এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জল জঙ্গল you-টিউব (১)

    upal mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৯ মে ২০২৫ | ৩০২ বার পঠিত
  • ইয়ুথ উইংস চ্যানেলে বস্তারের স্বাধীন ইউটিউবার বিকাশ (রাণু) তেওয়ারির সাক্ষাৎকার

    রাণু তেওয়ারি - যা মনে আসে বলতে পারব?
    সঞ্চালিকা - একদম।

    সাক্ষাৎকার শুরু

    সঞ্চালিকা - নমস্কার, জয় জোহার এন্ড ভেরি গুড মর্নিং টু অল অফ ইউ। আপনারা জানেন ইয়ুথ উইংস এখন বস্তারে, এখানে আমরা নকশালদের ব্যাপারে খবর করছি আর এখানের জীবনশৈলীর খবরও করছি মানে লোকে কেমন আছে আরকি। আজ আমরা তার থেকেও জমাটি কিছু আপনাদের জানাবো। আপনারা জানেন, আমরা দেশের নামজাদা সাংবাদিকদের নিয়েও এক অনুষ্ঠান করি। এইরকমই একজন যাঁর সামনে নিজেদের খুবই ছোট মনে হয়, হ্যাঁ রাণু ভাইয়া, আমরা সব সাংবাদিক যাঁকে ভালোবেসে রাণু ভাইয়া বলি, যাঁর করা খবরে দেশে শুধু নয় বিদেশেও বাওয়াল হয়ে যায়, যিনি বলতে থাকেন বস্তার শুধু নকশালদের জন্য বিখ্যাত নয়, তার অপার সৌন্দর্যও যে কারও মন টানবে। রাণু ভাইয়া আপনাকে স্বাগত।

    রাণু তেওয়ারি - ধন্যবাদ, এতো মহান কিছু লোক নই যে এতো বড় ভূমিকা করতে হবে। এখন তো এতো বড় ভূমিকা শুনে নিজেকে কেউকেটাই মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ।

    সঞ্চালিকা - ওনার করা খবরগুলো আমরা বস্তার টকিজ চ্যানেলে দেখি। এছাড়া বড় বড় চ্যানেল বস্তারের ব্যাপারে ওনার মতামতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ভাইয়া, আপনার যাত্রা শুরু নিয়ে কিছু বলুন।

    রাণু তেওয়ারি - কিসের যাত্রা? সাংবাদিকতার নাকি ……

    সঞ্চালিকা - ধরুন, সাংবাদিকতার।

    রাণু তেওয়ারি - একদম সত্যিটাই বলি, জীবনে এটাসেটা অনেক কিছু করেছি দু আড়াই বছর ট্রাকও চালালাম - ড্রাইভারি। সব কাজে ধেড়িয়ে। আড়াই বছর কাঠ বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আপনি জানেন সাংবাদিকতায় পরিচিত মুখ প্রসাদজি, আমাকে তিনিই নিয়ে এলেন এই লাইনে। প্রথমে আমার ধারণা ছিল আরটিআই করব, টাকা কামাবো, আরামে কাটবে - কোন ইনভেস্টমেন্ট নেই। অনেককে দেখেওছিলাম আরটিআই করে, অফিসারদের থেকে টাকা নিয়ে আরামে জীবন কাটাচ্ছে। সাংবাদিকতায় পয়সা আসে এসবে। শুরুর পরপরই ধীরে ধীরে একটা জিনিস বুঝতে আরম্ভ করি, কালকেও আপনাকে বলছিলাম না, যে লোকে সাংবাদিকের ওপর খুব ভরসা করে। প্রথমেই লোকে সাংবাদিকের কাছে আসে বলে, "ভাইয়া, থানায় লিখছে না। ভাইয়া, রেশন কার্ড হচ্ছে না, ভাইয়া এ কাজ হচ্ছে না সে কাজ হচ্ছে না - আপনি একটু বের করুন না খবরে।" মামলার ব্যাপারে কোন খবর ছাপা হলে তারও একটা প্রভাব পড়ে কোর্টে। কোনটা ঠিক ভুল - তাতে ন্যায়বিচার পেতে পারে। লোকে খুব ভরসা করে এটা আমি ধীরে ধীরে ধীরে বুঝতে পারি। লোকে বলে, ‘আপনার পেশা কী? না, আমি ব্যবসা করি, আপনি? আমি সাংবাদিক।' অনেক পরে আমি বুঝতে পারলাম, সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয় সাধনাও বটে। আপনি অন্যের জন্য করছেন। এটা কবে থেকে বুঝতে পারলাম বলতে পারব না। আমি সৎভাবে বলছি কিনা তার গ্যারান্টি দিতে যাচ্ছি না কিন্তু চেষ্টা করছি লোকের এই যে প্রত্যাশা - তা পূরণ করতে। ২০১৪তে অনেকটা কাকতালীয়ভাবে সাংবাদিকতায় আসার পর টাকাপয়সা নিয়ে টিয়ে (উনি বলছেন উসুলিবাজি) অনেকদিন চলেছে - ধীরে ধীরে মন দিয়ে কাজ করা শুরু করি - লোকের প্রত্যাশাপূরণের কাজ। এই করতে করতে - সাংবাদিকতা আপনি কোথায় করবেন – কোনো একটা চ্যানেলে তো - আমিও করছিলাম। কিন্তু প্রত্যেক চ্যানেলেরই বাধ্যতা আছে, নিজস্ব লোচা আছে, অনেক জায়গায় চাকরি করলাম। এইভাবে এনএমডিসির (ন্যাশনাল মিনারেলস ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন) খবর করছি - কত ভালোভাবে সব চলছে তার খবর। গ্রামের লোক বলে, ’কী সব বলান আমাদের দিয়ে স্যার, সব ঠিক আছে টাছে! কোথায় ঠিক!’ বলি, 'ভাই! কী করি! চাকরির দায়!' একদিন রাতে কী খেয়াল হলো, আমার এক সিনিয়র আছেন, সতীন স্যার, ওনাকে ফোন করলাম, বললাম, "ভাবছি চাকরি ছেড়ে দেব"। উনি বললেন, 'কেন?' আমি বললাম, 'লোকে নামের জন্য, পয়সার জন্য চাকরি করে। চাপ দিয়ে টাকা পয়সা তুলছি না - পয়সাও হচ্ছে না আর এসব বানানো গল্প লিখতে হচ্ছে - নাম হচ্ছে না।' উনি বললেন, 'নিজের মতো কিছু করতে চাও তো ইউটিউব চ্যানেল বানাও, তাতে যা ইচ্ছে দেখাও।' বানিয়ে ফেললাম এক চ্যানেল - বিকাশ তেওয়ারি নাম দিয়ে। তাতে একটা দুটো স্টোরি করেছি, একদিন শ্রদ্ধেয় সৌরভজি ফোন করলেন, লাল্লনটপের সৌরভ দ্বিবেদীজি, বললেন, 'একটা কথা বলো, বিকাশ তেওয়ারি এতো কেউকেটা কেউ কি যে লোকে নাম ধরে গুগুল করবে?' আমি বললাম, 'মোটেই নয়।' উনি বললেন, 'কেউকেটা যদি নাই হও তবে চ্যানেলের নাম বদলাও।' আমি বলি, 'একটা নাম ঠিক করে দিন না।' উনি বলেন, 'বস্তার টকিজ রাখো। আমি বললাম, 'ঠিক আছে।' তখন উনি বললাম, 'ভেবে দেখ।‘ আমি বলি, 'ভাবার কিছু নেই, ওটাই ঠিক আছে। 'ওই সময় থেকে একতিরিশে জানুয়ারি দুহাজার একুশে বস্তার টকিজের যাত্রা শুরু হলো।

    সঞ্চালিকা - আর তবে থেকে বস্তার টকিজ শুধু বস্তারের সমস্যা নিয়ে নয়, হসদেওর (উত্তর ছত্তিসগড়ের হসদেও জঙ্গলে কয়লা খনির বিরুদ্ধে আন্দোলন) মতো জ্বলন্ত সমস্যাকেও সামনে নিয়ে আসছে, নিরপেক্ষভাবে বলে চলেছে জ্বলন্ত সব সমস্যা নিয়ে। এমন দাঁড়িয়েছে যে বাইরে থেকে যদি বস্তারের সমস্যাকে বুঝতে চান তবে এই প্ল্যাটফর্মই ভরসা। ভাইয়া, এতো গেল শুরুর কথা, সবাই বলে এই যে বস্তার মানেই ভয়ঙ্কর নকশালদের এলাকা কিন্তু আপনি বলেন বস্তারকে ভয়ঙ্কর নকশালদের এলাকা বানিয়েছি তো আমরাই .......

    রাণু তেওয়ারি - ঠিক কথা।

    সঞ্চালিকা - বানিয়েছি এই সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত লোকেরাই, এইভাবে ছবিটা তুলে ধরা হয়েছে।

    রাণু তেওয়ারি - নানা, দেখুন ব্যাপারটা হলো কী, সবচেয়ে বড় কথা হলো কী এই যে ভয়ঙ্কর মাওবাদী এলাকার কথা - সেটা যা আছে তাতো আছেই, সে এলাকায় কোন ঘটনা যদি ঘটে তবে যা ঘটেছে তার খবর তো আপনি করবেনই, কিন্তু ব্যাপারটা এরকম নয় যে আমরা বস্তারের সাংবাদিকরা সব জীবন বাজি রেখে খবর করে ফাটিয়ে দিচ্ছি। কাকতালীয় ভাবে অনেক কিছু ঘটতে পারে যে কোন এলাকায়, যা কিছু হোক ঘটতে পারে, কিছুদিন আগে আমি ইন্দ্রাবতী টাইগার রিজার্ভের ভেতরে একটা গ্রাউন্ড রিপোর্ট করতে গিয়েছিলাম, একটা গাছের পাশ দিয়ে যাবার তিন সেকেন্ডের মধ্যেই আগুনে জ্বলসে যাওয়া গোটা গাছটাই ধমাস করে পড়ে গেল। রিপোর্ট করতে করতে আমি দেখাতে থাকি - দেখুন তিন সেকেন্ড আগেই গাছটা পার হয়েছি, এই ওটা পড়ে যাচ্ছে। এটা শেয়ার করার সময় আমি বলতে থাকি দেখুন কাকতালীয়ভাবেই ঘটনাটা ঘটেছে জীবন বাজি রেখে কিছু করিনি আমি। লোকে বলে - ধরো আইইডি (ইন্ডিজেনাস এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বোমে পা পড়ে গেল, আমি বলি - মানছি আইইডি বোমে পা পড়ে যেতে পারে, শহরে বাইক নিয়ে ঘর থেকে বেরোলেন হতে পারে একটা গাড়ি এসে ধাক্কা মেরে দিলো - সেটাও একই রকম বিপজ্জনক। যে রকম কাকতালীয় ভাবে আপনি শহরে মরে যেতে পারেন সেরকমই। শহরে আপনাকে প্ল্যান করে মেরে দিতে পারে, এই তো ইউপিতে মেরে দিলো। সবচেয়ে ঝুঁকি রয়েছে ইউপি আর বিহারের সাংবাদিকদের। আপনি যদি বেআইনি বন্দুকের কারবারীদের বিরুদ্ধে লেখেন, এরকম হতেই পারে আপনাকে ওই বন্দুকের গুলিতেই মেরে দিলো।কিন্তু এখানে ওসব হয় না। এখানে লোকে ভাবে মাওবাদীরা ওরকম বিপজ্জনক কিন্তু ওরা সাংবাদিকদের পক্ষে বিপজ্জনক নয়। কেউ ভাবতে পারে মাওবাদীরা আমাকে তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দিয়েছে বলে বলছি, কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। খোলা মন নিয়ে যদি জঙ্গলে ঢোকেন, বেশি চালবাজি না দেখিয়ে, আসলে মাওবাদীদেরও সাংবাদিকদের দরকার। ওদের তো নিজেদের কথা শোনাতে হবে, আদিবাসীদেরও তাদের কথা শোনাতে হবে - সেই সাংবাদিকদের মাধ্যমেই শোনাতে হবে। তাই আপনার জীবনের ভয় নেই। এখন কাকতালীয়ভাবে যদি আই ই ডি বোমে পা পড়ে যায় তবে হই হে সই জো রাম রচি রাখা - সকলই রামের ইচ্ছে।

    সঞ্চালিকা - একদম। কথা বলতে বলতে আমি আপনার কাছে আরো জানতে চাইব যে আমরাই তো জীবনসংশয় হতে পারে বলে বিখ্যাত করেছি ......

    রাণু তেওয়ারি - অনবরত বলে বলে।

    সঞ্চালিকা - হ্যাঁ বলে বলে। কতখানি সুরক্ষিত বস্তার? আপনার চোখে? আপনি বস্তার সম্পর্কে যখন ব্যাখ্যা দেন - বস্তার সম্পর্কে আপনার মনের কথা কি?

    রাণু তেওয়ারি - আমার মনের কোণে যে বস্তার তা এক আলাদা জগৎ, অপূর্ব এক জগৎ। সুরক্ষার কথা যদি বলেন তবে বলব - বলতে গেলেই গল্প চলে আসে ......

    সঞ্চালিকা - ঠিকই তো।

    রাণু তেওয়ারি - সেদিন একজনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সে বলছিল, 'ভাইয়া, যবে বস্তারে নক্সালবাদ শেষ হয়ে যাবে না, লাল আতঙ্ক, বস্তার শান্ত হয়ে যাবে।' আমি বললাম, 'শান্তির পরিভাষা কি? শান্ত হয়ে যাবে বলে কী বোঝাতে চাইছ? তোমার বাড়ি কোথায়?' সে বলল, 'রায়পুর', বললাম, 'কাল কথা হবে'। পরের দিন আমি কিছু পরিসংখ্যান জোগাড় করলাম, রাজধানী রায়পুরের অপরাধের পরিসংখ্যান দু হাজার চার থেকে দু হাজার একুশ অবধি আর সুখমার পরিসংখ্যানও পেলাম, সেখানে তখন টিকলগুড়াম ঘটনায় বাইশজন জওয়ান শহীদ হয়েছে - লাল আতঙ্কের বড় ঘটনা সেই মাসেই হয়েছিল। এই দু জেলায় জনঘনত্ব আলাদা আবার অপরাধের ধরণ আর মাত্রায় বিস্তর ফারাক। সুকমায় সব থেকে বড় টিকলগুড়াম আক্রমণের ঘটনায় বাইশজন জওয়ান শহীদ হচ্ছে, এছাড়া সেখানে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি যা রায়পুরে হরদম হয়। ওই টিকলগুড়াম এলাকার কথাই ধরেন সেখানে নারী নিপীড়ণের ঘটনা - ধর্ষণের ঘটনা নেই, সাইবার ক্রাইম নেই, ছিনতাই নেই, লুটমার নেই, ঠগ - ডাকাতি নেই যা সব কিছুই রায়পুরে হয়। সেটা তো সবচেয়ে উন্নত জেলা, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস সেখানে, ডিজির অফিস সেখানে। আমি বলব টিকলগুড়ামের মতো এমন অনেক দূরের গ্রাম আছে সেখানে একজন যুবতী হাতে লণ্ঠন নিয়ে রাতে হেঁটে পুরো গ্রাম ঘুরে নিশ্চিন্তে ফিরতে পারে। একবার তার মনেও আসবে না কোন ভয়ের কথাই। আজকের দিনে রায়পুরের অন্ধকার কোন গলিতে একটা মেয়ে বেরিয়ে দেখুক - ছ বছরের বাচ্চাকে পর্যন্ত ধর্ষণ করে দিচ্ছে। তাই সুরক্ষিত এলাকা কোনটা? রায়পুর না পুরভাতি - হিডমার (মাওবাদী কম্যান্ডার মাধভি হিডমার কথা বলছেন) গ্রাম? হ্যাঁ, এটা ঘটনা যে মাওবাদীদের জন্য বস্তারের একটা আতঙ্কবাদী পরিচিতি হয়ে গেছে, ওদের সমর্থনে বলছি না। সেটা বাদে বস্তারের যে পরিবেশ তা খুবই শান্তিপ্রিয়। এটা অশান্ত করছে কিছু অতি চালাক, যাদের নিজের নিজের ধান্দা আছে, সে জন্য বস্তারকে নিয়ে যে যা পারছে বলে যাচ্ছে।

    সঞ্চালিকা - আচ্ছা একটা কথা যা নিয়ে লোকে আজকাল আলোচনা করছে সেটায় আসি - পানডুম হয়ে গেছে? বস্তারের পানডুম হয়ে গেছে, এখন শুধু খাওয়া বাকি।

    রাণু তেওয়ারি - হ্যাঁ, কথাটা সবার আগে আমার মনেই এসেছিল, এখানে বীজ পানডুম পালন করা হয়। বীজ পানডুম উৎসব বলতে বোঝায় যে যখন কোন নতুন বীজ - ফলের সময় আসে, খাওয়ার আগে একটা মূলবাসী সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া চলে পূজা পাঠের। সবার আগে দেবতাকে অর্পণ করে তবেই সেসব খাওয়া হয় - একেই পানডুম বলে। সেরকমই এখন বস্তার পান ডুম চলছে, আমার মনে এলো বস্তারের পানডুম? বস্তারকে খাওয়ার আগে পানডুমের সময় চলছে। দেখুন মাওবাদকে খতম - মানে যে কেউ বারবারই একথা বলবে - আমি জানি লোকে কমেন্ট দেবে - এ লোকটা মাওবাদী সমর্থক যা আমি নই মোটেই। আমি আড়াই - তিন ঘন্টা অপেক্ষা করি ভোট দিতে - আমি গণতন্ত্রের পক্ষে আর মাওবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। সেসব সত্ত্বেও আমি অন্য একটা দৃষ্টিতে দেখছি - এখন চারটে খনি আছে, পঞ্চাশ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে আরো খনি হবে, আরো অনেক কিছু শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ম্যানুভার রেঞ্জের (সেনার প্রশিক্ষণের আর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সমতুল্য টেরেনে মহড়ার জন্য কনফ্লিক্ট জোনে - সংঘর্ষের এলাকায় কৌশলগত বিশাল এলাকা) কথা - যদিও আমার কাছে এর সপক্ষে প্রমাণ কিছু নেই। এসব কিছুই বস্তারের মূলবাসী জীবনে খারাপ প্রভাব তো ফেলবেই। মাওবাদী নিয়ে যদি এতোই সমস্যা, দুহাজার চোদ্দতেই এসব করা হলো না কেন? আমি যখন এ কথা বলছিলাম কেউ একজন বললো - তখন তো রাজনাথ সিং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন, কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন তাতে কী এসে যায়, বিজেপিই ক্ষমতায় ছিল। চোদ্দতে কেন্দ্রে আর রাজ্যে দু জায়গাতেই বিজেপি ছিল - রমন সিংজি। ওঁদের ইচ্ছেশক্তিতে এসব হলো না কেন যা এখনকার ইচ্ছেশক্তিতে হচ্ছে। অন্য কিছু কারণ আছে। সেসব এখনই বলাটা আগে বলা হবে, বললেও কিছু এসে যাবে না কারণ কিছু বদলাবে না, কারণ এক্ষেত্রেও হই হে সই জো রাম রচি রাখা - রামের ইচ্ছেতেই হবে। আমার তো মনে হয় রাম চাইছেন খনি হোক কারণ রামের পার্টিই তো আছে। এজন্য পানডুম চলছে, বস্তারকে খাওয়ার তোড়জোড় চলছে - বীজ পানডুমের পর বস্তার পানডুম।

    সঞ্চালিকা - তো বস্তারকে খাওয়ার তোড়জোড় চলছে। আপনারা জানেন বস্তার শুধু অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাওবাদীদের জন্য শুধু নয় তার বিশাল খনিজ সম্পদের জন্যও বিখ্যাত। নানা ভাবে উত্তোলন করা যায় একরকম সব খনিজ সম্পদ বস্তারে আছে বিপুল পরিমানে। ওই কারণেই জল জঙ্গল জমিনের অধিকারের কথা এখানে ওঠে। সে নিয়ে লাগাতার তর্ক বিতর্কও চলছে। মানবাধিকার কমিশনও এসেছিল, নানা মতবাদের লোক বস্তারকে নিয়ে আলোচনায় লিপ্ত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • MP | 223.19.***.*** | ২৯ মে ২০২৫ ১৯:৫০731745
  • @ উপল , খুব পরিশ্রম করে কাজ করেছেন l অনেক ধন্যবাদ l বস্তারের ঘটনা আপনার মধ্যে সংবেদনশীল মানুষটাকে তো নাড়িয়ে দিয়েছে বেশ l 
  • r2h | 165.***.*** | ২৯ মে ২০২৫ ২৩:২৯731750
  • উপলবাবুকে ধন্যবাদ এই কাজটার জন্য। অনুবাদও অত্যন্ত ভালো।
    খুবই গুরুতর প্রসঙ্গ সব আসছে - শুধু বস্তার নিয়ে না, গোটা দেশের সাংবাদিকতার হাল হকিকতের জন্যও প্রাসঙ্গিক।

    এতে অন্য একটা জিনিস মনে এল- রঞ্জনদার স্মৃতির কোলাজ - লোন দেওয়ার আগে ফসল, চাষবাষের চক্র বোঝা - এইসব ক্ষেত্রেও, খবর করার জন্য মানুষ ও মাটি চেনাটাও জরুরী হওয়ার কথা, যেটা বড় হাউসগুলি বিবেচনা করে বলে মনে হয় না।
  • MP | 115.187.***.*** | ৩০ মে ২০২৫ ১৫:০১731771
  • আচ্ছা এই সঞ্চালিকা যে জয় জোহর বলছেন এটার মানে কি ?? কেন বলছেন এই ক্ষেত্রে ?
  • upal mukhopadhyay | ৩০ মে ২০২৫ ১৫:৪৫731775
  • অভিনন্দন অর্থে ঝাড়খণ্ড , ওডিশা , ছত্তিশগড়ে  সবাই  ব্যবহার  করে ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন