এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • এক অবিবাহিতার গল্প

    Partha Neogy লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮৭ বার পঠিত
  • সেদিন প্রিয়া একান্ত অবসরে নিজেকে নিয়েই ভাবনায় ডুবে গিয়েছিলো, আসলে ওকে অবাক করছিলো ওর এইরকম অফুরান অবসর সময়েও ওর বিবাহিতা বান্ধবীদের কর্মব্যস্ততা। প্রতিটি মানুষ ভালো তখনই থাকে যখন তারা নিজেকে ভালো রাখে। কিন্তু ওর বান্ধবীরা তো নিজের কথাই ভাবার সময় পায় না, ভালো থাকার কথা তো দূর।
     
    তখনই প্রিয়ার মনে পড়ে গেলো বহু পুরোনো দিনের কথা -
    তখন ও সদ্য কলেজ শেষ করেছে আর সাথে সাথে একটি চাকরিও পেয়ে গেছে। তখন ওর অনেক স্বপ্ন দুচোখ জুড়ে নিজেকে নিয়ে, জীবনকে নিয়ে ইত্যাদি। বাড়ি ফেরার পথে ও লক্ষ্য করে দেখেছে বিশেষ কেউ একজন যেন ওর প্রতীক্ষায় থাকে, ওর ফেরার অপেক্ষা করে।এই কথাটা মনে হলে ওর মনটা এক অদ্ভূত ভালো লাগায় ভরে ওঠে!
    এরকমই একদিন অফিস ফেরৎ বাসে ওর সামনে এক বয়স্কা ভদ্রমহিলা এসে দাঁড়ালে, প্রিয়া উঠে ওনাকে বসতে জায়গা ছেড়ে দেয় আর তারপর দু - এক কথায় গল্পের শুরু। ওর সবকথা শোনার পরে, ভদ্রমহিলা নাবার আগে ওকে বলেন, " আজ তোমাকে দেখে আমার নিজের মেয়ের কথা মনে হলো, ও বিয়ে করতে চায়নি। আমাদের মন রাখতে বিয়ে করলো, কিন্তু আমি বুঝি সব থেকেও ও ভালো নেই, তাই জীবনটাকে বুঝে খরচ করো। " এই বলে উনি নেবে গেলেন।
     
    সেদিন প্রিয়া অনেক ভেবেছিলো, ওর বিয়ে করা বান্ধবীদের জীবন দেখেছিলো - ওদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই, নিজস্ব কোন পরিচিতি নেই, ভালোবাসাও সংসারের যাঁতাকলে চাপা পড়ে কোথায় হারিয়ে গেছে, এখন শুধুই রোবট বা দম দেওয়া পুতুলের মত সংসার ঠেলে যাচ্ছে।
     
    কয়েকদিন পর বৃষ্টিভেজা এক রাতে, প্রিয়ার অফিস থেকে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিলো। প্রিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে দেখলো চারিদিক ফাঁকা ও নিস্তব্ধ, শুধু দূরে ছাতা মাথায় একটি চেনা মুখ। ওকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে 
    পাশে এসে বললো, " রাস্তাটা একদম ফাঁকা, যদি একটু এগিয়ে দি তাহলে আপত্তি হবে কি? এটা আমার শান্তির জন্য। " প্রিয়া বললো, " আপত্তি কেন হবে? যে ভালোবাসে সে কখনও ভালোবাসার মানুষের ক্ষতি চায় না। এটা আমি জানি, উপল। তাই এই ভালোবাসাটাই সম্পদ হয়ে থাক আমাদের জীবনে, কোন চাওয়া - পাওয়া নয় - শুধুই ভালোবাসা। " উপল এক গভীর দৃষ্টিতে ওর চোখে চোখ রেখে বললো, " ঠিক বলেছো তুমি "। সেদিন উপল বাড়ি অবধি পৌঁছে দিয়ে চলে যাবার পরে প্রিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ও বিয়ে করবে না।
     
    হঠাৎ ও ওর ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে দেখলো, সন্ধ্যে হয়ে গেছে। বেরোনোর জন্য ড্রেস পড়ে নিলো, তারপর হাঁটতে হাঁটতে প্রিয়া বাসস্ট্যান্ডের সামনে এসে দাঁড়ালো, দেখলো চেনা একজোড়া চোখও ওকে দেখে হাসলো, তারপর সেও রওয়ানা দিল তার গন্তব্যে। প্রিয়াও হেসে বাড়ির পথে ফিরতে ফিরতে ভাবতে লাগলো উপলটার চেহারায় বয়সের চাপ পড়লেও হাসিটা সেই আগের মত আছে।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • :|: | 2607:fb90:bdd5:1cfe:d41e:4d5b:14b9:***:*** | ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:২২539289
  • বিশেষ ভাবে বহন করাই তো বিবাহ করা। তা এনারা যেহেতু আমাদের পরিচিত রিচুয়ালগুলো না করলেও গন্ধমাদনটি বহন করেই চলেছেন তাই ভাবগত ভাবে এইটি কোনও অবিবাহিত/তা-র কাহিনী বলে মনে হচ্ছেনা। 
    গল্পের নামটি ঠিক করতে হবে মনে হয়। 
  • Partha Neogy | ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:৫১539319
  • মাননীয়, প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আমার ক্ষুদ্র প্রয়াসের মূল্যায়ন করার জন্য। আপনি সঠিকভাবে নির্দেশ করেছেন বিশেষভাবে বহন করাকে, কিন্তু সমাজ এটাকে সামাজিকভাবে বিশেষ বহন হিসাবে ধরে না। আমরা সমাজবদ্ধ, তাই নামকরণ অবিবাহিতাই রাখা হয়েছে। আশাকরি আমার এই ব্যাখ্যা আপনাকে সন্তুষ্ট করবে, ধন্যবাদান্তে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন