এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • টোপান - ২

    পাগলা গণেশ লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৪ জুলাই ২০২৪ | ৫০৫ বার পঠিত
  • | |
    বাপন তাড়াতাড়ি কোনোরকমে ভাতটা নাকে মুখে দিয়ে দৌড় দিল। কি ফবটা ক্লিক করতেই গ্যারেজ থেকে গাড়িটা বেরিয়ে এল। কেন ও কাল রাতে ওদের সাথে গেল!

    বাপন সাধারণত খুব একটা নিয়ম ভাঙে না। কী দরকার ফাইন দেওয়ার। ও ঠিক পাঁচটায় ওঠে, ব্যায়াম কমিউনিটিতে গিয়ে ব্যায়াম করে ফিরতে ফিরতে প্রায় সাতটা বাজে। এসে একটু টু ডু লিস্টটা ঝালিয়ে নেয়। যদিও ওর অ্যাসিস্ট্যান্ট সব মনে করিয়ে দেয়, তবু একটু প্রস্তুতি থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয়। তারপর প্রাতরাশ বানিয়ে খেতে খেতেই দুপুরের খাবার বানিয়ে নেয়। খাবার খাওয়া হয়ে গেলে স্নান করে ফিরে আসে যখন, প্রায় সাড়ে নটা বেজে যায়। দশটা নাগাদ ও অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়ে। ওর মাঝে মধ্যে মনে হয়, একটা ফিজিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকলে ভালো হতো। মানুষ অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখা তো বেআইনি। ওই যে উদ্বাস্তু টেরাডাইটরা আছে, ওদের রাখা যায়, কিন্তু ওরা বড্ড নোংরা, একদম নিয়মকানুন মানে না, তার উপরে চুরি করে, নেশা করে। ছ‍্যাঃ, ভাবলেও ঘেন্না করে। তাই ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। খারাপ নয়, তবে ফিজিক্যাল হলে এই কাজগুলো করে দিতে পারত। তবে রুদ্রদমন বাচস্পতির অশেষ দয়া যে তিনি ডিজিটালটা বাই ডিফল্ট দেন।

    কাল রাতে কাজের শেষে সৌম্য, রতন আর হাশেম ধরল। বলল, "ভাই আজ খাওয়াবি চল। "ও পারতপক্ষে ওদের সাথে মেলামেশা করে না। কিন্তু একই জায়গায় কাজ করতে গেলে টুকটাক কথা তো বলতেই হয়। তাতেই ওরা পেয়ে বসেছে। ওরা টোপানে থাকার যোগ্যই নয়। ওরা টেরাডাইটদের সাথে মেলামেশা করে। ওদের যত বদগুণ সব রপ্ত করেছে। রুদ্রসংহিতার যে দৈনিক রুটিন আছে, সেসব মানে না। সকালে উঠে না, ব্যায়াম করে না, স্বাস্থ্যকর খাবার খায় না, রাত্রে তাড়াতাড়ি শোয় না, খাবার খাওয়ার যে বাঁধা সময় তাও মানে না, এমনকি প্রতি মাসে যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক, তাও মানে না। ওর এসব কথা ভাবলেও মনে হয়, সব কটাকে খুন করি।

    কিন্তু রুদ্রদমন বাচস্পতি বলেন, "সবসময় আইন মেনে চলবে। রুদ্রসংহিতার প্রতিটি আদেশ যে মেনে চলবে, সেই প্রকৃত টোপানসন্তান। কোনো টোপানসন্তানের যদি একবিন্দু রক্তও ঝরে, তার পিছনে যেই থাকুক না কেন, আমি তার শাস্তি সুনিশ্চিত করব। "বাপন সাবালক হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর 'বিশ্বস্ত ও নিয়মানুবর্তী টোপানসন্তান' সার্টিফিকেট পেয়ে আসছে।

    রুদ্রদমন বাচস্পতি হলেন 'থিওস'। যে যাই করি না কেন, তিনি সব দেখতে পান। সৌম্যদের প্রতিদিনের অর্ধেক মজুরীই নিয়ম না মানার জন্য যায়। ওরা যা অন্যায় করে, তাতে তিনদিনের মজুরী কেটেও একদিনের জরিমানা আদায় করা যেত না। কিন্তু থিওসের অশেষ দয়া যে তিনি অর্ধেক কাটেন। বাপনের মনে হয়, "পুরোটাই কেটে নেওয়া উচিত। কারণ ওরা বাকি অর্ধেকটা তো সূরা আর মাদী টেরাডাইটদের পেছনে খরচ করে দেয়। তার থেকে বাকি অর্ধেকটা যদি থিওস জমা রাখেন, তাহলে পরে ওদের হাতে কিছু থাকবে। নইলে ওরা তো শেষ হয়ে যাবে!

    অফিসে পৌঁছে দেখল কাজ শুরু হয়ে গেছে। ও  মেডুসার কাছে গিয়ে যখন দাঁড়াল, ওকে দেখেই মেডুসা অবাক হয়ে তাকাল। ও উত্তর দিল, "কাল একটু শুতে রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই....."ও এর কথাটা শেষ করল না। কাঁধ ঝাকাল। মেডুসা আরো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, "এমন তো আগে কখনো করেননি!"
    বাপন-"কালকে একটু সুরা...."এবারেও শেষ করল না।
    মেডুসা মুচকি হাসল, বলল, "বুঝেছি। তাড়াতাড়ি যান, কাজ শুরু হয়ে গেছে। "

    মেডুসা হল একটা অ্যান্ড্রয়েড। প্রতিটা ফ্যাক্টরিতে ডিএনএ স্ক্যানিংয়ের কাজ করে। ওদের খুব রূপসী আর মানুষসুলভ করা হয়েছে যাতে বোর না লাগে। তবে টেরাডাইটরা নাকি বলে ওদের দেখলেই ভয় লাগে। আসলে ওরা যখন এআই  বানিয়েছিল তখন যে ডেটা ফিড করেছিল তা ওদের নিজেদেরই ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি। যেহেতু ওরা নিজের মোটেও নৈতিক দিক থেকে উন্নত নয়, তাই ওদের অ্যান্ড্রয়েডরাও ওদের মতো হয়ে গিয়েছিল। তারপর এক বিরাট যুদ্ধ হয়, টেরাডাইটদের সাথে অ্যান্ড্রয়েডদের। তাতে ওরা হেরে যায়। এই টোপানের মানুষরাও নাকি টেরাডাইটদেরই বংশধর। কিন্তু আজ থেকে প্রায় দুহাজার বছর আগে ওরা এখানে চলে আসে। নিজেদের সমাজ, বিজ্ঞান, অর্থনীতি বানায়। যেহেতু ওরা টেরাডাইটদের খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল, তাই ওদের নেতা পুরুষোত্তম দিগ্বিজয় সেসব দিকগুলো মনে রেখে এই গ্রহে সমাজ গড়ে তুলতে আরম্ভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি পথ দেখাতে এসেছিলেন সেদিনের মানুষদের। নাহলে টোপান সন্তানদের অবস্থাও টেরাডাইটদের মতো হত। এখনকার যে থিওস আছেন রুদ্রদমন বাচস্পতি, তিনি ওই পুরুষোত্তম দিগ্বিজয়েরই অধস্তন বংশধর।

    বাপন অফিসে ঢুকেই পড়ল ম্যানেজারের সামনে। তিনিও অবাক হয়ে তাকালেন তার দিকে। বললেন, "বাপনবাবুর আজ এত দেরি যে!"গলায় অবাক হওয়ার আভাস। বাপন মাথা ঝুঁকিয়েই বলল, "মানে স্যার, কালকে একটু রাত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া হয়েছে তো, তাই...."
    ম্যানেজার-"শুনলাম তুমি নাকি ব্যায়াম করতেও যাওনি?তারপর তুমি নাকি এখন টেরাডাইটদের উপর বেশ সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েছ?"
    বাপন অবাক হয়ে তাকায়।
    ম্যানেজার তার মনের কথা বুঝতে পেরে বলেন, "তুমি তো সৌম্যদের সাথে ঘুরছ?"
    বাপন-"ঘুরিনি, কালকেই শুধু ওরা একটু টানাটানি করল তাই। "
    ম্যানেজার-"ও কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে তা জানো না বুঝি?"
    বাপন-"সে তো জানি। কিন্তু আমি তো টেরাডাইটদের সাথে মিশি না। "
    ম্যানেজার-"ওই একই হল। যাও এখন কাজে যাও। "
    বাপন চলে গেল। রাগ করা উচিত। কিন্তু তাতে মনে বিরোধিতার ভাব এসে যায়। বিশ্বস্ততা চলে গিয়ে বিদ্রোহ দানা বাঁধে। আর তাতে ওই টেরাডাইটদের মতো অবস্থা হবে। তাই ও আর রাগ পুষে রাখল না। নিজের ডেস্কে গিয়ে কাজের মধ্যে ডুবে গেল।

    ওর ঘোর ভাঙল দুপুরের খাবারের ঘন্টা বাজতে। এখানে ঠিক দেড়টায় মধ্যাহ্নভোজনের ঘন্টা পড়ে। আধঘন্টা সময়, আবার দুটোর সময় কাজ শুরু হয়।

    ওদের কোম্পানি সৌম্যলডিয়াতে(Soumyaldea) অবস্থিত। সৌম্যলডিয়া শহরে অ্যাডভান্স ফিজিক্স সম্বন্ধীয় পড়াশোনা, গবেষণা এবং কোম্পানিগুলোর সহাবস্থান। এসব থিওস পুরুষোত্তমের দূরদৃষ্টির ফল। তিনি পৃথিবীতে দেখেছিলেন, অ্যাকাডেমিক স্থাপনাগুলো একজায়গায়, রিসার্চের জন্য অন্য শহরে যেতে হয়, কোম্পানিগুলো আর এক জায়গায়। তাতে সময় তো ব্যয় হয়ই, পরিবহনে খরচ বাড়ে, কর্মচারী জোগাড় করতে কালঘাম ছুটে যায়, সরকার কোনো টার্গেটেড পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে না। ফলস্বরূপ এফিসিয়েন্সি কখনোই একশো শতাংশ হয় না। তাই তিনি শুরু থেকেই প্রতিটা ক্ষেত্রের জন্য ডেডিকেটেড শহর তৈরি করার পরিকল্পনা করেন।

    বাপনের কোম্পানি সোলার সম্বন্ধীয় জিনিসপত্র বানায়। যেমন সোলার অ্যাকুমুলেটর, সোলার হইড্রোজেন জেনারেটর, সোলার ডিস‍্যালিনেশন প্ল্যান্ট, সোলার অক্সিজেন জেনারেটর, সোলার স্যাটেলাইট ইত্যাদি। বাপন অবশ্য বিজ্ঞান নিয়ে নাড়াচাড়া করে না, ওর কাজ অ্যাকাউন্টস।

    অনেক কাজ পড়ে আছে। ওর কাজ সারতে সারতে আটটা-নটা বাজবে। কিন্তু থিওসের কড়া হুকুম কাউকে আটঘন্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। তাই ছটার ঘন্টা বাজতেই ও উঠে পড়ল। বাকি কাজ পরে ঘরে গিয়ে করবে। তারপর দিদির বাড়ি যাবার নেমন্তন্ন আছে। দিদির মেয়ের জন্মদিন, রাস্তায় কিছু কিনে নিতে হবে।

    দিদির এই মেয়েটা যখন জাইগোট অবস্থায় ছিল তখন বাধ্যতামূলক ডিএনএ সিকুয়েনসিং করাতে গিয়ে ধরা পড়ে Dlx 5/6 জিন নেই। দিদি আর জামাইবাবুর মাথায় হাত পড়ে যায়। এত কষ্ট করে একটা মেয়ে, তার আবার নিচের চোয়াল হবে না!

