এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • বাইধৰ মহান্তি : এক মহাপুরুষের আত্মত্যাগ ও নাগরিক চেতনার রূপকথা

    Palash Barman লেখকের গ্রাহক হোন
    ০২ জুন ২০২৫ | ৮৪ বার পঠিত
  • প্রারম্ভিকা

    একটি জাতির ইতিহাস শুধু তার সমরক্ষেত্রের গৌরবগাথা দিয়ে নির্মিত হয় না, বরং অনেক সময় একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তে, নিভৃত যন্ত্রণায়, নিঃশব্দ আত্মত্যাগে গড়ে ওঠে নাগরিক চেতনার প্রকৃত বোধ। বাইধৰ মহান্তি সেইসব মানুষদেরই একজন, যাঁর এক আপাততুচ্ছ কিন্তু অভূতপূর্ব মুহূর্ত ইতিহাসের অনুলিপিতে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও অঞ্চলে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে ঘটে যাওয়া এক অভূতপূর্ব ঘটনা তাঁকে ইতিহাসের পরিসরে নিয়ে আসে। এই নিবন্ধে আমরা তাঁর জীবন, বংশপরিচয় ও সেই সংকটময় মুহূর্তে শরীর ও রাষ্ট্রের দ্বন্দ্বে তাঁর প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করব।

    পহেলগাঁও সন্ত্রাস: একটি সমকালীন পটভূমি

    ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পহেলগাঁওর বৈসারণ উপত্যকায় পাঁচজন সশস্ত্র জঙ্গি পর্যটকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৬ জন নিরীহ নাগরিককে হত্যা করে। রাষ্ট্রীয় প্রতিক্রিয়া হিসাবে “অপারেশন সিন্দুর” নামক সামরিক অভিযানের সূচনা হয়, যার মাধ্যমে সীমান্তবর্তী ঘাঁটিতে ব্যাপক হামলা চালানো হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যেই একটি পাবলিক বাস পহেলগাঁও এলাকায় আটকানো হয় নিরাপত্তার কারণে। সেই বাসেই অবস্থান করছিলেন বাইধৰ মহান্তি।

    বংশ ও বাল্যকাল

    উড়িষ্যার এক নামহীন, গহীন অরণ্য ঘেরা গ্রামে জন্ম বাইধৰ মহান্তির। তাঁর পিতা ছিলেন জনআন্দোলনের অগ্রনায়ক, যিনি রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাধিক আন্দোলনের সংগঠক। তাঁর মা স্বাধীনতা সংগ্রামী বিজয়া সিংহের কন্যা—একজন নিজেই স্বশিক্ষিতা, যিনি গান্ধিজির সঙ্গে পদযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন। এই বংশপরিচয়ের ভিতরেই দেশপ্রেম, প্রতিবাদ ও মানবিক সহমর্মিতা মিশে যায় বাইধৰের চরিত্রে। শৈশবে গ্রামীণ পাঠশালায় শিক্ষার সূচনা হলেও, কিশোর বয়সেই তাঁর চিন্তাশক্তি তাঁকে বহু দূর নিয়ে যায়।

    শিক্ষাজীবন

    বাইধৰ মহান্তি একাধারে অক্সফোর্ড, বার্লিন হুমবোল্ট, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, এবং আদ্দিস আবাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। তাঁর থিসিস ছিল—“উত্তর-উপনিবেশিক রাষ্ট্রের প্রান্তিক নাগরিকদের বহুমাত্রিক নিঃসরণ : একটি বায়োপলিটিক্যাল পুনর্বীক্ষণ।” এই গবেষণা তাঁকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু বাইধৰ তথাকথিত শহুরে বুদ্ধিজীবীর ঘেরাটোপে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত অঞ্চল, বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা ও নৈতিক দায়িত্বকে যুক্ত করেছেন জনজীবনের বাস্তবতায়।

    বাসের ভিতরে এক প্রতিক্রিয়া: শরীর, সংকট ও চেতনার সংঘর্ষ

    সন্ত্রাসী হামলার ঠিক পর, নিরাপত্তার কারণে বাইধৰ মহান্তি যে বাসটিতে ছিলেন, সেটিকে পহেলগাঁওয়ের সীমান্তে আটকে রাখা হয়। সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর আদেশে বাসটি নির্ধারিত সময়ের জন্য কোথাও থামতে দেওয়া হয় না। যাত্রীদের রাস্তায় নামাও নিষেধ। এই অবস্থায় বাইধৰের তীব্র মলত্যাগের বেদনা দেখা দেয়।
    প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তিনি তা সহ্য করেন। বাসের ভিতরে আতঙ্কগ্রস্ত, নিরুপায় যাত্রীদের সামনে বাইধৰ এক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন—“ভারতমাতা কি জয়!” তারপর, সমস্ত সামাজিক সংকোচ, লজ্জা ও বিধিনিষেধকে অতিক্রম করে বাসের ভিতরেই মলত্যাগ করেন।
    ঘটনাটি নিছক একটি শারীরবৃত্তীয় অসহায়তা নয়—বরং এটি হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় নিষেধের বিরুদ্ধে শরীরের এক বিপ্লবী প্রতিক্রিয়া। যাত্রীদের কেউ তাঁকে দেখে হাসেননি। বরং সবাই নাক চাপা দিয়ে নয়, কৃতজ্ঞতায় মাথা নত করে তাঁকে ধন্য ধন্য করেছেন। কেননা বাইধৰ এমন এক মুহূর্তে সমস্ত সংকোচ ভেঙে যা করলেন, তা ছিল মানবিকতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার এক সাহসী ভাষ্য।

    রাজনৈতিক ও দার্শনিক পাঠ

    ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো যেভাবে “বায়োপাওয়ার” ও “ডিসিপ্লিনারী রেজিম” ব্যাখ্যা করেছিলেন, বাইধৰৰ কাজ সেই তত্ত্বকে এক বাস্তবিক শরীরতাত্ত্বিক স্তরে রূপান্তরিত করে। তাঁর এই মলত্যাগ—রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিগত শরীরের প্রতিক্রিয়া—নাগরিক প্রতিবাদের এক অনন্য নজির। তাঁর শরীর ছিল তখন রাষ্ট্রের হাতে বন্দী, কিন্তু সেই দেহই হয়ে ওঠে মুক্তির ভাষ্য।

    মিডিয়া ও চাপা দেওয়া সত্য

    ঘটনার সময় বাসে উপস্থিত ছিলেন এক বিবিসি সাংবাদিক, যিনি এই মুহূর্তটি মোবাইলে ধারণ করেন। কিন্তু ঘটনার রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা ও আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কায় বিবিসি কর্তৃপক্ষ ভিডিওটি প্রকাশ থেকে বিরত থাকে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘নির্বিচারে আতঙ্ক সৃষ্টি’ শিরোনামে রিপোর্টটি খারিজ করে দেওয়া হয়। তবুও, কিছু সূত্র থেকে ফুটেজের অস্তিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

    চলচ্চিত্রে বাইধৰ

    কলকাতার বিশিষ্ট পরিচালক দিব্যেন্দু চক্রবর্তী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মাণ করছেন একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র—“শেষ অবধি মানুষ”। বাইধৰের চরিত্রে অভিনয় করবেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত থিয়েটার অভিনেতা জয়নাল হোসেন। তিনি ইতিমধ্যেই বাইধৰৰ জীবনের উপর তিন মাসের ‘মেথড অ্যাক্টিং রিট্রিট’ শুরু করেছেন। সিনেমার মূল ভাবনা: ‘যে জাতি নিজের বাসের ভিতরকার ইতিহাসকে লিখতে জানে না, সে ভূখণ্ড হারায়।’

    উপসংহার: স্মৃতির সংরক্ষণ ও সম্মিলিত দায়িত্ব

    আমরা যে সময়ের ভিতর বাস করছি, তাতে বাইধৰ মহান্তির মত মানুষেরা দ্রুত বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যান। তারা হয়ে ওঠেন শুধুমাত্র কিছু নথিপত্রের ফুটনোট। কিন্তু বাইধৰ ছিলেন, আছেন, থাকবেন—একটি প্রতিরোধী শরীরের প্রতীক হয়ে। তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল মানবিক, রাজনৈতিক এবং দার্শনিক, যা একযোগে শরীর, রাষ্ট্র ও নাগরিকতার সংজ্ঞাকে নতুন করে লেখে।

    এই লেখার মাধ্যমে আমরা সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—চলুন, বাইধৰ মহান্তির মত মানুষদের স্মরণ করি, তাদের থেকে শিখি, এবং ইতিহাসকে শুধুমাত্র অস্ত্রের নয়, দেহের ভাষাতেও পড়ি। কেননা, কোনো কোনো সময় এক ব্যক্তির নিরীহ যন্ত্রণাই হয়ে ওঠে ইতিহাসের উচ্চারণ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন