঞান নিয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ। আর দেশে বসবাসকারি ভারতীয়দের কজন আর ওষুধের লেবেল খুঁটিয়ে পড়েন? তাই সেফ সাইডে থাকার জন্য় বাতাবী লেবু, মুসম্বি, গ্রেপফ্রুট জুস না খাওয়াই ভাল মেডিকেশন চলাকালীন।
দ্যাহেন রবীন্দ্রনাথ বাঙালই ছিলেন। S বাবু যেমন আসলে আমেরিকান, রবীন্দ্রনাথও তেমনি আসলে বাঙাল। ইন ফ্যাক্ট মাইকেল বাবু থেকে শুরু করে সত্যেন বাবু থেকে শুরু করে তপন বাবু থেকে শুরু করে সব ভালো বাঙালীই হল বাঙাল।
সরি, দড়ি। রবীন্দ্রনাথ বাঙাল ছিলেন তাই বোধহয় রথের রশি লিখেছিলেন! চমৎকার অ্যানালিসিস!!
উফ দড়ি দড়ি - চন্দ্রবিন্দু আসে গলায় দিলে :)
বাতাবী লেবু বোধ হয় ঘটি প্রতিশব্দ জাম্বুরার।
ঘটি বলতে কী বোঝেন? বাঙালই বা কারা? উত্তরবঙ্গের সমস্ত লোক বাতাবিকে জাম্বুরা, কুলকে বড়োই, আখকে কুশার এবং দঁড়িকে রশি বলেন। তাঁরা বাঙাল? মানে উত্তরবঙ্গের লোকেরা বাঙাল? কেন?
গ্রেপফ্রুটের ফাণ্ডা আমি জানি, ব্যাটা এক বর্ণসংকর জিনিস, মোটেই বিশুদ্ধ বাতাবী নয়। জন্মের দোষ থাকায় কিছু (সব নয়) ওষুধ পত্রের ক্ষেত্রে একটু বিঘ্ন ঘটিয়ে থাকে, তো সেটা ফার্মাসিস্ট ভালো করে বলে দেয়, আর ওষুধের বোতলের গায়েও বড়ো করে লেখা থাকার কথা।
গোটা রাঢ়বঙ্গের একজনও এখানে লেখেন না, উত্তরবঙ্গের তো প্রশ্নই নেই। বৃহত্তর বঙ্গভাষীদের মধ্যে বোধহয় একমাত্র হুতো ও রঞ্জনবাবু আছেন। বাকিরা সবাই হয় কলকাতা নয়তো হুগলি-হাওড়া। সেখানে একজন মফস্সলবাসী হিসেবে আমি এখানে লাগাতার কলকাতার এই কেন্দ্রিক অবস্থানের বিরুদ্ধে বলে যাব। সেটাকে হাস্যকর বাইনারিতে পরিণত না করাই ভালো।
হ্যাঁ, আমি অ্যানোনিমিটির পক্ষে কিন্তু ওটার সুযোগ নিয়ে টুক করে ঢিল ছুঁড়ে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকার বিরোধী। এই যেমন @ar কিংবা যিনি কিছুদিন আগে আনন্দবাজারে রামমোহন সম্পর্কিত পত্র পাঠানো লোকটির বিস্তর খুঁত খুঁজে বের করেছিলেন, কিন্তু পাল্টা উত্তর দিতেই চিরজীবনের মতো নিপাত্তা হয়ে গেছেন।
বাতাবী লেবু বোধ হয় ঘটি প্রতিশব্দ জাম্বুরার। আচ্ছা এটাকেই কি গ্রেপফ্রুট বলে? বিদেশে গ্রেপফ্রুট বলে যেটা দেখি সেটা আমদের বাতাবী লেবুর তুলনায় সাইজে ছোট বোধ হয়। প্রসঙ্গত গুরুভাইবোনদের প্রতি আমার উপদেশ আপনারা ওষুধ চলাকালীন সময়ে গ্রেপফ্রুট বা তদজাত জুসপান থেকে বিরত থাকবেন।
না বিন্দুমাত্র বিপদে পড়িনি। পুরোটাই সাদা টাকার লেনদেন, ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করতে হয় ফি বছর। একটা বছর আঠেরোর মেয়ের একা একটা অচেনা শহরে কিছু পিজি মালিক ও বাড়িওয়ালার লাগাতার নানাবিধ বায়নাক্কার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতিটা আপনি উপলব্ধি করতে পারলেন না বলে খুবই দুঃখ পেয়েছি। কতটা মরিয়া হলে পরবর্তী আট বছরে সাকুল্যে একমাসও থাকবে না জেনেও একজন ছাপোষা মধ্যবিত্ত ওই শহরে রাত কাটানোর একটি স্থায়ী আস্তানা খুঁজতে বাধ্য হয়, সেসব আপনি বুঝতে পারবেন না।
আপনি এলসিএম-এর থেকে জেনে আইপি ট্রেস করতে পারেন, সৈকতকে মামলার হুমকি অবধি দিতে পারেন। সেই তুলনায় আমি তো নস্যি। বলি কি আপনি ওই খিচুড়ি-পাঁপড়-সিঙাড়া-জিলিপির পরিচিত বৃত্তেই থাকুন, এসব জটিল ডিসকোর্সে 'সরি টু সে' অংশ না নেওয়াই ভালো।
আমারও এগুলো গুলিয়ে যায়। শুধু কনফিডেন্সের সঙ্গে জানি যে তরমুজ আর ওয়াটার মেলন অভিন্ন। ফুটি বোধ হয় মেলন। খরবুজা আর খরমুজ কি একই চিজ? আর এর ইংরাজিই বা কি? হানিডিউ মেলন, ক্যান্টালুপ এগুলোর বাংলাই বা কি? কনফিউশনের চূড়ান্ত।
"সরকারি কাম, জ্বালাউ লকড়ি" আমি আবার এই অবধি পড়ে ভাবলাম কামাগ্নি টামাগ্নির ব্যপার নাকি।
হুম। তবে কবি যেহেতু আসলে ঠিক এইটা বলেননি, এবং অবোধদের উদ্দেশ্য করে তো বলেনইনি, তাই আমি আর তত গুরুত্ব দিলাম নাঃ)
আমাদের ওদিকে বাঙি বলি না, বাঙ্গি বলি। তবে এই ফলগুলো আস্ত অবস্থায় কোনটা কী আমারও গুলিয়ে যায়, কেটে খেতে দিলে চিনতে পারি। আর হলো জাম্বুরা। ও দিয়ে ফুটবলও খেলা হয়, খেলা হয়ে গেলে খেয়েও ফেলা যায়।
অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য এখানে লেখা নতুন কিছু নয়, ব্রতীনদা এটা করেই থাকে। অরিজিতের কথা মনে নেই?
এলেবেলেবাবুর ফ্ল্যাট সংক্রান্ত প্রথম পোস্টটা পড়েই খুব বিরক্ত লেগেছিল। কিন্তু যেহেতু আমার উপরে গার্জেনগিরি করার ভার নেই তাই কিছু লিখি নি।
আর একটা কথা বলি। তোমাকে আপন ভাবি বলেই বলছি। গুরুর সব লোক কে "শিক্ষিত" করার "মহান" দায়িত্ব ভার তুমি কেন নিতে চাইছো? কবি বলেছেন "ওরে অবোধ, তোর ওপরে নেই ভুবনের ভার..."
আমার বয়েস তখন একুশ। দু'ভাই বাবা মা'র সঙ্গে কুর্লা এক্সপ্রেস ধরে ভিলাই ফিরছি। খুব সামান্য হিন্দি শিখেছি।
টাটানগরের আগে সিনি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে। একটা সাইনবোর্ড-" সরকারি কাম, জ্বালাউ লকড়ি" মানে সরকারি কাজের জ্বালানি কাঠ।
আমি ধরে ধরে পড়লাম-- সরকারি, কাম চালাউ লড়কি"। সরকারি কাজ চালানোর মেয়ে!!
বাবা শকড, যা বকুনি দিল--।
'মাঙ্গের পুত' আমার সিলেবাসের বাইরে। অৰ্থাৎ আগে শুনিনি কখনো।
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন বি। আমিই গুলিয়েছি।
পরবর্তীকালে এক বন্ধু উইম্বলডনকে wimb lodon উচ্চারণ করায় প্রবল হ্যাটা করি তাকে সম্মীলিতভাবে। প্রসঙ্গত বন্ধুর টেনিস জ্ঞান ছিল বাঙলা পেপার থেকে পাওয়া।
আরেকটা আছে 'মাঙ্গের পুত'। সেটারও মানে বিশেষ সুবিধের নয়।
অভ্যুর 'ফুটি ও ফটো লাইফ' পরিপ্রেক্ষিতে মনে পড়ল একটা ঘটনা। বাবা আনন্দমেলা নিয়ে এসেছে। বইটির কোন একটি পাতায় রবিনসনস ( লক্ষ করুন বানানটা এভাবেই লেখা ছিল বাংলায়) বার্লির পাতাজোড়া বিজ্ঞাপন। আমি বই পেয়ে খুব উৎফুল্ল আর প্রথমেই দূর্ভাগ্যক্রমে ঐ পাতাটাই খুলেছি। হঠাৎ জোরে জোরে পড়ে ফেলেছি Robi nos Nos barley। মামাতো দাদাদিদিদের সে কি হাসি! আসলে তখনো Robinsons নামটার সঙ্গেই পরিচিত ছিলাম না, তো উচ্চারণ তো অনেক দূরের ব্যাপার। সিলেবল ব্য়াপারটাও জানা না থাকায় কোথায় pause নিতে হয় সেটা জ্ঞানের বাইরে ছিল।
বাঙালভাষার গালাগালি হল পুঙ্গির পুত। পুঙ্গি অর্থাৎ ফুঙ্গিঃ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, তাঁদের সংসার ধর্ম মানা। যোগরূঢ়ার্থে বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সন্তান।