ডা: রেড্ডি ও কোভিদ -১৯ ইত্যাদি : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ মে ২০২০ | ৪৬৪৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
অনেক কারণেই ভারত আমেরিকার সঙ্গে তুলনীয় নয়। আমাদের জনসংখ্যার ৬ শতাংশের বয়স ৬৫ র ওপরে, গড় ২৮ শতাংশ ভারতীয়ের বয়স ২৯, জনসংখ্যার ২৮ শতাংশর বয়স ১৪র নীচে। আমেরিকায় মাথাপিছু ১১ হাজার ডলার খরচা হয় স্বাস্থ্য খাতে, আমাদের এখানে ৭৫ ডলার, অতএব ওদের সঙ্গে আমাদের একরাস্তায় হাঁটা বোধহয় অনুচিত হবে।এমনিতেও দক্ষিণ এসিয়ার করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটাও আমাদের জনসংখ্যার অনুপাতে কমই ঠেকছে। সবকটা সার্ক দেশ মিলেও সারা বিশ্বের করোনা আক্রান্তের ১ শতাংশের সামান্য বেশি। করোনা মৃত্যুর নিরিখে প্রায় ০.৫ শতাংশ। এ সব জনসংখ্যায় অল্পবয়সীদের অনুপাত বেশি বলে নাকি আমাদের মারী নিয়ে ঘর করার অভ্যাস থেকে, আমি জানি না।প্রতি ১০ লক্ষে এখনো অবধি দুশোর কিছু বেশি টেস্ট করা হচ্ছে ভারতে। ইউরোপ বা পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে তুলনায় দাঁড়ায় না ব্যাপারটা। জার্মানি তে দশলক্ষ পিছু ১৫৭৩০ জনের টেস্ট হচ্ছে, ইটালিতে ১৪,১১৪, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০৫৬৪।যতই চেঁচাই টেস্টিং ওই পর্যায়ে পৌঁছতে পৌঁছতে রোগের চেয়ে চিকিৎসা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে দেশবাসীর জন্যে।
হস্তী বিষয়ে যৎকিঞ্চিৎ : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ০৬ জুন ২০২০ | ৪৪২৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৫
- খুব তো কেরল কেরল করো, দেখলে তো পনের বছরের প্রেগন্যান্ট হাতিটার কী হাল করল কেরালার লোক গুলো?
- হ্যাঁ, খারাপ লাগলো খুব। কারা যে করলো? কেন যে করলো?
- কারা আবার? মানেকা গান্ধীর স্টেটমেন্ট পড়নি। মাল্লাপুরে! মাইনরিটি এলাকা! কেরালায় বছরে ৬০০ হাতি মারা পড়ে বলেছেন।
- হ্যাঁ দেখলাম, টুইট করেছেন ৩রা জুন। কিন্তু বুঝলাম না কী বলছেন! ভারত সরকার সংসদে ২০১৯ সালে একটা প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন ভারতে গড়ে বছরে ৫৬.৬ টা হাতি মারা যায়। ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো একটা তারিখে দ্য হিন্দু পত্রিকায় বেড়িয়েছিল যে ২০১৮ সালে ৭৫টা হাতি মারা গেছে এলিফেন্ট সেন্সাস অনুযায়ী। ৬০০ র অঙ্কটা ঠিক কোথায় পাওয়া গেল?
বেড এবং খট্টাঙ্গ পুরাণ : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৬ জুলাই ২০২০ | ২৩৯১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট তৈরি করার সময়ে আন্দাজ পেয়েছিলাম এটা সরকারি সদিচ্ছা এবং অর্থ জোগাড় করে ফেললেই তক্ষুনি করে ফেলা যায় না। এমবিবিএস ডিগ্রি থাকলেই যে এটা সামলাতে পারবেন যে-কোনো ডাক্তার এমন নয় ব্যাপারটা। এখানে কাজ করতে হলে পাস করার পর অন্তত বছর দুয়েক ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা চাই তাঁর, বয়স হতে হবে পঞ্চাশের নীচে, কারণ শারীরিক পরিশ্রমও প্রচুর একাজে, সবকটা ইন্দ্রিয় সজাগ রেখে কাজ করতে হয়। প্রয়োজনে রোগীকে অজ্ঞান করে, তাঁর ফুসফুসে টিউব ঢুকিয়ে, ভেন্টিলেট করার দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এই চিকিৎসকের। সামান্য এদিক-ওদিক হলেই প্রাণসংশয় হবে রোগীর। অতএব এ কাজ ডাক্তার মাত্রেই করতে পারবেন, এমন নয়।
অতিমারীকালের নির্বাচন গণনা : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | ভোটবাক্স : বিধানসভা-২০২১ | ৩০ এপ্রিল ২০২১ | ৪৩৯২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
এক একটা কাউন্টিং টেবিলে কতজন কাউন্টিং এজেন্ট থাকবেন তা নির্ভর করবে সেই নির্বাচনী ক্ষেত্রে কতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনটি মুখ্য দল নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথাবার্তা হচ্ছে বলে সর্বত্র কেবল তিনজনই থাকবে এমন নয়। তিন, তের সতেরো, যে কোনো সংখ্যাই হতে পারে। এবং চুপটি করে চেয়ারে বসে ইভিএমের ওপর নজর রাখা সম্ভব হয় না। সামনের সারিতে আসার জন্য ঈষৎ ফ্রেণ্ডলি বা কখনো আনফ্রেণ্ডলি গুঁতোগুঁতি চলতেই থাকে। এখানে সামাজিক দূরত্ব অসম্ভব, তাই কি করে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক সার্টিফিকেট দেবেন যে কোভিড বিধি মেনে ব্যবস্থা হয়েছে সেটাও ভাবার বিষয়।
নীতি আয়োগের নন্দলালেরা : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ১২ জুন ২০২১ | ৩১০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
গত বছরে যে সব সূচক ধরে মাপা হয়েছিল, এ বছরে তার অনেক ক'টিই পরিত্যক্ত হয়েছে। আবার গত বছর রাখা হয়নি এমন কিছু সূচক এ বছরে এসেছে। আমরা আগে দেখতাম দারিদ্র্যরেখার নীচে অবস্থানকারী মানুষজনদের চিহ্নিত করার সূচক কোনো দুটি পর্বে এক থাকতো না। ফলে আগের বছরের গরিব এ বছরেও গরিব কি না তা বোঝার উপায় থাকতো না। কেবল বোঝা যেত এ বছর, ওঁদের মাপকাঠিতে কারা গরিব। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তারা জানাতেন এটা উন্নততর সূচক, অতএব অকারণে প্রশ্ন করো না। পরে দেখেছিলাম অমর্ত্য সেন, জঁ দ্রেজ রাও এই প্রশ্ন তুলেছিলেন।
স্বাস্থ্যের অধিকার: অর্জন ও বঞ্চনা : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ২৮ জুলাই ২০২১ | ৩০০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
মেডিকেল কাউন্সিল প্রায় প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতির ছাপ রেখেছিলেন। ১৯৯৫ সালে এই সংস্থার প্রধান হয়েছিলেন ডাঃ কেতন দেশাই। তাঁর আমলে কলঙ্কের ছাপ আরো গাঢ় হয়ে উঠেছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণের ভারপ্রাপ্ত পার্লামেন্টারি কমিট তাঁদের ৯২তম রিপোর্টে তীব্র নিন্দা করেছিলেন এই সংস্থার রীতিনীতি নিয়ে। রিপোর্টে অনেক বক্তব্যের মধ্যে থেকে উদাহরণস্বরূপ কয়েকটা উল্লেখ করা যায়, ১) ইণ্ডিয়ান মেডিকেল রেজিস্টারটি হালনাগাদ করা হয় না বহুকাল। রেজিস্টারে থাকা অনেকেই মারা গেছেন, অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, খাতায় কলমে তাঁরা সবাই আছেন। ২) রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যাঁরা তারাও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, এবং তাঁদের কারুর কারুর বিরুদ্ধে নিয়মবিরুদ্ধ কাজের অভিযোগ আছে। ৩) অভিযোগ আছে এরকম লোক জন কেবল এম সি আই র সদস্যপদে বসে আছেন তাই নয়, তাঁদের অপসারণের কোনো ক্ষমতাই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের।
পার্লামেন্টারি কমিটি এরকম আরো অনেক কিছুর প্রমাণ পেয়েই সংস্থাটি বিলোপ করার সুপারিশ করেছেন।
শৈলবালা ঘোষজায়া - অসাম্প্রদায়িকতার পাঠ ও পুনরাবিষ্কার : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | পড়াবই : মনে রবে | ২৬ মার্চ ২০২৩ | ৩২৭৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
২রা মার্চ ছিল তাঁর জন্মদিন। ফেসবুকে তাঁর নাম দিয়ে সার্চ করলাম সেই তারিখের কয়েকদিন পরে। কোনো পরিশ্রম ছাড়াই উঠে এল ৩৩ টা ছবি, আর অন্তত গোটা পঞ্চাশেক পোস্ট। ছবি এবং পোস্টগুলোর অনেক ক’টাই একই বা ছবি বা লেখার কপি, কিন্ত প্রকাশিত হয়েছে আলাদা আলাদা ফেসবুক পেজে। অনেকেই জানেন তাঁর বিষয়ে।
গত শতকের নব্বই দশকের প্রথমার্ধেও বাংলা বইয়ের অ্যাভারেজ পাঠককে শৈলবালা ঘোষজায়ার নাম জিজ্ঞেস করলে ভুরু কপালে তুলে বলতেন, ‘ না, পড়েছি বলে মনে পড়ছে না!’
শৈলবালা পুনরাবিষ্কৃত হলেন, কারণ বাবরি মসজিদ ভাঙা পড়ল।
বিহারের উন্নয়নযাত্রা: সংকট, সংস্কার ও সম্ভাবনা : দিলীপ ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : অর্থনীতি | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬৪৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
ফলাফলও ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৯৯২–২০০২ সময়কালে জাতীয় গড়ের তুলনায় ২ শতাংশ কম হারে বাড়ছিল বিহারের অর্থনীতি। কিন্তু ২০০৫ সালের পর তা পাল্টে গিয়ে হয়ে ওঠে ভারতের দ্রুততম বৃদ্ধিপ্রাপ্ত রাজ্য। ২০০৬–০৭ থেকে ২০১১–১২ পর্যন্ত বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩.৫ শতাংশ, যা জাতীয় গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহার বেড়েছে, ২০১১ সালের মধ্যে ৬–১০ বছর বয়সী প্রত্যেক শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, সাক্ষরতার হার বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ, মেয়েদের সাক্ষরতার উন্নতি আরও দ্রুত হয়েছে। ২০০৫–০৬ থেকে ২০১২–১৩ সালের মধ্যে কৃষি খাতে বাজেট বরাদ্দ একশো গুণ বেড়েছে, খাদ্যশস্য উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে এবং উৎপাদনশীলতা রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে। মঙ্গল রায় তাঁর প্রবন্ধে একে বলেছেন রামধনু বিপ্লব (রেইনবো রেভলিউশন)।