গাছ |
And I don't want the world to see me
Coz I don't think they’d understand
When everything’s meant to be broken,
I just want you to know who I am
ক্যাফের দরজাটা খোলা মাত্র মাঝারি ভল্যুমে চালানো গান কানে ঝাপটা মারলো| রাজপুর রোডটা শেষ হওয়ার কিলোমিটার টাক আগে‚ ডান হাতে রামকৃষ্ণ মিশনটা ছাড়ালেই বাঁ দিকের নেমে যাওয়া রাস্তাটার মোড়েই এই ক্যাফে| ছিমছাম ও পরিপাটি| একটা দেওয়াল শুধুই কাঁচের হওয়ার ফলে‚ দিব্বি দেখা যায় সবুজে মোড়া পাহাড়ের সারি| সাথে উপরি পাওনা হিসেবে রয়ে ... ...
পর্ব ১।
ঘুম ভাঙতেই পাশ ফিরে মা, বাবা আর ছোট্ট ভাইটাকে একবার দেখে নিল ডোডো। সবাই ঘুমোচ্ছে। খাট থেকে আস্তে করে নেমে, ঘরের বাইরে চলে এল। ঘরটা থেকে বেরোলে ডান হাতে আরেকটা বেডরুম। এটার দরজা বন্ধ। সেটা পেরোলে একটা খুব ছোট্ট গলি দিয়ে ডাইনিঙ রুম। গলিটার একটা দেওয়াল তৈরি হয়েছে প্যান্ট্রির দেওয়ালে, আরেকটা বন্ধ বেডরুমটার দেওয়াল দিয়ে। তারপরে ড্রয়িং রুম। একটা সোফা টেনে ড্রয়িং রুমের দড়জাটার কাছে নিয়ে এল ডোডো। বেশ ভারি সোফাটা। কার্পেটের ওপর দিয়ে নিয়ে অসতে একটু কষ্টই হচ্ছিল।
ছিটকিনি খুলে বাই ... ...
অধ্যাপক
সকাল থেকে চলছে বটে! তবে শুধু সকাল থেকেই বা বলি কেন - গত এক সপ্তাহ ধরে যা চলছে! আজ কনভোকেশন| বেলা তিনটেতে শুরু‚ কিন্তু তার আগে ঊনকোটি চৌষট্টি কাজ রয়েছে| এডুকেশন মিনিস্টার আসছেন চিফ গেস্ট হয়ে| রাজ্যপাল তো রয়েইছেন| দুজনের সাথেই থাকবে গোটা পাঁচেক লেজুড়| আর এই সকলকে অভ্যর্থনার দায়িত্ব এই রামুর| এটা একটা চাকরি! শালা‚ এসেছিলাম ছাত্র পড়াতে আর করছিটা কি? লোকে শুনলে থুতু দেবে| দেয়ও| কিন্তু কিছু করার নেই| পনের বছর হতে চলল; এখন অন্য কোনো চাকরিও কেউ দেবে না|
সারা বছর ধরে লেগেই রয ... ...
অধ্যাপক.....
আজ সারাটা দিন প্রায় ফাঁকাই আছে| থার্ড পিরিয়ডে একটা ক্লাস আছে শুধু, তারপর একটি ছাত্রী আসবে| মেজর প্রজেক্টের টপিক নিয়ে কিছু আলোচনা আছে| টপিক ঠিকই করা আছে‚ শুধু কি ভাবে কাজটা এগোবে তার একটা আইডিয়া দিয়ে দিতে হবে মেয়েটিকে| মাস ছয়েক সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে কাজ| তাই খুব বেশি স্ক্র্যাচ থেকে কাজ করালে চলবে না| নিজের তৈরি যে প্রোটোকলটা আছে সেটাকেই একটু ইম্প্রোভাইজ করিয়ে দিলেই হবে| ব্যাচেলর লেভেলের কাজ‚ পি এইচ ডি তো নয়‚ ওতেই মোটামুটি চলে যাবে| কিছু স্টাডি মেটিরিয়ালের সাথে প্রোটোকলের ... ...
৪৫।
গরম পড়তে শুরু করেছে। ঘরের পাখাটা না চালালে কিছুক্ষণ পরেই বিজবিজে ঘাম হতে শুরু করে। ওতে অসুবিধে হয়না রতনের। ওদের ক্যাম্পাসের তাপমাত্রা বাকি হাওড়া জেলার তাপমাত্রার চাইতে খানিকটা কম। পাশেই বোট্যানিক্যাল গার্ডেন। অন্য পাশ থেকে আসে গঙ্গার শীতল হাওয়া। তা ছাড়া কযাম্পাসের ভেতরে এত গাছ গাছালী…
গরম তেমন অনুভব হয়না।
সামনে একটা পরিক্ষা আছে। স্ট্রেঙথ অফ মেটিরিয়াল। টিমোশেঙ্কোর বইটা টেবিলের ওপরে খোলা । এনুয্যাল পরিক্ষার ঢের দেরি এখনও । পরিক্ষা নিয়ে কোনো দিন দুঃশ্চিন্তা না করলেও একটা ... ...
৩৬।
একা থাকার অভ্যেসটা অনেক দিনের।ধীরে ধীরে, তিলে তিলে রপ্ত করা। অভ্যেসটা কবে থেকে রপ্ত করা শুরু করেছেন তা আর আজকে মনে পড়ে না। পাবনায় যাওয়ার পর থেকেই কি? না বোধহয়! কোলকাতার আলোক মালার বৃত্তের মাঝেই হয়ত শুরু হয়ে গেছিল এই একাকিত্বের যাত্রা; হয়ত সেটাকে চিহ্নিত করে উঠতে পারেননি তখন – এই যা! নাকি পেরেছিলেন ? শুধু নিজেকে ভুলিয়ে রাখার জন্য যেটুকু ব্যসন আসনের দরকার হয়, সে গুলির আড়ালটা ব্যবহার করেছিলেন মাত্র! আর তারো আগেকার, মানে কার্সিয়াঙের জীবনটাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনা চলেনা। ঐ বালিকা বয়সে কেউ ... ...
৩৩।
কলকাতা থেকে ফিরে আসা ইস্তক মনটা ভীষণ ভালো হয়ে রয়েছে সুধার। এত দিনের স্বপ্ন এবার পূরন হতে চলল। এম.এ.-তে ভর্তি হতে গেছিল ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটিতে। ইউনিভার্সিটির চৌহদ্দির বাইরে পায়ে পায়ে বেড়িয়ে এসে হাতে ধরে থাকা মাইনে জমা দেওয়ার বইটার দিকে চেয়ে অদ্ভূত একটা শিহরণ খেলে গেছিল ওর সারা শরীরে। কলেজ স্ট্রীট দিয়ে শিয়ালদা স্টেশনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাবা অনেক কথাই বলছিল কিন্তু সব কথা ওর কানে ঢুকছিল না। কলকাতায় থেকে পড়তে পারবে - এ সুখ চিন্তাটাই মাথায়-মনে খেলে বেড়াচ্ছিল সারাক্ষণ। দুটো একটা শব্দে ... ...
৩১।
আজাদ পরিন্দা কভি কিসিকা আপনা না হুয়া। গুরুজী কে আজ শায়রীতে পেয়েছে। গান কম হচ্ছে আর শায়রী বেশি - একটুও ভালো লাগে না শোভার! ভালোটা লাগবে কি করে? কবিতার মানে বুঝতে যদি দশ বার মানে বই খুলতে হয়,তবে তাতে আনন্দ আছে কোন? ভাবটা নয়, ভাষাটাই যে বুঝতে পারেনা শোভা! হিন্দি ভাষাটাই জানেনা ও, তার আবার উর্দূ!
তবে ভাষাটায় একটা মাদকতা আছে - এটা মানতেই হবে! গুরুজীর শায়রী গুলোর বিশেষ মানে না বুঝলেও ওনার গলায় শব্দ গুলোর ধ্বনিময়তা, বাচন ভঙ্গী, উপস্থাপনা আর সকলের মতই ওকেও আবিষ্ঠ করে রাখে। আর সকল ... ...
২৮।
দিন পাঁচেকের ছুটিটা যেন পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা! হঠাৎ করে এক পশলা খুশির মতন। আগে হলে ভালো লাগত না তেমন; স্কুলে না গেলে ওদের পাঁচজনের এক জনেরও মন ভালো থাকে না। বাকি চার জনের এবার কেমন লাগছে জানে না শোভা, কিন্তু এবার ওর মোটেই তেমন খারাপ লাগছে না - সারাদিন শুয়ে শুয়ে নিজের মনে চিন্তার জলছবি আঁকতে যে এত ভালো লাগে, তা ও এর আগে বোঝেনি কোনদিন। তাই তো সেদিন যখন বড়দিদিমনি ক্লাসে এসে বললেন, উপনির্বাচনের জন্য আগামী পাঁচদিন তোমাদের স্কুল ছুটি থাকবে - তখন তেমন খারাপ লাগেনি শোভার।
তবে এ ছুটিট ... ...