১৯৪৬-এর প্রেতচ্ছায়া : সুস্মিতা ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৫ মে ২০২৫ | ৯৭৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
১৯৪৬ সাল। আমার মা তখন ভিক্টরিয়া ইনস্টিটিউশন এ প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কলেজ ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক অল্পই। তাও যাতায়াত পর্দা ঢাকা ঘোড়ার গাড়িতে। আগের বছর মেজ মামা বিয়ে করেছেন এক বাঙালি ক্রিশ্চিয়ান মহিলাকে। চিঠি মারফত শুধু ওই খবরটুকুই দিয়েছেন বাবা মাকে, এবং এ তরফ থেকে "বউ নিয়ে তুমি বাড়ি এসো" জাতীয় কোন চিঠি যায়নি। এর মধ্যে ১৯৪৬ এর আগস্ট মাসে নৌ সেনা মেজো মামার কন্যার জন্মের দশ দিনের মাথায় হঠাৎ যুদ্ধে ডাক পড়ল। স্থির করল কচি মেয়েকে নিয়ে খিদিরপুরে মেজ মামিমার বাপের বাড়িতে ওদের রেখে আসবে । কিন্তু হাওড়া স্টেশনে আসতেই সমস্ত ট্যাক্সি বলল লক্ষ টাকা দিলেও ওদিকে যাবে না। দাঙ্গাকারীরা শুধু ওদের নয়, দুধের শিশু, তার মা কাউকেই ছাড়বে না। মেজমামা তখন "আমার মা কিছুতেই ফেরাবেন না" দৃঢ় বিশ্বাসে শ্যামপুকুরে দাদুর বাড়িতে এসে মেয়ে বউকে রেখে গেলেন। নতুন বউ, নতুন নাতনি সবকিছুর আনন্দ খুবই ক্ষণস্থায়ী হলো, কারণ পরদিনই সকালে বাড়ির সামনে দেখা গেল পাড়ার ছেলেরা, যাদেরকে বড়জোর মস্তান বলা যায়, এতদিন পর্যন্ত গুন্ডা বলা যেত না, তারা একটা মুসলমান মজুর কে পিটিয়ে মারছে। বেচারি লুকিয়ে ছিল তিন দিন, পেটের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে খাবার খুঁজতে বেরিয়েছিল। এই বীভৎসতা সহ্য করতে না পেরে দাদু বললেন অন্তত আমার বাড়ির সামনে থেকে সরে যা তোরা।
মরাঠি মডেলে বাঙালি অস্মিতা : ড: সুস্মিতা ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ভাষা | ০৬ আগস্ট ২০২৫ | ১২৩৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
ভাষাবিতর্ক নিয়ে তামিলনাড়ু বাদে আর যে দুটো রাজ্য হেডলাইনে আছে, তারা হল মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু কারণগুলো বিভিন্ন। তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি চাপানোর প্রতিবাদের সাথে সাথে ব্যবসায়ীদেরকে মরাঠি বলতে বাধ্য করা, এই লম্ফঝম্ফ নতুন কিছু না, চক্রাকারে পরিবর্তিত হয়। নতুন যেটা হল, সেটা হচ্ছে বাংলা ভাষা শুনে বাংলাদেশী ছাপ দিয়ে ঠ্যাঙানো এবং সীমানার বাইরে বার করে দেওয়া। মহারাষ্ট্রে উত্তর ভারতীয় ঠ্যাঙানো, নতুন কিছু না। বাঙালি ঠেঙানো টাই নতুন। প্রায় সিকি - শতাব্দ মহারাষ্ট্রে কাটানো এক বঙ্গভাষী হিসেবে বোঝার চেষ্টা করছি এই নতুন উৎপাত কে।
ব্রেনখেকো অ্যামিবার প্রাদুর্ভাব কি পশ্চিমবঙ্গেও? : ডঃ সুস্মিতা ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ০৩ অক্টোবর ২০২৫ | ১২৩ বার পঠিত
এই অ্যামিবাকে জলে, স্থলে, বাতাসে সর্বত্র পাওয়া গেছে। এদের জীবন চক্রে তিনটে রূপ, কিন্তু সব অ্যামিবাকেই তিন রূপের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, তার কোনো মানে নেই। জীবনের বেশিরভাগ সময় তারা মিষ্টি জল এবং সেটা যদি নোংরা জল হয় তো আরো ভালো - সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া , শ্যাওলা ইত্যাদি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীব ধরে ধরে খেয়ে দিব্যি বেঁচে বর্তে থাকে। এদের জীবনকালের এই অংশটাকে trophozoite বলে। দিব্যি বংশ বৃদ্ধিও করে দু ভাগ হয়ে হয়ে, যাকে বলে binary fission, এবং এই পদ্ধতি অযৌন (asexual ) অর্থাৎ মিলন ছাড়াই ঘটে। এদের বেঁচে বর্তে থাকতে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীকে সেই ভাবে প্রয়োজন নেই। এরা গরম ভালোবাসে। উষ্ণপ্রস্রবণেও এদেরকে দেখতে পাওয়া যায়। আর ক্রান্তীয় বা বিষুব অঞ্চলে এদেরকে বেশি পাওয়া যায়।