একটা লোক কেন বউ বাচ্চা ছেড়ে গেসল সেটা আমার কাছে সত্যি সেরকম সিরিয়াস ইস্যু নয়। সংসারের উপর বীতশ্রদ্ধ বা বীতকাম হওয়ার একশো হাজার কারন থাকে তার মধ্যে প্রচুর কারনে বহু লোক ঘর ছেড়ে জাহাজের খালাসি হয়ে ভেসে পরেছে এমন ঘটনা ও দুনিয়ায় দুরলভ নয়। যেটা দুরলভ যে কোন সামাজিক বা চিন্তার ইতিহাসের লীগাসি সেই লোকটি কে ওরকম নৈর্বক্তিকতাবাদী অথচ কম্প্যাশনেট উপলব্ধির দিকে ঠেলে দিল??
উত্তরটা ঘটনাচক্রে দেখুন আগের পোস্টে দু একটি শব্দ ব্যবহার করেছেন, তার মধ্যে আছে ঃঃ " গিল্ট ফ্রী "। মারাত্নক শব্দ এটা ঃঃ))
কফি কোম্পানি চারগুন দামে একমাগ কফি বেচে, তার গায়ে লেখা, এই লাভের দশ শতাংশ নিকারাগুয়ার বাচ্চাদের স্কুল প্রজেক্ট এ যাবে। আপ্নি সেটা পড়ে সামান্য হলেও গিল্ট ফ্রী হন কফিতে চুমুক দিতে দিত।।
এখন, আংশিক স্বচ্ছল কিন্তু নেকেড এক্সপ্লয়টেশনে ভরা সমাজে, তুলনামূলক স্বচ্ছল লোকেরা ক্রমাগত গিল্টে ভুগতে থাকে। সনাতন ধরম তাদের ঘাড় ভেংগে যাগ যজ্ঞ, পুরোহিততন্ত্র চালাত। গিল্ট এর ওপর দাঁড়য়ে ব্যবসা। এর সংগে আদিম গুহাবাসী মানুষের ভয়ের যোগ নেই।
বুদ্ধ যখন ঘর ছাড়ছেন তখন সমাজের একটা বড় অংশ বেশ এফ্লুএন্ট, লিপির আবিস্কার হয়েছে, নগরনটি রা আছেন তথাকথিত সম্মানে, শ্রেষ্ঠী দের প্রতিপত্তি বেড়েই চলেছে, একদিকে বিলাস বৈভব চূড়ান্ত আরেকদিকে এক্সপ্লয়টেশন আছে এবং সেটা ঘিরে বৈভবশালী অংশে গিল্ট তইরী হচ্ছে , বুদ্ধ এই গিল্ট ফীলিং থেকে মুক্তির নতুন রাস্তা খুঁজলেন।
একদিকে অরথহীন পৌরহিত্যের বিরধিতা,, আরেকদিকে নিজেকে " দেখা " র একটা ধরন তুলে ধরলেন যাতে প্রভাবশালী হলেও অহংবোধ নীচে নেবে আসে, অনিত্যতাকে মেনে নিতে শেখালেন যাতে হারানোর ভয় কমে প্রিভিলেজপ্রাপ্ত অংশে এবং একটা ফিলানথ্রপিক মোড় দিলেন যাতে সমাজের ফিউজ বালব রক্ষিত হয়। পরিনতি, প্রিভিলেজড ক্লাস তাদের গিল্ট ফীলিং থেকে মুক্তির পথ পেল, মানসিলভাবে আত্মনির্ভরশীল হল এবং তামসিকতায় পয়সা না উড়িয়ে কিছুটা সমাজের কাজে লাগতে শিখল।
একেবারেই, লিবারাল ক্যাপিটালিজম এর শিক্ষাগুরু যাকে বলে। এই কারনেই প্রিভিলেজপ্রাপ্ত সমাজে, তাবড় সিইও থেকে বিজনেস টাইকুন এদের মধ্যে বুদ্ধিজম আজ ও আবেদন রাখে। পাওয়ার কন্ট্রোল করা এবং গিল্ট ফ্রী জীবনের পথ দেখায়।
স্টার্ভড
এটাও আমাদের দেশের একটা বৈশিষ্ট্য। গুরু বৌ বাচ্চা ফেলে চলে গেলে সেটা ভক্তরা খুব গ্লোরিফাই করে। সেক্সস্টার্ভ জাত কিনা।
বৌ বাচ্চা ফেলে রেখে কেউ কোথাও যাওয়াকে ক্রেডিট দিতে হবে একথা কে বলেছে? কিন্তু কেউ যদি ফেলে রেখে চলে যায় (একা বুদ্ধ কেন, লরেন তো হালের ছোকরা, চৈতন্য দেবও তো চলে গেছিলেন), তার একটা মোটিভেশন থাকে নিশচয়ই, সেইটা নিয়ে কথা |
তাহলে রাজার ইনফ্লুয়েনস শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে ধর্মের "বিস্তার"ও শেষ হত, তাই না? সেটা কি দেখা যাচ্ছে?
" ওটা একটা জাতির সামাজিক অর্থনইতিক এবং চিন্তার ইতিহাসের থেকে এসেছে। "
হ্যাঁ।
এবার ভেবে দেখুন সিদ্ধার্থ গৌতমের ক্ষেত্রে সেটা কি ছিল যে ভদ্রলোক সমস্ত কিছু মায় বউ বাচ্চা ফেলে বেরিয়ে গেলেন, তারপর জীবনের ৫০ টা বছর জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়ে মাধুকরী করে অন্ন সংস্থান করে কেটে গেল।
হ্যাঁ কিন্তু কোন মাসির গোঁফ গজাবে তার গপ্প অমন রান্ডম নয়। ওটা একটা জাতির সামাজিক অর্থনইতিক এবং চিন্তার ইতিহাসের থেকে এসেছে। বিগ্যানের খেত্রেও করপোরেট টাকা না ঢাল্লে আধুনিক টেক্নলজি আসত না, প্রিন্সিপিয়া মাথায় দিয়ে ঘুমুতে হত, একটি ম্যানহাটন একটি জগত খুলে দিয়েছে -- তাতে কী? করপোরেট বস রাস্ট্র আদউ কোন বিগ্যানচরচায় টাকা ঢালবে সেটা রান্ডম না, দীর্ঘ ঐঐতিহাসিকতার অংশ। ধর্ম ও তাই। যারা ওই লিনিয়েজ টা ধরতে পারে না তারা কী হইতে কী হইয়া গ্যালো ভাবে।
"এবার এনারা কেন নিজে সেই ধর্মে কনভার্ট হতে গ্যালেন, সে নানা জায়গায় নানা গল্প হতে ই পারে. কেও বৌয়ের প্রভাবে, কেও গন্ডা খানেক গার্লফ্রেইন্ড এর প্রভাবে , কেও হয়তো কোনো গুরুর প্রভাবে, কেও হয়তো পলিটিকাল প্রভাবে etc. etc"
তার মানে এদের কারো নিজের কোনো Agency বা সত্তা নেই, সবটাই পরের প্রভাবে?
এ রকম একটা ধারণার পেছনে কি যুক্তি?
"অরিনের যুক্তিটা খুব স্ট্যান্ডার্ড ডিফেন্স। উনি তো বেশিরভাগ সময় হাওয়াই চটি পরে ঘুরতেন। কথা হল রাজার বাগানে তিনদিন কাটালেও সেটা বুঝিয়ে দেয় লোকটা ক্ষমতাশালী। রামদেব কেস।"
বুদ্ধদেবের সঙ্গে, হাওয়াই চটি পরে ঘোরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, আর রামদেবের তুলনা টানছেন দেখে দুঃখ পেলাম।
এর পর আর এ নিয়ে অবান্তর তর্ক করে লাভ নেই।
আপনার মনোজগতে একটা ছবি আছে নিশ্চই, সেটা আপনার সংস্কারজনিত, আপনার জগতে আপনিই ঠিক ।
বলুক দালাল।। এই কনফ্লিক্ট গুলো লাগা দরকার। ইদানীং দেখি বাংগালি গোঁসাইরা খুব পা চাটছে বিজেপির। অথচ এই সনাতন ধর্ম কোনদিন হ্লাদিনী শক্তিকে মানে নি, রাধা কে এবং গোটা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ কে বলেছে মুসল্মানদের নিরদেশে লেখা। সেই গোঁসাইরা চিরকাল সনাতনিদের লাথি খেয়ে এখন ভাবছে তাদের পায়ে ধরে তরে যাবে।