এখানেও সকাল হয়,রক্ত মাখা রাস্তা ধুয়ে দেওয়া হয় সকালে,
বড় বড় জল ট্যাংকি আসে,
সরকারি তৎপরতায় কয়েকজন নাগরিকের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়,
চিরদিনের তরে।
কেউ প্রশ্ন করে না।
মা কাঁদে বুক চাপড়ে,বাপ থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে থাকে,
কিন্তু না,
তারাও প্রশ্ন করে না।
ভাবে সরকার করেছে,নিশ্চয় কিছু ভেবেই করেছে।
অত বড় বড়,শিক্ষিত লোক সব,
ওরা নীতি নির্ধারণ করে,
ভুল কি করে হবে!
বললেই হল আর কি !
আমি আর দুচারজন একবার প্রশ্ন করেছিলাম,
"সত্যিই কি এমন নৃশংস গণহত্যা প্রয়োজন?
বিকল্প তো কিছু থাকতেও পারে?"
ওরা উত্তর দেয়নি,
আমাদের গায়ে দাগিয়ে দিয়েছিল দেশদ্রোহী লিখে।
আমাদের সাথে কেউ কথা বলে না তারপর,
খেতেও পাই না আমরা,
এখন গলা দিয়ে কেমন চিঁ চিঁ আওয়াজ বেরোয়।
শুধু মাঝে মাঝে কয়েকজন আসে,
আমাদের রক্ত নিয়ে যায়।
খুব শুদ্ধ নাকি তা।
যখন আমি কথা বলতে পারতাম,
তখন একবার খাবার চেয়েছিলাম,
বলেছিলাম,"আর কিছু বলব না,একদম প্রশ্ন করব না।"
কিন্তু ওরা দেয়নি।
বলেছিল,"ছোটলোকেদের বিশ্বাস করতে মানা।"
আমি চুপ করে ছিলাম,কিছু বলিনি,
কারণ আমি তো শুধু আমার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে চেয়েছিলাম আর কিছুদিন,
যাতে ওদের কর্তার টুঁটি ছিঁড়ে নিতে পারি।
আমি এখনো বিশ্বাস করি,
আমি আবার বেরিয়ে বাইরে,
আগুন জ্বালিয়ে দেব প্রতিটি স্থাপনায়,মিনারে,মূর্তিতে ওদের,
অবসান করব রাতের,
ওদের চিতার আগুনে।
কিন্তু তারপর!
আমিও জানি না আর।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।