আপনাকে আর ক'টা মাছ দিই? এরপরেই গৃহকর্তার হাঁক, এ্যাই রসগোল্লার বালতিটা এদিকে নিয়ে আয়... রসময়বাবুর পাত একেবারে ফাঁকা। রসময়বাবু সেই হাঁক শুনে বললেন, একদম নয়। আর পারব না। গৃহকর্তা এবার তাঁর পাতের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন, দে দে পুরো বালতিটাই উপুড় করে দে। খুব পারবেন রসময়বাবু। ভুলে গেলেন? আপনার নাতির অন্নপ্রাশনের ভোজে আমায় উঠতে দেননি। গুনে গুনে চল্লিশখানা রাজভোগ খাইয়ে ছেড়ে ছিলেন। আমিও আজ আপনাকে ছাড়ছি না। সেই শোধ আজ তুলবই তুলব।এই ধরনের কথপোকথনের দিন আমাদের জীবন থেকে বহুকাল আগে হারিয়ে গেছে। ভোজসভার সেই আয়োজন আজ অতীত। সেই লম্বা টেবিলের ওপর পাতলা সাদা কাগজের ওপর কলাপাতা আর ভাঁড় পেতে খাওয়ানোর ... ...
আপনার নিজ জগতে কিছু মানুষকে পাবেন। যারা কিছু সংখ্যক মানুষকে অবহেলা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করায় পিএইচডি করেছে। হতে পারে সেই মানুষটি আপনার অত্যন্ত প্রিয়জন। ধরুন, আপনি খুব খেটেখুটে কোনো কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। বেশ কিছু মানুষ সেই কাজের জন্য আপনাকে প্রশংসাও করেছে। কিন্তু সেই তাচ্ছিল্যের পিএইচডি ডিগ্রিধারী লোকটি কোনো প্রশংসা তো করলই না। বরং এমন একটা ভাব করল, যেন আপনার কাজটি যেকোনো বাচ্চা ছেলে চুটকি মেরে করতে পারে। তাই কাজটা করে আপনি এমন কোনো তীরন্দাজ হননি। যেন আপনাকে ছোট দেখানোর জন্যই ভদ্রলোক বা ভদ্রমহিলার জন্ম ... ...
গত দশ বছরে গোটা পৃথিবীটাই আদ্যপান্ত বদলে গেছে। দ্রুততালে বদলে যাচ্ছে চারপাশটা। ক্রমশ বদলে যাচ্ছি আমরা। একটু খেয়াল করে দেখুন আমাদের চারপাশের মানুষগুলোও কেমন যেন একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে। মাঝে করোনা কাল দুনিয়ার খোল নলচে বদলাতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এবার একটু মনে করে দেখুন, তার আগের দশ বছর এত দ্রুততালে বদলে ছিল কি? তেমনি তারও আগের দশ বছর? তার আগের...না। এরকম ভাবে বদলায়নি। বদলে যেত না। আজকের মত মা মেয়ে মিলে স্যুটকেসে ভরে গঙ্গায় লাশ ফেলতে বের হত না। কোনো ব্যবসায়ীর পরিবার শুদ্ধ বিষ খেয়ে, হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করত না। ভাগাড়ের মাংস অক্লেশে রেস্তোরাঁতে খাইয়ে দিত ... ...
ফুর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ। বহুল প্রচলিত একটি বাক্যবন্ধ। ফুর্তির সঙ্গে গড়ের মাঠের কি সম্পর্ক? আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কিনা! থাকলে কবে থেকে সেই সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বা এখনও তা টিকে আছে কিনা! এসব বিজাতীয় প্রশ্নের ধার কাছ দিয়ে এখন না যাওয়াই শ্রেয়। তবে এটুকু বলতেই পারি ফুর্তিবাজ মানুষদের ফুর্তি করতে গড়ের কেন, কোনো মাঠেরই প্রয়োজন পড়ে না। যেকোনও স্থানে, যেকোনও অবস্থায়, যেকোনও কালে তাঁরা ফুর্তি করতে একটুও কাঁপেন না। বরং তাঁদের ফুর্তির ঠ্যালায় আশপাশের মানুষজন কেঁপে উঠলেও উঠতে পারেন। সে ছাব্বিশে জানুয়ারি কিংবা চোদ্দই ফেব্রুয়ারি হোক, রাস্তার ধারে ঢেয়ো ঢাকনা স্টোভ ইত্যাদির সঙ্গে তারস্বরে দুটো ঢাউস বক্সে ঝাঁপড় ঝ্যাং গান ... ...
২০২২ সালের শেষের দিকে দক্ষিণী শহর ভেলোরে গিয়েছিলাম। সেখানে আলাপ হয়েছিল এক বাংলাদেশি যুবকের সাথে। ঘন্টা দুয়েকের আলাপচারিতায় বোঝার চেষ্টা করে ছিলাম, ওই দেশের রাজনীতি কিংবা আভ্যন্তরীণ সামাজিক পরিস্থিতির বিষয়গুলিকে। যুবকটির কথায় স্পষ্ট ছিল শেখ হাসিনা সরকারের বিপক্ষে অবস্থান। আজ বুঝলাম, দু বছর আগে শোনা কথাগুলো কতটা সত্যি ছিল। বিক্ষোভের চোরাস্রোত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের লাভার মত ... ...
বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি। শ্বশুর শ্বাশুড়ি ননদ কিংবা দেওর মিলিয়ে ব্যস্ত পরিবারের অংশ। অথবা পরমাণু পরিবার। স্বামী স্ত্রী আর একটি সন্তান। স্বামী অফিসে। সন্তান স্কুলে। তাই সারাটা দিন একাকিনী। বাবার বাড়ি, ভাইবোনের সঙ্গ। স্কুল কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। সবই অতীতের সুখস্বপ্ন। অনেক পরিশ্রম করার পর চাকরি পেয়েছিলেন। সকাল আটটায় কোনক্রমে নাকে মুখে গুঁজে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ি ফেরার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। অক্লান্ত পরিশ্রমে ... ...
আমি ভাল নেই। আপনি কি ভাল আছেন? না, আপনিও ভাল নেই। ভাল থাকতে পারেন না। কারণ এই সামাজিক মাধ্যমে আপনিও আমার মত মধ্যবিত্ত। কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত। কেউ কেউ অবশ্যই আছেন উচ্চবিত্ত। ধনী আছেন কিনা, আমার জানা নেই। তারমানে আমরা সকলেই কমবেশি একই নৌকোর যাত্রী। ত্রিশ পঁয়ত্রিশ টাকা কিলো আলু কিংবা একশো টাকা বেগুন খেয়েও যাঁরা খুব ভাল আছেন, মনে করছেন। তাঁদের খুরে খুরে দণ্ডবৎ। ভাল না থাকলেও আমরা নিরোর বেহালা ভালই ... ...
"ইয়ে... ব্রিজ বানাও ! ঘর বানাও ! রোড বানাও ! ইঞ্জিনিয়ার লে লো বাবু। সস্তে মে লেলো..."কিংবা,"ওয়ে জ্বর সর্দি কাশি, অম্বল বুক জ্বলা সারাই... যে কোনো রোগ সারাই... সাথে ফ্রীতে দাঁত সারাই..."কিংবা,"মামলা দায়ের করবেন নাকি বাবু, মামলা! সিভিল বা ক্রিমিনাল দুইই পাবেন.…. ভারী ভরকম ছাড় পাবেন, মামলা করবেন নাকি…!"কিংবা,"বিবিএ এমবিএ লিবেন বাবু। এমসিএ বিসিএ লিয়ে লিন... সস্তায় মিলবে এম.কম, এমএ... যতো খুশি তত ... ...
"তোমরা আমায় ভোট দাওআমি তোমাদের পরিযায়ী শ্রমিক বানাব।" উড়িষ্যার খুব ছোট্ট শহর অঙ্গুল। খুব বেশি হলে ১৫ কিলোমিটার শহরটার চারদিকের পরিধি। গত দেড় বছর ধরে আমার এই শহরে প্রতি মাসে বা দুই মাসে একবার আসতেই হয়, অফিসের কাজে। এই শহরের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন খনি ও স্টিল বা অন্যান্য প্ল্যান্ট। পুরো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা। উড়িষ্যার অঙ্গুল ছাড়াও আমায় সম্বলপুর, বালাসোর, ভুবনেশ্বর, কটক ইত্যাদি ... ...
এরিক ভন দানিকেনের দাবি ছিল, পৃথিবীর বাইরে এলিয়েন নামক প্রাণীরা আছে। এবার সেই দাবিকে ভর করে আর এক বিজ্ঞানী এলিস সিলভারের চাঞ্চল্যকর তত্ত্ব:-"বিজ্ঞানী এলিস সিলভারের চাঞ্চল্যকর দাবি: মানুষ পৃথিবীর জীব নয়।"তাঁর 'হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ: এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স' বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, 'মানুষ পৃথিবীর জীব ... ...