এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • তাহাদের কথা

    রৌহিন লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১১২৪ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৪ জন)
  • রেললাইনটাকে একটা সাপের মত লাগে রুকসানার। এখান দিয়ে সোজা গিয়ে কোশখানিক দূরে কেমন বেঁকে গাছপালার আড়লে ঢুকে গেছে। রোজই দেখে আর রোজই এই কথা মনে হয় ওর। সাপের মতই রেলগাড়িও ছোবল মারে সুযোগ পেলেই – তাহমিনার ভাইটাকে গত বছরেই খেল। কখন হুট করে ট্রেন চলে আসে বোঝা দায়। তাই লাইনের একেবারে ধারে না বসে একটু সরে বসে ও – ঝোপঝাড়ের আড়ালে। প্রত্যেক ট্রেনেই কিছু লোক থাকে যারা এই ভোরের সময়টা হাঁ করে জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকে - নির্লজ্জের মত। মনে মনে খিস্তি দেয় রুকসানা – যেন একটা কী দেখার জিনিষ। পোড়ারমুখো নিখাউন্তির দল সব।

    আজও ঝোপের ধারে এসে বসতে যাবে, হঠাৎ দুটো ঠ্যাং বেরিয়ে থাকতে দেখে মেজাজটা চটকে যায় সক্কাল সক্কাল। এই সাতসকালেও – চিৎকার করতে গিয়েও একটু খটকা লাগে ওর – কেমন একটু অদ্ভুত লাগছে না? শুধু ঠ্যাংদুটো বার করে রাখবে কেন? ঠ্যাঙে আবার জুতোও আছে নোংরা। একটা মাঝারি পাথর হাতে নিয়ে ঝোপে উঁকি মারে রুকসানা – আর মেরেই ওর আত্মারাম খাঁচাছাড়া প্রায়। একটা জ্বলজ্যান্ত মানুষ মরে পড়ে আছে। মাথা ঘুরে পড়েই যাচ্ছিল – কোনমতে সামলে নিয়ে চেঁচামেচি জোড়ে সে। তাই শুনে কাছাকাছি ঝোপ থেকে আরিফা, মীনা এবং আরো দু-তিনজন ছুটে আসে। তারপর তাদের সমবেত চিৎকারে একে একে প্রায় তিরিশ চল্লিশ জন মানুষ জমা হয়ে যায় মিনিট দশেকের মধ্যেই। সকলেই লাশ ঘিরে চিৎকার করে নিজ নিজ বক্তব্য জানাতে থাকে – এবং কেউই কারো কথা কিছুই শোনে না।
    মৃত ছেলেটার বয়স বেশী না – বড়জোর চব্বিশ পঁচিশ হবে। হিন্দু না মুসলমান বোঝা যায় না। কারো চেনাও নয় – এই এলাকার লোকই না মনে হয়। গলায় খুর চালিয়েছে কেউ – রক্ত জমাট বেঁধে আছে – চারপাশেও চাপ চাপ রক্ত শুকিয়ে আছে। কী করা যায় কেউই বুঝতে পারছে না – তর্ক বিতর্ক চলছে। আব্দুল অভিজ্ঞ লোক – সে হল সর্দার। তার বিশ জনের দল নিয়ে হিল্লি-দিল্লী করে বেড়ায় – ধান রোয়ার কাজ করে তারা। আজ অন্ধ্রপ্রদেশ তো কাল ছত্তিশগড়, পরশু হয়তো বনগাঁ – সব চেনা তাদের। অতএব তার ওপরেই যে শেষমেশ সিদ্ধান্ত নেবার দায়ীত্ব পড়বে এ তো বলাই বাহুল্য – তার ওপরে তার বেটি রুকসানাই প্রথম আবিষ্কার করেছে লাশ। আব্দুল বাজখাঁই গলায় হাঁক দেয়, “কেউ কাছে যাবি না – পুলিশে খবর দিতে হবে। পুলিশ এসে যা করার করবে”
    পুলিশের নামে একটু সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে সবাই – পুলিশ সম্বন্ধে তাদের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখের না। তার ওপর থানা প্রায় আধবেলার পথ – কে যাবে খবর দিতে? এখনই মাঠে যেতে হবে সবাইকে – যে যাবে না তার রোজ নেই, সে ক্ষতি ভরে কে? রুকসানা জানে শেষ অবধি সুহেলই যাবে, কারণ সে ডাকাবুকো, মাদ্রাসা পাশ, আর সবচেয়ে বড় কথা আব্দুলের কথা সে ফেলবে না। আব্দুল শুধু তার সর্দার না – সে আবার রুকসানার আব্বু। যদিও মুখে সে কিছুই বলে উঠতে পারেনি এখনো, কিন্তু তার এই দুর্বলতা গোটা গাঁ জানে। জারিনা আর আব্দুলও জানে, তবে তারা এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করে না। জারিনার আশা, রুকসানার কোন সম্পন্ন ঘরে সাদী হবে। আব্দুল অবশ্য অত ভাবে না – সে বলে এখনই সাদীর কথা কি? একটু পড়াশুনা শিখুক বিটি – মুখ্যু হয়ে থাকা কোন কাজের কথা না। অন্ততঃ মাদ্রাসাটা পাশ করুক সুহেলের মত।
    রুকসানার অবশ্য পড়াশুনা খুব একটা ভাল লাগে না। তার ভাল লাগে সাঁতার দিতে আর টিভি দেখতে। গত বছর তাদের বাড়িতে একটা টিভি এসেছে – আব্দুলের কোন মনিব দিয়েছে। তার আগে তারা টিভি দেখতে যেত মণিরুল চাচা নয়তো অনন্ত দাশের বাড়ি। এখন আব্দুলের দলের সব লোকজন তাদের বাড়িতেই দেখে। সন্ধে হলেই সব মেয়েরা ঝেঁটিয়ে এসে পড়ে সিরিয়াল দেখতে, আর একটু রাত বাড়লে ছেলেরা খবর আর সিনেমা চালায়। রুকসানা লুকিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়ে দুতিনদিন ধরা পড়ে মার খেয়েছে। কিন্তু সিরিয়াল দেখার সময়ে তাকে কেউ নড়াতে পারেনা জায়গা থেকে। সিরিয়ালে সে দেখেছে থানায় অনেক মজাদার লোক থাকে - তাই মনে মনে তার ইচ্ছে থানায় যাওয়ার, কিন্তু তাকে নেবে কে? আম্মি মোটেই তাকে সুহেলের সাথে একা ছাড়বে না। মনে মনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুকসানা।
    বেশ কিছু বাকবিতন্ডার পরে ঠিক হল সুহেল, সামিরুল আর অনিল যাবে থানায় – বাকি সবাই দু ঘন্টা করে ওভারটাইম করলে ওদের তিনজনের রোজের টাকা উঠে যাবে – সেটা ওদের দেওয়া হবে। ব্যবস্থাটা সকলেরই মনঃপুত হওয়ায় ওরা তিনজন চলে গেল তড়িঘড়ি তৈরী হয়ে বেরোতে। বাকি ভীড়টাও আস্তে আস্তে পাতলা হতে থাকে। রুকসানার মনে পড়ে সে এসেছিল মাঠ সারতে – কিন্তু এখন দেরী হয়ে গেছে। এক্ষুণি আম্মু হাঁকাড় পাড়বে। পানি ওঠাতে হবে কুঁয়ো থেকে, ঘর লেপতে হবে। আরো গুচ্ছের কাজ পড়ে আছে। আজ আর এদিকে হলনা – একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরের দিকে এগোয় সে। লাশটা পড়ে আছে একা একা – কয়েকটা বাচ্চা ছেলে তখনো উঁকিঝুঁকি মারছে সেটার চারপাশে। আর লাশটার মাথার কাছে বসে হীরা পাগলি কী সব বিড়বিড় করে আওড়াচ্ছে। যেন কথা বলছে লাশটার সঙ্গে।
    সত্যিই কি হীরা কথা বলছিল লাশটার সঙ্গে? ও কি মরা মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে? ভেবে একটু কেঁপে ওঠে রুকসানা – আর কথাটা ঘুরপাক খেতে থাকে ওর মাথার মধ্যে। একটু বেলা বাড়লে গেঁদু আর লালিকে মাঠে খুঁটিতে বেঁধে গুটি গুটি পায়ে হীরাকে খোঁজে ও। হীরা বসেছিল রেললাইনের ওপরে – ওর ট্রেনে ভয় নেই। তখনো কী সব বিড়বিড় করে চলেছে আপন মনেই। এমনিতে হীরা খুব বেশী কথা বলে না – মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে বটে, কিন্তু বেশীরভাগ সময়েই কেমন শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বসে থাকে। হীরা কারো কাছে খাবারও চায় না – তবে গ্রামের অনেকেই ওকে কলাপাতায় বা পুরণো সানকিতে করে খাবার বেড়ে দেয় – সেসবে না করে না। খেলে আবার সানকি ধুয়েও দেয় হীরা। আপনজন বলতে কেউ নেই ওর – সবাই বলে ও নাকি সেই বাংলাদেশ না কোথা থেকে পাচার হয়ে বর্ধমানে এসে পড়েছিল – তারপর পাগল হয়ে যাবার পরে তাকে সেখান থেকেও খেদিয়ে দেয়। তারপর কিভাবে কোন চক্করে সে এই গাঁ’য়ে এসে পড়ল সে খবর আব্দুল মিয়াও সঠিক জানে না।
    “এই হীরা, শুনতে পাচ্ছিস?” – ভয়ে ভয়ে ডাকে রুকসানা। হীরা শোনে না – সে আপন মনে বিড়বিড় করে যেতেই থাকে। আজ যেন ওকে কথায় পেয়েছে। কে জানে কার সঙ্গে ওর এত কথা! “এই হীরা – শোন না” আবার ডাকে রুকসানা, আরো কাছে থেকে। এবার তার দিকে তাকায় হীরা – বিড়বিড়ানি বন্ধ হয়েছে। এমনিতে হীরার চোখ দেখে কিছুই বোঝা যায় না – কিন্তু এখন ওর চোখে স্পষ্ট হাসির আভাস দেখে রুকসানা। যেন ওকে দেখে মজা পেয়েছে। “কী কইবা, কও শুনি” – স্পষ্ট গলায় বলে হীরা। এত স্পষ্ট উত্তর আশা করেনি রুকসানা – হীরার সাথে কথা বলা যায়না বলেই এতদিন জেনে এসেছে ওরা। কিন্তু আজকের দিনটা কেন যে এত উল্টোপাল্টা কে জানে! “কইছিলাম যে – ইয়ে মানে তুমি কার লগে কথা কইছিলা এতক্ষণ?” দ্বিধা ঝেড়ে শেষমেশ বলেই ফেলে রুকসানা – যা হয় হবে।
    কিছুই অবশ্য হয় না – প্রশ্ন শুনে হীরার কোন হেলদোল হয় না – “সুনীলের লইগ্যা” সে উত্তর দেয় – যেন কোথাও অস্বাভাবিক কোন কিছু নেই। “কে সুনীল?” রুকসানা অবাক হয়ে শুধায় – এ গ্রামে সুনীল বলে কাউকে সে চেনেনা। সুনীলটাকে প্রথমে সুহেল শুনেছিল সে – তাই আরো চমকে গেছিল – পরে ভুলটা বুঝতে পেরেও চমকটা কাটতে চায় না তার – এ আবার কী রে বাবা? হীরা একটু মুচকি হেসে বলে “আজই তো হ্যায় আইল গিয়া”, বলেই আবার অন্যদিকে ফিরে কী যেন বলে। ধাঁধা লেগে যায় রুকসানার – আজ আবার কে এল গাঁ’য়ে এই ডামাডোলের মধ্যে? তাকে হীরা চিনলই বা কী করে? সে একটু ভয়ে ভয়ে বলে, “আজ? কী কইছিস হীরা?” হীরা কোন উত্তর দেয় না সাথে সাথে – কিন্তু একটু পরে আবার তার দিকে তাকায় ও – “তুমিই যে তারে প্রথম দ্যাখলা, ঝোপের ধারে – মনে নাই?”
    “কী যা তা কইছিস হীরা” – একটু জোরেই চেঁচিয়ে ওঠে রুকসানা। হঠাৎই সে বুঝতে পারে, হীরা ওই লাশটার কথা বলছে। এখান থেকে একটু এগোলেই সেই ঝোপটা – যার পিছনে লাশটা এখনো পড়ে আছে। হীরার কথা শুনে রীতিমত হিমস্রোত নেমে আসে তার মেরুদণ্ড বেয়ে, “তুই মিথ্যে বলছিস” – চিৎকার করে বলে ওঠে সে। হীরা সেরকমই হাসিমুখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে, “ডর পাও ক্যান? হ্যায় কোন ক্ষতি করব না তোমার, বরং তোমারে হ্যায়ের ভালই লাগসে। তুমি তারে খুঁজে না পাইলে অহনে তো শ্যাল কুত্তায় খাইত। আর তোমার ক্ষতি হ্যায় করবই বা ক্যামনে – লাশ লুশ মানুষ, কিডা ক্ষমতা আসে হ্যায়ের?” হীরার শান্ত ভঙ্গীতে আরো কেঁপে ওঠে রুকসানা, “মরা মানুষ কথা বলে নাকি হীরা?”
    আবারো কিছুক্ষণ ওর দিকে হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে থাকে হীরা – বেশ কিছুক্ষণ কিছুই বলেনা সে। রুকসানার অস্বস্তি হয় – এই পাগলির পাল্লায় পড়াই তার গুখোরি হয়েছে – পালাতে পারলে বাঁচে সে। আম্মু গোয়ালে আছে – জাবনা দেবে, দুধ দুইবে। বেরিয়ে তাকে না দেখতে পেলে তুলকালাম হবে – পিঠে চ্যালাকাঠ ভাঙবে তার। উঠে দৌড় দেবে কি না ভাবতেই হঠাৎ করেই আবার বলে অঠে হীরা – “এই যে আমি কথা কইতাসি – আমারে কি মরা মাইনষের চেয়ে বেশী কিসু লাগে তোমার? কও দিন?” কথাটা শুনে কেমন যেন ভেবলে যায় রুকসানা – তার চোদ্দ বছরের জীবনে এমন অদ্ভুত কথা সে কখনো শোনেনি। এ আবার কেমন? হীরা তো তাদের মতই – বেঁচেবর্তে আছে দিব্যি – ভাবতে গিয়েই কেমন হোঁচট খায় সে। সত্যিই তো ও তাদের মত নয় আদৌ। একটা মানুষের ঠিকঠাক বেঁচেবর্তে থাকতে যা যা লাগে, যা যা তারা করে, সে নিজে করে, তার প্রায় কিছুই তো হীরার নাই। কিন্তু তাই বলে ও ঠিক মরা মানুষও তো নয়। উহহ – সব আবার গুলিয়ে যেতে থাকে তার।
    “মোটেই তুই মরা মানুষ না” – শেষ অবধি বলেই ফেলে রুকসানা, “আমারে ডরাইতেছিস”
    “মরা মাইনষেরে এত্ত ডর পাও ক্যান কও দিহি? মরায় কুনো ক্ষতি করসে তোমার আজ অবধি?” হীরার মুখে আজ হাসিটা যেন আঠা দিয়ে আটকে গেছে, “জ্যান্ত মিনষেরে ডরায়ো দিদি – হ্যায়রা তোমারে ছিড়্যা খুড়্যা মরা মানুষ বানায়ে দিতে পারে গা যহন তহন, এই আমারে যেমন দিসে” বলতে বলতে কিছুক্ষণের জন্য হাসিটা কেমন মিলিয়ে যায় হীরার চোখ থেকে, সেই শুন্য চাহনি যেন ফিরে আসে। মাত্র কয়েক সেকেন্ড – তারপরেই আবার হাসি হাসি, উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার চোখদুটো, “সুনীলের কুনো ক্ষতি করার ক্ষমতা নাই আর – অরে ডরায়ো না” বলেই আবার তার বাঁ দিকে তাকিয়ে কিছু বিড়বিড় করে হীরা – যেন সত্যিই সুনীল বসে আছে ওপাশে। এদিক থেকে উঁকি মেরে একবার দেখার চেষ্টা করে রুকসানা – কিন্তু কিছুই দেখতে না পেয়ে হঠাৎ সম্বিত ফিরে পায় যেন – সেও কি হীরার মত পাগল হয়ে গেল নাকি?
    “ওর নাম সুনীল, তুমি জানলা কেমন করে?” একটু স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করে রুকসানা, “কইল নাকি তোমারে?”
    “হ, কইসে। হ্যায়ের নাম সুনীল, এহান থিক্যা গলসি যাওনের রাস্তায় মল্লসারুল গাঁয়ে হ্যায়ের বাসা” হীরা বলে, যেন সে সব জানে, “বর্ধমানে মেসে থাইক্যা পড়াশুনা করত। কাল বাড়ি আওনের পথে হ্যায়রে মাইরা গাড়িতে কইর‍্যা এহানে ফালায়ে থুয়ে গেসে গা” বলে বাঁদিকে তাকিয়ে একটু মাথা নাড়ে সে – যেন ঠিক বলছে সেটা নিশ্চিন্ত করে নেয়, “হ্যায় পাট্টি ফাট্টি করত” বলে একটু হেলান দিয়ে বসে হীরা, “হ্যায় কয়, তোমার মতন হ্যায়ের একডা বুইন আসে, তার নাম সুনীতা”
    কী বলবে, কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা রুকসানা। অন্তরাত্মা কেঁপে গেছে তার। “আমি যাই, মা ডাকবে” বলে কোনমতে উঠে পড়ে সে ফ্রক সামলে। “শুন দিদি” পিছন থেকে বলে ওঠে হীরা, “পুলিশ আইব দুপ্পুর পার কইরা – হ্যাগো আবার কইতে যায়ো না এইসব। তুমারে সন্দ করব আবার” বলেই আবার হাসতে থাকে সে। এক দৌড়ে ওখান থেকে চলে আসে রুকসানা। পাগলের মাথায় বুদ্ধি তো কম নাই, ভাবে সে – এই কথা তার মাথাতেই আসে নি। পুলিশ নিয়ে তার কোন ধারণা নেই বটে সিরিয়ালে দেখা ছাড়া, কিন্তু গাঁয়ের বড়রা সবাই পুলিশরে ডরায়। আব্বুর মেন চেলা সামিরুল চাচা বলে পুলিশে ছুলে নাকি আঠারো ঘা। আজই যে কারণে কেউ থানায় যেতে চাইছিল না। তার আব্বু নিজেই যেত – কিন্তু সে তো সর্দার – সে চলে গেলে আজ আর ধান কাটাই হবে না, তাই তার চেলাদের পাঠানো হয়েছে।
    হাঁড়িটা চুলা থেকে নামিয়ে ছোট ভাইটাকে ভাত বেড়ে দেয় সে – আম্মু এখনো গোয়াল থেকে ফেরেনি, নিশ্চিন্দি। এবার তাকে চান করে তৈরী হতে হবে – মাদ্রাসা যাবে। মাদ্রাসায় শাড়ি পরে যাবার নিয়ম নেই – নীল সাদা সালোয়ার কামিজ পড়তে হয় সবাইকে। সে সব বার করে গামছাটা কাঁধে ফেলে বেরোতে যাবে, তাহমিনার গলা শুনতে পায় সে – “ওই রুকসানা, কই ছিলি তুই?” তাহমিনাও কাঁধে গামছা নিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের চাতালে। “কই আবার যামু” একটু ঝাঁজিয়ে বলে রুকসানা – “কামকাজ সারতাছি তো” বলে কুঁয়োতলার দিকে হাঁটা দেয় সে। তাহমিনাও আসতে থাকে পাশে পাশে – তাদের বাসায় কুঁয়ো নেই – আরো কয়েক বাসার মেয়েরা এখন গোসল সারতে আসবে এখানে। একটু গাজল্লা হবে, তারপর সে আর তাহমিনা মাদ্রাসা যাবার জন্য তৈরী হবে – বাকিরা ধীরে সুস্থে যে যার কাজে যাবে সব। আজ আর এসব ভাল লাগছে না রুকসানার, কেমন যেন ভেবলে আছে সে।
    “হ্যাঁ রে মীনা, তুই জ্বিন পরী এসব মানিস?”
    “ও মা গো” একটু জোরেই বলে ওঠে তাহমিনা, “সকাল সকাল কথার ছিরি দেখো। জ্বিন আবার মানা না মানার কী আছে – সে তো আছেই”
    “না মানে আছে তো ঠিকই – কিন্তু তুই কি ভয় পাস?” রুকসানা আড়চোখে তাকায়
    “পাই না আবার? খুব পাই” তাহমিনা জল তুলতে তুলতে বলে, “আমি বলে জ্বিনের ভয়ে সন্ধেবেলা থেকে আর জলই খাইনা – যদি পেচ্ছাপ পেয়ে যায় সেই ভয়ে” বলে হঠাৎই রুকসানার দিকে তাকায় সে, “কেন রে ছেমড়ি? তুই বুঝি ভয় খাস না?” বলতে বলতে ঠক করে বালতিটা নামায় তাহমিনা। রুকসানা একটু গুটিয়ে যায়, কতটা কী বলবে ঠিক করে উঠতে পারে না সে। তারপরে এক সময়ে বলে, “না, মানে জ্বিন-পরীরা তো আজ অবধি কারো ক্ষতি করেছে বলে শুনিনি। বরং জিয়ন্ত লোকেরা” ---
    “ও কী রে ছেমড়ি!” অবাক গলায় বলে ওঠে তাহমিনা, “তুই যে দেখি হীরা পাগলির মত কইতে লেগেছিস? তোরও মাথামুথা গেছে নাকি?” মাথায় জল ঢালতে ঢালতে খানিকটা আপন মনেই বলে চলে সে, “জ্বিন পরীরা আমাদের ক্ষতি করে না কারণ আমরা নিয়ম কানুন মেনে চলি, বুঝলি ছেমড়ি? না মানলেই দেখতে পাবি ক্ষতি করে কি করে না” বলে একটা বড় বড় হাবভাব নিয়ে মাথা ঘষতে থাকে সে, যদিও তাহমিনা রুকসানার চেয়ে মোটে এক বছরের বড়। হীরা পাগলির নামে আবারও থতমত খেয়ে গেছে রুকসানা – তার মানে হীরা শুধু আজ নয়, অন্যদের কাছেও এসব কথা কখনো না কখনো বলেছে।
    “কিন্তু হীরাই তো কোন নিয়ম কানুন কিছুই মানে না” এবার রুকসানাও বলে ওঠে, মাথায় জল ঢালতে ঢালতে, “রাত-বিরেতে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়, ঠিকমত গোছল করে না, যা পায় তাই খায় – ওকে তো জ্বিন পরীরা কিছুই করে না” বলতে বলতে একটু চুপ করে থাকে সে, তারপর যোগ করে, “অথচ জীবন্ত মানুষেরা ওকে কেমন” –
    “আরে বুঝিস না ক্যান, ওই লগেই জ্বিনেরা তাকে কিছু করে না – তারা কি আর জীবন্ত মাইনষের এঁটো খাবে নাকি?” তাহমিনা এবার আরো গম্ভীর মুখে তত্ত্ব আওড়ায়, “মানুষে খাইছে বলে তাও প্রাণে বেঁচে গেছে – জ্বিনে ধরলে” –
    “কিন্তু ওর লগে মরা মাইনষের তফাৎ কি?” ছাড়া কাপড়গুলো ধুতে ধুতে বলে ওঠে রুকসানা, “ও তো মইরেই আছে, তাই নয়? তাছাড়া দেখ, জীবন্ত মানুষেরা এই সুনীলরে কি ছাড়ল? সেই তো মাইরেই ফেলল?” বলেই জিভ কাটে রুকসানা – সর্বনাশ। সুনীলের নামটা বলে ফেলেছে সে। এক্ষুণি কিছু একটা বলে ম্যানেজ দিতে হবে। কী বলা যায়? আম্মু যে বলে তার পেত পাতলা সে তো আর এমনি এমনি বলে না। এমন পই পই করে বারণ করে দিল হীরা, তারপরেও – ভাবতে গিয়ে হঠাৎই থমকে যায় রুকসানা – হীরা? হীরাকে তো সে চেনেই না তেমন করে। অথচ মীনা তার প্রিয় বন্ধু। তবু তাকে সে বলতে পারছে না হীরা বারণ করেছে বলে? নিজেকেই অদ্ভুত লাগে তার।
    তাহমিনা অবশ্য নামটা খেয়াল করেনি – বা হয়তো শুনতে পায়নি ঠিকমত – সে কিছু জিজ্ঞেশ করেনা এ নিয়ে, রুকসানাও আর কথা বাড়ায় না। কোনমতে গোসল সেরে বাড়ির দিকে পা বাড়ায় সে – এখন নাকে মুখে গুঁজে দৌড়াতে হবে। ন’টা বিশের বাসটা না ধরতে পারলে মাদ্রাসা ঢুকতে লেট হয়ে যাবে, হুজুর দাঁড় করায়ে রাখবে। তাহমিনাও দৌড় দেয়, তাকেও তৈরী হয়ে আসতে হবে, এখন আর কারো সময় নাই।
     
    বাসটা প্রায় ভর্তী হয়েই আসে রোজ। বেশীরভাগই মাদ্রাসার ছেলে মেয়ে, কিছু লোক দূরে শহরের দিকেও যায় – গলসি, বুদবুদ, বর্ধমান। তাদের এখান থেকে সে আর মীনা ছাড়াও একগাদা পুচকে পুচকে ছেলে এই বাস ধরে – রমজান, আকবর, গোপাল, মুনীর, সইদুল – সবারই এক তাড়া। এর পরের বাস সেই ন’টা পঞ্চাশ – সে ধরলে নির্ঘাত দেরী। কোনদিনই বসার জায়গা পায় না তারা – আধ ঘন্টার রাস্তা দাঁড়িয়েই যেতে হয়। তাদের গাঁয়ে একটা মক্তব আছে – ইমরান চাচা পড়ায় সেখানে – কিন্তু দশ বছর পার করেও যারা পড়াশুনা চালিয়ে যায়, তাদের এই মাদ্রাসা ছাড়া আর কোন রাস্তা নাই।
    পড়া আজ কিছুই মাথায় ঢোকে না রুকসানার – সকালের কথাগুলোই ঘুরপাক খেতে থাকে মাথার ভিতর। পড়া পারেনি বলে তাকে ভূগোল ক্লাসে নীল ডাউন করিয়ে রাখেন হুজুর। তারপর অঙ্ক ক্লাসেও বেত জোটে কপালে – কিন্তু এসব আজ গায়ে মাখেনা রুকসানা। মন তার পড়ে আছে সেই ঝোপের ধারে, যেখানে সুনীলের লাশটা – আচ্ছা সত্যিই কি ওর নাম সুনীল? নাকি হীরা বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলল? একটা পাগলি এত ঠিকঠাক গল্প বানিয়ে বলবে কেমন করে? মল্লসারুলের নাম সে শুনেছে – তাদের এই মাদ্রাসা ছাড়িয়ে আর দুটো স্টপেজ পরেই সেই গ্রাম – সেখানে শিবমন্দির আছে। সেখান থেকেও দু-তিনজন পড়তে আসে এই মাদ্রাসায়। ছেলেদের সাথে কথা বলতে দেখলে হুজুর আবার বেত মারবেন, এই ভয়ে তাদের আর কিছু জিজ্ঞেশ করে উঠতে পারেনা সে ক্লাসের মধ্যে – কিন্তু তক্কে তক্কে থাকে। ছুটির পর বাস স্ট্যান্ডে তাদেরই ক্লাসের হাফিজুলকে দেখে গুটি গুটি এগিয়ে যায় সে – একবার দেখে নেয় হুজুর আশেপাশে আছেন কি না – তারপর নিশ্চিন্ত হয়ে ডাকে – “এই হাফিজুল”
    হাফিজুল একটু অবাকই হয়। মেয়েদের বারণ করা থাকে বলে তারা প্রায় কেউই ছেলেদের সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলে না। রুকসানাকে সে চেনে – একই ক্লাসে পড়ে তাই, কিন্তু কোনদিনই তার সাথে কোন কথা হয় নি ওর। সে একটু জিজ্ঞাসু চোখে ভয়ে ভয়ে থাকায় ওর দিকে।
    “তোদের গ্রামে সুনীল বলে কাউকে চিনিস?” রুকসানা সরাসরি জানতে চায়। সে শুরুতে একতু দ্বিধায় ছিল তুমি বলবে না আপনি, এসব ভেবে – কিন্তু যেহেতু হাফিজুল তারই বয়সী, ফট করে তুইটাই বেরিয়ে যায় মুখ থেকে। তাতে অবশ্য ফল ভালই হয় – হাফিজুল একটু স্বচ্ছন্দ হয়ে যায়, “সুনীল তো তিনজন আছে – কার কথা কইছিস?” সে-ও তুইই চালিয়ে দেয়।
    “যে বর্ধমানে থাকে” রুকসানা ভাবতে থাকে আর কী বলা যায় – “পাট্টি ফাট্টি করে” একটু থেমে যোগ করে সে, তারপর হঠাৎ মনে পড়তে বলে, “সুনীতা নামে একটা বুইন আছে তার, আমাদের বয়সী”
    “ও সুনীলদা – হ্যাঁ, তারে তো চিনি” হাফিজুল একটু অবাক হয়েই বলে, “সে তো আমারেও পাট্টিতে ঢুকতে কইসে – কেন রে? তারে তুই চিনলি ক্যামনে?”
    “ওই আর কি” – এবার একটু আমতা আমতা করে রুকসানা, “চিনি না ঠিক। মানে আমাদের গাঁয়েও আইছিল পাট্টির কথা কইতে – তাই জিগালাম আর কি” – বলতে বলতে গলা শুকিয়ে যায় রুকসানার। বাস এসে পড়ায় হাঁফ ছেড়ে তড়িঘড়ি বাসে উঠে পড়ে সে – হাফিজুলকে বিদায়টাও জানায় না। তার মাথার মধ্যে চক্কর দিচ্ছে – এসব তাহলে সত্যি!! হীরা এসব কথা জানল ক্যামনে? তবে কি সত্যিই – মুখটা শুকিয়ে আমসি মত হয়ে যায় রুকসানার। সারা রাস্তা এমন কি মীনার সাথেও বেশী কথা বলে না সে – খোঁচাখুচি করলে বলে শরীরটা তার ভাল নেই, মাথা ধরেছে। অন্যদিন হলে মীনা ছাড়ত না – কিন্তু আজ কেন জানি ওকে বেশী ঘাঁটায় না সে।
    বাসায় ফিরে বইখাতা রেখেই কেমন মোহগ্রস্তের মত বেরিয়ে পড়ে রুকসানা। ওই ঝোপের ধারে যেখানে লাশটা পড়েছিল, সেখানেই যায় আগে – কিন্তু সেখানে এখন আবার বেশ ভীড় – পুলিশ এসেছে, তারা বড়দের সব্বাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, যেন খুনটা তারাই করেছে এমন হাবভাব। তাকে দেখতে পেয়ে চাপা ধমক দেয় মণিরুল চাচা – “তুই এখানে কী করতে আইছিস? যা ভাগ – ছ্যামড়া ছেমড়িদের এখানে কুনো কাম নাই এখন”
    ধমক খেয়ে পালিয়ে আসে রুকসানা – কিন্তু বাসায় ফেরে না সে। অনন্ত দাশের বাড়ির পিছন দিকে যে পুকুরটা আছে, গুটি গুটি পায়ে সেখানে চলে আসতেই দেখে যা ভেবেছে তাই, হীরা বসে আছে একা একা। পুকুরের ওধারে ধানক্ষেতে হাওয়া খেলে ঢেউ উঠছে লম্বা লম্বা – মাঝখান দিয়ে সাপের মত চলে গেছে রেললাইন। সন্ধ্যে নামছে চরাচর জুড়ে – এই সময়েই জ্বিন পরীরা সব রূপ নেয় – পুকুরের ধারে ওৎ পেতে থাকে, কখন কোন মেয়ে খোলা চুলে নাইতে আসবে, তার ওপরেই ভর করবে তারা।
     
    কোন কথা না বলে হীরার পাশে গিয়ে বসে রুকসানা – তারপর বলে, “সে কি এখনো আছে? ”
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৪৫526853
  • এই গল্পটা এতদিন পরে পড়লাম কেন ! বড্ড মিস। 
  • Rouhin Banerjee | ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:২১526886
  • স্বাতী দি, এটা আসলে খেরোয় আছে বলে লোকের চোখে পড়েনি। সেদিন নিবেদিতা শেয়ার করল, তারপর দেখছি অনেকে পড়েছেন।

    গল্পটা হরিদাস পালে না দেবার একটা কারণ আছে। এই গল্পের ভাষা একটা গুরুত্বপূর্ণ আঙ্গিক। অথচ আমি জানি, স্থানীয় ভাষা হিসাবে যা ব্যবহার করেছি, সেটা ঠিক ঐ অঞ্চলের স্থানীয় ভাষা নয়। আমার ইচ্ছে ছিল কিছু কিছু শব্দ রিপ্লেস করব - কিন্তু সে আর করা হয়ে ওঠেনি। তাই এটা বেশী প্রচার করা নিয়ে আমার একটু দ্বিধা আছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন