শুধুমাত্র একটি কথায় বাংলা জ্বলছে। জ্বলছে দেশের বিভিন্ন জায়গা। নিন্দার ঝড় বিশ্বজুড়ে। কথাটি হল হজরত মহম্মদকে নিয়ে। কুকথা। কে বলেছেন? নুপূর শর্মা। তাঁর পরিচয়? বিজেপি নেত্রী। আগুনে ঘি এখানেই। যে দলটি হিন্দুত্বের নামে, জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্নভাবে সম্প্রদায়িক কথা বলে থাকে, সেই দলের দুই-এক নেতা সরাসরি ইসলামের পয়গম্বরকে নিয়ে বিতর্কিত কথা বলেছেন। একে বিজেপি, দোসর পয়গম্বরের সমালোচনা! আর তাতেই গোটা আকাশ ভেঙে পড়েছে ভূ-ভারতে। নুপূর শর্মা কেন এ কথা বললেন? এটা কি শুধুই বিচ্ছিন্ন ঘটনা? কেন বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়? কেন বাংলা জ্বলছে? সন্ধেয় বেলায় একবার ন্যাশনাল টিভি চ্যানেলগুলির দিকে চোখ বোলান। তাহলেই প্রথম ও দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর অনেকটা পরিষ্কার হয়ে ... ...
আশি তেই আসিয়াছি / কুড়ি কুলোর হাওয়া / হর হর যোগী-মোদী / ইউপি বারো আনা। ... ...
যাক্, অবশেষে জানা গেল। এ বার রাত্তিরে একটু ঘুম হবে। এতদিন নুসরতের সন্তানের বাবা কে ভাবতে ভাবতে চোখের তলায় কালি পড়ে গিয়েছিল। সিগারেটের পর সিগারেট। হাউজ ফিজিসিয়ানকে বলে কয়ে ঘুমের ওষুধও খাওয়া শুরু করেছিলাম। শুভশ্রীর সন্তান হওয়ার সময় এমনটা হয়নি। করিনার প্রথম সন্তান তৈমূরের নাম শুনে ভীষণ উদ্দীপনা ছিল, এতটাই উদ্দীপনা যে পানের পিক ফেলে ফেলে ফেসবুকের দেওয়াল রঙিন করে দিয়েছিলাম। সে এক দিন ছিল! কিন্তু নুসরতের বেলায় এতটাই টেনশন হচ্ছিল বলে বোঝানো যাবে না। নিজের সন্তানের বাবা হওয়ার সময় এত টেনশন ছিল না। আজ বিন্দাস, নুসরতের সন্তানের বাবার নাম জানলাম। বাবার নাম হিন্দু জেনে আরও খুশি হলাম। ... ...
স্বাধীনতা দিবস বলে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে, এ সব কথা নৈমিত্তিক জীবনে এখন অর্থহীন। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় এই দিনটির অর্থ ছিল। বাবা সকাল সকাল ঘুম থেকে তুলে স্নান করিয়ে ভাল জামা পরিয়ে স্কুলে পাঠাতেন। ভাল মনে আছে, অন্য দিন ছেঁড়া হাই চপ্পল পরলেও এই একটা দিন কালো বুট পরে স্কুলে যেতাম। তার আগে বাবা সন্দুর করে পালিশ করে রাখতেন জুতো জোড়াখানা। একবার স্বাধীনতা দিবসের দু’দিন আগে স্কুলের বড়দিভাই ডেকে বললেন, ‘শোন তোকে একটি কবিতা পাঠ করতে হবে। যা মেয়েদের স্কুলে গিয়ে ক্লাস ফাইভের বাংলা বইটা নিয়ে আয়।’ পড়তাম প্রাইমারি স্কুলে। আর মেয়েদের হাইস্কুলে যেতে হবে শুনে বুকটা ধড়াস ... ...
- দাদা, দুটো নবান্ন থেকে ধর্মতলা -- (কুড়ি টাকা হাতে ধরিয়ে দিতে বাস কনডাক্টর বলল...) আরও ১০ টাকা দিন- মানে! (পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড় আমার)- হ্যাঁ দাদা, মিনিমাম ভাড়া ১২ টাকা, আর ধর্মতলা পর্যন্ত ১৫ টাকা- কিন্তু কবে থেকে? এই তো লকডাউনের আগে ১০ টাকা ছিল- লকডাউনের আগে অনেক কিছুই ছিল দাদা, এখন আর নেই। লকডাউনের আগে আমার এক মাথা চুল ছিল, এখন ন্যাড়া। বুঝতেই পারছেন!- তা বলে বলা নেই কওয়া নেই একধাক্কায় এত টাকা বাড়িয়ে দিলে-বলা নেই কওয়া নেই ডিজেলের দামও তো বাড়ছে। কথা না বাড়িয়ে ১০ টাকা বার করে রাখুন এই বলে হন্তদন্ত হয়ে গেটের দিকে চলে গেল কনডাক্টর। ... ...
জয়ন্ত কাজ করে বড়বাজারে সোনার দোকানে। কড়াকড়ি লকডাউনে বেশ কিছু দিন বাড়িতেই ছিল সে। কাজ নেই, তো বেতন নেই। বাধ্য হয়েই প্রায় ৩০ কিলোমিটার সাইকেল চড়ে কাজে যেতে হয় তাকে। ফিরে আসতে হয় সেই ৩০ কিলোমিটার। অর্থাৎ ৬০ কিলোমিটার রাস্তায় প্যাডেলে পা ঘষে প্রতিদিন। পাতলা হয়ে গিয়েছে পায়ের তালু আর প্যাডেল। রাতে আড়াই খানা রুটি খেয়ে ক্লান্ত শরীরটাকে বিছানায় শুধু লুটিয়ে দেয়। সারা দিনের হাড়ভাঙা খাটুনির পর ২৪ ক্যারেট ঘুম। এই একটাই তার আত্মতৃপ্তি। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে আবার সেই ৬০ কিলোমিটার রাস্তার কথা ভাবলে বুকটা খাঁ খাঁ করে ওঠে। বাধ্য হয়েই কয়েকদিন স্পেশাল ট্রেনে কাজে যাচ্ছিল জয়ন্ত। ভেবেছিল চেকার ... ...
যন্ত্রের বেদনাই কি যন্ত্রণা? হঠাৎ এমন ব্যাখ্যায় পড়লাম কেন? বলছি। আমার চোখের সামনে একটা শরীর যন্ত্রণায় ছটপট করছে। সে বলছে, আর কেমো দিও না আমায়। পারছি না এ যন্ত্রণা সহ্য করতে। এতবড় কারখানায় নানা যন্ত্র অবিরাম কাজ করে চলেছে। তার কোন অংশ যে বিকল যন্ত্রীও ধরতে পারছে না। শুধু অসহ্য যন্ত্রণা, যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা। তার একটা ভাষাও আছে। কখনও গর্ভধারিনী মায়ের নাম অস্ফুষ্টে বেরিয়ে আসে, কখন শুধুই নীরবতা। দুই চোখের কোণ দিয়ে সে ভাষা জল হয়ে বয়ে চলে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি কিসের জানা নেই। কিন্তু মুক্তি ভীষণ রকম প্রয়োজন। অপেক্ষায় আছি... ... ...
যে খাতে জীবন বইছে, টুকরো টুকরো আনন্দগুলোর আর কোনও জায়গা নেই। একদিন এই টুকরো আনন্দের টানে সারাদিন ঘরছাড়া থাকতাম। কত গ্রীষ্মের প্রখর দুপুর, কত বৃষ্টিভেজা মেঘলা দুপুর। মনে হতো, এটাই জীবন। তার বৃত্তের বাইরে সবই তুচ্ছ। এই সব পাকামিতেই থার্ড ইয়ারে ইংরেজি অনার্স কেটে গেল। তাতেও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রফুল্লদের বাঁশ ঝাড় থেকে বাঁশ কেটে মাচা তৈরি। মাথার উপর খড়ের চাল। বৈশাখ, জৈষ্ঠের দুপুরটা বেশ কাটত। মেয়েদের স্কুলের পিছনে শান্তিকাকুদের বাগান। সেখান গিয়ে আম চুরি। গালাগালি না খেলে আমচুরির মজাই নেই। বিকেল গড়ালে ভাগাড়ের মাঠে ক্রিকেট। তবে দুপুর আর সন্ধে তাসের আড্ডায় মন বুঁদ হয়ে থাকত আমাদের। আর থাকত গড়ের ... ...
উদায়ন পণ্ডিত যতই পাঠশালা চালু রাখতে চান না কেন, হীরক রাজা মনে করেন, "লেখাপড়া করে যে, অনাহারে মরে সে"। করোনা আবহে বঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থাও এখন সেই পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্কুল-কলেজ খোলা না থাকুক, বিকল্প পথে পড়াশুনা চালু রাখা যেতেই পারত। কিন্তু সরকারের অনীহা বাধ সেধেছে তাতে। প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের মাধ্য়মিক বা উচ্চ মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীটি কোন ভরসায় পরীক্ষা দেবে, ভাবলে শিহরিত হতে হয়। গত বছর লকডাউন হওয়ার পর টানা স্কুল বন্ধ। গরমের ছুটি, পুজোর ছুটি মিলেমিশে একাকার। এখন শুধুই ছুটি। শহরের কিছু স্কুলে চক্ষু লজ্জার খাতিরে অনলাইন ক্লাস করিয়েছেন শিক্ষকরা। তবে, তাঁরা মেনে নিয়েছেন, ক্লাসের মোট ছাত্র-ছাত্রীর মাত্র ২০ শতাংশকে শিক্ষাদান করা সম্ভব ... ...
ভোট মিটে গিয়েছে। মোদী-শাহের আর দেখা নেই। গত দুই-তিন মাস যেভাবে মোদী-শাহ নিয়মকরে বাংলায় ঘুরে গিয়েছেন, মনে হয়েছিল তাঁদের মতো বঙ্গপ্রেমী আর দুটি নাই। ভোট শেষ, তাঁরাও ডুমুরের ফুল। আসলে, এই মুহূর্তে বঙ্গে বড় কিছু হেতু নেই। আপনি বলবেন, ক্রমহ্রাসমান করোনা পরিস্থিতি কি সেই হেতুর মধ্যে পড়ে না। ভোটের থেকে বড় কিছু নয়। ভোট হল এমন মোহ, সেখানে সব কিছুর মাফ আছে। ভালবাসা আর যুদ্ধে এত দিন সব ভুল মাফ ছিল। বাংলার নির্বাচনের পর মনে হয়েছে, ভোটেও যা কিছু করা যায়, তার জন্য সব মাফ হয়ে যায়। ভোট প্রচারে এই লাখো লাখো লোকের সমাহারে করোনা পরিস্থিতি কি আরও ভয়ঙ্কর হবে ... ...