"মানুষের মেহনতের গন্ধ এরকমই হয়। আমি চাই বড় হলে তোর গা থেকেও যেন এই গন্ধটাই বেরোয়"--- বাবা বলেছিল হালকা গর্বের সুরে। আমার গায়ে এখন ঘামের গন্ধ নেই কোনও। আমি টাটাদের কিনে নেওয়া বিগবাস্কেট অথবা জেফ বেজোসের আমাজন কোম্পানির কাছ থেকে অফারে ডিওডোরেন্ট কিনি। ... ...
হাসিমুখে তাকে বলে ফেলার সময়ই আমরা বুঝতে পারি যেন একটা জলাজমি চাপা পড়ে যাচ্ছে বুকের ভেতরে। তার উপরে হু হু করে বহুতল উঠে যাবে শীঘ্রই। এতগুলো বছরের বর্ষার কচুপাতায় জমে থাকা জল, নেউলের দৌড়, ইঁদুরের ডাক; --- এসবের আর কোনও সাক্ষী থাকবে না। জীবিতের শোক যে মৃত বহন করে না সে তো আমরা বহুকাল আগেই জেনেছি! জীবিতের ভেতরে মরে যাওয়া এই ছোট্ট অংশটিকেও জীবিত একাই বহন করে চলে আজীবন ... ...
২০১৪ সালে তখনও মূলত ফিল্মমেকারদের যুগ চলছে। সেখানে আজকের এই পোস্ট-ফিল্ম জমানায় বরঞ্চ কন্টেন্ট প্রোডিউসারের সংখ্যাই বেশি। আর সবচেয়ে মজার কথা এই যে গত পাঁচ বছরে প্রোডিউসড সবচেয়ে পপুলার কন্টেন্টটা কিন্তু আবার ইন্ডাস্ট্রি-র বানানো নয়, কনফিউজড পিকচার নামে একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোডাকশন হাউজ তথা নেহাতই আমাদের অরিজিৎ সরকারের বানানো। ... ...
ক্ষমতায় পুরোপুরি গেঁড়ে বসার পর এই মানসিকতাটা আসে। আমার রাজ্যে ক'রে খাচ্ছিস যখন আমার কথা অনুযায়ী চলবি, নইলে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো! এগুলো সবই আমরা আগেও দেখেছি। কিন্তু এরপর একটা সময় আসে যখন একসপ্তাহ আগে একসঙ্গে মিছিলে হেঁটে যাওয়া লোকটা বুথে গিয়ে অন্য বোতাম টিপে দেয়। অপশন না থাকার পরও টিপে দেয়। কাউন্টিং-এর দিন বর্ষীয়ান নেতারা গণনাকেন্দ্রের বাইরে বসে শোনে সাম্রাজ্যপতনের শব্দ। ... ...
তোমার কথা আমার কথা বললে জোরে শুনবে লোক; ভারত চালায় আম্বানি আর মৌলবাদী আহাম্মক। ... ...
ওই, শিরোনামে যা দেওয়া আছে তাই। অত লিখতে পারছি না আবার ... ...
ভবেশ দেখছিলো শীতের সূর্যের আলোয় বাবার পিঠের চামড়ায় একটা ধাতব আঁকশি চকচক করে উঠছে। ভবেশের অবাক লেগেছিলো। পরে একদিন রাত্রিবেলা বাবার পাশে শুয়ে ভবেশ বাবাকে জিজ্ঞেস করে আঁকশিটার কথা। বাবা প্রথমে অস্বীকার করে যায় ব্যাপারটা, যেন কিছুই জানে না। যেন ভবেশ ভুল দেখেছে, আর গোটাটাই তারই ভ্রম। কিন্তু ভবেশ ছাড়েনি। সে বাবার পিঠের আঁকশিটায় হাত রেখে বলে, "এই যে, এইটা। এইটা কী?" --- বাবা থমকে যায়। যেন এইটুকু একরত্তি ছেলে হয়ে ভবেশ আঁকশিটা দেখে ফেলবে এটা বাবা ভাবতে পারেনি। কিন্তু তারপরও উত্তর দেয়নি বাবা। হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিলো। আর বলেছিলো, "তুই ঘুমো। কাল সকালে নইলে প্রেয়ার লাইন মিস হয়ে যাবে।" ... ...
স্রোতস্বিনী নিশ্চিত হতে চেয়েছিল। সে চেয়েছিল তার ম্যাজিকটা সারাজীবন তারই থাক। তার জন্য চেষ্টার কসুর সে করেনি কখনও। রোজ বিকেলে সে ঘন্টাখানেকের জন্য ম্যাজিকটাকে একা ছেড়ে দিত শুরুতে। যাতে ম্যাজিকটা নিজের মতো ঘুরেফিরে একটু শ্বাস নিয়ে আসতে পারে। তার বিশ্বাস ছিল তার ম্যাজিক যখন তার কাছেই ফিরে আসবে নিশ্চয়ই। কিন্তু ম্যাজিকটা একদিন ফিরলো না। বাধ্য হয়ে স্রোতস্বিনী তখন তাকে খুঁজতে বেরোলো। পাক্কা দেড়দিন পর দেখা গেলো সেখান থেকে তিনটে পাড়া পেরিয়ে একটা হলুদ বাড়ির দোতলায় একজন বয়স্ক মহিলার কোলে শুয়ে ম্যাজিকটা তখন চাঁদের বুড়ির গল্প শুনছে ... ...
কথাটা বলা গেলে তার নিজের সম্বন্ধে নিজের ধারণাগুলো আরেকটু স্পষ্ট করে তুলে ধরা যেত সঙ্ঘমিত্রা-র কাছে। বলা যেত, আমি এই! এর বাইরে আমি অন্য কিছু নই। বাদবাকি যা তুমি বুঝেছো সেসব তোমার ধারণা মাত্র। তার সাথে আমার ভিতরের প্রকৃত আমি-টার কোনও সম্পর্ক নেই। সঙ্ঘমিত্রা-ও কিছু একটা বলতেই যাচ্ছিলো, কথার পৃষ্ঠে কথা যেমন হয়। সেই কথাটা শোনাও প্রয়োজন ছিল। সেই কথাটার প্রেক্ষিতে আরেকটু গুছিয়ে বলে ওঠা যেত তাহলে নিজের কথাগুলো। অথচ, সেরকমটা হলো না। অবশ ভাবটা ক্রমশ ঠোঁট থেকে গালের দিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো ... ...
লোকটা বললো, "কীভাবে বুঝবো সেখানে পৌঁছে? কীভাবে বুঝবো যে এখানেই আমার আসার ছিল?" ঈশ্বর এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মুচকি হেসে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন। লোকটা দাঁড়িয়ে রইলো খানিক থতমত হয়ে। তারপর, "যাই হোক, একটা ন্যারেটিভ তো পাওয়া গেছে অন্তত" ভেবে হাঁটতে লাগলো ঈশ্বরের রেখে যাওয়া রাস্তা বরাবর ... ...