এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • লাতিন আমেরিকান রূপকথা

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ | ৯৬৫ বার পঠিত
  • লাতিন আমেরিকান রূপকথার জন্ম এক বাঙালির হাতে। সে অনেক কাল আগের কথা। তখন বাঙালিরা তারকা হত, আর আর্জেন্তিনিয়ানরা হত ভক্ত। এরকম একজন বাঙালি তারকার নাম ছিল রবীন্দ্রনাথ, আর তাঁর এক বিখ্যাত আর্জেন্তিনিয় মরশুমী ভক্তের নাম ছিল ভিক্তোরিয়া ওকাম্পো। তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত জয়ধ্বনি দিয়েও কিছুতেই রবীন্দ্রনাথের মন পাননা। একদিন রেগেমেগে কথাটা বলেই ফেললেন। তখন বুয়েনস আইরেস থেকে জাহাজে করে তাঁরা রিও এসেছেন। রিওর এক পার্কে সেদিন রবীন্দ্রনাথ আর এক বাঙালির সঙ্গে বসে, সামনে একটি শিশু খেলা করছে। শিশুটি একটি বল ছুঁড়ল, সোজা ওকাম্পোর গায়ে। যেন বলের উপরেই রাগ, ওকাম্পো দুম করে তাতে এক লাথি কষিয়ে, রবীন্দ্রনাথকে সোজাসুজি বললেন, "নাথ, এক বাঙালির পুজো করে করেই আমাদের দিন যাবে, কোনোদিন মন পাবনা, লাতিন আমেরিকার কপালই কি এরকম?"
    রবীন্দ্রনাথ শুনে দাড়ির ফাঁকে মধুর হাস্য করলেন। তারপর বললেন, "যে জন্য তুমি বলে লাথি মারলে, সেটা হল অপ্রাপ্তি। আর যেভাবে মারলে, অপ্রাপ্তির দিগন্ত থেকে উঠে আসা সেই তীব্রতাকে বলে প্রতিজ্ঞা। যদি এই প্রতিজ্ঞা বজায় রাখতে পার, তো আমরা যা পেয়েছি, তার সহস্রগুণ পাবে। তোমরা আমার ভাষা কচু বোঝ, তাতেও আমার জোব্বাকে পুজো কর, একই ভাবে লক্ষ-কোটি বাঙালি একদিন তোমাদের প্রতিজ্ঞা ঘন্টা বুঝেও, দেখার জন্য পাগল হয়ে যাবে, জয়ধ্বনি দেবে। কিন্তু ছুঁতে পাবেনা"।  
    রবীন্দ্রনাথ এমনকি অমিতাভ বচ্চনের চেয়েও বড় তারকা হওয়ায়, তাঁর সব ডায়লগই ফলে যেত। তাঁর এই কথা শুনে ওকাম্পো সম্পাদনায় মন দেন। এবং এমন একদিন সত্যিই আসে, যখন লাতিন আমেরিকান সাহিত্য শুনেই কলকাতার পন্ডিতরা নাকের-জলে-চোখের-জলে হয়ে পড়তে শুরু করেন। পার্কের শিশুটি কী বুঝেছিল, বলা মুশকিল। তবে বড় হয়ে পরবর্তীতে সে অন্য একটি শিশুর জন্ম দেয়, যার নাম অ্যারান্তেস দো নাসিমেন্টো এডসন। ডাকনাম পেলে। আর বাঙালিটি ভবিষ্যতের বাঙালি ফ্যানদের দুঃখময় জীবনের কথা ভেবে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ফ্যান শুধু ফ্যানই থেকে যাবে, কেউ জানবেনা তার পুজোর কথা, এ তো খুবই অবিচার। এদের নিয়েই তিনি লেখেনঃ "বিশ্বসংসারে যারা শুধুই দিলে, যারা পেলে না কচু, যারা সারাদিন জয়ধ্বনি দিয়ে জোটায় মায়ের কাছে অপমান আর মেসির কাছে অবহেলা, রাত জেগে সেবার পর যাদের পাওনা শুধু বন্ধুদের সঙ্গে তিক্ততা, চোখের নিচে কালি আর পরদিন বসের গঞ্জনা -- এদের বেদনাই দিলে আমার মুখ খুলে, এরাই পাঠাল আমাকে মানুষের কাছে মানুষের নালিশ জানাতে।" পরবর্তীতে এই লোকটিও হয়ে ওঠেন এক সর্বভারতীয় তারকা। তাঁর নাম শরৎচন্দ্র।  
    ** সঙ্গের ফাইলচিত্রটি রবীন্দ্রনাথ এবং ওকাম্পোর। নেটে খুঁজলে আপনারাও পাবেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • &/ | 151.14.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৩:০৭514734
  • দারুণ একটা বাড়ি ওঁদের ব্যাকগ্রাউন্ডে, মার্বেল পাথরের সিঁড়িওয়ালা বাড়ি! ওকাম্পোর বাড়ি? আর রবীন্দ্রনাথের জোব্বার পাড় ! কী অসাধারণ !!!:-) 
  • সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ২০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১২514735
  • ছবিটা সিনেমার। তাই এত স্পষ্ট। অরিজিনাল ছবিটাও পেয়েছি। পরে পেস্ট করে দেব।
  • ar | 108.26.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৮514738
  • এই রূপকথাকে স্মরণ করে এবং মেসির যাদুকে মাথায় রেখে বাংলার সকল মানুষের জন্য এই উপহার রইল!!

    "শিয়ালদহ-শান্তিনিকেতন-বুয়েনেস এয়রেস লোকাল"।
    [পাশে রিও-ডি-জেনেরোর ভেন্ডার??!!]



    রেফঃ https://www.reddit.com/r/kolkata
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন