আমি কতগুলি তথ্য দেব, যে গুলির সোর্স হচ্ছে National Family Health Survey Round 6। ১. প্রতিদিন ভারতে ১০০ এর উপর নাবালিকা ধর্ষনের অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। এর বাইরে রয়েছে বিনা দায়ের করা ধর্ষন বা চাপ দিয়ে মিটিয়ে নেওয়া ঘটনা।
২. সারা দেশে ডিভোর্সের ঘটনা মাত্র ১%।
৩. মহিলারা বাড়িতে যে কাজ করেন যেমন রান্না করা, ঘর মোছা, বাসন মাজা ও সারা সংসারের সাধারণ দেখভাল এই কাজগুলি টাকায় কনভার্ট করলে কয়েক লক্ষ হাজার কোটি টাকা হবে।
৪. এই সার্ভে অনুযায়ী ৪৫% মহিলা ও ৪৪.২% পুরুষ মনে করেন বিবাহিত জীবনে মহিলাদের মার খাওয়া স্বাভাবিক। আশ্চর্যের যে এ ব্যাপারে মহিলারা পুরুষদের থেকে এগিয়ে। ৩২% মহিলা ও ৩১% পুরুষ মনে করেন যে, শ্বশুর – শ্বাশুড়ির অপমান করলে মহিলাদের মার খাওয়া উচিৎ। এই সার্ভে অনুযায়ী ১১% মহিলা ও ১০% পুরুষ মনে করেন, মহিলা যদি স্বামীর সঙ্গে যৌণ মিলনে আগ্রহী না হন তাহলে তিনি মার খাওয়ায় যোগ্য। ২০১৫-২০২০ অবধি এই সংখ্যা বেড়ে গেছে।
৫. ১২ ক্লাস অবধি পড়েছে এমন ৩২%মহিলা ও ৩১% পুরুষ গার্হস্থ্য হিংসা কে সমর্থন করেন।
৬. হিন্দু শাস্ত্র (মানুস্মৃতি) অনুযায়ী মহিলারা অন্যায় করলে মার দেওয়া টা যুক্তি সম্মত। তাঁদের দড়ি বা বাঁশের লাঠি দিয়ে মারার বিধান আছে। এই জন্য ভারতে বিবাহিত মহিলাদের ২৫%থাপ্পড় খাবার অভিযোগ এনেছেন। “থাপ্পড়” মুভি তাপসী পান্নু অভিনীত ছবির কথা পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।
৭. সারা দেশে যত মহিলা অত্যাচারিত হয়েছেন তার মধ্যে রিপোর্ট করেছেন মাত্র ১৪% ।
৮. ১২২২ টি অভিযোগ প্রতিদিন করা হয়েছে মহিলাদের দিক থেকে ২০২২ সালে।
৯. ১৮টি পনের জন্য মৃত্যু প্রতিদিন ২০২২ সালে।
১০. ২০২২ সালের NCRB DATA অনুযায়ী ছেলেদের থেকে বিবাহিত মহিলারা ৫০০০ জন বেশি আত্মহত্যা করেছেন।
উপরের তথ্যগুলি যথেষ্ট মহিলাদের অবস্থা বোঝার জন্য। ফুলকির মত পরিণতি যাতে বাকিদের না হয়, সেই জন্য সেই সব শিক্ষিত মেয়েদেরই এগিয়ে আসতে হবে এবং দ্বায়িত্ব নিতে হবে আগামী দিনের মেয়েদের পন, গার্হস্থ্য হিংসা, ধর্ষণ ও সামাজিক ন্যায়ের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের।
যদি তাঁরা পুরুষদের উপর নির্ভর করে থাকেন তাহলে উপরে বর্ণিত পরিস্থিতি বদলাবে না!! নিজেদের মুক্তির দাবিতে নিজেদেরই লড়াই করতে হবে। মেয়েদের দেবী দুর্গা সাজিয়ে অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলার সময় এসে গিয়েছে। এখন তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।