প্রতিপদ পেরিয়ে গেল, তবু বহু জায়গায় এখনও জল নামেনি সামান্যও। ঘরের ভিতরে অব্দি জোয়ার-ভাটা খেলছে। সুন্দরবনে যাঁদের পাকা বাড়ি, তাঁরা রীতিমতো privileged দের পর্যায় পড়ছেন এই মুহূর্তে, কারণ সে-সব বাড়ি আংশিকভাবে বিপন্ন হচ্ছে শুধু। মাটির বাড়ি গলে, ভেসে যাচ্ছে।
যাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণকার্যে যাচ্ছেন, একটিই পরামর্শ --- survey করে ত্রাণে নামুন। সাহায্য যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের হিসেবে আমাদেরই সাধ্য সীমিত। কাজেই, সেই প্রতিবন্ধকতা মেনে নিয়েই যা করার করতে হবে। গতবার আমফানের পর রায়দিঘি সংলগ্ন একটি গ্রামে ত্রাণকার্যে গিয়েছিলাম, সে সময় আমাদের কিছু প্রাক্তন ছাত্ররা দু' দিন আগে থেকে survey করে একটা নীল-নকশা বানিয়েছিল ত্রাণের। যে জায়গায় যাচ্ছেন, সেখানে পরিচিত কেউ থাকলে ভালো, এই কাজটি সহজে হবে। না হলে গিয়ে একটু সময় নিয়ে প্রথমে সরেজমিনে ত্রাণপ্রার্থী পরিবার কটি (বা আমরা কটি পরিবারকে ত্রাণ দিতে সমর্থ), দেখে নিলে ভালো -- পরিবারপিছু কতজন সদস্য, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা সদ্যোজাত আছে কিনা, মোটামুটি সব বাড়িতেই অন্ততপক্ষে তেল, নুন, চিনির যোগান আছে কিনা, ইত্যাদি।
চেষ্টা করা দরকার, অন্তত প্রথম ৫/৬ দিনের ত্রাণ --- কিছু অবশ্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পরিবারগুলির হাতে তুলে দিয়ে আসা। পরিবারপিছু একজন মানুষকে ডেকে নিয়ে, ত্রাণসামগ্রী যেখানে রাখা, সেখান থেকে তাঁর হাতেই জিনিসগুলি দিলে কাজ তাড়াতাড়ি এগোবে। চিঁড়ে, মুড়ি, ছাতু, সয়াবিন বড়ি, বিস্কুট, ইলেক্ট্রল বা ও.আর.এসের পাউচ্ (সব ৩/৪ প্যাকেট করে), বাতাসা (২০০ গ্রাম), দুটো ছোট সাবান, মহিলাদের স্যানিটারি প্যাড (যে পরিবারে যেমন প্রযোজ্য), গুঁড়ো দুধ (কোলের শিশু থাকলে) --- এই সবই ওই ৫/৬ দিনের মতো পরিমাণ, যাতে অন্তত প্রাথমিক বিপন্নতাটুকু কাটিয়ে দেওয়া যায়। গতবছরের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলাম। যদি কোনও কাজে আসে, ভালো লাগবে।
ফটো: ইন্টারনেট
এপারে চণ্ডাল টেলিভিশনের লোক, তবু টিভির এইসব খবরের দিকে তাকাতে আজকাল খুব ভয় হয়!
আরও লিখুন
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ, বিপ্লব বাবু। সত্যিই যত দিন যাচ্ছে, এই খবরের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে করে অসহায়তার কারণেই। কিন্তু ততবারই বুঝি, আরও বেশি করে তাকিয়ে থাকা প্রয়োজন।
নিশ্চয়ই, চেষ্টা করবো আরও লিখে যেতে। এই পরিস্থিতি নিয়েই গতকাল বুলবুলভাজায় 'আর কবে আসবে বিকল্প পাঠক্রম' শীর্ষক একটা লেখা লিখেছি --- আলোচনার বিষয়টি একটু আলাদা, প্রেক্ষিত এক। দেখতে পারেন।