একটা বড় কাজ শেষ করলাম ডকুফিকশন আলমগীর। ওটাকে ধরে প্রচুর ব্লগ লিখেছি আর সেসব নিয়ে দুটো বিষয় ভিত্তিক বই - মনোগ্রাম বেরিয়েছে গঙ্গা যামুনি তেহজিব - হিন্দুস্থানের মিশ্র সংস্কৃতি ২০২৩ এ আর মোঘলকথা ২০২৫। এসব করার আমি কে? আমি কি ইতিহাসের পণ্ডিত? তবে আমি কেন করলাম? আনন্দের বিষয় এসব নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে না আজকাল। হিন্দুত্বের রমরমার যুগে পপুলার হিস্ট্রি সম্পৃক্ত যুক্তিবাদী পলিটিক্যাল ন্যারেটিভকে গ্রহণ করার লোকের অভাব নেই। তাই ওই দুটো বই জনপ্রিয় হয়েছে আরো হবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। বাঙালি ভদ্দরলোক জন্ম বদ আর ইংরেজ দেখলে ল্যালা করলেও ব্ল্যাকশিপদেরও বাজার আছে অতএব আমারো ... ...
আধুনিক জাতি রাষ্ট্রের ধারণা মোঘল আর মারাঠা বা অন্যদের ওপর আরোপ করে একটা বাইনারি তৈরি করা হচ্ছে। দুঃখের বিষয় এটা আলোচনাতেই আসে না যে সেসময়টায় জাতি রাষ্ট্রের ধারণাই ছিল না। এই যে এতবড় মোঘল স্টেটের ম্যাপ দেখানো হয় সেটা ব্রিটিশদের আঁকা। তখন ম্যাপের ধারণাই ছিল না। ফিরিঙ্গীরা এই স্পেসিয়াল ইমেজিংয়ের বা কার্টোগ্রাফিক ম্যাপের ধারণা নিয়ে আসে। ঔরঙ্গজেবের না ছিল ম্যাপের ধারণা, না ছিল এখনকার মতো সেন্ট্রালাইজড আর্মি। সঞ্জয় সুব্রামনিয়ম মোঘল স্টেটকে বলেছেন এ্যালায়েন্স স্টেট। ফারহাত হাসান বলছেন শেয়ারড বেসিস অফ সভরিনিটি। মোঘল যুগে এমনকি সেন্ট্রালাইজড ট্যাক্সও ছিল না। স্থানীয় রাজারা মোঘলদের জন্য ট্যাক্স তুলত আর সে করতে গিয়ে নিজেরা ঝাড়ত ... ...
আমার ওতো জানার সুযোগ নেই কেমনে একাদেমি দেয়। ওসব ভদ্দরলোকী খবর জানার ইচ্ছেও নেই। এই পরিস্থিতিতে চাড্ডি ষড়যন্ত্রের থেকে অন্য কিছু প্রাসঙ্গিকও নয়। ভদ্দরলোক অবশ্য সেটা মনে করে না। সে আগে সাহেবের গুখোরি করত। মাঝে কংগ্রেস আর এখন চাড্ডির গোমস্তাগিরি করতে করতে কী ভাবে? সে কী ভাবে আমি বেঁচে যাব? একাদেমি পুরষ্কার না দিয়ে বাংলা ভাষাকে হতচ্ছেদ্দা করল চাড্ডি প্রশাসন। এটা কতজন ভদ্দরলোক বিবি ও বাবু কলমচী মনে করেন জানতে মন চায়। করলে চাড্ডি সম্পৃক্ত সরকারী ও কর্পোরেট পুরষ্কার বয়কট/প্রত্যাখ্যান করুন। চিরকেলে হাত কচলানর কায়দা আর চলবে না। ... ...
আপনে আপ মে মস্ত দারা শুকোহ, শাহেনশাহের পছন্দের। অতীন্দ্রিয় মহিমায়, পবিত্র স্বর্গীয় আশীর্বাদপুষ্ট সার্বভৌমত্বের - সেক্রেড সভরিনিটির ইমেজে আবদ্ধ বুদ্ধিজীবী, ফলে তাঁর নাকও একটু বেশি রকমের উঁচু হয়ে আকাশে ছুঁইছুঁই। তিনি নিজের পছন্দের কথা গোপনও করেন না ফলে অপছন্দের লোকেরা সংখ্যায় বেড়েই চলে। কিন্তু যুদ্ধ হয় মাঠে, স্বর্গ থেকে বড্ড জোর আশীর্বাদ আসতে পারে। সে যুদ্ধের, সেই মাঠের কী হবে? সেখানে শাহাজাদা সুলতান ঔরঙ্গজেব বাহাদুর ঘোড়ার পিঠে হাতির পিঠে চড়ে কখন ও আক্রমণে যাচ্ছেন কখন ও পেছিয়ে আসার শিক্ষে হচ্ছে তাঁর। প্রধান সেপাইসালার আলি মার্দান খান সাহেবের কাছে নিজে যাচ্ছেন। আরও যাচ্ছেন পাঁচ হাজারি সব বড় বড় মনসবদার সাদাউল্লাহ খান ... ...
তুকারামের আভাঙে ব্রাহ্মণদের মোঘল আর বিজাপুর কোর্টের পেয়ারের লোক বলে গাল পাড়া আছে। সেটা শাজাহানের সময়। আর জাহাঙ্গীর তো হাবশি সহ মারাঠাদের প্ৰতি জাতি বিদ্বেষী ছিলেন। বরং আলমগীর নিজে ছোটবেলা থেকে শাজাহানের হয়ে মারাঠা সঙ্গ বা হাবশি সঙ্গ করেছেন। তাঁর মহলের গুরুদায়িত্বে ছিলেন জনৈক আহমদনগরের হাবশি জেনারেল যাঁকে হাবশ খান উপাধি দেওয়া হয়। এটা জাহাঙ্গীরের আমলে অকল্পনীয় ছিল। দারা সুজার সংগে লড়াইতে ... ...
কাল আনন্দবাজারে শম্ভাজিকে নিয়ে লেখাটা আমার ভালো লাগেনি। শিবাজি যে সামাজিক পরিস্থিতির ফসল তার কোন প্রতিফলন নেই। আর শম্ভাজিকে নিয়ে একান্ত ভাবে মারাঠা ব্রাহ্মণ ন্যারেটিভ নির্ভর। ওই ন্যারেটিভের সম্পূর্ণ বিপরীত একাধিক জনপ্রিয় নিম্নবর্ণের ন্যারেটিভ আছে । শিবাজির আদর্শায়িত প্রতিরূপ সর্বজনমান্য কিন্তু শম্ভাজিকে নিয়ে বিতর্ক আর তাঁর খ্রিস্টসুলভ রেসারেকশন এই দুই বিপরীত ন্যারেটিভের ফসল। মাহার-দলিত বা ওবিসি ন্যারেটিভ বলে তাদের স্ব স্ব প্রতিনিধিরা ব্রাক্ষ্মণ ষড়যন্ত্রে ধরা পড়া ও টুকরো করে কাটা শম্ভাজির দেহটাকে জুড়ে দাহ করেছিল। আসলি দাবীদার কে সে নিয়ে মাহার আর শিভালে পাতিলদের মধ্য দাঙ্গা ... ...
সারা দেশে হলে হলে রমরম করে শম্ভাজি মহারাজের জীবনাশ্রিত এক উপন্যাস নিয়ে ছাভা নামের এক সিনেমা চলছে। সে সিনেমায় যথারীতি ঔরঙ্গজেবকে ভিলেন বানিয়ে শম্ভাজি মহারাজকে মেলেচ্ছো শাসনের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী আইকন করে তোলা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের একাংশ আবার যদুনাথ সরকারকে সামনে এনে বাংলায় বর্গী হানার জন্য শম্ভাজিকে জড়িয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচার করছেন। যদুনাথ সরকারের লজিকে ইতিহাসকে দেখার দিন চলে গেছে। ওনাকে ঠিক আধুনিক ইতিহাস শাস্ত্রী মনেই করা হয়না। শিবাজি আর শম্ভাজি মহারাজের যেসব তফাৎ উনি করেছেন তা গুলগাপ্পা। যেমন শিবাজি লুটমার করতেন না আর শম্ভাজি করতেন। শিবাজির মারাঠা ফৌজের কায়দা কানুন আলাদা ছিল। শিবাজি মদ খেতেন না। শম্ভাজি খেতেন। ... ...
নব্বইতে রবিশঙ্কর আর নবারুণ টাইম স্পেসকে নিয়ে নানা রকম করে খেলিয়ে ছিলেন। কিন্তু আমার একটা সন্দেহ আছে, ওনারা বেশি করে স্পেস নির্ভর হয়ে পড়েননি তো? রবিশঙ্কর একটু বেশি ডিলিরিয়াস আর নবারুণের ফাজলামি সময়কে ছাপায় না তো? আজকাল মনে হচ্ছে মহাশ্বেতার রাস্তাই ঠিক। ওই খরখরে একটা গদ্য যার ফাঁক দিয়ে উপনিবেশ উত্তর ইতিহাস আর নিম্নবর্গের বারোমাস্যা। অবশ্য বেশি নিম্নবর্গ করতে গিয়ে এলিট ডিসকোর্স একটু নজর এড়িয়েছে ফলে হিন্দুত্বের সংস্কৃত জ্ঞান পদ্ধতি নির্ভর আক্রমণের মহড়া নেওয়া কঠিন। আসলে আমাদের এলিট চর্চাও যথেষ্ট মিশ্র তেহজিবের ফসল, সংস্কৃত আর ফার্সি জ্ঞান পদ্ধতি মিলেমিশে আছে গঙ্গা যামুনি তেহজিবে। তা হলে কি সতীনাথই ঠিক ... ...
সতেরোশো সালের তেসরা মার্চ সিংহগড়ে মারা গেলেন ছত্রপতি রাজারাম, অকালে। শেষ ছত্রপতি তিনিই। সেই মুহূর্তে তাঁর যোগ্য উত্তরাধিকারী কেউ নেই। আবার আলমগীর কি আবার প্রত্যাঘাত করবেন নিজস্ব ভঙ্গিমায় ? আবার কি রাতের পর রাত গভীর সব চিন্তা মন্থন করে ফৌজ সাজানো আর আঁতাতের নয়া নয়া কৌশল সব আবিষ্কার করে ফেলবেন বাদশাহ ? তাঁর জেদ আছে বটে আগের মতোই কিন্তু সে তাগদ কই ? বয়েস ... ...
আবু সৈয়দ আয়ুবের একটা বই ছাড়া বাংলায় খোদা এ শাকুন - কবিতার ভগবান মীর টাকি মীরের ওপর বই আছে কি ? আলমগীর লিখতে গিয়ে এখান থেকে ওখান থেকে ঝাড়ার নেশা পেয়ে বসেছে। বই কিনে পিডিএফ ছাপিয়ে অনলাইনে খামচাখামচি করে সব মাল মশলা জোগাড় করছি। আনাড়ি অনুবাদও আছে বেশ কিছু - উরফি সিরাজি/সন্ত তুকারাম/ মুরাদের সভাকবি বিহিস্তি/ শাহাজাদা দারা শুকোহ/ ঔরঙ্গজেবের চিঠি আর এই মীরের কবিতাংশ। শেষেরটা এই নীচের বই থেকে ঝাড়া মীরের ইংরেজি ... ...