হ্যাঁ। বাকী আধ খাওয়া না কোয়ার্টার বাদ দিয়ে আপেলটা ম্যাকে সেঁটে দিয়েচে ।
@অটোজ: “ দীপা মা বড়ুয়া? এই প্রথম নাম শুনলাম। ইনি করেন কী? দীক্ষা টীক্ষা দেন?”
কি জানি, এনার নাম আমি প্রথম শুনি শ্যারন সলজবারগের লেখায়। পরে অন্যান্য বহু আমেরিকান থেরাবাদীদের লেখায় এই মানুষটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পড়েছি। ইনি বেঁচে নেই ।
@“:-/“: “ তারপর কি? অ অরিন”
:-),নেহাত শুনবেন তাহলে?
এঁরা ইরান আফগানিস্তান হয়ে ভারতে ঢুকবেন, আফগানিস্তানের উৎকৃষ্ট হাশিশ, বাকী অভিজ্ঞতা অনেকটা @সে যেমন গতকাল লিখছিলেন,
“and we scored great hashish in Afghanistan, and at the end of three months, I had seen the inside of the Land Rover, I had 1300 slides, many tape recordings of Indian music; I had drunk much bottled water, eaten many canned goods: I was a westerner traveling in India. That’s what was happening to me when I got to Nepal.”
এই অবধি একরকম চলছিল। নেপালের blue Tibetan নামে একটা ঠেকে এঁর জনৈক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়, এবং তার পর জীবনটা বদলে গেল। এই লোকটি মাইকেল রিগস, সে তখন ভগবান দাস নাম নিয়ে তিব্বতী কর্ম কাগ্য ঘরানার চোগিয়াম ট্রুমপা (ইনি সাংঘাতিক লোক, ;-)), তারপর আনন্দময়ীমা, মহাঋষি মহেশ, আরো কার কার থেকে দীক্ষা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অ্যালপারট তখন পুরোদস্ততুর হিপি, সম্বল বলতে আমেরিকা ফেরার টিকিট, ল্যাণ্ডরোভার গাড়ির আধা মালিকানা, আর এক বোতল lsd ।
রামদাস লিখছেন,
“I’m clinging tight to my passport and my return ticket to America, and a traveler’s check that I’ll need to get me to Delhi. Those things I’m going to hold on to. And my bottle of LSD, in case I should find something interesting.
And during these travels he’s starting to train me in a most interesting way. We’d be sitting somewhere and I’d say,
“Did I ever tell you about the time that Tim and I . . .”
And he’d say, “Don’t think about the past. Just be here now.”
Silence.
And I’d say, “How long do you think we’re going to be on this trip?”
And he’d say, “Don’t think about the future. Just be here now.”
I’d say, “You know, I really feel crumby, my hips are hurting . . .”
“Emotions are like waves. Watch them disappear in the distance on the vast calm ocean.”
He had just sort of wiped out my whole game. That was it—that was my whole trip—emotions, and past experiences, and future plans."
তারপর একদিন ভগবান দাস বললেন তিনি তাঁর গুরুর কাছে যাবেন। রিচার্ড অ্যালপারটের গুরু কি, কাকে বলে, কিছুরই ধারণা নেই, হিপির জীবন, ভগবান দাসের সঙ্গে ঝুলে পড়লেন। ভগবান দাসের সঙ্গে ল্যাণ্ডরোভার গাড়িতে, গাড়ির কন্ট্রোল ভগবান দাসের হাতে, এই করে নৈনিতালের কাছে কাঁইচি বলে একটা জায়গায় গাড়ি থামল। এই কাঁইচিতে নিম করোলি বাবার আশ্রম।
রিচার্ড অ্যালপারট পরে নিম করোলি বাবার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন, ও রামদাস নাম গ্রহণ করে আমেরিকায় ফিরে যান। যে কারণে নিম করোলি বাবার কথাটা ওঠে: এর কয়েক বছর পরে স্টিভ জোবস রামদাসের কাছে নিম করোলি বাবার কথা শুনে ভারতে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অভিপ্রায়ে কাঁইচি আশ্রমে যান। নিম করোলি বাবাকে দেবার জন্য জোবস একঝুড়ি আপেল কিনেছিলেন। আশ্রমে পৌঁছাবেন পর জোবস জানতে পারেন যে তার কিছুদিন পূর্বে নিম করোলি বাবা দেহ রেখেছেন, ফলে জোবসের পক্ষে তাঁকে আর আপেল নিবেদন করা হয়নি। কারো কারো মতে এই ব্যাপারটারই প্রেক্ষিতে স্টিভ জোবস অ্যাপল-ম্যাক এর লোগোতে আধ খাওয়া আপেলের চিহ্ন রেখেছিলেন। আমি এর সত্যতা জানিনা, তবে এমন হয়ে থাকলে ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং।
