এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • আমি আর কৌশিক - কথোপকথন

    upal mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৭ অক্টোবর ২০২৪ | ৩৮৩ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • *আমার পোস্ট

    আমি কয়েকদিন ধরে গ্রামে বেড়াতে এসেছি। তার মধ্যে কিছু বন্ধুর সঙ্গে অন্তরঙ্গ আন্তঃক্রিয়ার সুযোগ হয়েছে। গ্রামীণ গরীবদের সঙ্গেও অন্তরঙ্গ কথোপকথন হচ্ছে। এখানে ডাক্তার দিদি বা বাবুদের টিকিটিও পাওয়া যায় না। আশা দিদিরাই দুয়ারে দুয়ারে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছনোর ভরসা। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এএনএম নার্স দিদিমনি নির্ভর। তাঁরা জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ঠিকা কর্মী। ডাক্তার আন্দোলনে কর্মবিরতির ফলে গ্রামীণ মানুষ বিরক্ত। এইসব দ্রোহ ইত্যাদি বিশুদ্ধ নাগরিক মধ্যবিত্তের ব্যাপার বলে তাঁরা মনে করছেন। পশ্চিমবঙ্গে ৭৮ শতাংশ মানুষ সরকারী চিকিৎসা পরিষেবার ওপর নির্ভর করেন এটা ২০১৫ এর তথ্য। করোনার ফলে লোকের রোজাগার কমে এই নির্ভরতা আরো বেড়েছে। তাই শহুরে ডাক্তারদের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে ঘিরে এইসব উদ্যোগের প্রভাব সীমিত। গ্রাম ও গরীবের সমব্যথী সংগঠন এই আন্দোলনে সংহতি জানাক কিন্তু অতি তৎপর অংশগ্রহণ কতটা ঠিক ভাবা দরকার।

    *বন্ধুবর ডাক্তার কৌশিক দত্তের উত্তর

    দাদা, গ্রামের মানুষের জন্য আপনার আন্তরিক ভাবনার জন্য ধন্যবাদ। কয়েকটি তথ্য শুধু জানিয়ে রাখি, কারণ সেগুলো নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে।

    ১) এটা ডাক্তারদের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন নয়। ট্রেড এবং মুনাফা বা বেতন বাড়ানোর বিষয়ে একটাও দাবি নেই।

    ২) প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, গ্রামীণ হাসপাতালে, ব্লক হাসপাতালে ইন্টার্ন, হাউজ স্টাফ, পিজিটিরা চাকরি করেন না। ফলে আন্দোলন এবং কর্মবিরতির ফলে ওখানে ডাক্তারদের টিকি দেখা যাচ্ছে না, এটা কেউ নিশ্চয় ওঁদের এবং আপনাকে ভুল বুঝিয়েছে৷

    ৩) চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ইত্যাদি অজস্র শূন্য পদ আছে, যাতে নিয়োগ করা হচ্ছে না। সম্ভবত কার্নিভালের খরচ এবং প্রতিটি সরকারি প্রকল্পে কাটমানির কারণে দ্বিগুণ খরচের ফলে সরকারের হাতে টাকা নেই।

    ৪) আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা এই শূন্যপদগুলো পূরণ করার দাবি তুলেছেন। এগুলো পূরণ হলে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং তার ওপর নির্ভরশীল গ্রামের মানুষের ক্ষতি হবে না লাভ?

    ৫) সেন্ট্রাল রেফারাল সিস্টেম চালু করতে সরকারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা গ্রামীণ, ব্লক, মহকুমা বা জেলা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা ঠিকমতো হবাএ পর একটাই নির্দিষ্ট জায়গায় রেফার হয়, যেখানে বেড আছে। ফলে রোগীদের চার জায়গায় ঘুরে মরতে হবে না। এতে রোগীর ক্ষতি কীভাবে হবে?

    এসব বিষয়ে কাউকে মিথ্যে কথা বলতে দেখলেই সত্যিগুলো বলে দেবেন প্লিজ।

    ধ র্ষ ণ এবং হ ত্যার নৈতিকতা সম্বন্ধে কোনো বিতর্কে যাচ্ছি না, যদিও ওগুলো ইচ্ছেমতো করার অধিকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে এবং গ্রামে এগুলো হয় না, এমন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই।

    *আমার প্রত্যুত্তর

    ভাই কৌশিক যা আন্দোলন হচ্ছে তাতে আমার সংহতি জানিয়ে কথা শুরু করিনি। কারণ ইনডকট্রিনেশন আমার গদ্য ভাবনা নয়। তবে সংহতির প্রশ্নটা আছে ক্রম উদ্ভাবন প্রক্রিয়ায় অঙ্গ হিসেবে তার সমালোচনা সহ। যে কোন আন্দোলনই একটা প্রবলেমেটিক। যেমন আমার প্রাণাধিক প্রিয় গ্রামে চলো আন্দোলন যার সঙ্গে তলে তলে ঘরে ও শহরে ফেরার প্রক্রিয়াও চলেছিল। এই দুইকে মিলিয়ে না দেখে আমার পছন্দ, আমার প্রাণাধিক প্রিয় হয় কী করে ?

    যাই হোক এ আন্দোলন যে শহুরে তা তার রূপেই প্রকাশিত। এর কেন্দ্রে কলকাতা। আর গ্রামের থেকে গরীবের থেকে এর বিচ্ছিন্নতা দৃশ্যমান। তুমি রেফারাল সিস্টেমের ডিজিটাইজেশনের কথা বলছ। ৩৬ বছরে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে সচিবালয়ের কাজের ও আন্দোলন পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে আমার খুব জানা যে তা সরকারের ই গর্ভনেন্স নীতির অঙ্গ। প্রশ্নটা হল বর্তমান ডাক্তার আন্দোলনকে জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন মনে করে এ কথা বলার কী মানে হয় যে জুনিয়র ডাক্তাররা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাব এ্যান্ড স্পোক মডেলের প্রান্ত অর্থাৎ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকেন না। বর্তমান আন্দোলন কি শুধু জুনিয়রদের আন্দোলন ? নাকি সেটা জাতীয় স্তরে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসক সমাজের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন ? যাঁরা নিজেদের জন্য এতটা সংগঠিত দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন করতে পারেন তাঁরা পরিষেবার প্রাপক রোগীদের, গরীব রোগীদের, গ্রামীণ রোগীদের জন্য কী দাবি রেখেছেন ? ডিজিটাইজড রেফারাল হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সবাই কলকাতার মেডিকেল কলেজে রোগী পাঠাবেন এখনও ঠেকা খেয়ে রোগীরা যেখানে আসেন। ডাক্তাররা বোঝাতে পারেন ডিজিটাল সিস্টেমে খুব স্বচ্ছতা থাকল কিন্তু তাতে রোগীরা ব্রহ্ম জ্ঞান প্রাপ্ত হয়ে জানবেন কোথাও কোন ভর্তির বেড নেই। আর পিএইচ সিতে ডাক্তার পাওয়া যায় ? কদিন পাওয়া যায় ? সেখানে রেফারিং অথরিটি কে হবে ভাই ? তোমরা যারা ডাক্তারদের ট্রেড ডিগনিটি আর লিঙ্গ রাজনৈতিক অভ্যুত্থানে সঠিক ভাবে সমভাবিত তারা ভ্রাম্যমান চিকিৎসা ইউনিট তৈরি করে সরকারী ব্যবস্থার পরিপূরক কিছু গণস্বাস্থ্য উদ্যোগ নাও না। যেটা একার চেষ্টায় বর্ধমানে ডাক্তার নিতাই প্রামাণিক নিচ্ছেন। আরো অন্য অনেকে এখানে ওখানে প্রচারের আলোয় না থেকে করছেন। সংগঠিত ভাবে করছেন শ্রমজীবী হাসপাতালের কমরেডরা। শহর ও গ্রামের মধ্যে যে অতল গহ্বর তৈরি হয়ে আছে তা এই ডাক্তারগণের কর্মবিরতি আরো বাড়াবে বলেই আমি এই প্রচার করছি, আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েও। এখনও আমি “গ্রামে চলর” স্বপ্নই দেখি ভাই। যতই আমার ও আমাদের পেছুটান থাক না কেন এ অবস্থানে থাকার যৌক্তিক ও অবেগগত বাস্তবতা আছে। আর একটা কথা, ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বললেই তোমার এ মরালিস্ট রেজিস্টেন্সের কারণ বুঝলাম না। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি স্বাস্থ্য কর্মীদের ট্রেডের দাবি তো বটেই। কারণ তাঁদেরই ফ্রন্ট লাইনে থেকে রোগীর রোগ ও ক্ষোভের মোকাবিলা করতে হয় ও হবে। সিভিক বা পুলিশ অথবা আধা সামরিক বাহিনীর এ কম্ম নয়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুধাংশু শেখর | ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০২:২৪538616
  • "আরো অন্য অনেকে এখানে ওখানে প্রচারের আলোয় না থেকে করছেন।" - এদের ব্যাপারে আরও বিশদে জানলে খুশি হই। না জানতে পারলেও ক্ষতি নেই, দূর থেকে এদের অভিবাদন জানাই। 
  • আপনার বন্ধুকে আরো কিছু প্রশ্ন | 2409:40e6:36:60d6:b4b0:bdff:fe50:***:*** | ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৭538623
  • উপলবাবু খুবই যথাযথ প্রত্যুত্তর দিয়েছেন।
     
    এই যে কোলকাতার বাইরে পোস্টিং হলেই তাকে 'পানিশমেন্ট' পোস্টিং ভাবা ও বলা হয়, সরকারের তরফেও ( অফিশিয়ালি বলে কি?),  অপরদিকেও, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে, কোলকাতা আর পাশ্ববর্তী অঞ্চল ব্যতীত সব কিছুকে দ্বিতীয় তৃতীয় শ্রেণীর ভাবা। 
    গ্রামীণ স্বাস্থ্যের সমস্যা এত বড় স্বাস্থ্য আন্দোলনে কোথায়?  উপলবাবু যথার্থই এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ জানবেন।
     
    যাইহোক, এই সাইটে ডা: কৌশিক দত্তের একটি লেখা প্রবীরবাবু পোস্ট করেছিলেন। সেখানে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম। সেই লেখা পড়ে আর আপনার কথোপকথন পড়ে মনে হল উনিই আপনার বন্ধুবর। ভুল হলে ইগ্নোর করবেন। নইলে আপনার বন্ধুবরকে এই প্রশ্নগুলোও একটু কর‍তে পারবেন? 
     
    ওই লেখায় উনি বলেছেন, 
    'শুরুতেই এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার যে আন্দোলন “ডাক্তার বনাম অডাক্তার” নয়, বরং এক অচিকিৎসক সিভিক ভলান্টিয়ারকে (যে ব্যক্তি হিসেবে একেবারেই ভাল নয়) একমাত্র অপরাধী বানিয়ে সরকারপক্ষ যখন তাৎক্ষণিক এনকাউন্টার বা এক সপ্তাহের মধ্যে ফাঁসির নিদান দিচ্ছিলেন, তখনই চিকিৎসকেরা রুখে দাঁড়িয়ে “প্রকৃত অপরাধী সকলের” শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন, এটা জেনেই যে এর ফলে কয়েকজন চিকিৎসক দোষী সাব্যস্ত হবেন। অর্থাৎ চিকিৎসকেরা লড়ছেন একটা নষ্ট সিস্টেম এবং কিছু ভ্রষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও, যাঁরা এই নষ্ট ব্যবস্থার অংশ।'

    লেখকের এই শুরুর অংশ পড়েই হোঁচট খেতে হয়।

    এঁরা যদি জানেনই, তথ্যপ্রমাণ সহ, অন্য আর  কারা অপরাধী,  কেন তার সব বৃত্তান্ত সিবিয়াই আর কোর্টকে দিচ্ছেন না?
    দিলে তাঁদের সেই নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া, সেটা খোলাখুলি জানাচ্ছেন না? 
    নাহয় পাব্লিকলিই প্রকাশ করুন।  কেন করছেননা, বলুনতো? এখন তো সব ভয় ভেঙ্গে গেছে। 

    নইলে সবকিছু তথ্যপ্রমাণ সহ না জেনে, শুধু ডাক্তাররা বলছেন বলে বিশ্বাস করে এই দাবিতে সকলকে গলা কেন মেলাতে হবে? বিষাণ বসুও সেই একই দাবি করেছিলেন, পক্ষ বেছে নেওয়ার লেখায়। 

    এই দিনের পর দিন এত অনিয়ম, এই এত ডাক্তার যে টুকে পাস করে টাকা দিয়ে বেরিয়ে গেল, আজ প্রাক্টিসও করছে, তাদের নাম ধরে সবাইকে চিহ্নিত করিয়ে রেজিস্ট্রেশন ক্যান্সেল করাচ্ছেন না কেন? 
    আপনারা এতদিন সবই জানতেন, অথচ বলতে ভয় পেতেন?  কোথায়,আরজিকরে তো ঝামেলা প্রতিবাদ লেগেই থাকত,  গত কয়েক বছর ধরেই, ভয়ের চোটে সেসব কোন প্রতিবাদে কোন খামতি ছিল না। সেইসব প্রতিবাদে একটিবারও এইসব ইস্যু আসেনি কেন, ডাক্তারবাবু? আপনারা অন্যত্র কর্পোরেটের নিরাপস ছত্রছায়ার থেকে এইসব প্রতিবাদ নিয়ে বলেননি কেন ডাক্তারবাবু? আপনারা সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তা তো নয়, মুখ খোলার জায়গা ছিলবা, তা তো নয়। নিজেদের কাউন্সিল নির্বাচনের দুর্নীতি নিয়ে খুবই সরব ছিলেন, সেই নির্বাচনের ইস্যুতে এসব আসেনি কেন?

    আর কর্পোরেট স্বার্থ না থাকলে কর্পোরেট হাস্পাতাল নিয়ে দাবি নেই কেন?  কাল তো মুকুন্দপুরের আমরিতেও ভাংচুর হল। আমরির ডাক্তারবাবুরা কর্মবিরতি করেছেন?  এই লেখক ডাক্তারও তো আমরিতেই কর্মরত। এত হোলিয়ার দ্যান দাউ আটিচুড যে লেখকের, তিনি বুকে হাত দিয়ে বলুন, নিজে যে বেসরকারি সিস্টেমে কাজ করেন, সেটা ধোওয়া তুলসিপাতা?  রোগিদের এক্সপ্্লয়টেশন হয়না?  এত হাজার হাজার টাকা কেন ভিসিটে দিতে হয়, লাখ লাখ টাকা হাস্পাতালে প্রসিডিওরে?  স্বাস্থ্য সাথী নেন নিয়মিত?  গরীম মানুষ কেমন ট্রিটমেন্ট পান?  ম্যানেজমেন্টের টার্গেট থাকেনা?  ম্যানেজমেন্ট কি বিপুল লাভ ঘরে তোলেন না?  অনর্থক বিল বাড়ানো হয়না?  
    এতই টনটনে নৈতিকতা বোধ থাকলে 

    ডাক্তাররা জানেননা?  কিছু বলেছেন?   উলটে এই সরকার ক্লিনিকাল এস্টাবলিশমেন্ট এক্ট আনায় তো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। আপনাদের আগের সব আন্দোলন তো ছিল পেশেন্ট পার্টির আচরণের বিরুদ্ধেই।

    আর শেষমেশ আরো দুটি ছোট্ট প্রশ্ন রইল।  

    এক, আমরির অগ্নিকাণ্ডে কে কে কী শাস্তি পেয়েছিলেন? কাদের দোষে অত রোগীর প্রাণ গেল, একটু জানাবেন?  আপনি তো ওখানেই কর্মরত, বিস্তারিত নিশ্চয় জানবেন।

    দুই, কোরপান শাহের হত্যায় অপরাধী কারা ছিল, সেই নামগুলো আর তাদের কী শাস্তি হয়েছে এবং তাঁরা এখন কোথায়?  ডাক্তারি ফ্রাটার্নিটিতে অবশ্যই জানার কথা।

    আপনি চরম বিবেকবান, নৈতিক, সৎ, আদর্শ ডাক্তার বলে আপনাকেই এই প্রশ্নগুলো সঠিক উত্তরের আশায় করলাম।
  • ডাক্তারবাবুকে কিছু জরুরি প্রশ্ন | 2401:4900:7521:c5f:3886:f2ff:fe1a:***:*** | ২২ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫২538751
  • উপলবাবু, আপনার বন্ধু ডাক্তার আর তাঁর সঙ্গে আপনার কথোপকথন পড়লাম।
     
    এই ব্যাপারে ডাক্তার বন্ধুর থেকে একটু সত্যাসত্য যাচাই করতে পারবেন?  খবরটি পড়ে ইস্তক খুবই অস্বস্তি হচ্ছে। ডাক্তারবাবু এবিষয়ে ঠিকঠাক জানবেন।  বর্তমানে পড়ে ভুয়ো হতে পারে মনে হয়েছিল, কিন্তু কাল তো মুখ্যমন্ত্রীও বললেন আর জুনিয়্র ডাক্তাররা অস্বীকারও করলেন না!  স্বাস্থ্যসাথীতে বেসরকারির পিছনে এত খরচ বেশি যাওয়া তো একরকম, কিন্তু এগুলো তো পুরো বেআইনি। আর সরকারিতে কর্মবিরতি করে এইসব করে এঁরা সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি করতে চাইছেন?  এই খবর ভুল হলেই খুশি হব।
     
    ওদিকে অনেক  সিনিয়র সরকারি ডাক্তারও নন প্র‍্যাক্টিসিং আলাওয়েন্স নেওয়ার পরেও, অনুমতি না নিয়েই প্রাইভেটে কাজ করেন?  এগুলোও বে আইনি তো।
     
     স্পষ্টভাবে বললে, সিনিয়র রা মাইনের ২৫% নন প্রাক্টিসিং আলাওয়েন্স পান। সেটা না নিয়ে আবেদন করলে, মঞ্জুর হলে আইনিভাবেই বেসরকারি প্রাক্টিস করতে পারেন। সেই নিয়ে কিন্তু কথা হচ্ছেনা। হচ্ছে, যেগুলো আইনত অনুমোদিত নয়, তাই নিয়ে।  যেমন এই অনুমতি না নিয়ে, এন পি এ নেবার পরেও প্র‍্যাক্টিস চালানো বা জুনিয়্র ডাক্তারদের যেকোন অবস্থাতেই প্র‍্যাক্টিস।
    আরো কথা হচ্ছে, এইবার কর্মবিরতি চলাকালীন সরকারি হাস্পাতালে কাজ বন্ধ করে ( কিন্তু স্টাইপেন্ড নিয়ে),  বেসরকারিতে সেই সময় কাজ করে উপার্জন।  স্বাস্থ্যসাথী,যা সরকারিতে যেত তার সিংহভাগ বেসরকারি হাস্পাতালে যাওয়া, এবং বেসরকারি হাস্পাতালের মুনাফা আর ডাক্তারদের ভাগ দেওয়ার জন্য সরকারি টাকা এত বেশি খরচ হওয়া নিয়ে!  টাকার অংকটা দেখেছেন?  
    এই খবর সত্য হলে, এতো সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করে বেসরকারিকে ( আর নিজেরদেরও)  পুষ্ট করা, তাও আবার সরকারি খরচে!  
     
    https://bartamanpatrika.com/kolkata/cid/12/detail-news/id/589876?fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTEAAR1v3yOygsnz1YAAKded4libGfMsNpGBqPW4YSgYvtbOyi8Bbgwdgap63Ns_aem_e3eksCoiZHmiUwX9uVHc5A
     
    কর্মবিরতি। প্রথমে পূর্ণ। তারপর আংশিক। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দরজায় মোটামুটি তালা দিয়ে এভাবেই কাটল দুটো মাস। ধর্না, অবস্থান, বিক্ষোভ, আর অনশন। আগস্ট থেকে অক্টোবর—রাজ্যের গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষের ভোগান্তির টাইমলাইন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, ‘কর্মবিরতি’র এই অচলাবস্থা শুধু সরকারি ক্ষেত্রে। আন্দোলনের পথেঘাটে সুর চড়ানো বহু সরকারি ডাক্তারই কিন্তু ৯ আগস্ট থেকে ১৭ অক্টোবরের এই সময়সীমার মধ্যে চুটিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। এমনই ৫৬৩ জন সরকারি সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের তালিকা সংগ্রহ করেছে ‘বর্তমান’। তাতে সাফ দেখা যাচ্ছে, এই সময়সীমার মধ্যে তাঁরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৭৩ হাজার ৯০৫টি কেস হ্যান্ডল করেছেন (রোগী দেখেছেন বা অস্ত্রোপচার করেছেন)। নজর করার মতো বিষয় হল, প্রায় ৭৪ হাজার এই ‘কেস’ শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথীর ক্ষেত্রে নথিভুক্ত হয়েছে। আর এর থেকে উল্লিখিত ৫৬৩ জন ‘এসআর’ (বন্ডের শর্তে নিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ) রোজগার করেছেন ৫৪ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। গড় হিসেব প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় নথিভুক্ত ‘কেস’ ছাড়াও তাঁরা রোগী দেখেছেন। পারিশ্রমিকও পেয়েছেন। একইসঙ্গে রয়েছে মাসে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকার সরকারি ভাতা, যা এমডি, এমএস পাশ করে সরকারি হাসপাতালে যোগ দেওয়ার পর তাঁরা পেয়ে থাকেন। তার হিসেব কিন্তু ৫৪ কোটি ৩৯ লক্ষের মধ্যে ধরা হয়নি।
    এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড় হাজার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার কাজ করেন। লাগাতার কর্মবিরতিতে গেলেও রাজ্যের কাছে তাঁরা কিন্তু ভাতা বন্ধের আবেদন জানাননি। উল্টে তাঁদের বড় একটা অংশ প্রাইভেটে চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছেন। ‘সমাজ সংস্কারক’দের একটা মুখ দেখা গিয়েছে আন্দোলন মঞ্চে, অবস্থানে, মিছিলে। আর একটা মুখ প্রাইভেট হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। কারণ বেসরকারি ক্ষেত্রে লাগাতার অচলাবস্থা চলতে পারে না। টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে অচলাবস্থা মানবেন না রোগীরা। তাই বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম উপচে পড়েছে ‘আন্দোলনকারী’ বহু ডাক্তারের মহানুভবতায়। এমনকী উত্তরবঙ্গের ‘এসআর’ দক্ষিণবঙ্গের দূরবর্তী জেলার নার্সিংহোমে গিয়ে ‘কেস’ করে এসেছেন—এমন তথ্যও রয়েছে ‘বর্তমান’-এর কাছে। সেইবেলা কেন তাঁদের মনে হয়নি, ‘জাস্টিস’ চেয়ে কর্মবিরতির খাঁড়া শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালের গরিব রোগীদের উপর নামানো ঠিক হচ্ছে না? প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নার্সিংহোমে ইট পেতে বসাটা আন্দোলনের আদর্শ বিরোধী নয়! অথচ, এই পর্বে কলকাতা, জেলার শহর বা শহরতলির বড়-মেজ-ছোট এমন কোনও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নেই, যেখানে সরকারি হাসপাতালের ‘প্রতিবাদী’দের একটা বড় অংশ প্র্যাকটিস করেননি। তাও আবার করেছেন যে স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রতি তাঁদের তীব্র ক্ষোভ, তাদেরই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই ৫৬৩ জন ‘এসআর’ কিন্তু জানেন, তাঁরা বাইরে প্র্যাকটিস করতেই পারেন না। মজার ব্যাপার, বহু ‘বিপ্লবী’ সিনিয়র ডাক্তার পরিচালিত প্রাইভেট নার্সিংহোম-হাসপাতালে তাঁরা কেস করে এসেছেন।
  • Upalm61@gmail.com | 116.193.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ০০:১০538800
  • স্বাস্থ্য  ব্যবস্থার  বেসরকারীকরণ  এমন  একটা  জায়গায়  পৌঁছে গেছে  যে  কিছুদিনের  মধ্যেই  মানুষ  কর্মবিরতির সময়   বাইরে  প্র্যাকটিস  করার  ব্যাপারটা  ভুলে  যাবে ।সরকারও  ওদের  কিছু  বলবে  না।যেটুকু  তুলেছে  মিটিংয়ে  তা  চাপ  রাখতে  ।অথচ  পুরোটাই  কিন্তু  গ্রাম  ও  গরীব  বিরোধী  একটা  অবস্থান  থেকে  হচ্ছে ।গরীব কে  সরকারী  বড়  হাসপাতালে  যেতে  হবে আর  ইন্ডিয়ান  এক্সপ্রেসের  কালকে  বেরোনো  তথ্য  অনুযায়ী  আর  জি  করে  ওপিডিতে  ৫১  শতাংশ  আর  জরুরি  অপরেশনের  ৯১  শতাংশ  চিকিৎসা  কম  হবে ।বাধ্য  হয়ে  কিছু  গরীব  মানুষ  ঘটিবাটি  বেচে  বেসরকারী  জায়গায়  গেছে  সেখানে  সরকারী  জুনিয়র  বা  সিনিয়র  ডাক্তারদের  খেপ  মারতে  দেখা  যায়  ও  যাবে ।এটা  ভবিতব্য  বলে  মেনে  নিয়েছে  শহুরে  আন্দোলন কারীরা  ফলে  লিঙ্গ  রাজনীতির  আবেদন  গ্রামে  বা  গরীবের  কাছেও  আবেদন  হারাচ্ছে ।একমাত্র  জনস্বাস্থ্য  আন্দোলন  গড়ে  তুলেই  এই  অতল  শহর  গ্রাম  ডিভাইড  কাটানো  সম্ভব ।কী  ভাবে  হবে  আমি  জানিনা ।তবে  বাবার  বন্ধু  শ্রদ্ধেয়  ডাক্তার  অধ্যাপক পশুপতি নাথ  চ্যাটার্জী  শিখিয়ে  ছিলেন  এটা  করতে  গেলে  এলাকা  ধরে  নিবিড়  অনুশীলন  করতে লাগে।ওই  জন্য উনি  কলকাতা  থেকে   রাঙাবালিয়ায়  যেতেন  বিনে  পয়সার  চিকিৎসা  করতে ।এখন  ডাক্তার  অধ্যাপক  নিতাই  প্রামাণিক  তাই  করছেন ।শুধু  ফুটেজ   খেয়ে , প্রচারের  আত্ম  গরিমায়  এসব  হয়  না। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন