"Gentoo Code" পর্যন্ত পড়া মাত্রই জেন্টু লিনাক্স আর তার পা ছড়িয়ে বসা পেঙ্গুইনটার কথা মনে এল, আর তার ইনস্টলেশানের দিনটির কথা মনে পড়ে গিয়ে শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল ।
বাকিগুলো সব পড়ছি এখন ।
দারুন আলোচনা সব!
এমনিতেও কোভিডকালে কারও পেচুনে আঠা লাগানোর কাজও নেই। তো কী আর করা। আমার অবর্তমানে আমার বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে এখানে যে বিভিন্ন তরঙ্গ উঠেছে সেটার সামান্য উত্তর দিয়ে নিই বরং।
বিবাদভঙ্গার্ণব, পুঁজি কি ওই দুটোই? মানে অতুল সুর আর শোধগঙ্গার রিসার্চ পেপারটা? নাকি আরও আছে? ধরে নিচ্ছি আছে, সেগুলো হয়তো পরে প্রকাশ করবেন। আপাতত যেটুকু দিয়েছেন সে বিষয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি।
১. //'জজ পন্ডিত' পদটি কতদিন পর্যন্ত এদেশীয় আদালতে (সুপ্রীম কোর্ট?) বহাল ছিল? "Gentoo Code" বা "A Digest of Hindu Law on Contracts and Succession" নামে হিন্দু স্মৃতিশাস্ত্রর সারাৎসার গুলি ইংরিজিতে অনুবাদের পর কি এই তোল্লাই দেওয়া পদটি বন্ধ হয়ে যায়?//
১৮৬৪ পর্যন্ত। তোল্লাই দেওয়া অনুবাদের সময়েই বন্ধ হয়ে যায়। যে জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন নিয়ে অতুল সুর উলুতপুলুত, তাঁকে কোলব্রুক ‘frivolous’ বলতেও দ্বিধা করেননি। পুরো বিষয়টা কব্জায় নিয়ে নেয় ব্রিটিশরা, পণ্ডিতরা তাদের অধস্তন কর্মচারী হিসেবে থাকে মাত্র। মেকলে তাঁর মিনিটে সেটাও বন্ধ করে দিতে বলেছেন। তারপর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আরও বছর তিরিশেক টিকে ছিল মাত্র।
২. //শুধু মনু কেন? এমন ধারণা কোথা থেকে এল যে বিবাদভঙ্গার্ণব বা তার ইংরেজি অনুবাদ মূলত বা শুধুই মনুস্মৃতি?//
মনে হওয়ার কিছু নেই। স্মৃতিশাস্ত্রের শেষ কথা মনু। মনুতে না থাকলে বাকিরা। এটাই দস্তুর। ওই কারণেই বিদ্যাসাগর পরাশরকে পাকড়ান বি.বি.তে, মনুকে ব.বা.তে। অথচ মনু বলে গেছেন সবার ওপরে রাজ আইন। কেউ সেই রাস্তায় হাঁটেননি। রামুও না, বিদু তো আরও না।
৩. //এইটা তো একটু রেফারেন্স সহ প্রমাণ করতে হবে। জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের করা স্মৃতিশাস্ত্রসার ম্যানুফ্যাকচার্ড ছিল একথা সেযুগের-এযুগের কোনো সংস্কৃতবেত্তা বলার সাহস দেখিয়ে উঠেছেন? বা, তার ইংরেজি অনুবাদে ফাঁক ছিল এমনটাও কেউ কখনো বলেছেন? ইংরেজি অনুবাদ ঠিকঠাক না হয়ে থাকলে আদালতের জজ-পন্ডিতেরা তার মীনাংসা করতেন না, এমন কোনো উল্লেখ কোথাও রয়েছে?//
তার ইংরেজি অনুবাদে ফাঁক ছিল কি না তা রেফারেন্স সহ দেখানো হবে। অন্তত খান দশেক উদাহরণ সহ। সেখানে ইন্টারপোলেশন ও এক্সট্রাপোলেশন - দুটোই থাকবে। স্রোতের বিরুদ্ধে যাঁরা সাঁতার কাটেন, তাঁদের কেচ্ছা ঘাঁটলে চলে না। সলিড রেফারেন্স লাগে। সেসব আছে বিস্তর। যথাসময়ে যথাস্থানে দেওয়া হবে। আদালতের জজপণ্ডিতরা ব্রিটিশের বেতনভুক কর্মচারী। আপনি আপনার বসকে অমান্য করতে পারেন?
৪. //ইংরেজদের আগে দেশীয় আইন (রাজাদের দরবারে, তা ধরুন নবকৃষ্ণ দেবের সভাতেই) কীভাবে এসমস্ত ডিসপিউটের মীমাংসা করত? স্মৃতিশাস্ত্র অনুযায়ী নয়?//
সারা ভারতবর্ষ = নবকৃষ্ণ দেবের সভা নয়। আইনের ফলে সেটাই হয়। সেটা ভালো হয়েছিল না মন্দ তা-ও আলোচনায় আসবে।
এলসিএম, //না, না, সংস্কৃত কলেজে কি পড়ানো হত সে তো অনেক ডিটেইলস এর ব্যাপার, একদম কিস্যু জানি না। //
আপনি কেন, তামাম ভারতবর্ষের কেউ জানেন না। বহুকষ্টে তাঁর আমলে প্রাচ্য দর্শনের সিলেবাস পেয়েছি। লোকে এইরকম বলে থাকে, দশচক্রে ভগবান ভূত এভাবেই হয়। তবে এর জন্য লজ্জা পাবেন না। খিল্লি তো করবই না।
~~, //এলেবেলের বিদ্যাসাগর অ্যাসেসমেন্ট কোনদিকে যেতে পারে স্বপন বসু অশোক সেনের নাম উল্লেখে একটা ধারণা পাওয়া গেল। অশোক মুখোপাধ্যায় সেই ধারার অ্যাসেসমেন্টের ঐতিহ্য নিয়ে বড় লেখা লিখেছেন। এটা এই প্রসঙ্গে পড়ে দেখা যেতে পারে।//
এর আগে রামকেষ্ট ভটচাজের প্রসঙ্গে মন্তব্য করায় এক পূর্ণকুম্ভ স্পেকুলেশন করেছিলেন। আপনার তো সে দোষ ছিল না? পরমেশ আচার্য বিদ্যাসাগরের বোধোদয় নিয়ে মিথ ভেঙে খানখান করে দিয়েছেন। সেই সংস্করণ আমার হাতে আছে, মানে বোধোদয়-এর দ্বিতীয় সংস্করণটা। একদম প্রাইমারি রেফারেন্স। কাজেই...
স্বপন বসু বাল্যবিবাহ নিয়ে প্রচুর তথ্য দিয়েছেন। ওটুকু ভালো। অশোক সেন মার্ক্সিস্ট ঘরানা থেকে বিদ্যাসাগরকে ধরেছেন। কাজেই আলাদা মূল্য আছে। অশোকদা আমার বন্ধু। পুরনো হোলটাইমার এসইউসি-র। আমার ফ্ল্যাটে এসে একসঙ্গে আড্ডা মেরেছেন। পন্ডিত কিন্তু পুরনো ঘরানার। ও লেখা বহু আগে পড়া। নস্যাৎ করতে সময় লাগবে না। এবং অশোকদা আমাকে অসম্ভব স্নেহ করেন, আমার এই বিষয়ে মনোভাবও জানেন। কিন্তু কোনও দিন খিল্লি করেননি। কিছুদিন আগেও ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। কাজেই ও প্রসঙ্গ থাকুক।
//স্বপন বসু - সমকালে বিদ্যাসাগর - পুস্তক বিপণি ১৯৯৩// সফট কপিতে প্রচুর পাতা নেই। বইটি নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে বাঙলার মুখ থেকে। হার্ড কপি ছাড়া গতি নেই।
অমিত, //মনু পরাশর থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন বলে বিদ্যাসাগর রামমোহনকে রিগ্রেসিভ বা এযুগের মনু পরাশর বলাটা জাস্ট হাস্যকর. সে যুগে, সমাজপতিদের দাপট মোকাবিলা করে এসব নোংরা প্রথা সরাতে হলে অন্য কি রাস্তা ছিল , সেটা জানা আছে কি ? নাকি ঢিল ছোড়াটাই মুখ্য উদ্ধেশ্য ?.//
না, ঢিল ছুঁড়ে লাভ হয় না। ক্রিটিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট করতে হয়। এই গুরুপুজোর দেশে যার খুব অভাব। এখানে তার নমুনা দেখতে পাচ্ছি মাইক্রো লেভেলে। জীবনের শেষদিনে ফৌজদারি আইনের ক্ষেত্রেও সহবাস সম্মতি বিল প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর শাস্ত্রবচন আউড়াচ্ছেন! মানে ওই ফাঁস থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেননি। ১৮৫০এ বাল্যবিবাহের দোষ লিখেছিলেন যে বিদ্যাসাগর, তাঁকে আমি সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করি। কিন্তু পরাশরকে মান্য করার পরে এমন ফাঁসা ফাঁসেন যে জীবনে আর বাল্যবিবাহ নিয়ে উচ্চবাচ্য করতে পারেননি। পরাশর বাল্যবিবাহ নিয়ে কী লিখেছেন, সেটা আলটপকা মন্তব্য করার আগে দেখে নেবেন দয়া করেন। বহুবিবাহের ক্ষেত্রে বলেছেন - মনু যেহেতু বলেছেন নারী কেবল কন্যাসন্তান প্রসব করলে বহুবিবাহ জায়েজ, উনি তাকে মেনেছেন। এমনকি নারী যদি অপ্রিয়বাদিনী হয়, তবেও জায়েজ। বঙ্কিম আচ্ছাসে কড়কেছিলেন তাঁর এই স্টান্সকে। পড়ে নেবেন। বি.বি-তে উপকার হয়েছিল না অপকার - তার অনেক লেখা আছে। ঢিল ছোঁড়ার আগে সেগুলো পড়ে নেবেন। যেমন পড়ে নেবেন উইডো রিম্যারেজ অ্যাক্ট। দেখতে পাবেন সেখানে বিদ্যাসাগরের শাস্ত্রবচনকে আদৌ পাত্তা দেওয়া হয়েছিল কিনা। প্রচলিত চিন্তার দাসত্ব করতে চাইলে অন্য কথা।
রঞ্জনবাবু, ক্লিনচিট দিলাম! কিছু বলব না!!
//ঠিক যেমন অনেকে ঐতিহাসিকের ভান করেন, কিন্তু র সোর্স থেকে ইন্টারপ্রিটেশনের জন্যে যে ট্রেনিং দরকার সেসব না থাকায় শেষ পর্যন্ত সবই হাস্যকর রকমের পর্বতের মূষিকপ্রসব হয়ে যায়। //
বিনয় ঘোষ আর ইন্দ্রমিত্তিরকে মান্য করলে এই দশাই হয়! প্রথম জন বলেছেন ইয়ং গর্ডনের সঙ্গে খটাখটির জোরে বিদ্যাসাগর চাকরি ছাড়েন! কোনও রেফারেন্স ছাড়াই আপ্তবচন। আর মিত্তিরে অ্যানেকডোটে ছয়লাপ। পূর্ণকুম্ভ যে ব্রজেন বন্দ্যোর কৃশতনু বইটি পড়েননি সে কথা হলফ করে বলা যায়!
@সম্বিৎ
সরি, আমার কন্সট্রাকশন ঘেঁটে গেছে। সত্যজিত শুরু করেছিলেন চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে ,তারপর অশোক-বিতর্ক।
আচ্ছা, যেহেতু এটা ভাট বকার জায়গা তাই অশোকবাবুকে নিয়ে একটু ভাট ছাড়ি?
আমার ভাই শান্তিনিকেতনে ভর্তি হয়েছে, কিন্তু বাবার পেট্রনাইজেশন রিফিউজ করে ট্যাঁক খালি। শিবাদিত্য কুকুল ইত্যাদি বন্ধুরা নিয়ে গেল অশোক বাবুর কাছে, ওনার সেক্রেটারিয়াল কাজ করার জন্য একজন সহকারী দরকার। চারঘন্টার কাজ, সম্মানরাশি দেবেন।
উনি কোন তরুণীর বদলে এক গুঁফো গাঁট্টাগোট্টাকে দেখে স্পষ্টতঃ হতাশ হলেন। ওঃ , তুমি? বেশ। এই দুটো অনুবাদ কর দেখি। বাঙলা থেকে ও ইংরেজি থেকে।
ও কাজ করতে লাগল, উনি দাড়ি কামাতে।
আচ্ছা, হয়ে গেছে? এত তাড়াতাড়ি? দেখি।
ফাইল খুলে উনি খালি বলতে থাকলেন -ওঃ ওঃ , আর ওর দিকে তাকাতে থাকলেন। ও নমস্কার করে পিঠটান দিল।
বন্ধুরা জানতে চাইলে বলল যে অনুবাদ ছাড়াও ও একটি কাগজে লিখে দিয়েছেঃ
" মোর লাগি করিও না শোক,
হে অশোক;
মোর পাত্র রিক্ত হয় নাই"।
নমস্কার!
্সরি পাই, এটা জেনুইন স্লিপ। নট ফ্রয়েডিয়ান বাট ইনঅ্যাডভার্টেন্ট!
@সম্বিৎ,
আরে হ্যাঁ, লিখুন না। যদ্দূর মনে পড়ছে দেশ পত্রিকার চন্দ্রশেখর নিকে যিনি চিত্র সমালোচনা করতেন ( প্রবোধবন্ধু অধিকারী?) চারুলতা নিয়ে ভাট বকায় সত্যজিৎ এবং পরে অশোক রুদ্র সাহিত্য ও ফিল্ম যে স্বতন্ত্র মিডিয়াম এবং তার ইডিয়ম আলাদা সেটাতে বোঝাতে চাইছিলেন। কিন্তু অশোক রুদ্রের তিক্ত ও কষায় মন্তব্যটি ভুলে গেছি। প্লীজ, এখানে দিন, অপেক্ষায় আছি।
১) That Samkhya and Vedanta (sic!) are false systems of philosophy is no more in dispute. যস্যার্থ:- “সাংখ্য ও বেদান্ত (হায়!) যে ভ্রান্ত দর্শন তন্ত্র, সে কথা আর বলতে!”
২) ইংরেজরা জানতে চেয়েছিল, ভারতীয় দর্শনের কিছু বই কি ইংরেজিতে অনুবাদ করে পড়ানো যায় না? (তখনও মাক্সম্যুলার ও ওল্ডেনবার্গ সেই পঞ্চাশ খণ্ড অনুবাদ কর্মে হাত লাগাননি।) বিদ্যাসাগরের সাফ সাফ উত্তর, আরে মশাই, ওগুলো শুধু দুর্বোধ্য মনে হয় বলে অনুবাদ করা যাবে না – এমন নয়। আসলে কী জানেন, “there is nothing substantial in them”! যস্যার্থ:- অনুবাদ করার জন্য কিছু মাল মশলা থাকার দরকার হয়। ওগুলোতে সেরকম কিছু নেই!
পাঁচ বছর আগে গুরুর নির্মোহ টইয়ে বিদ্যাসাগর অজ্ঞেয়বাদী ছিলেন এবং বেদান্ত ও সাংখ্যকে ভ্রান্ত দর্শন বলেছিলেন লিখে হেব্বি গাল খেয়েছিলাম, তখন সঠিক রেফারেন্স দিতে পারিনি বটে!
> সম্বিৎবাবুর ৪টে ৫৯-এর শেষ অংশটা তো ষষ্ঠী বিভক্তির খুবই ভালো উদাঃ “আমার সত্যজিতের অশোক রুদ্রর চারুলতার সমালোচনার”!
চারচক্ষু মশাই মোক্ষম ধরেছেন। কুমারপ্রসাদ বা শাঁটুলবাবুর পরিচিত হাঁদুবাবুর মতন আমিও বলতে পারতাম, "কী বলব মশাই, এনারাই মানুশ, কলম ধরলেই গলগল করে ষষ্ঠী বিভক্তি বেরোয়..."।
> জোক না, সত্যিই উত্তরটা জানতে চাই। টাইপাতে কষ্ট নাহলে যদি জানিয়ে দেন তো খুশী হবো।
প্রশ্নটা কী? আমাকে?
@এলসিএম,
সত্যিই জানিনা, যা বলেছি সেটা আমার কনজেকচার। হয়তো এলেবেলে এ নিয়ে পরে বা সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখে (আমাকে ফোনেও তাই বলেছেন) গুরুতে ব্লগ লিখে জানাবেন।
@দ,
আমরা মহাপুরুষদের আনন্দমঠের সন্ন্যাসী ভাবতে অভ্যস্ত। যৌনতাকে মানবজীবনের অনিবার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বলে ভাবি না। তাই কয়েকদশক আগে আনন্দবাজারে নেতাজির প্রেমপ্ত্রের প্রসঙ্গ ওঠায় প্রতিবাদ, হামলা ও প্রায় মব লিঞ্চিং এর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। বাঙালী ( গোটা ভারতবর্ষই) ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধ থেকে বেরোতে পারেনি।
১
যদিও আমাদের ৯১.২৭ শতাংশের এখনও হাতে ঘড়ি পরার এবং দেওয়ালে ঘড়ি টাঙানোর তাৎপর্য খুব একটা মালুম হয়নি। অনেকেই সেই কারণে নরেন দত্তকে মেট্রপলিটান স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ঘটনাটা ক্ষমা করে উঠতে পারেননি। অথচ, নরেন স্যার ক্লাশে নিয়মিত আসবেন না, এলেও ছাত্রদের কাছে দক্ষিণেশ্বরের কালী সাধকের গল্প বলে সময় খরচ করবেন—এটা তাঁর আক্ষরিক অর্থেই না-পসন্দ ছিল। আমরাও আমাদের কালে কোনো বিদ্যালয়ে এরকম শিক্ষকের দেখা পেলে অপছন্দই ব্যক্ত করি, শিক্ষকদের জাত তুলেও গাল পাড়ি, কিন্তু তাই বলে নরেন দত্তর বেলায় একই নিয়ম খাটানো যায় নাকি?
২ তিনি যে কার সাহেবকে সচটি বদলা-অভ্যর্থনা জানাতে পেরেছিলেন, এটা খুব সহজ কাজ নয়। যাঁরা বিদ্যাসাগরের মধ্যে ইংরেজপ্রীতি সাহেবসান্নিধ্য রাজানুগ্রহ প্রাপ্তির ছাপ খুঁজে গবেষণা করে বেড়ান, তাঁদের কাছে এই একটি ঘটনাই চাইলে চক্ষু উন্মীলক হিসাবে কাজ করতে পারে। চটি পরে এশিয়াটিক সভাঘরে যাওয়া যাবে না বলায় তিনি যে সেখানে আর কোনো দিনই পা রাখেননি, এও এক নীরব প্রতিবাদ! স্যুটবুট না পরে লাটসাহেবের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া যাবে না বলে তাঁকে একবার যখন দরজা থেকে প্রহরীরা ফিরিয়ে দিল, তিনি বাঙালি পোশাক পরেই আসতে পারেন বলে একাধিক বার খবর দেওয়া সত্ত্বেও তিনি আর কোনো দিনই ওমুখো হলেন না! উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বের আওতায় ফেলে এই সব ঘটনাকে ফেলা যাবে না। আমাদের কালেই বা কজন প্রতিবাদী এরকম সাহস দেখাতে পারেন?
@এলসিএম,
মনে হয় সংস্কৃত কলেজে বা মেট্রোপলিটনের কোর্সে তখন পাশ্চাত্য দর্শন ছিল না।
কারণ, পাশ্চাত্ত্য দর্শন-- সাংখ্য ও বেদান্তের অ্যান্টিডোট হিসেবে মিলের লজিক পড়ানোর প্রস্তাব--- শুধু সাজেশনই রয়ে গেছল। এটা দেখুনঃ
"তাহলে আবার তাঁর শিক্ষা নোটের অন্তর্ভুক্ত এই প্রস্তাবটা দেখুন। সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের অঙ্কটা শেখাতে হবে আধুনিক কালের লেখা ইংরেজি বই থেকে। লীলাবতী আর বীজগণিত নামক সংস্কৃত পাঠ্যপুস্তক ব্যবহার করা আর উচিত হবে না। অঙ্কের বই পড়ার জন্য সংস্কৃত আয়ত্ত করে তারপর উপরোক্ত বইদুটো থেকে যে পরিমাণ অঙ্ক শেখা যাবে, আধুনিক ইংরেজি বই থেকে একই সময় খরচ করে অর্ধেক আয়াসে তার দ্বিগুণ পরিমাণ অঙ্ক শেখা সম্ভব হবে।দ্বাদশ শতাব্দের অঙ্ক নয়, উনিশ শতকে বীজগণিত ও পাটিগণিত যে স্তরে এসে পৌঁছে গিয়েছিল, বিদ্যাসাগর সেই স্তরের অঙ্ক শেখাতে বলছেন।
সংস্কৃতপ্রীতি দেখতে পাচ্ছেন নাকি কেউ? মেকলের ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন? বা ব্যালান্টাইন? বা রাজানুগ্রহ? রাজারা কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্রের সেই প্রস্তাব একটাও গ্রহণ করেনি"।