কাকে বলে রোগী কেন্দ্রিক চিকিৎসা? ( প্রথম পর্ব) : অরিন্দম বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১২ অক্টোবর ২০১৭ | ১১১৭ বার পঠিত
ঝলসানো চামড়ার ও ফোসকার ড্রেসিং করাতে আমার পরিচিত একটি ক্লিনিকে গেলাম। সেখানে এক অপরিচিতা নার্স আমার চিকিৎসা করলেন। তিনি ড্রেসিং করার সময় থমথমে মুখে কাগজ দেখে মন দিয়ে কাজ করে গেলেন, আমার সঙ্গে একটি কথাও বললেন না। আমার কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিল যে তাঁর সামনে একজন মানুষ বসে আছে, সে মাঝে মাঝে যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠছে, তাকে আমল দেওয়া দূরের কথা, যন্ত্রণা হচ্ছে কি না, একবার জিজ্ঞেসও করলেন না, খস খস করে কাঁচি দিয়ে, এমন ভাবে পোড়া চামড়া কেটে দগদগে কাটা ঘায়ের ওপর মলম আর পটি দিয়ে ড্রেসিং করলেন হাতটা যেন শরীরের বাইরের কোন একটা অংশ, তারপর নিপুণ হাতে পরিপাটি করে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দিলেন। দিয়ে আমাকে মৃদু শাসনের সুরে বললেন, এই ভাল করে ড্রেসিং করে দিলাম, বাইরে বসে একটু জিরিয়ে নিয়ে বাড়ি চলে যান। দেখবেন যেন একটুও জল লাগাবেন না, সাত দিনে সেরে যাবে।
চিকিৎসা শুরু হবার দশ দিনের মাথায় হাতের ঘা সেরে গেল, পটি খোলা হল। আমি সুস্থ হলাম। আমার চিকিৎসা যে চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্টরা, নার্স-রা করেছেন তাঁরা সকলে অভিজ্ঞ ও দক্ষ, তাঁদের পেশাগত নৈপুণ্য প্রশ্নাতীত, ক্লিনিকটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, তাতে প্রায় যত রকমের আধুনিক ব্যবস্থা থাকা প্রত্যাশিত সব ছিল। আমার দেশ, নিউজিল্যাণ্ডে, সরকার দেশের মানুষের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন, তাই আমার চিকিৎসার মোট খরচ নামমাত্র, এবং আমি যথাসময়ে কোন রকম গোলমাল ছাড়াই পুরোপুরি ভাল হয়েও গেছি ।
দৌড় : অরিন্দম বসু
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : নববর্ষ | ১৬ এপ্রিল ২০২১ | ২০৮৪ বার পঠিত
সইদুল তার ঘোড়াদের নিয়ে চলে যেতে যেতে একবার তাকাল ধ্রুবর দিকে। তারপর বলল, ‘আল্লার বল আর ভগমানেরই বল, দুনিয়া তো একটাই। কত জমি কেড়ে নেবে আমাদের কাছ থে? জমি থাকবে, মাঠও থাকবে। দৌড়ও থাকবে। দৌড় চললি তোর সাথে আমার মেলামেশাও চলবে। আমরা নড়বড়ে না হলিই হল।’
ঘোড়াগুলো যে পথে দৌড়ে আসবে তার দু’ধারে এখন ঘেঁষাঘেষি লোক। দূরে কলাগাছের সারির গায়ে গায়ে মানুষও সার দিয়ে দাঁড়িয়ে। পুকুরপাড়ের উঁচু জমিতে জায়গা করে নিয়েছে অনেকে। যারা পেরেছে তারা চড়ে বসেছে আশপাশের গাছের মাথায়। দু-একটা পাকা বাড়ির ছাদেও উঠেছে। কাগজের ভেঁপু পোঁ পোঁ করে বাজছে নাগাড়ে।
উত্তর দিকে, মাঠের শেষমাথায় দুটো বাঁশ দূরে দূরে খাড়া করে রাখা। তাদের মাঝখানের দড়িতে খিরীশ গাছের ছোট ছোট ভাঙা ডাল ঝোলানো পরপর। ওখানে পৌঁছতে পারলেই দৌড় শেষ। ধ্রুব সেই জায়গা থেকে বেশ কিছুটা দূরে ভিড়ের গায়ে দাঁড়িয়ে ছিল। বউ, ছেলে-মেয়ে মাঠের উল্টোদিকে।
দক্ষিণ দিক থেকে হইহই উঠল। দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই আওয়াজের ঢেউ ভেসে আসছে এদিকেও। ওই দেখা যাচ্ছে ঘোড়াদের। কেশর উড়ছে হাওয়ায়। খুরের দাপটে উড়ছে সাদা ধুলো আর কালো ছাই। ছিটকে যাচ্ছে ঘাস-পাতা-খড়ের কুচি। ধ্রুবর সামনে দিয়ে চলে গেল কয়েকটা ঘোড়া। তাদের চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসছে যেন। নাকের পাটা ফুলে উঠেছে। ধ্রুব দেখতে পেল সইদুলের মাদি ঘোড়াটা ছুটতে ছুটতে আসছে। তার থেকে অনেক দূরে বাচ্চাটা। এই যাঃ, পাগলি তো দাঁড়িয়ে পড়ল। আরে, সে তো উল্টোবাগে চলেছে। হলটা কী?
কোভিড টিকা- কিছু বহুল-প্রচারিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও তার বিরুদ্ধে যুক্তি : ডঃ জ্যোতিষ্ক দত্ত , ডাঃ অরিন্দম বসু, ডঃ অভিজিত চক্রবর্তী ও ডঃ ঈপ্সিতা পালভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ০৪ জুন ২০২১ | ১০৮৮০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৬
গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনাভাইরাসের অতিমারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করেছে, জীবনের নানান দিক আর আগের মতন নেই | প্রাণঘাতী এই বিশ্বব্যাপী অতিমারী না হয় একরকম, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরেকটি অতিমারী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, সেটি তথ্যবিভ্রান্তির অতিমারী। বিশেষ করে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের টিকা, এবং টিকা দেওয়া-নেওয়া নিয়ে নানান রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য চোখে পড়ছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি নিয়ে এই আলোচনা। প্রতিটি “ভ্রান্ত ধারণা” (“মিথ”) আমরা প্রথমে উল্লেখ করে তারপর সেটিকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি।