@ ন্যাড়াদা, থ্যাঙ্কিউ ; এক্ষুনি সব বুঝে ফেল্লুম এমন না, শোনার সময় খেয়াল রাখবো।
অখিলবন্ধু ঘোষ বলেছিলেন, "বুঝলে, হেমন্তর গাঁয়ের বধূ খুব নাম করল। তারপরে তো একের পর এক হিট। আমার হিংসে হল। মনে হল আমিই বা পারব না কেন। তো করলাম। 'পিয়াল শাখার ফাঁকে ওঠে এক ফালি চাঁদ বাঁকা ওই'। 'গাঁয়ের বধূ'র মতন না হলেও, খুব হিট হয়েছিল। আমি তারপর আমার নিজের স্টাইল ছেড়ে ওরকম গান গাইতে শুরু করলাম। গাইতে গাইতে একদিন দেখলাম কখন আমার জায়গা থেকে আমি হড়কে গেছি।"
দারাশুকো-ফুকো সবই একই কেস বোধহয়। পাব্লিশারের চাপ, প্লাস সুনীল ঐতিহাসিক লিখল, আমিও লিখব।
শ্যামল মায়াবী লেখা লিখে বাংগালির কাছে প্রাপ্তি হল এই যে, দারাশুকো নামক খাজা কৃতকর্ম দিয়ে মনে রাখা হয়। এরপর, বাংগালী কোন দিন হিরসিমামাইলাভ নিয়ে ওয়েব সিরিজ বানাবে, টাইটেলে ধুপধুনো সহ সন্দীপন, সেদিন আমি সুতার দরজিকে একটা কল করে, এক কাপড়ে লায়া- লিংশির পথে চলে যাবো ।
"ধরুন একজন গায়ক শান্ত নিরিবিলি ধীরে নেবে আসা একটা সন্ধ্যা ধরতে চাইলেন পূরবী তে, আরেকজন চাইলেন আরবান, ঝলমলে আলো ও কাকলি তে ভরা একটা সন্ধ্যে কে প্রকাশ করচেন একি রাগে । দুটি আলাদারকম সন্ধ্যের সিনেমা স্কোর বানানোর ভার পরেচে, দুটোই পূরবীতে।
এরকম খেত্রে রবিবাবুর থিওরি কী পথ দেখায় বা আদউ পথ দেখায় কি না?"
রবিবাবু পথ দেখান কিনা জানিনা, কিন্তু সেরকম লোকের হাতে পড়লে একই রাগ বিভিন্ন মুডে আসে। ভৈরবী তো দারুণ মেলিয়েবল রাগ। কত লোক যে কত মুডে করেছেন! বেহাগও। স্যার আরেন্টিও এই দুটো রাগে যে কত রকমের গান বেঁধেছেন। কিন্তু আবার কেদারের মতন রাগে বিষণ্ণ বর্ষার গান "শ্রাবণের পবনে আকুল বিষণ্ণ সন্ধ্যায়" অনেকটা আরবান, ঝলমলে সন্ধ্যেয় পূর্বীর ঠিক উল্টো। কাজেই, করা হয়েছে।
এ বোধি, প্রতীকের লেখার নিচে আর কিছু লিখবে না? কীরকম ব্যর্থ ব্যর্থ লাগবে তো!
শ্যামল গঙ্গো বড় মায়াবী লেখা লিখতেন।
স্ক্রিনশট পাঠিয়ে দিয়েছি ছোটাইদি।
সে পার্ট টা বুঝেচি ঃঃ) তবে আমি যুদ্ধের ফটো ডকু আর রিসার্চ পেপার থেকে বেরন কিছু বই পেয়েচি এভাবে। রিসার্চ মানে হাইফাই কিচু না, মন্দিরের আরকীটেকচার ইত্যাদি, তবে আমার আগ্রহের জিনিস তাই বল্লুম।
"হাজার হাজার বছর ধরে যে সকাল-সন্ধ্যে দেখে এসেছি, ইভোলিউশন তাকে এখনও ওভাররাইট করে উঠতে পারেনি।"
হ্যাঁ, এটা অবশ্য একটা ব্যাপার। আমার আদতে আরেকটু এগিয়ে প্রশ্ন ছিল, ধরুন একজন গায়ক শান্ত নিরিবিলি ধীরে নেবে আসা একটা সন্ধ্যা ধরতে চাইলেন পূরবী তে, আরেকজন চাইলেন আরবান, ঝলমলে আলো ও কাকলি তে ভরা একটা সন্ধ্যে কে প্রকাশ করচেন একি রাগে । দুটি আলাদারকম সন্ধ্যের সিনেমা স্কোর বানানোর ভার পরেচে, দুটোই পূরবীতে।
এরকম খেত্রে রবিবাবুর থিওরি কী পথ দেখায় বা আদউ পথ দেখায় কি না?
আপ্নারা বোধ হয় কিলোদরে বই কেনেন না। তাই অজানা যে, প্রডাক্ট প্রাইসিং এ কিলোদরে বই এর অফার খুবি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। বই এর পাতার, কভারের জিএসেম হয়, কাজেই দামের সংগে ওজনের সম্পর্ক নেই তা কিন্তু নয়।
যদি বই এর মেটেরিয়াল আর প্রাইসিং এমনভাবে সেট করতে পারেন, যে কিলোদরে বেচলে ছাপাই এর খরচ উঠে আসবে, তাহলে সেই বই দিব্য কিলোদরে বিক্রি হয়। তারা কেও হেলাফেলা বই ও না। আমার পুরো ডন ম্যাক্কালিন ফটো সিরিজ নতুন বই কিলোদরে কেনা। কফি টেবিল বুকেও এভাবে প্রাইসিং এর একটা গল্প আচে। সরবদা সম্ভব নয়, কিন্তু বই বিশেষেে দিব্য সম্ভব।
এককের প্রশ্নটা ঠিকমতন বুঝতে পেরেছি কিনা জানিনা, তবে মনে হল এই ধাঁচের - যদি রবিবাবুর প্রতিপাদ্য সত্যি বলে মেনেও নিই, তাহলেও আধুনিক যুগে সন্ধ্যের রূপ এমন বদলে গেছে, সন্ধ্যের রাগের এই ইম্প্যাক্ট হওয়া সম্ভব কিনা।
প্রথমতঃ আরেন্টি " প্রভাতের রাগে কোমল স্বর গুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ এবং সন্ধ্যার রাগে সেগুলো ধীরে ধীরে নীমিলিত হয়ে আসবে ; " এই বলে যে ঠিক কী বলতে চেয়েছেন, মানে সাঙ্গীতিক টার্মে, সেটা বোঝা শক্ত। প্রথমে ভেবেছিলাম, উনি বলছেন যে রাগের আরোহে কোমল কিন্তু অবরোহে শুদ্ধ নিয়ে নাবে সেগুলো সকালের রাগ অ্যান্ড ভাইসি-ভার্সা। কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই বোঝা যাবে সেটা ঠিক নয়। পূর্বী একেবারে আইডিয়াল সন্ধ্যের রাগ। নাবার সময় গ-ম-গ-ঋ-স দিয়ে পূর্বী প্রায় ডিফাইন্ড। এই সিগনেচার লাগিয়ে কবীর সুমন "বিভূতিভূষণ" গানের শেষ লাইনে নীরবে মারদাঙ্গা লাগিয়ে দেন। কিন্তু পূর্বী তো ওঠার সময়েও সেই কোমল রে (ঋ) নিয়ে ওঠে। কাজেই আরেন্টি কাব্যময় ভাষায় যে ঠিক কী বলেছেন তা আমি গেল তিরিশ বছর ধরে বুঝে উঠতে পারিনি। যদিও প্রথম যখন পড়েছিলাম, তখন খুবই সুপ্রযুক্ত মনে হয়েছিল।
এটা যদি ছেড়েও দিই, যদি ধরে নিই রাগের মধ্যে আনডিফাইন্ড কোন ইনট্রিনসিক এলিমেন্ট আছে, যা দিয়ে সকালের রাগ সকালের হয় আর সন্ধ্যে রাগ সন্ধ্যের হয় (মানে কোন সময়ের রাগ এটা শুধু আমাদের অ্যাসোসিয়েশন আর কন্ডিশনিং নয়), তাহলে সকাল আর সন্ধ্যের রূপ যতই পাল্টাক, আমাদের সাইকিতে সেগুলো সকাল আর সন্ধ্যের রাগই থেকে যাবে বলে মনে হয় কেন না, হাজার হাজার বছর ধরে যে সকাল-সন্ধ্যে দেখে এসেছি, ইভোলিউশন তাকে এখনও ওভাররাইট করে উঠতে পারেনি।
কিলো দরে বই বিক্রির একটা গল্প বলি। অবশ্য শ্রুতি। আমাদের পুরনো পাড়ায় একটি ক্রিশ্চান- হিন্দু পরিবার ছিল। গৃহকর্তা ছিলেন হিন্দু, কর্ত্রী ক্রিশ্চান। দুজনের ধর্মান্তকরণ না করেই বিয়ে হয়েছিল। বিশের দশকের ঘটনা। খুব ইউনিক ব্যাপার। তাদের পুত্র কন্যারা মায়ের মতানুসারে খৃষ্ট ধর্মের দিকে ঝুঁকলেও, একজন বাদে সকলেই হিন্দু বিয়ে করেছিল।
গৃহকর্ত্রী ছিলেন বেজায় রবীন্দ্রবিরোধী। কারণ ? রবীন্দ্র সাহিত্যে, সংগীতে নাকি খৃষ্ট বিরোধী মনোভাব সুস্পষ্ট। রেডিওতে রবীন্দ্র সংগীত হলে বন্ধ করে দিতেন। বাড়িতে কেউ রবীন্দ্র সংগীতের সুর ধরলেই বলতেন 'বাইরে গিয়ে গাও।' তা যাইহোক। তার এক বৌমা বাপের বাড়ি থেকে অনেক রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে আসেন যার মধ্যে বেশ কিছু ছিল প্রথম সংস্করণ। বৌমার পিতৃদেবের কালেকশন। বৌমা সাধ করে সেসব বসার ঘরে রেখেছেন। কর্ত্রী একদিন পুরনো খবরের কাগজের সঙ্গে সেসব প্রথম সংস্করণের বই গুলো কিলো দরে বেচে দেন। বৌমা তখন আপিসে।
ধুর, কোথায় ফার্সি শেখা! অন্নচিন্তা চমৎকারা। তবে আমি ফার্সি শিখব ভাবছিলাম আইন-ই-আকবরি, তুজুক-জাহাঙ্গিরি এইসব পড়ব বলে। কিন্তু আধুনিক ফার্সি শিখে ওইসব বই পড়ার মতন বিদ্যে যদিবা হয়, তদ্দিনে উৎসাহ থাকবে কিনা কে জানে!