অফলাইন,অনলাইন, সিলভারলাইন : রঞ্জন সেন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : অর্থনীতি | ০৫ অক্টোবর ২০২০ | ৩২৯৪ বার পঠিত
অনেকে বলবেন, কেন লোকপ্রসার প্রকল্পের সহায়তা আছে, সরকারি রেশন আছে, বাবুদের দেওয়া রিলিফ আছে, সমস্যা কোথায়? সমস্যাটা হল, পেশাগত কাজ বাবদ আয় কখনোই কোন অনুদানের বিকল্প নয়। তার থেকেও বড় কথা হল, এই মানুষগুলি বাঁচেন তাদের শিল্প পরম্পরাকে ঘিরে। সেটাই তাদের আনন্দ, গর্ব এবং জীবন। নিজেদের ভালোবাসার জিনিসটাকে ধরেই তারা জীবিকার রাস্তা গড়তে চান। তা না করতে পারলে হীনমন্যতা আর মানসিক অস্থিরতায় ভোগেন।
আমাদের উন্নয়ন, পরিকল্পনা সবকিছুতেই সংখ্যা একটা বিষয়। কিন্তু যারা দেশ তো বটেই বিদেশের দরবারেও দেশের সাংস্কৃতিক পরম্পরাগুলিকে তুলে ধরছেন; যাদের কাজের সুবাদে ছৌ নাচ ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী পরম্পরার আন্তর্জাতিক তালিকায় স্থান পেয়েছে; পটচিত্রের নাম জানেন সারা পৃথিবীর শিল্প রসিকরা; তারা কী আর একটু গুরুত্ব আশা করতে পারেন না?
জীবন খুঁজে পাবি : রঞ্জন সেন
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১৫ অক্টোবর ২০২০ | ৫৪০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
এবার পুজোয় চলুন তেপান্তর। দেখুন তেপান্তরের দুর্গাপুজো। বাংলার গ্রামীণ দুর্গোৎসবের সাবেক চেহারাটি ফুটে উঠবে আপনার চোখের সামনে। মনে পড়বে বাড়ির বড়দের কাছ থেকে শোনা, পালকি নিয়ে কলাবৌ স্নান, আরতি, ভোগ, অঞ্জলি, সিঁদুর খেলা এবং বিসর্জন মিলিয়ে পুজোর চেনা ছবিটি। মন্ডপ সংলগ্ন মাঠে বাউল-ফকিরি গান, ছৌ নাচের সঙ্গে থাকবে পুরনো দিনের পুজোর সান্ধ্য অনুষ্ঠানের অপরিহার্য অঙ্গ থিয়েটার। ভোগ ছাড়াও অতিথিদের জন্য রয়েছে খাওয়াদাওয়ার এক আন্তরিক আয়োজন। ছড়ানো সবুজ আর নানারকম পাখির ডাক আপনার মন ভালো করে দেবে। অজয় নদের তীরে সাদা বালির প্রান্তর এখন কাশফুলে ঢাকা। কাছেই রয়েছে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সংরক্ষিত ইছাই ঘোষের দেউল। ইতিহাস পাগল মানুষেরা চলে যেতে পারেন সেখানেও। ৪একর জোড়া এলাকায় ছড়ানো ছোট ছোট কটেজে অতিথিদের থাকার চমৎকার ব্যবস্থা। এমনিতে এখানে প্রায় ১০০ জন অতিথি থাকতে পারেন। তবে পুজোর সময় ভিড় এড়াতে এখানে ৬০জন পর্যটকদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দশমীর দিন স্থানীয় আদিবাসীদের দাঁসাই পরব। দেখুন তাদের দাঁসাই নাচ, শহুরে সংস্কৃতি পেরিয়ে এক অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হন। ঘরে ফিরলেও তেপান্তর জেগে থাকবে আপনার অন্তরে।
চালচিত্রের চালচলন : রঞ্জন সেন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ছবিছাব্বা | ১১ অক্টোবর ২০২১ | ৩৫৬০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
পুজোর চালচলন যে বদলাচ্ছে এ আর কোন নতুন কথা নয়। অতিমারি এই বদলানোর পালে বাতাস লাগিয়েছে। তবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক চালচিত্র বদলালেও প্রতিমার পিছনে চালচিত্র এখনও একইরকম। থিম, টিম, স্পনসর, মেন্টরদের ধামাকার সামনে দাঁড়িয়ে সে এখনও আমাদের মনে করিয়ে দেয় বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতিকে। চালচিত্র যেন বাংলার প্রাচীন সামাজিক জীবনের এক রেট্রসপেকটিভ, অতীতের এক ঝাঁকি দর্শন। প্রতিমার পিছনের অর্ধচন্দ্রাকৃতি পরিসরে দাঁড়িয়ে সে বলে অসুর বিনাশের জন্য সমস্ত দৈবশক্তির মহামায়ার রূপ নেওয়ার কাহিনি; দেবীর গার্হস্থ্য জীবন; ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ছাড়াও নানা দেবদেবীর ছবি ও কাজকর্মের চিত্রকল্প। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভাষায়, “ক্রমে দুর্গার গায়ে রঙ উঠিল, রঙ শুকাইল, চালচিত্রে ঘরবাড়ি, সাজসজ্জা ক্রমে যেন ফুটিয়া উঠিতে লাগিল। বোধ হইতে লাগিল মহাদেব যেন সত্যসত্যই ষাঁড়ের উপর বসিয়া বিবাহ করিতে যাইতেছেন।”