রঞ্জনবাবু, সঙ্ঘ খুব ভালো সে তো বুঝলাম। সেখানে নারীর স্থান অন্য ধর্মের চেয়ে কিছু আলাদা ছিল? না থাকলে কেন ছিল না?
এলেবেলে এখানে থোড়ি সিএসকে খিল্লি করতে নেমেছে! উনি পড়ুয়া মানুষ, দুম করে যা হোক কিছু বলেন-টলেন না। এলেবেলে এয়েচে চালুনির ছ্যাঁদা দেখতে, যে কিনা সূঁচের ছ্যাঁদা দ্যাখে! হে হে, বুইতে পারলেন না মোয়ায়!!!
@অরণ্য,
মহান মহারাজের কথা বলা হচ্ছে কি? উনি বিবেকানন্দ ইউনিতে পিওর ম্যাথস পড়ান, এম আইটির প্রাক্তন এবং কয়েকবছর আগে অংক নিয়ে রিসার্চ করে একটা বড়সড় খেতাব পেয়েছিলেন। তখন ইন্টারভিউ পড়েছিলাম। উনি রিসার্চে মগন থাকতে চান। অধ্যাত্ম বা রাজনীতি নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা ছিল না। অবশ্যি ব্রতীন চেনে, ও ভাল বলতে পারবে।
বৌদ্ধধর্মের গ্রন্থ?
ত্রিপিটক এসেছে বুদ্ধের মৃত্যুর কয়েকশ বছর পরে । এবং উনি নিজেই--অরিন আগেই দেখিয়েছেন-- তাঁর কথাকে সমালোচনার উর্ধে ব্রহ্মবাক্যের মত গ্রহণ করোতে বারণ করে গেছেন বারবার।
আম্বেদকার এজন্যেই বৌদ্ধধর্মকে মুক্তবুদ্ধির ধর্ম এবং ওপেন এন্ডেড বলেছেন।
যতদূর জানি হজরত মহম্মদের বাণী এবং মার্ক্সের ম্যানিফেস্টো, ক্যাপিটাল , গোথা প্রোগ্রাম, হেগেল নিয়ে লেখাপত্তর জীবিতকালেই লেখা হয়েছিল।
আজও খ্রীশটধর্মের কোন রূপ আফ্রিকান আমেরিকানদের কাছে নিপীড়িতের যন্ত্রণার প্রকাশ হয়ে আসে। পল রোবসনের ধর্মসংগীত দেখুন।
দুটো পয়েন্ট নিয়ে কিছু কথা
====================
এক, ভন্ড কাকে বলব ? আমার মতে যিনি অন্যদের যা বলেন তা নিজে পালন করেন না। সে হিসেবে বুদ্ধকে ভন্ড বলা যাবে কি?
আজকের শ্রীলংকার বৌদ্ধধর্মের বা ময়ানমারের বৌদ্ধদের আচরণ দেখে আড়াই হাজার বছর আগের এক প্রচারকের মতাদর্শের বিচার করা আজকের নর্থ কোরিয়া, চীন বা সিপিএমকে দেখে মার্ক্স-লেনিন-মাওকে বোঝার সমতুল্য।
অনেক ধর্মই জন্মেছিল শোষিতের নিপীড়িতের দীর্ঘশ্বাস ও হাহাকারকে রূপ দিতে গিয়ে-- তা ক্রমশঃ শাসকের ধর্ম বা ক্ষমতার ধর্ম হিসেবে পরিবর্তিত হয় । তারপর --জীবনানন্দ যেমন বলেছেন-- ব্যবহৃত ব্যবহৃত হতে হতে "শুয়োরের মাংস হয়ে যায়।" ক্রিশ্চানিটি, বৌদ্ধধর্ম, ইসলাম এবং মার্ক্সবাদ-- কোনটাই ব্যতিক্রম নয়।
দুই, বুদ্ধের আম আদমির সমস্যা নিয়ে কোন মাথাব্যথা ছিল না ? উনি খালি আত্মদীপো ভব ( এর মানে যদি খালি নিজের সমস্যা নিজে সল্ভ কর বলা হয়, তাহলে আমি নাচার) শেখাতেন, ভালে দুনিয়া ভাড় মেঁ জায়ে!
মানতে পারলাম না । কচকচিতে না গিয়ে খালি রবীন্দ্রনাথের 'দুর্ভিক্ষ শ্রাবস্তীপুরে যবে, জাগিয়া উঠিল হা-হা রবে'র দিকে ইশারা করছি। সেখানেও রত্নাকর শেঠ এবং অন্যান্য শ্রেষ্ঠীরা হাত উলটে দিলেন। শুধু 'ভিক্ষুণীর অধম সুপ্রিয়া, তব আজ্ঞা লইল বহিয়া'।
খেয়াল করুন --এংগেলসের জীবন চলত ম্যাঞ্চেস্টারের কাপড়ের কলে শেয়ারের মালিক হিসেবে প্রাপ্য ডিভিডেন্ড ( শ্রমিকের শোষণের ফলে প্রাপ্ত 'উদবৃত্ত মূল্য' ) থেকে । তার ভাগ মার্ক্সও লন্ডনে বসে পেতেন। লেনিনের ইসক্রা পত্রিকার পেছনে বিশাল আর্থিক সহযোগ ছিল জনৈক পুঁজিপতি সাশা মরোজভের। হয়ত সাশার কোন 'গিল্ট' ছিল ।
আসলে বুদ্ধ এমন সময়ে জন্মেছিলেন যখন চারদিকে প্রাচীন গণরাজ্যগুলি ভেঙে যাচ্ছে। রাজতন্ত্র এবং সাম্রাজ্য বিকশিত হচ্ছে। সেখানে বুদ্ধ তাঁর আদর্শ নিয়ে দাঁড়ালেন গণতন্ত্রের পক্ষে। তাঁর সঙ্ঘের কোড অফ কন্ডাক্ট অনেকটাই কৌম গণতন্ত্র থেকে নেয়া । তাই কোন ভিক্ষু নিজের নামে দান গ্রহণ করোতে পারবেন না । তা চতুর্দিশার আগত-অনাগত সঙ্ঘেরনামে গৃহীত হবে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলতে থাকবে আটটি জিনিস-- পরণের কাপড়, ভিক্ষাপাত্র, দন্ড, সেলাইয়ের সুঁচ সূতো ইত্যাদি।
কেন এখানে ইতিহাসের সব মার্কামারা পণ্ডিতরা আছেন তো! একমাত্র বৃজি (উত্তর বিহার) আর মল্ল (গোরক্ষপুর) ছিল প্রজাতান্ত্রিক। বাকি সবকটাতেই রাজতন্ত্র ছিল। সবকটাতেই মারামারি লেগে থাকত। শেষে মগধের উত্থান। কাকে দিয়েছে রাজার পার্ট!!
বাপ রে কী ডানপিটে ছেলে! ষোড়শ মহাজনপদে নাকি গণতন্তোর বন্যা বইত!! খিক্স!!!
"অভিজাত সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ যারা রাজাকে নির্বাচিত করতে পারত।" - এ তো প্রায় ইউএস প্রেসিডেন্ট ইলেকশনে ইলেক্টোরাল কলেজের গপ্প।
"কিন্তু কাশী-মগধ-কোশল-পানক্সাল-গান্ধার এট আল সবই তো রাজতন্ত্রই শোনা যায়" - তাই হবে। আমি লিচ্ছবি থেকে জেনেরালাইজ করে ফেলেছি হয়ত।
আমি ছোটবেলায় 'সব মুনিষে পজা মমা' পড়ে অর্থ করেছিলাম, সব মানুষই আমার প্রজা। কী ভীষণ সাম্রাজ্যবাদী কথাবার্তা!
মানুষের মন বড় বিচিত্র।কোন ঘটনা বা মুহূর্ত, মনে বড় ও চিরস্থায়ী পরিবর্তন আনে।পি টি এস এস এর কল্যাণে সবাই সম্যক ভাবে পরিচিত আছে।যুদ্ধে যাওয়া সৈনিক,শত্রু নিধন করবোই বলে এগিয়ে গিয়েও আহত শত্রু সৈনিক কে জল দিতে দেখা গেছে। বহু পুলিশ অফিসার এর মনে গিল্টি ফিলিং হয়। অশোকের মনে রক্তাক্ত যুদ্ধ ক্ষেত্র দেখে এ হেন পরিবর্তন অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বুদ্ধ দেবের মনের জিজ্ঞাসা ও অস্বাভাবিক নয়। জরা,ব্যাধি মৃত্যু সম্পর্কে ভয় বা কৌতূহল ও স্বাভাবিক। চিরন্তন দার্শনিক জিজ্ঞাসা। উনি উত্তর খুঁজতে অন্বেষণে বেরিয়েছিলেন।
একটা জিনিষ জানতে ইচ্ছে করে।এই মনাস্ট্রি গুলোতে যে বেশ কিছু বাচ্চা দেখি,মানে ক্ষুদে লামারা;এদের ভালো লাগে,সারা জীবন এভাবেই কাটাতে?
পুরো ষোড়শ মহাজনপদেই? বৈশালী তাই ছিল বলে শুনেছি - লিচ্ছবিরা কাইন্ড অফ গণতন্ত্র প্র্যাকটিস করতেন। কিন্তু কাশী-মগধ-কোশল-পানক্সাল-গান্ধার এট আল সবই তো রাজতন্ত্রই শোনা যায়