এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হাতিবাগান রহস্য - ১

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১০৬৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • একে ভরা শ্রাবণ, তার ওপর নিম্নচাপ অক্ষরেখা দানা বেঁধেছে গভীরভাবে। ভর দুপুরেও আকাশ অন্ধকার। আকাশ থেকে জল ঝরেই যাচ্ছে কাল রাত থেকে। বউবাজার কলেজ স্ট্রীটে জল থইথই। গোটা রাস্তায় বাসে ট্রামে এ গাড়ি সে গাড়ি ঠেলায় রিক্শায় লেবড়ি চেবড়ি একেবারে। ট্রাফিক পুলিশ নাকানি চোবানি খাচ্ছে মহাত্মা গান্ধী রোডের মোড়ে। রাস্তার হাঁটুজল ঠেলে ঠেলে আপাদমস্তক বর্ষাতিতে ঢাকা একটা লোক বঙ্কিম চ্যাটার্জী স্ট্রীটের মুখে একটা পুরনো বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। পকেট থেকে মোবাইল বার করে স্ক্রীনে ঠিকানাটা দেখে বাড়ির দরজায় সাঁটা ঠিকানার সঙ্গে মিলিয়ে নিল। বাড়িতে ঢুকে বাঁ পাশের সিঁড়ি ধরে তিনতলায় উঠতে লাগল।

    যে ভদ্রলোক দরজা খুললেন তার বয়স বিয়াল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশের মধ্যে। উচ্চতা খুব বেশি নয়। পাঁচফুট আট ইঞ্চির মতো হবে। দোহারা চেহারা। কোন জিম বা ব্যায়াম করা চেহারা নয়।বুদ্ধিমাখা দুটি চোখ। নাক একটু চাপা। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ । 

    চুপচুপে ভেজা রেনকোট পরা ভদ্রলোক তাকিয়ে রইলেন তার দিকে। দরজায় দাঁড়ানো মানুষটি বললেন, ‘নীলাম্বর মৈত্র?’
    — ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ ..... কলতান গুপ্তর সঙ্গে কথা হয়েছিল .... মানে ... এই টাইমেই .... ’
    — ‘ আমিই কলতান । আসুন ভিতরে আসুন।’ 

    ভদ্রলোক ভিতরে ঢুকে জলে ভেজা রেনকোট খুলে একপাশে রাখলেন অনিকেতের কথামতো জায়গায়। ভদ্রলোকের চেহারা গৌরবর্ণ, বেশ হৃষ্টপুষ্ট। বয়েস পঞ্চান্নর আশেপাশে। ধনী ঘরের মানুষের মতো শরীরে একটা সুখের পলেস্তারা আছে।

    — ‘ হ্যাঁ বলুন .... আচ্ছা ঠিক আছে একটু রেস্ট নিয়ে নিন.... ব্ল্যাক কফি খাবেন ? ’
    — ‘ না না রেস্টের দরকার নেই । না: কফি টফি কিছু খাব না। একটু চা হলে বরং ..... ’
    — ‘ আচ্ছা আচ্ছা .....’
    বলে কলতান ভিতরের দিকে তাকিয়ে কাকে যেন বললেন, ‘ লক্ষ্মীদি দু কাপ চা...... ’
    ভিতর থেকে নারীকন্ঠে জবাব এল— ‘ আচ্ছা ..... ’

    কলতান বললেন, ‘ আমার নাম আপনি কোথা থেকে পেলেন? নেট সার্চ করে ? ’
    নীলাম্বরবাবু বললেন, ‘ না না ... ওসব নেট টেট আমি পারি না। ওসব আমার দ্বারা হয় না ... ’
    — ‘ তবে ?’ 
    — ‘ অনেক কসরত করে ঠিকানাটা যোগাড় করতে হয়েছে। আমার এক ভাইপো একটা ইংলিশ ডেইলির সাংবাদিক। সে তাদের আর্কাইভ থেকে বার করে আমাকে দিয়েছে। তবে আপনার নাম আমি অনেকদিন আগে থেকেই জানি।’
    — ‘ আচ্ছা আচ্ছা ..... বুঝতে পেরেছি। ’
    বলে কলতান হঠাৎ বলল, ‘ আপনি একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন ..... বিশেষ করে যখন রাস্তায় বেরোবেন।’
    নীলাম্বরবাবু হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন কলতানের মুখের দিকে।
    কলতান হেসে বলল, ‘ আপনার ওই রেনকোটের ডানদিকে কোনো একটা ঘসটানির দাগ দেখতে পাচ্ছি। ওখানটায় ছিঁড়েও গেছে। মনে হচ্ছে পিছন থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো অটোরিক্শা বা বাইক আপনাকে জোরালো ধাক্কা মারার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ঠিক সেই সময়ে আপনি ফুটপাথে উঠে পড়ায় ধাক্কাটা জুতসই হয় নি। আচমকা ব্রেক ফেল করে অটোর মতো ছোট গাড়ি শরীরের পাশের দিকে এসে লাগলে এরকম ব্রুইজ হয় না। স্ট্রাইকটা ইচ্ছাকৃত। আর ঘসটানিটা একদম টাটকা। খুব সম্ভবত এই কিছুক্ষণ আগে এই হ্যারিসন রোডেই ঘটেছে..... জুতোয় টাটকা পাঁক লেগে আছে। তড়িঘড়ি ফুটপাথে উঠতে গিয়ে কার্বের কিনারায় পা পড়েছিল। ওখানে পাঁক জমে ছিল। ’
    নীলাম্বর মৈত্রের মুখের হাঁ বন্ধ হতে সময় লাগল। তারপর বললেন, অসাধারন অসাধারন ..... আপনার অবজার্ভেশান। একদম ঠিক বলেছেন। আশ্চর্যজনক পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ! আমি নিশ্চিত হলাম যে আমি ঠিক লোকের কাছেই এসেছি। একদম এই সমস্যাটা নিয়েই আমি আপনার কাছে এসেছি।’
    — ‘ কিরকম ? ’ 
    — ‘ গত প্রায় একমাস ধরে কেউ রাস্তায় আমাকে জখম করার চেষ্টা করছে। বোধহয় মেরে ফেলতে চাইছে। এর আগে তিনবার  অ্যাটেম্পট হয়েছে আমার ওপর। কখনও মোটর বাইকে, কখনও অটোরিক্শায়। প্রথম দুবার আমি আমল দিই নি। কিন্তু তৃতীয়বারে বিবেকানন্দ রোড মানিকতলার মোড়ের কাছে একটা বাইক আমাকে পিছন  দিক থেকে ধাক্কা মারে। সেবারেও যে কারণেই হোক তার অপারেশনটা ফেল করে, খুব সম্ভবত আমার ভাগ্যের জোরে। রাখে হরি ..... যাকে বলে আর কি। তবে এবারে আমি পরিষ্কার বুঝতে পারলাম আমাকে মারার জন্য কেউ অ্যাটেম্পট নিচ্ছে। শুধু কপাল জোরে আমি বেঁচে আছি এখনও। আর এই আজকেরটা হল ফোর্থ অ্যাটেম্পট। কোনবারই আমি কারো মুখ দেখতে পাই নি কারন প্রত্যেকটা অ্যাটাক হয়েছে পিছন থেকে এবং কালপ্রিট ঝড়ের বেগে হাওয়া হয়ে গেছে। বোধহয় রীতিমতো অভ্যস্ত ক্রিমিনাল। ’
    কলতান মন দিয়ে শুনছিল। সে নীলাম্বরবাবুর কথার ফাঁকে বলল, ‘ আপনি পুলিশে ইনফর্ম করেননি ? ’
    — ‘ হ্যাঁ একটা জি ডি করেছি বটতলা থানায়। কিন্তু কোন ট্যানজিবল এভিডেন্স বা ক্লু ছাড়া তারা এগোবে কি করে? তাই .....’
    — ‘ তাই প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর কলতান গুপ্তর কাছে এলেন ....’, কলতান হেসে বললেন।
    — ‘ ঠিক তাই’, নীলাম্বরবাবু গম্ভীরমুখে মাথা নাড়েন। তারপর বলেন, ‘ আসলে আমি আর রিস্ক নিতে পারছি না। আমাকে দেখে হয়ত বোঝা যাচ্ছে না, আমি কিন্তু খুব প্যানিকড হয়ে আছি।’
    — ‘ খুব স্বাভাবিক। এখন বলুন আপনার বাড়ি কোথায় .... ফ্যামিলিতে কে কে আছেন এবং আপনার পেশা কি ? ‘
    — ‘ আমি থাকি হাতিবাগানে। প্রায় একশ বছরের পুরনো পৈতৃক বাড়ি। তিনতলা বাড়ি। দুটো ফ্লোর ভাড়া দেওয়া আছে। আমরা তিনতলায় থাকি। আমার এক ছেলে, এক মেয়ে। আর স্ত্রী তো অবশ্যই আছে। আমার প্রফেশন বলতে তেমন কিছু নেই এখন। একসময়ে চাল ডাল এবং অন্যান্য কিছু সিরিয়ালের বাবাদের চার ভাইয়ের জয়েন্ট হোলসেল বিজনেস ছিল। এখন আর সে সব কিছু নেই। বাড়ি ভাড়ার টাকাই অনলি সোর্স অফ ইনকাম ..... ’
    লক্ষ্মী দুকাপ চা রেখে গেল।
    — ‘ ও আচ্ছা। আর কোন সম্পত্তি আছে, স্থাবর বা অস্থাবর যেটা শুধু আপনার নামেই আছে? সেটা বিজনেস সোর্স থেকেই আসুক বা অ্যানসেস্ট্রাল লেগ্যাসিই হোক।’ কলতান চায়ের কাপে একটা চুমুক দেয়।
    — ‘ আপনাকে মিথ্যে কথা বলা উচিৎ হবে না। আমার নিজের নামে স্থাবর বা অস্থাবর প্রপার্টি ভালরকমই আছে। আমাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি বরাবরই অপদার্থ ছিলাম বলে বোধহয় বাবা আমার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার জন্য অনেক দিয়ে গেছেন।পিছিয়ে পড়া দুর্বল সন্তানদের ওপর সাধারণত মা বাবার একটা পক্ষপাতিত্ব থাকে। বোধহয় সেই কারনেই ..... ‘
    — ‘ আই সি .... নিন চা টা খেয়ে নিন। ..... আচ্ছা, নীলাম্বরবাবু আপনার ভাইয়েরা কোথায় থাকেন ?’
    — ‘ একজন শোভাবাজারে, একজন নিউটাউনে। দুজনেরই নিজের ফ্ল্যাট।’ নীলাম্বরবাবু জানান।
    — ‘ আপনার ছেলেমেয়েরা কি করে ? ’
    — ‘ ছেলে বিশেষ কিছুই করে না। ছোটখাটো ব্যবসা করে। বিয়ের বয়েস হয়ে গেছে কিন্তু তেমন রোজগার নেই বলে এগোতে পারছি না। একটা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে শুনেছি। মেয়ে বঙ্গবাসী কলেজে বাংলায় অনার্স পড়ে।’
    — ‘ ও আচ্ছা .....’। তারপর নীলাম্বরবাবুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে, ‘আপনার মিসেস কি কলকাতারই মেয়ে .... না বাইরের ?’
    —‘ হ্যাঁ হ্যাঁ কলকাতারই ..... দমদম নাগেরবাজারের কাছে সাতগাছিয়ায় ওর বাপের বাড়ি। মতিঝিল কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশান, বোধহয় নাইনটিন নাইন্টি ফোরে। বাংলায় অনার্স।’ নীলাম্বরবাবু কিছুটা বাড়তি তথ্য দিলেন।
    — ‘ ও আচ্ছা আচ্ছা ।এবার যেটা জিজ্ঞাসা করব সেটাই আমাদের এই কাজে সবচেয়ে ইমপর্টান্ট প্রশ্ন। আপনি কাউকে সন্দেহ করেন আপনার ওপর হামলার ব্যাপারে ?’
    — ‘ না কাকে সন্দেহ করব সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আততায়ী ধরা পড়লে তার কাছ থেকে কিছু জানা যেত। ’
    কলতান হেসে ফেলল। বলল, ‘ নীলাম্বরবাবু ..... আততায়ী ধরা পড়লে তো সমস্যার সমাধানই হয়ে যেত .... আততায়ীকে বার করাই তো এখন একমাত্র কাজ ।’
    নীলাম্বরবাবু বললেন , ‘ তা বটে ... তা বটে। ’
    কলতান বলে, ‘ আপনার কেসটা আমি নিলাম। আপনার বাড়ি একবার যেতে হবে আমাকে। দেরি করব না। কাল দুপুর বারোটা নাগাদ যাব আমি। আপনি অ্যাড্রেসটা দিয়ে যান। ফোন নাম্বারও দেবেন।’
    — ‘ হ্যাঁ নিশ্চয়ই ....’, বলে কলতানের দেওয়া একটা ডায়েরিতে নীলাম্বর মৈত্র নাম আর ফোন নাম্বার লিখে দিলেন।
    বললেন, ‘আজ তাহলে আমি উঠি। পেমেন্টটা ..... মানে অ্যাডভান্স কিছু ..... ’
    — ‘ না আজ কিছু দরকার নেই। কাল দেখা যাবে। আপনি সাবধানে যাবেন। প্রেসিডেন্সির স্টপ থেকে বাসে উঠে যান।’
    — ‘হ্যাঁ দেখছি’, বলে নীলাম্বরবাবু বর্ষাতি দিয়ে শরীর ঢেকে নিয়ে ধীর পদক্ষেপে দরজার দিকে এগিয়ে যান।

    পরের দিন। আবহাওয়া বেশ ভাল। রোদ্দুর উঠেছে। ভাঙাচোরা সিঁড়ি দিয়ে ছাপ্পান্ন নম্বর হরি ঘোষ স্ট্রীটের তিনতলায় এসে উঠল কলতান। বহু পুরনো বাড়ি। পুরনো পুরনো গন্ধ। নীলাম্বরবাবুর ঘরের ভিতরে কিন্তু বেশ ছিমছাম। বড়সড় বসার ঘর। পুরনো  সোফা এবং দুটো গদিওয়ালা চেয়ার। সিলিং-এ প্রাচীন কড়িবর্গা। অনেক উঁচুতে। 

    কলতান একটা চেয়ারে বসল। নীলাম্বরবাবুর স্ত্রী মনীষা ঘরে ঢুকলেন। তাকে দেখে অবাক হয়ে গেল কলতান। হিসেবমতো পঞ্চাশের আশেপাশে তার বয়স হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দেহের বাঁধুনি এবং লাবন্য দেখে মনে হচ্ছে যেন তিরিশের আশেপাশে বয়স। ফর্সা রঙ। পাতলা চেহারা। চোখে চশমা। উচ্চতা বেশি নয়। পাঁচ তিন হবে। চোখদুটো বেশ বুদ্ধিদীপ্ত। বেশ আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের ছোঁয়া আছে শরীরে। ঘরে ঢুকে কলতানের দিকে হাত জোড় করে বললেন , ‘নমস্কার.... আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের বাড়ি আসার জন্য। আমি আপনার নাম আগেই শুনেছি .... মানে নিউজপেপারে পড়েছি।’
    — ‘ আ.... চ্ছা আচ্ছা .... অনেক ধন্যবাদ । বসুন বসুন ’ , কলতান হাসিমুখে বলে।
    সে ঘরের চারদিকে চোখ বোলাতে থাকে। বাড়ির ভিতরের দিকেও তাকায়। ভিতরের দিকটা বেশ প্রশস্ত মনে হচ্ছে। আরও গোটা তিনেক ঘর আছে মনে হচ্ছে। যে ঘরে বসে আছে এখন, তার সামনের দিকে একটা বারান্দা রয়েছে। ‘ যদি কিছু মনে না করেন আমি একটু বারান্দায় দাঁড়াচ্ছি ’, বলে কলতান বারান্দায় গিয়ে  দাঁড়াল। নীচে হরি ঘোষ স্ট্রীট। কলতান বারান্দার নীচে রাস্তার দুপাশে দেখতে লাগল। নীচে বাড়ির গেট থেকে বেরিয়ে বছর তিরিশের এক যুবক গেটের একদিকে রাখা একটা বাইকে উঠে স্টার্ট দিয়ে অরবিন্দ সরনির দিকে গেল। ওখানে ট্রামলাইনের ওপর দিয়ে একটা ট্রাম যাচ্ছে ধীর গতিতে হাতিবাগানের মোড়ের  দিকে। বাইক আরোহী যুবক বোধহয় রাস্তা পেরিয়ে ওদিকে যাবে। ট্রামটা যাচ্ছে বলে তাকে দাঁড়াতে হল। এই সময়ে সে, হয়ত কাকতালীয়,  একবার নীলাম্বরবাবুদের বারান্দার দিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকাল। হয়ত সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যহীন, তবু কলতান ব্যাপারটা মনের খাতায় তুলে রাখল। ইতিমধ্যে নীলাম্বরবাবু কলতানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। কলতান হাত দিয়ে না দেখিয়ে নীলাম্বরকে বলল, ‘ওই যে মেরুন শার্ট পরা বাইকের ছেলেটা.... ও কি আপনাদের টেনান্ট?’
    — ‘ কই .... কে বলুন তো ? ও ... আচ্ছা .... হ্যাঁ হ্যাঁ ফার্স্ট ফ্লোরে থাকে। ওর বাবা একজন সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের অফিসার। খুব ভাল লোক। ওর একটা বোন আছে সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ে ক্লাস টেনে পড়ে। পড়াশোনায় খুব ভাল মেয়েটা। স্ট্যান্ড করে।’ 
    — ‘ ও আচ্ছা ..... আর গ্রাউন্ড ফ্লোরের ভাড়াটে ... সে কেমন ?’
    — ‘ তিনিও লোক খারাপ না। তবে একটু গুরু গম্ভীর মানুষ। কলকাতা কর্পোরেশানের সিভিল ইঞ্জীনিয়ার। তার স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং এক অবিবাহিত বোন থাকে এখানে। রেন্ট পেমেন্টের ব্যাপারে একদম পারফেক্ট। প্রতি মাসের ঠিক তিন তারিখে পেমেন্ট করে রেগুলার। ’
    কলতান কি যেন ভাবছিল । বলল, ‘ হুমম্ ..... আপনার টেনান্টদের সঙ্গে হয়ত একটু  আলাপ করার দরকার হতে পারে। সোজাসুজি তো সম্ভব নয়। একটু অন্যভাবে ভাব জমাতে হবে আর কি। আচ্ছা ওটা আমি ম্যানেজ করে নেব।’ 
    — ‘ দেখুন যা ভাল বোঝেন। আমি আর কি বলব ..... চলুন ঘরে চলুন। ’
    দুজনে ঘরের ভিতরে চলে এল।
    — ‘ হ্যাঁ ...... বায় দা বায় .... নীলাম্বরবাবু,  ওই বাইক চালানো ছেলেটার নাম কি ? ও কি করে ?’
    — ‘ ওর নাম সত্রাজিৎ। সত্রাজিৎ সেন। ওষুধের কোম্পানি ডেক্সটার অ্যান্ড স্মিথ-এ ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও.... ’
    — ‘ আই সি ..... আপনার ছেলেমেয়েরা তো এখন কেউ বাড়ি নেই । তাদের সঙ্গে দেখা হল না। ঠিক আছে পরে একসময়ে দেখা করে নেব। তাদের নাম দুটো একটু জেনে যাই ..... ’
    —‘ মেয়ের নাম শ্রুতি আর ছেলের নাম ইরাবান।’
    কলতান নাম দুটো নোট করে নিল একটা ছোট নোটবুক বার করে। সত্রাজিতের নামটাও উঠে গেল তার নোটবুকে। 
    কলতান হঠাৎ বলল, ‘ আপনার ছেলে উচ্চমাধ্যমিকে কোন ইয়ারের ব্যাচ নীলাম্বরবাবু?’
    — অ্যাঁ.... কি বললেন ? উচ্চমাধ্যমিক ? দুহাজার নয়ে .... না না দশে মনে হচ্ছে ....   আচ্ছা আমি পরে জানাব আপনাকে ..... মেয়েরটাও জানিয়ে দেব তখন।’
    মনীষা দেবী একটা ফিল্ম ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাতে লাগলেন চুপচাপ ।
    তারপর বলল, ‘ আচ্ছা .... নীলাম্বরবাবু, আপনার লিকুইড অ্যাসেটের পরিমাণ কেমন? অবশ্য বলতে যদি অসুবিধে না থাকে তবেই বলুন। আর একটা কথা, আপনার কোন বড় অ্যামাউন্টের  বীমা মানে, ইনশিওরেন্স পলিসি আছে? ’
    — ‘ লিকুইড অ্যাসেটের পরিমাণটা বলছি না, তবে আপনাকে মিথ্যে কথা বলব না .... পরিমাণটা ভালই। অ্যানসেস্ট্রাল প্রপার্টি আর কি। আর হ্যাঁ বড় অ্যামাউন্টের তিনটে ইনসিওরেন্স পলিসি আছে আমার নামে।’
    — ‘ আই সি .... ওগুলোর নমিনি কে জানানো যাবে কি ? কোন অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ পলিসি আছে কি ?’
    — ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ ..... লুকোবার কি আছে এতে? যা যা বললাম সব কটারই নমিনি আমার ওয়াইফ। হ্যাঁ একটা অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ পলিসি আছে। ওটার ডেথ ক্লেম অ্যামাউন্টই সবচেয়ে বড়।’
    — ‘ আচ্ছা ....। তা এত বড় অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ পলিসি করালেন কি কারণে? লোকে তো সাধারণত ন্যাচারাল ডেথ পলিসিই প্রেফার করে।’
    — ‘ কি কারণে করা হয়েছিল ঠিক বলতে পারব না। আমার বাবা বেঁচে থাকতে থাকতেই কি জানি কি ভেবে এটা আমার নামে করে দিয়ে গিয়েছিল। পনের বছরে ম্যাচিওরিটি। দশ বছর হয়ে গেছে। আপনাকে গোপন করব না ক্লেম অ্যামাউন্ট কুড়ি লাখ টাকা। ইয়ারলি দশ হাজার টাকা প্রিমিয়াম এখনও কোনরকমে টেনে যাচ্ছি।’
    কলতানের নোটবুকে উঠল নীলাম্বরের বয়ান।
    — ‘ অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপাতত এতেই কাজ হবে। আজ আমি চলি। ধরে নিন আপনার কেসের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমি দরকার মতো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করে নেব। কোনো কিছু ঘটলে বা তেমন কিছু নজরে পড়লে আমাকে ইমিডিয়েটলি জানাবেন।’
    মনীষা দেবী বললেন, ‘ প্লিজ একটু সিরিয়াসলি দেখবেন। আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি। প্লিজ বাঁচান আমাদের। আপনার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করে আছি ..... ’
    কলতান সিঁড়ির দিকে এগোতে এগোতে বলল, ‘ চিন্তা করবেন না .... আমি যা করি সিরিয়াসলিই করি ..... একটু সাবধানে থাকবেন। বায় দা বায় ....আপনি তো নাইন্টিফোরের বাংলার ব্যাচ মতিঝিল কলেজের .... না ?’
    মনীষাদেবী কলতানের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। 
    — ‘ হ্যাঁ , কিন্তু .....’
    — ‘ না না ..... এতে সারপ্রাইজিং কিছু নেই। সেদিন নীলাম্বরবাবুই আমাকে ...... কিছু মনে করবেন না।’
    নীলাম্বর মৈত্র পকেটে হাত ঢুকিয়ে কিছু টাকা বার করে বললেন, ‘ মিস্টার গুপ্ত .... এই যে ..... কিছু অ্যাডভান্স ..... পাঁচ হাজার আছে। ক্যাশে দিলাম, কারণ কোন এভিডেন্স রাখতে চাই না।’
    কলতান টাকাটা নিল।
       
    নীলাম্বরবাবু কলতানের সঙ্গে নীচের গেট পর্যন্ত গেলেন। ওখানে গেটের পাশে কলতানের বাইক দাঁড় করানো আছে। বাইকের চাবি খুলতে খুলতে কলতান আচমকা প্রশ্ন করল, ‘ আচ্ছা নীলাম্বরবাবু আপনাদের কত বছর বিয়ে হয়েছে ? ‘
    — ‘ অ্যাঁ ... কি বললেন ? বিয়ে ? এই .... সাতাশ বছর।’
    — ‘ ওকে...থ্যাঙ্ক ইউ .... আসি আজকে ...’
    কলতানের বাইক চলে গেল। 

    বিবেকানন্দ রোডের সিগন্যালে দাঁড়াতে হল। রাস্তার ডানদিকে একটু পিছন দিকে সিগন্যালে স্কুটার থামিয়ে অপেক্ষা করছিল কলতান। রিয়্যার ভিউ গ্লাসে আচমকা ভেসে উঠল পিছনের ..... মেরুন জামা পরা বাইক চালক। হয়ত কাকতালীয় ব্যাপার। কলতান কিন্তু তার বিদ্যুৎ গতির প্রতিবর্তী ক্রিয়ায় মুহুর্তের মধ্যে বিপদের গন্ধ পেয়ে গেল। পকেট থেকে মোবাইল বার করে ক্যামেরা অন করে ডানহাতে গলায় লাগানো একটা স্ট্র্যাপের লুপে ঝুলিয়ে রাখল।

    প্রায় দেড় মিনিট পর সবুজ আলো জ্বলল। গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে এক পলকে ডানদিকে জায়গা ছেড়ে রেখে বাঁদিকে একটা লরির পিছনের দিকে বাইক ঘুরিয়ে নিল।
    একটা ভারী হুন্ডাই বাইক ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে গেল ঠিক যেখানটায় তিন সেকেন্ড আগে কলতানের বাইক ছিল সেই লাইন বরাবর। চালকের জামার রঙ মেরুন। কলতানের মোবাইলে বন্দী হয়ে গেল বাইকের নম্বর — শেষ চারটে সংখ্যা হল ০৪৫২।

    কলতান মনে মনে ভাবল, একটা সিঁড়ি উঠতে পেরেছি মনে হচ্ছে।

    এখন নীলাম্বরবাবুর স্ত্রী এবং পুত্রকন্যার ‘হোয়্যারঅ্যাবাউটস’টা জানা জরুরী।

     তার ছোট ডায়েরিতে কলতান কিছু তথ্য নিয়ে এসেছিল নীলাম্বর মৈত্রের বাড়ি থেকে। তার মধ্যে নীলাম্বরবাবুর ছেলে ইরাবানের উচ্চমাধ্যমিক পাশের বছরটা নিয়ে তার মনে বড়সড় খটকা  লাগল। নয়/দশে পাশ করলে ইরাবানের বয়স হয় অন্তত আঠাশ। নীলাম্বরবাবু জানালেন তার এবং মনীষার বিয়ে হয়েছে সাতাশ বছর। অবশ্য তালেগোলে তিনি ভুল বলেও থাকতে পারেন।

    বাড়িতে কলতানের মা এবং বাবা থাকেন। কলতান এখনও একা। তার দিদি তার থেকে বয়সে প্রায় সাত বছরের বড়। তার এক ভাগ্নী আছে — সম্পৃক্তা। ডাক নাম কুলচা। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে পিওর কেমিস্ট্রিতে এমএসসি পড়ে। মামার খুব ফ্যান। পরোক্ষভাবে তাকে কলতানের অ্যাসিস্ট্যান্টও বলা যায়।  

    দুপুরবেলায় খাওয়াদাওয়ার পর একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে সিলিংয়ের দিকে নিষ্পলকে তাকিয়ে ধ্যানস্থ হয়ে বসে ছিল কলতান। মনে মনে নীলাম্বরবাবুর কেসটা গুটিয়ে আনার চেষ্টা করছিল ।এইসময়ে হৈ হৈ করে এসে পড়ল সম্পৃক্তা ওরফে কুলচা। এসেই সোজা কলতানের ঘরে ঢুকে গেল। 

    — ‘ এই যে মিস্টার আঙ্কেল কিসের ধ্যান করছেন এত মনোনিবেশ করে? নতুন ক্লায়েন্ট টায়েন্ট এসেছে নাকি ? ’
    — ‘ আরে কুলচা ..... তুই এসে গেছিস ভালই হয়েছে। বস বস....’
    কুলচা বসে পড়ে। 
    — ‘ হ্যাঁ বল বসস্।  কি কেস আছে হাতে .... কোন সাহায্যে লাগতে পারি ? ’
    — ‘ হ্যাঁ, হাতিবাগানে অশান্তি ....’
    — ‘ বডি টডি পড়েছে নাকি ?’
    — ‘ এখনও পড়ে নি। তবে কদ্দিন ঠেকানো যাবে বলা মুশ্কিল। টার্গেট লিস্টে আমিও ঢুকে গেছি’, কলতান হাসতে হাসতে বলে।
    — ‘ সাসপেক্ট লিস্ট রেডি ?’ কুলচা পেশাদারি ভঙ্গীতে গম্ভীরমুখে জিজ্ঞাসা করে। 
    — ‘ শর্টলিস্টেড হয়েছে কিছু। তবে ফাইনাল লিস্ট এখনও হয় নি।’
    হাতের ওপর চিবুক রেখে টেবিলে ঝুঁকে বসল সম্পৃক্তা কলতানের দিকে তাকিয়ে। বলল, ‘কাহিনিটা একটু শুনি।’
    সংক্ষেপে কাহানি শোনাল কলতান।
    শুনে কুলচা বলল, ‘ ঘুঁটি আপাতত তিনটে .... মেরুন জামা, ইরাবান আর শ্রুতি। ওই বাড়ির ফার্স্ট ফ্লোরেরও কেউ হয়ত ঢুকতে পারে পরে।’
    — ‘ ঠিক তাই .... তাছাড়া .... না এখন থাক ....’
    এইসময়ে কলতানের মা ঘরে ঢুকে পড়লেন ।
    — ‘ ওমা .... কুলচা তুই কখন এলি ? ভিতর থেকে গলা পেলাম তোর । চল চল ভিতরে চল.... ওসব গোয়েন্দাগিরি পরে করিস। ’

    কুলচা অগত্যা অনিচ্ছাসত্ত্বেও  ভিতরে গেল ।

    ( ক্রমশ: )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:9809:3ec6:d0cd:***:*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:১১504216
  • "ভদ্রলোক ভিতরে ঢুকে জলে ভেজা রেনকোট খুলে একপাশে রাখলেন অনিকেতের কথামতো জায়গায়। "
    অনিকেত কে?
  • dc | 2401:4900:230a:d760:999f:725a:1d72:***:*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:১০504220
  • কলতান আর মনীষা দেবী ক্লাসমেট ছিল। অনেকদিন পর আচমকা দুজনের দেখা হয়। কথাবার্তায় কলতান জানতে পারে নীলাম্বরবাবুর অ্যাক্সিডেন্ট ইনসিওরেন্সের ব্যপারটা। তখন দুজনে মিল মার্ডারের প্ল্যানটা করে। আর দোষ চাপায় মেরুন শার্টের ঘাড়ে। ভাইপোকে কলতানের নাম আসলে মনীষা দেবীই সাজেস্ট করেছিলেন। 
  • Anjan Banerjee | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:০২504223
  • সরি .... টাইপো মিসটেক। অনিকেত না, কলতান হবে ।
  • kk | 2600:6c40:7b00:1231:e525:7136:2051:***:*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৩২504231
  • আমারও একটা প্রশ্ন আছে। নীলাম্বর মৈত্র কলতানের নাম অনেকদিন আগে থেকেই কী করে জানলেন? এইটা কি পরে প্রসঙ্গে আসবে? কিম্বা খবরের কাগজে কলতানের নাম আগে বেরিয়েছিলো?
    বাঙালী গোয়েন্দাদের নামগুলো কী সুন্দরই না হয় -- কলতান গুপ্ত, বীতংস চ্যাটার্জি, উদ্দালক প্রধান। তাদের নামও খবরের কাগজে বেরোয় খুব। তাই জিজ্ঞেস করলাম।
  • Anjan Banerjee | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৪৮504236
  • কোন না কোন মিডিয়া থেকে জেনেছেন যেভাবে মানুষ সফল ব্যক্তিদের নাম জানে। 
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৪:২৭504363
  • রহস্য ক্রমশঃ জমে উঠছে।... 
     
    গোয়েন্দা প্রবরের নাম আরেকটু বাস্তব ঘেঁষা হলে ভাল হতো। ভাগ্নী সহকারী...  এটি ভিন্নতা বাড়াবে। 
     
    মন দিয়ে পড়ছি। একেকটি পর্বের ভেতর আগের পর্বের লিংক দিলে ভাল হয়। শুভ 
     
     
  • :|: | 174.25.***.*** | ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৩:১৪521838
  • এতো এতো বাংলায় অনার্স নিয়ে কী করিবো! মনীষা তার মেয়ে ওদিকে পরান বাগ্দী মামলায় মৌসুমী -- সকলেই দেখছি বাংলা পড়ে। তবে কিনা বুদ্ধিমতী অ্যাসিসটান্ট হলে আলাদা কথা। সে পড়বে বিশুদ্ধ কেমিস্ট্রি। কি মিষ্টি বা কি মিস্ট্রি! 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন