রাজা আলী
----------------
আশিস বন্দোপাধ্যায়
মেঘালয় পর্যটনে গেছিলাম। সেখানে রাজা আলীর সঙ্গে পরিচয় হল। এক ঝাঁক অবিন্যস্ত চুল, নীল শার্ট পাজামা পরিধানে। যেন নদীর জলের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পরেছে। দেখে ২০-২২ বছরের লাগে।
রাজা আলী বাংলাদেশী, ডাউকি নদীর কূলে কুলের আচার বেচে।
ডাউকি নদী ভারতে মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়েছ। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ডাউকি নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি লীলাভূমি। নদীর জল খুব স্বচ্ছ। একটা নদীর জল ঠিক কতটা স্বচ্ছ হতে পারে? এর উত্তর পেতে চাইলে আপনাকে এই নদী টিকে দেখতে হবে। কল্পনাকেও হার মানানো স্বচ্ছ জল, এতই স্বচ্ছ যে জল নিচের পাথর, মাছ, বালি, নদীর তলদেশ সবকিছুই দেখা যায়।
সূর্যের ঝলমলে আলো নদীর নিচ পর্যন্ত চলে যায় এক নিমেষেই। জল আকাশের প্রতিবিম্বে নীল।
দেখা যায় প্রতিবছর বিশেষ করে, শীতকালে এখানে দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ বনভোজন ও নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে।
সেই খানেই প্রকৃতির কোলে রাজা আলীর সঙ্গে আলাপ হল।
দুই, দশ কদমে রাজা আলী
ভারতের ভিতর ঢুকে কুল কেনার আর্জি জানায় ।
কহে 'দাম দিতে হইবো না, বাংলাদেশের আচার নিবেন, খাইয়া দ্যাখেন, ভালো লাগলে তো নিবেন।'
খেয়ে দেখলাম, খুব সুস্বাদু।
পর্যটকদের কাছে অর্ধেক আচার এই ভাবে বিতরণ করে, অর্ধেক বেচে সে, আবার দৌড়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আচার বেচা আর তার আচারব্যবহারটি অনন্য ছিল।
বললাম - 'তুমি এভাবে ভারতে প্রবেশ কর, তুমি তো সমস্যায় পড়বে রাজা আলী।'
তার সাবলীল প্রতুত্তর - 'আজ বিশ বৎসর এই কাম করতাসি, কুলের আচার বেচ্তাসি আমাগো সবাই জানে সবাই চেনে। ওহি পাখি দ্যাখেন, এ কূল ওকূল করে, ওরে কোন ধরতাসে? নদীর জলের রঙটা দ্যাখেন। নদী টারে দ্যেখেন তারে কে আটকায়?
অদ্ভুত অনুভূতি নিয়ে ঘরে ফিরলাম, দেশ ভাগ হয়েছে পঁচাত্তর বছর, ওরা দুটি দেশকে ভাগ এখনো করে নি।
গুরুর কৃপায় আমার লেখা প্রকাশিত হয়েছে ।এখানে অনেক বিদগ্ধ ,গুণী মানুষের লেখা স্হান পেয়েছে ।
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ভালো
অনেক ধন্যবাদ
ভালো লাগলো।আরো লিখবেন।
ধন্যবাদ
বাঃ