রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে হাহাকার প্রায়ই নজরে পড়ে। অথচ পিছনের এর বড় চিত্রটা নিয়ে কাউকেই বলতে শোনা যায়না। ২০২৩ সালে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর একটা ঘোষণ নিয়ে খুব হইচই হয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল, রাজ্যে আট হাজারেরও বেশি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে, কারণ ছাত্র নেই। ত্রিপুরাতেও অবিকল একই রকম একটা ঘোষণা করা হয়েছে এই বছরই। সেখানে ৫০০ রও বেশি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হতে চলেছে বলে খবর। এর আগে ২০১৮-তে বিজেপি সরকারে এসে ছাত্র সংখ্যা কম রয়েছে রাজ্যের এমন মোট ৯৬১টি বিদ্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। সেই সঙ্গে আরও ৮০০ সরকারি বিদ্যালয়কে বেসরকারি হাতে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়। এপর্যন্ত মোট কত বিদ্যালয় বন্ধ হয়েছে এবং কটিকে বেসরকারি হাতে দেওয়া হয়েছে তার কোনও স্পষ্ট যদিও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না, কিন্তু কারণটা দুই রাজ্যেই একই। ছাত্ররা আর রাজ্যসরকারের সরকারি বা আধাসরকারি স্কুলে পড়তে যাচ্ছেনা। ... ...
কে এই পেটানোর নেতৃত্বে? অভিযোগ, এই লোকটি স্থানীয় তৃণমূল নেতা। নাম তাজিমুল হক। ডাকনাম জেসিবি। একটি বুলডোজার কোম্পানির নামও জেসিবি। ইনিই বোধহয় আস্ত বুলডোজার। অভিযোগ, যে, ইনি পিটিয়েছেন তো বটেই, নৃশংস মারধরের পরেও আহত দুই যুবক-যুবতীকে পুলিশের কাছে যাওয়া তো দূরের কথা, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের সাহায্য করলে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ার পর, রবিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ জেসিবি-কে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তার আগেই কে ভিডিও ছড়িয়েছে তার সন্ধানে গ্রামে দাপিয়েছে জেসিবি'র বাহিনী, সন্দেহের ভিত্তিতেই তারা মাসুদ নামের এক যুবকের বাড়ি ভাঙচুরও করে দিয়েছে। ... ...
একটা ভিডিও ক্লিপ বাজারে এসেছে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কোনো এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন, যেটা কলকাতায় হচ্ছিল, সেখানে এক স্বামীজি আছেন বলে দর্শক আসনের সামনের দিক থেকে সব মহিলাদের তুলে পিছনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটা মোবাইলে তোলা। কথা ভালো শোনা যাচ্ছেনা। কিন্তু কোনো মহিলা যে সামনের সারিতে বসবেনা, এটা ঘোষণা করা হচ্ছে, সেই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভিডিওর সত্যমিথ্যা অবশ্য আমরা যাচাই করিনি। কিন্তু এর তো খবরও বেরিয়েছে।স্বামীনারায়ণ মন্দিরের স্বামী জ্ঞানবৎসলকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করে আনা হয়। তিনি খুব সম্ভবত মহিলাদের মুখ দেখেননা। তাই তিনি আসার আগেই আয়োজকরা সামনের সারি থেকে সব মহিলাদের তুলে পিছনে পাঠিয়ে দেন। শুধু তাইই না, খবরে এও বেরিয়েছে, ব্যাকস্টেজে যে মহিলারা কাজ করছিলেন, তাঁদেরও পাঠিয়ে দেওয়া হয় পিছনের সারিতে। ... ...
অনেকেই নিট বা নেটের দুর্নীতি নিয়ে চিন্তিত। সঙ্গত কারণেই। দেশে লুঠের রাজত্ব চলছে, এ খবর নতুন না। হাজার হাজার কোটি টাকা শিল্পপতিরা লুঠ করে নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন, আমরা জানি। তাঁদের অনাদায়ী ঋণ মকুব করে দেওয়া হচ্ছে, আমরা জানি। সরকারি সংস্থাগুলিকে খোঁড়া করে বা না করে জলের দরে বেচে দেওয়া হচ্ছে, আমরা জানি। কিন্তু যা অনেকেই জানেননা, আস্ত পুকুর শুধু নয়, আস্ত জঙ্গল, জলাভূমি, নদী সবই চুপচাপ চুরি হয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, বিশ্বাস না হলেও খবরটা শত শতাংশ ঠিক। ... ...
রেলসুরক্ষা ব্যবস্থা কবচ নিয়ে হইহইয়ের কোনো শেষ নেই। দুর্ঘটনারও কোনো শেষ নেই। এই বছরেরই ফেব্রুয়ারি মাসে রেলমন্ত্রী কবচের উন্নতির কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, ৩০৪০ কিলোমিটার রেলপথে অপটিকাল ফাইবার বসানো হয়েছে, বসানো হয়েছে ২৬৯ টা কবচ টাওয়ার। ওদিকে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পরে, আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত চার বছরে ঘটেছে ছাব্বিশটা রেল দুর্ঘটনা। কবচ প্রবর্তনের আগে এত দুর্ঘটনা দেখা যেত কী? বা এর ভগ্নাংশও? সম্ভবত না। তাহলে কবচে আদৌ কি কারো কোনো লাভ হচ্ছে? সহজ উত্তর হল, হ্যাঁ, হচ্ছে। ২০২৩ সালে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সে পর্যন্ত কবচের জন্য খরচা হয়েছিল ৩৫১ কোটি টাকা। আর ২৩-২৪ সালের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৭১০ কোটি টাকা। দুটোকে যোগ করলে হয় ১০৬১ কোটি টাকা [২]। কোথায় যায় এই টাকা? কীভাবে খরচ হয়? কবচের প্রযুক্তি ভারতের সরকারি সম্পত্তি হলেও, ব্যাপকহারে এর যন্ত্র কিন্তু সরকার বানায়না। বানায় বেসরকারি কোম্পানিরা। তাদের বরাত দেওয়া হয়। এদের ইংরিজিতে বলা হয় ওইএম বা অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার। সেই বরাতেই যায় এই টাকার সিংহভাগ। ... ...
নির্মম হত্যাকান্ড! খুন হয়েছিলেন আই আই টি খড়গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফৈজান আহমেদ? কি ভাবে? গত ২১শে মে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ডক্টর অজয় গুপ্তা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চকে জানান যে ফৈজানকে মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, ঘাড়ের জায়গায় ছুরির আঘাত করা হয়েছিল এবং তার পর পিছন থেকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে ঘাড়ে গুলি করা হয়েছিল। (১৩-ই জুনের ই-নিউজরুম ইন্ডিয়ার প্রকাশিত সংবাদ)। এই রিপোর্ট মৃতদেহের দ্বিতীর ময়নাতদন্তের ফল। কেন দু’বার ময়নাতদন্ত? কারণ, প্রথম ময়নাতদন্তে এতগুলি চিহ্নর কোন কিছু নজরে আসে নি আর মৃত্যুর কারণ সাব্যস্ত হয়েছিল আত্মহত্যা। নিজের হস্টেল ঘর থেকে ২৩ বছরের ছেলেটির অর্ধ-গলিত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। আই আই টি কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের বক্তব্য অনুসারে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। ফৈজানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবার খড়গপুরে পৌঁছে তার মৃতদেহ দেখে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে মানতে অস্বীকার করেন। তারা বলেন ফৈজান র্যাগিংয়ের শিকার এবং তিনি খুন হয়েছেন। ফৈজানের মা-বাবা কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন। পোস্ট-মর্টেম রিপোর্টে অসঙ্গতি নজরে আসায় হাইকোর্ট মৃতদেহ কবর থেকে তুলে নিয়ে এসে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার আদেশ দেয়। ... ...
নিট কেলেঙ্কারি নিয়ে নিয়ে বাংলা মিডিয়া এখনও মোটামুটি চুপচাপ, যেটুকু না বললে নয়, সেইটুকু বলছে। যদিও এরকম হবার সম্ভাবনা আছে, যে, নিটই স্বাধীন ভারতবর্ষের বৃহত্তম কেলেঙ্কারি। হ্যাঁ, আদালতের রায়ের পরেও ব্যাপারটা বদলায় না। কিন্তু মূলধারার মিডিয়ার হাতে ছেড়ে দেব বলে তো আমরা কাজ করছিনা। এই ভিডিওটা দেখুন, বিশদে পুরোটা বলা আছে। ... ...