তার আগে দরকার বামেদের থেকে একটা কাউন্টার ন্যারেটিভ। দেখুন, পঞ্চাশের দশকে কংগ্রেসের ন্যারেটিভ ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐতিহ্য এবং দেশকে গড়ে তোলা।
ষাটের দশকে বামেদের প্রভাব শহরে প্রকট, কিন্তু গ্রামের ভোটে কংগ্রেস ক্ষমতায়।
৬৬ সালের খাদ্য আন্দোলন থেকে গ্রামে বামেদের ভিত মজবুত হল।
আর এমার্জেন্সি গোটা দেশে কংগ্রেসের বিকল্প খোঁজার হাওয়া দিল।
কিন্তু অটোমেশন এবং শিল্প নিয়ে ছুঁতমার্গ, ট্রেড ইউনিয়ন বলতে শুধু সংগঠিত সেক্টরের ইউনিয়ন ও আন্দোলন। বামেরা গুরুত্ব দিলেননা যে দেশের শ্রমশক্তির বেশিরভাগ ইনফর্ম্যাল সেক্টরে নিয়োজিত। তাদের নিয়ে কোন স্পষ্ট দৃষ্টিকোণ এবং কর্মসূচী চোখে পড়েনি।
কম্পিউটার এবং নিও লিবারেলিজম দেশে পরিষেবা সেক্টরে পরিবর্তন আনলো, এক নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণী গজিয়ে উঠল। গুরুচণ্ডালির সবাই তাই, --কেউ কেউ উচ্চ মধ্যবিত্তও বটেন।
নতুন টেকনোলজি এবং নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সঙ্গে বামেরা কোন আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন নি।
এটা বঙ্গের বাইরে আরও প্রকট।
যেকোন বাম সম্মেলনে গেলে দেখা যাবে পাকাচুলের আধিক্য।
আন্না হাজারের আন্দোলনের পর মোদী এলেন করাপশন বিরোধী এবং দেশে আচ্ছে দিনের ন্যারেটিভ নিয়ে। তার সঙ্গে জুড়ল হিন্দু অস্মিতার মশলা এবং মুসলিম-ঘৃণা।
অনেকটা ১৯২৬এর জার্মানির ছবি।
এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে চিরাচরিত সাম্প্রদায়িকতা আর একচেটিয়া পুঁজি নিয়ে ন্যারেটিভে চিঁড়ে ভিজবে না। চাই নতুন ন্যারেটিভ।
খেয়াল করছি, রাহুল গান্ধী নতুন ন্যারেটিভ তৈরির চেষ্টা করছেন।
এক, ইডিওলজিক্যাল লেভেলে সোজাসুজি আর এস এসকে চ্যালেঞ্জ করছেন। মহারাষ্ট্রের বুকে দাঁড়িয়ে সাভারকরকে সমালোচনা করছেন।
আবার আর্থিক বিকাশ এবং ক্ষমতায়নের প্রশ্নে কৃষকের এম এস পিকে লীগ্যাল করা , ইউনিভারসাল বেসিক ইনকাম নিয়ে চিন্তাভাবনা নতুন পথ দেখাচ্ছে।
বামদলের এ'জাতীয় কংক্রিট ভাবনা দরকার। বিকল্প বয়ান দরকার।
আর বিজেপির যেকোন নীতি গোটা দেশকে প্রভাবিত করে। টিমসির শুধু বাংলাকে।
কাজেই হুতোর সঙ্গে একমত--বিজেপি অনেক বড় বিপদ, সেই আলেকজেন্ডার আর ডাকাতের গল্প!
অবশ্যই বামেরা আসলে বেশি খুশি হব।