এতগুলো কথা লিখলাম এইজন্য যে, বিদেশিদের ভারতীয় অধ্যাত্ম কি বৌদ্ধ ধ্যান প্রেমের পেছনে একটা ইতিহাস আছে। এমন একটা সময়ের গল্প যেখানে অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছিল। রামদাস এবং পরবর্তীকালে এক ঝাঁক আমেরিকান বৌদ্ধ সন্ন্যাস, গৃহী মিলে একটা বিশাল ইকোসিস্টেম তৈরী করেছেন, সেটা কিন্তু ঠিক esoteric India বা হুজুগে নয়। এর একটা বিশাল সামাজিক প্রয়োজন ছিল, আজও আছে। সে অবিশ্যি অন্য প্রসঙ্গ ।
আছে আছে, এঁদের সবচেয়ে প্রভাবশালী থেরাবাদী বৌদ্ধ গুরু স্বয়ং দমদমনিবাসী এক শান্ত বৃদ্ধা -- দীপা মা বড়ুয়া। নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই, :-)
@Atoz: "অঙ্গ। সেই তিব্বত, ভারত, সিলিকন ভ্যালি, ম্যাজিক মাশরুম, স্টীভ জোব্স, বজ্রযান, বুক অব ডেড, অ্যালপার্ট, ইস্কন , স্বর্গ, মর্ত্য, হোরেশিও সব একাকার করে দেওয়া সেই মহা জিগস পাজল।
মহাযোগমায়া তাঁর মহা আকর্ষণী শক্তির বলে এই সব করছেন। ঃ-)"
তাই হবে হয়ত, আপনি যখন বলছেন।
তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, সুনীল, শরৎকুমার, নবনীতাদের সঙ্গে অ্যালেন গিনসবারগদের আলাপ বার্কলের রাইটিং প্রোগ্রামে। সেই একই উত্তাল ১৯৬০ এর দশকে জ্যাক কেরুয়াকের মতন লেখক মনমাতানো বৌদ্ধ লেখা লিখছেন একের পর এক -- "Wake Up", "Dharma Bums", "On the road" ...
অ্যালপারটের গপ্পোটা শেষ হল না। ১৯৬৭ এর শেষের দিকে অ্যালপারটের সঙ্গে এক মনস্তাত্বিক এবং সফটওয়্যার entrepreneur এর সঙ্গে আলাপ হয়। ততদিনে নেশার পাল্লায় পড়ে রিচার্ড অ্যালপারট হার্ভারডের চাকরিটি খুইয়েছেন। এই সফটওয়্যার এন্তেপ্রেনিউয়ার ভদ্রলোকের নাম ফ্রান্সিস মেখনার, ইনি একটি কর্পোরেট লার্নিং সিস্টেম জেরক্স কর্পোরেশনকে ১৯৬৭ সালে পাঁচ মিলিয়ন ডলারে বেচে দিয়ে ৩৫ বছর বয়সে রিটায়ার করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে ভারতে যাবেন মনস্থ করেছেন। ফ্রানসিস মেখনার অ্যালপারটের নেশার ইয়ার।
মেখনার আর অ্যালপার্ট মিলে একটা ল্যাণ্ডরোভার কিনে সেটাকে নিউ ইয়রক থেকে লন্ডনে উড়িয়ে এনে সড়ক পথে ইউরোপ থেকে ভারতে প্রবেশ করলেন।
তারপর, ;-) ...
রিচার্ড অ্যালপার্ট যে সময়ে আমেরিকা থেকে আশ্চর্য অভিজ্ঞতার সন্ধানে ভারতে আসবেন স্থির করলেন, কি এক অদ্ভুত সমাপতনে যেন প্রায় একই সময়ে কলকাতা থেকে বৌবাজারের ৬৯ বছরের প্রৌঢ় গৌড়ীয় বৈষ্ঞব অভয়চরণ দে তাঁর গুরুদেবের বাণী ও শ্রী চৈতন্যদেবের "পৃথিবীতে যত আছে নগরাদি গ্রাম, সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম" স্মরণ করে পাড়ি জমালেন নিউ ইয়র্কে। ব্রুকলিনের টমকিন্স স্কোয়ার পার্কে একটি এল্ম গাছের তলায় প্রৌঢ় হরিনাম সংকীর্তন করতেন। এখানেই পরে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণচৈতন্য সংঘ) তৈরী হবে। সেই দিনগুলির কথা " In every town and village" বইটিতে ISKCON এর "Back to Godhead" পত্রিকার এক সময়ের সম্পাদক সৎস্বরূপ দাস গোস্বামী লিখতে গিয়ে লিখেছিলেন যে, অভয়চরণের সেই আশ্চর্য মৃদু সংগীত, হাস্যমুখ ব্যবহার, সবাইকে আপন করা, আর ভারতীয় রান্না ব্রুকলিনের দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গরা, হোমলেস লোকজনকে দারুণ প্রভাবিত করে। এমনকি টমকিন্স স্কোয়ার পার্কে অ্যালেন গিন্সবারগ অবধি হরেকৃষ্ণ নামগানের সঙ্গে নেচেছেন। পরে স্টিভ জোবসের জীবনী লিখতে গিয়ে ওয়ালটার আইস্যাকসন জানাচ্ছেন রীড কলেজে পড়ার সময় স্টিভ জোবস বার্কলের ইসকন মন্দিরে গিয়ে প্রসাদ খেতেন।
স্টিভ জোবস, আপেল, ম্যাক, ইসকন, রিচার্ড অ্যালপারট, সিলিকন ভ্যালি, ভারতবর্ষ, সবটাই এক প্রকাণ্ড jigsaw puzzle এর মত। রিচার্ডের গল্পে ফিরে আসি ।
চলবে ...
@Atoz: "টিয়াহুআনাকোতে গিয়ে খেতে হয় টিয়ানান্যাকটিল, কাঁধে রাখতে হয় একটা কমলা টিয়াপাখি, সঙ্গে গান বাজাতে হয়, "টিয়া টিয়া টিয়া আ আ / অজপাড়াগাঁয়ে থাকে / বাঁকা চোখে তাকায় টিয়া নোলক পরা নাকে", নাহলে পুরো এফেক্ট পাওয়া যায় না।"
রিচার্ড অ্যালপার্টের অত কিছু করার দরকার পড়েনি অবিশ্যি, কারণ ম্যাজিক মাশরুমে সাংঘাতিক নেশা হত। Be Here Now বইটিতে রামদাস লিখছেন,
“Tim had eaten nine of these mushrooms—so many male and so many female mushrooms—with a group of others around a swimming pool and had had a profound experience. He said, “I learned more in the six or seven hours of this experience than I had learned in all my years as a psychologist.”
কালক্রমে ম্যাজিক মাশরুমের সাপ্লাই ফুরিয়ে এল। তখন টিম লিয়ারি একটা মোটা অর্থের গ্রান্ট জুটিয়ে চেতনা পরিবর্তনের গবেষণা করবেন বলে ঠিক করলেন ও এলডাস হাক্সলিকে ধরে sandoz কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করলেন ম্যাজিক মাশরুমের (টিয়ানান্যাকটিলের) সিন্থেটিক অ্যানালগ psilocybin তৈরী করে , ইয়ে, নিজেদের ওপর বিস্তর গবেষণা চালিয়ে গেলেন। তা psilocybin এর নেশা নিয়ে লিখতে গিয়ে অ্যালপারটের অভিজ্ঞতা দেখুন (আবার Be Here Now থেকে তুলে দিচ্ছি):
“A deep calm pervaded my being. The rug crawled and the pictures smiled, all of which delighted me. Then I saw a figure standing about 8 feet away, where a moment before there had been none. I peered into the semi-darkness and recognized none other than myself, in cap and gown and hood, as a professor. It was as if that part of me, which was Harvard professor, had separated or disassociated itself from me.”
অ্যালপারটের সঙ্গে তখনো বৌদ্ধধর্ম দূরস্হান, কোন কিছুরই সেরকম যোগ নেই। তিব্বত নিয়ে ভাসা ভাসা ধারণা, খুব সম্ভবত আলেকসান্দ্রা নিলের বই টই পড়ে। ক্রমে তাঁদের এই নেশাড়ুদের দলে তিব্বত ফেরত একজন জুটেও গেল লিখছেন,
“So then the next week, we’d sit around on Saturday night and say, “What should we do?” and we all knew what we were going to do, and we would “turn on.” We were exploring this inner realm of consciousness that we had been theorizing about all these years and suddenly we were traveling in and through and around it. At the same time, of course, by the second week, it was as though we had just been traveling in Tibet, and now, back in the school lunchroom, who do we hang out with? We hang out with the guy with whom we went to Tibet, because we shared this very powerful experience.
Pretty soon there were five or six of us and we were hanging out together and our colleagues said, “Ah ha, a cult is forming,” which was true for us. A cult is a shared system of belief.”
সেই শুরু। এর পর গবেষণার জন্য ২০০ জন, তাঁদের মধ্যে জ্যাজ সঙ্গীত চর্চা করতেন এমন সব মানুষ, পদার্থবিদ, দার্শনিক -- স্টাডির মধ্যে ঢুকছেন। নেশার জিনিস, ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন মহলে । ১৯৬২ কি ১৯৬৩ সালে, রামদাসের স্মৃতিকথায় জানা যাচ্ছে রিসার্চের রিপোর্ট লিখতে গিয়ে প্রথমবার তাঁরা "Tibetan Book of the Dead" পড়ছেন, যে বই তিব্বতী বজ্রযানী সাধুর লিখেছিলেন। দেখছেন কোন রকম নেশা ছাড়াই ২৫০০ বছর আগে ভারতীয় আধ্যাত্মিকরা তাঁদের বা তাঁদের চেয়েও উচ্চস্তরীয় চেতনার অভিজ্ঞতার কথা সবিস্তারে লিখে গেছেন। বার্কলের সূত্রে টিম লিয়ারি আর অ্যালেন গিনসবার্গ (বিটনিক কবি), গ্রেগরি করসোরা ভারত চললেন অদ্ভুত সব আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার অন্বেষণে। ১৯৬৭ তে রিচার্ড অ্যালপারট নিজেও ঠিক করলেন ভারতে যাবেন।
আরো?