সাম্রাজ্যবাদে লুঠ ও খুন সবই আছে কিন্তু সব লুঠ ও খুন সাম্রাজ্যবাদ নয়। সাম্রাজ্যবাদ একটা সংগঠিত ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে একটি দেশ অন্য দেশকে প্রত্যক্ষ শাসন বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে নিজেদের মুনাফা বৃদ্ধির জন্য।
১ হয় অধীন দেশের বা উপনিবেশের কাঁচামাল এনে নিজের দেশে পণ্য উৎপাদন করে চড়া মুনাফায় ওই উপনিবেশেই বা অন্য দেশে বিক্রি করে। (পুরনো মডেল)
২ আরও চতুর ভাবে যেখানে কাঁচামালের বাজার সেই দেশেই পুঁজি লাগিয়ে আরও শস্তায় পণ্য উৎপাদন করে সেখানেই বেশি লাভে বিক্রি করে (নতুন মডেল)।
ভারতে ইংরেজরা , তাদের ভাইসরয় সেনাপতি বিচারক সমেত, দেশ শাসন করত নিজেদের নামে নয়-- লণ্ডনের কিং বা কুইনের নামে। ক্লাইভরা তো তুচ্ছ আমলা। তাই ক্লাইভ এদেশে লুঠ করে যা কামিয়ে ছিল সব খোয়াল লন্ডনে গিয়ে , আদালতে জরিমানা দিয়ে।
আসল সাম্রাজ্যবাদ হচ্ছে বৃটিশ এম্পায়ার যার প্রতীক সম্রাট এবং মহারাণী ( কিং জর্জ, ভিক্টোরিয়া বা এলিজাবেথ)।
মহম্মদ ঘোরীরা লুঠেরা নিঃসন্দেহে। এবং আজকের আইসিস, বোকো হারাম নৃশংস এবং বর্বর। এমনকি লশকর -এ- তৈবা ইত্যাদি জেহাদি সংগঠন, যারা ধর্মের নামে সাধারণ নাগরিকের প্রাণ নিতে দুবার ভাবে না তারা নিন্দনীয়। আপনাকে কে বারণ করছে এদের নিন্দা করতে? কেন মিথ্যে কথা বলছেন?
আর সাম্রাজ্য এবং সাম্রাজ্যবাদ এক নয়।
উদাহরণ, সম্রাট অশোকেরও সাম্রাজ্য ছিল, প্রসেনজিত এবং বিম্বিসারেরও সাম্রাজ্য ছিল। কিন্তু তাঁরা উপরোক্ত কারণে আধুনিক অর্থে সাম্রাজ্যবাদী নন।
সেই জন্যেই দিল্লির মোগল এবং পাঠান সাম্রাজ্য সাম্রাজ্যবাদ নয়। কারণ তারা এদেশের সম্পদ নিয়ে ইরাণ, তুরস্ক বা মধ্যপ্রাচ্যের কোন নির্দিষ্ট দেশে পুঁজির অথবা বৈভব সৃষ্টির জন্য পাঠাত না। এদেশেই ব্যয় করত।
যদি বলেন বাইরে থেকে এসে আক্রমণ করে ক্ষমতা দখল করলেই সাম্রাজ্যবাদী, তাহলে বৈদিক আর্যদের কী বলবেন? তারাও তো মধ্য এশিয়া থেকে সিন্ধু দিয়ে ঢুকে হরপ্পা -মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ধ্বংস করে ক্ষমতা দখল করেছিল। এদেশের আদি অধিবাসীদের (যেমন বেদে বর্ণিত পণি, দ্রাবিড়) দাস বানিয়েছিল।
অবশ্য সাভারকর এর মধ্যে দোষের কিছু দেখেন নি। উনি বরং গর্বিত যে হিন্দুরা বাইরের দেশে শ্যাম, কম্বোজ, বলিদ্বীপে ক্ষমতা বিস্তার করেছিল।