ষোড়শ মহাজনপদ বা সিদ্ধার্থর রাজ্যও শুনেছি প্রায় ডেমোক্রেসি ছিল।
"ধোঁকা" দেওয়া কথাটা আমার লেখা, মনে হয় এঁরা ওভাবে হয়ত ভাবেন না। :-)
"তবে লিখলেন বলে বলি, বাঙালীর যা জিভ তাতে সে সোয়াবিনে খুসী হত না, খাসির মাংসের ধারেকাছে এসব আসে না মনে হয়"
তাহলে শুনুন।
আমাদের এখানে Fo Guan Shan বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি মন্দির আছে, এরা নিরামিষ খাবার পরিবেশন করেন, কিন্তু আপনি না জেনে খেলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। বহু বছর আগে আমার শ্বাশুড়ি-মা এসেছিলেন, তখন ওনাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি "(নকল) চিকেন ফ্রাই" এর অর্ডার দিলেন | তারপরে সে খাবারে কামড় দিয়েই বলতে লাগলেন, এরা নির্ঘাত মিথ্যে কথা বলছে, নির্ঘাত মাংস মিশিয়েছে, এরকম হতে পারে না। সে যাই হোক, কেউ আর তাঁকে বিশ্বাস করাতে পারে না, শেষে মঠাধ্যক্ষা ভদ্রমহিলা এসে তাঁকে হেঁসেলে নিয়ে গিয়ে বিশ্বাস করিয়েছিলেন। আপনাদের শহরে ়Fo Guan Shan বৌদ্ধ মন্দির থাকলে গিয়ে দেখতে পারেন। "ঠকবেন" না, :-)
কিছু জিনিস নিজেরা বাড়িতেও ট্রাই করে দেখতে পারেন, যেমন Firm Tofu আর হলুদ পেঁয়াজ লঙ্কা দিয়ে নকল scrambled "egg" (যেভাবে স্ক্র্যামবলড এগ যেভাবে করে আর কি), করে দেখবেন, কাউকে না বলে দিলে অনেকেই বুঝতে পারবেন না, ডিম খেলেন কি না (মনে করে দেখুন ডিমের মত জিনিস যদি এই হয়, শুধু খেয়াল রাখবেন জল যেন পুরোপুরি ঝরে যায়)। তারপর ধরুন নরম টোফু (শক্ত টোফুতেও হবে তবে যাই ব্যবহার করুন, খুব ভাল করে জল বের করে নিতে হবে না হলে হবে না) + তার চারপাশে নোরিপাতা (seaweed, টোস্ট না করে) দিয়ে মুড়ে + চালের গুঁড়োয় ডুবিয়ে ডিপ ফ্রাই করে দেখতে পারেন, মাছের ফ্রাইয়ের সঙ্গে বেশ মিল পাওয়া যাবে (আমার অভিজ্ঞতায় অনেক কে খাইয়ে দেখেছি ধরতে পারেন নি) | তারপর আজকাল তো ইমপসিবিল বার্গার পাওয়া যায়, তবে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা এসব ব্যাপারে সাহেবদের দশ গোল দিতে পারেন, :-)
কাজেই ইন্দ্রিয়কে "ধোঁকা" দেওয়ার নানাবিধ পদ্ধতি চীনা জাপানী কোরিয় বৌদ্ধ মন্দিরে বহু শতাব্দী ধরে আবিষ্কৃত হয়েছে। কাছাকাছি ওরকম মন্দির/মঠ থাকলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।
"বৌদ্ধরা খাবারের ব্যাপারটা বিশেষ নজর দেয় নি।"
হয়ত বাংলার ক্ষেত্রে কথাটা প্রযোজ্য (তবে বাংলায় বৌদ্ধ যুগে মাছ মাংস খাওয়ায় নিষেধ ছিল কি? কারণ বুদ্ধদেব বা সমকালীন বৌদ্ধরা এ বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমি পড়ি নি, শুধু নিজে থেকে বধ করে বা কারো জন্য বিশেষ করে বধ করে বা ধরে প্রাণী মাংস / মাছ খাওয়ায় নিষেধ বলে জানি। এর বাইরে জানি না ) |
সে যাই হোক, চীন, জাপান, কোরিয়ায়,যেখানে বৌদ্ধ মঠে মাছ মাংস চলতে না, সেখানে খাবারের ক্ষেত্রে তাঁরা আশ্চর্য রকমের উদ্ভাবন করেন, আজও তার প্রমাণ পাবেন। চীনা, জাপানী, কোরিয়রা বাঙালীদের তুলনায় কম মাংসাশি বা মাছ কম খান, একথাটিও আমার মনে হয় বিশ্বাসযোগ্য নয়।
খাদ্য-পানীয়ের জগতে তিনটি ধর্মের তিনটি অবদান: ইসলামের সূত্রে এসেছে কফি, খ্রীস্টধর্মের সূত্রে আমরা পেয়েছি ওয়াইন, আর বৌদ্ধদের সূ্ত্রে পেয়েছি চা | বোধিধর্ম যখন চীনে "চান" (পরে জাপানে "জেন") প্রচারে গেলেন, তখন কথিত আছে যে ঘুম তাড়াতে বোধিধর্ম নিজের চোখের পাতা উপড়ে ফেলেছিলেন, আর তাই থেকে চায়ের জন্ম, :-), চীন জাপানের বৌদ্ধ মঠগুলোতে চা, বিশেষ করে জেন বা চান মঠে চা এবং ধ্যানের একটা ভাল রকম যোগাযোগ ছিল।
কিন্তু কথা হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব , পূর্ব এশিয়া, চীন, জাপান, কোরিয়ায় বৌদ্ধ মঠের খাবার দাবার নিয়ে। এখানেই সেই একদিকে ব্রহ্মজাল সুত্তের কারো শারীরিক ক্ষতি না করা, শূন্যতা আর "ইন্দ্রিয় যাকে যা বলে ভাবছে আসলে সে তা নয়" তার একটি খাবার আর রন্ধনপ্রণালীতে ব্যক্ত হয়েছে | একটি রূপ জাপানী শোজিন-রিয়োরি ধাঁচের খাবার, যেখানে টোফু (সোয়াবিনের "ছানা"), সামুদ্রিক উদ্ভিদ (seaweed), আর seitan, সোয়া সস এর জাদুকরীতে তৈরী এমন সব খাবার, খেলে আপনার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় যে মাছ/মাংস খাচ্ছেন না, এমনকি সে খাবারে পেঁয়াজ রসুন অবধি নেই ।
সেই রন্ধন প্রণালী হয়ত বাংলায় পৌঁছয় নি।
হা, হা,হা।ওই সুসি (খুব ভালো রেস্তোঁরা তে) খেয়ে আমার মাছ দেখলে নিজেকে কেমন বৈষ্ণব মনে হতো দিন কয়েক।
খুন হতো, টম চাচা ওই রুটি খেয়ে,
উন্মাদ হতো মন,ওই সুসি দেখে।
উত্তর ভারতে বরাবর আয়ুর্বেদিক ওষুধের ওপর ঝোঁক আছে।কাজ হোক বা না হোক।পূর্ব ভারতের হলো হোমিওপ্যাথির দাপুট। রামদেব এর মার্কেটিং ভালো।ওপর মহলে কানেকশন ভালো। অন্যান্য দেশ হলে করোনিল এর জন্য জবাবদিহি চাই তো।কিন্তু এখন দিন কাল ভালো নয়।গ্রহ নক্ষত্রের পজিশন ঠিক নয়।
কিন্তু সি এস,বৌদ্ধ ধর্মে খাবার ব্যাপারে কোন রেস্ট্রিকশন নেই তো!জাপানিরা তো সর্বভুক জাত।সিকিম গিয়ে দেখেছি সব রকম চলে।তিব্বতী মোমো তো কে না জানে!
কৈবর্ত কারা?
পাল বংশ এলো চলে গেলো।সেন বংশ এলো।তাহলে কি সেনরা হিন্দু ধর্ম কে টিকে থাকতে সাহায্য করলো?
তার পর এলো সুলতানী যুগ।এখানেও চৈতন্য দেব এসে নবজাগরণ ঘটালেন হিন্দু ধর্মের। মোটামুটি দেখা যাচ্ছে,কেউ না কেউ এসে হিন্দু ধর্মকে টিকে থাকতে সাহায্য করছে।