    দিদি কাজ করত এলিম্যান্টিয়াতে। গুহ নিউক্লিয়ার ইনস্টিটিউটে সিনিয়র রিসার্চার। একদিন প্লাজমা গান নিয়ে কাজ করছিল একজন ইন্টার্নের সাথে। সে সেদিন প্রেমিকার সাথে ঝগড়া করেছিল। মদও খেয়েছিল, পরে জানা গিয়েছিল। গোটা স্ত্রীজাতির প্রতিনিধি হিসেবে তখন তার সামনে ছিল দিদি। কাজ করতে করতে গান সোজা তাক করেছিল দিদির দিকে;তারপর ট্রিগার টেনে দিয়েছিল। দিদি প্রায় ছমাস কোমায় ছিল। ডাক্তারদের প্রাণপাত লড়াইয়ে দিদি বেঁচে যায়, কিন্তু জরায়ু নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

    তারপরে ওরা ঠিক করে আর্টিফিসিয়াল গর্ভ ভাড়া নেবে। তাতেও বারবার ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেবে ভাবছে, এমন সময় একদিন ডাক্তার ফোন করে বলেন, "আপনার সন্তান এখন পরবতী পদক্ষেপের জন্য তৈরি। দিদির যেহেতু ডিম্বাশয়দুটোও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই জেনেটিসিয়ানরা দেহকোষ থেকে ডিম্বাণু তৈরির চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বয়সের সাথে সাথে দেহকোষের ডিএনএ ড্যামেজ হতে থাকে, ফলে প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছিল। শেষে এক ইন্টার্নের কথামতো বোনম্যারো নিয়ে চেষ্টা করাতে সাফল্য এল।

    তারপর যখন ডাক্তার বলেন, Dlx 5/6 জিন নেই, তখনই জামাইবাবু তার এক বন্ধুকে ফোন করেন। তাঁর নাম অনান্তনাগ পুরকায়স্থ। টোপানের সেরা জিন বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি জেনেটিক মডিফিকেশন নিয়ে গবেষণা এবং অপেরাশন করেন। তার একটা কোম্পানিও আছে বায়োভিলে, নাম 'জিনি'। কোম্পানি জার্মলাইন এডিটিং, সোমাটিক জিন এডিটিং, স্টেম সেল রিপ্লেসমেন্ট ইত্যাদি পরিষেবা দেয়। ওদের সাফল্যের হারও ঈর্ষণীয়, প্রায় ৯৩.২৭ শতাংশ।  

    সে ই বলেছিল, "চিন্তা নেই। তোর তো এই জাইগোট ফেজ। আমি তো বুড়োদের স্টেম সেল রিপ্লেসমেন্ট পর্যন্ত করি। তারা ঠিক হয়ে যায়!তুই চিন্তা করিস না। তাড়াতাড়ি নিয়ে চলে আয়, আমি সব ব্যবস্থা করে রাখছি। "

    সেইমতো নিয়ে যাওয়া হয়। সফলভাবে কাজ হয়েও যায়। ওখানেই গর্ভ ভাড়া নেওয়া হয়, তারই কোম্পানিতে। চিন্তার কিছু নেই;কিন্তু তবু এত বাধা-বিপত্তির পরে ভয় তো লাগেই। ভাবতেই অবাক লাগে সেই মেয়ে আজ এত বড় হয়ে গেল।

    বাপন যখন গিয়ে দিদির বাড়ি পৌঁছল, তখনও সব আমন্ত্রিতরা এসে পৌঁছাননি, কিছু কিছু সাজানোর কাজ এখনো চলছে। দিদিদের বাড়িটা সৌমালডিয়ার সিভিলিয়ান এলাকার প্রায় মাঝামাঝি। বেশ বড়ো বহুতল বাড়ি। দিদি-জামাইবাবু কম তো কামান না। বেশ সুন্দর সাজানো-গোছানো, আজকে তো আবার অনুষ্ঠান আছে, তাই আরো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। সবাই একটু আধটু সেজেছে। দিদি এমনিতে খুবই সুন্দরী, তার উপরে হালকা বেগুনী রঙের একটা রেশমের শাড়ি পরেছেন, মুখে হালকা প্রসাধন, একেবারে পরমাসুন্দরী লাগছে। জামাইবাবুও খুবই হ্যান্ডসাম, টিকালো নাক, আয়ত চোখ, চওড়া কপাল, মাথার সামনে থেকে চুলের রেখা পেছন দিকে যাওয়ার সময় একটা স্পষ্ট দৃশ্যমান 'ভি' তৈরি করেছে, যাতে গ্রিক দেবতাদের মতো লাগে। তার সাথে পাতলা ঠোঁট, সাজানো সুন্দর দাঁতের সারি, চওড়া চোয়াল, দেখলেই মনে হয়, এর থেকে সুন্দর বোধহয় কার্ত্তিকও নয়। মেয়েরা তো পারলে হামলে পড়ে। কিন্তু আশ্চর্যের কথা, জামাইবাবুর এখনো পর্যন্ত চরিত্রস্থলনের কোনো খবর কেউ পায়নি। বেশ আশ্চর্যই লাগে, নিশ্চিন্ত হতে গিয়ে মনে হয়, "নাহ, হিসাব মিলছে না। "

    আজকে দিদি-জামাইবাবু ব্যবস্থা বেশ জব্বর করেছেন। মাছ, মাংস প্রতিটির খান পাঁচেক করে পদ, নিরামিষ পদ খান দশেক, মিষ্টি আছে তিরিশ-চল্লিশ রকমের, পানীয় যে কত রকমের তার হিসেব নেই। অ্যালকোহলিক এবং নন-অ্যালকোহলিক দুরকমের পানীয়ই আছে। বেশিরভাগ লোক অ্যালকোহলিক পানীয়ই নিচ্ছে। কারণ কাল রবিবার, অফিসে যাওয়ার চিন্তা নেই, আর ব্যায়াম করারও বাধাবাধি নেই। বাপন কিন্তু আজকে আর অ্যালকোহলিক পানীয় নিল না। ঘরপোড়া গোরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়।

    অনুষ্ঠান শেষ হতে প্রায় রাত এগারোটা বাজল। তারপর ও যখন বাড়ি এল, ঘড়িতে তখন বারোটা তেরো।

    পরেরদিন যখন ঘুম ভাঙল, ঘড়িতে তাকিয়ে দেখেই ওর হৃৎপিন্ডটা তড়াক করে লাফিয়ে উঠল। ও তাড়াতাড়ি নেমে ব্রাশে পেস্ট নিয়ে স্নান করতে দৌড়াল। তাড়াতাড়ি স্নান করে এসে প্রাতঃরাশ বানাতে বানাতে ওর মনে পড়ল, "ধুর, আজকে তো রবিবার!"ও নিশ্চিন্ত হল। যাক স্নান তা তো তাড়াতাড়ি সারা হয়ে গেল। এবারে বসে বসে শুধু মুভি দেখবে আজ। বেশ কয়েকমাস হল ও কয়েকটা মুভি দেখবে বলে কিনে এনে রেখেছে, কিন্তু এত কাজ ছিল, দেখার সময় পায়নি। আজকে সব শোধ তুলবে। স্নান করারও ঝামেলা নেই, নাহলে স্নান করব, স্নান করব বলে স্নান করাও হত না, মন দিয়ে মুভি দেখাও হত না। আজ কোনো চিন্তা নেই।

    তখন প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। ও মন দিয়ে একটা মুভি দেখছে, এমন সময় টিভি ব্ল্যাক আউট হয়ে গেল। একটু পরেই এসওএস দেখাল। রাজধানী এনিগমাতে থিওসের বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ। আততায়ী একজন পুরুষ, বয়স ঊনিশ-কুড়ি, টেরাডাইটদের মতো পোষাক, চুল উস্কোখুস্কো, মুখভর্তি দাড়ি। যদি কেউ দেখে থাকেন, অবশ্যই নিম্নলিখিত নাম্বারে নক করুন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাপাঙ্গুল | ১৪ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৭534682
  • রমস্তনকি আর টোপান কি একই দুনিয়াতে সেট করা?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন