এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রামকুমার নন্দী মজুমদার - বাংলা সাহিত্যের রত্ন

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৯ জুলাই ২০২৪ | ২৭৮ বার পঠিত
  • ত্যজিলা জননী! মোরে জন্ম মাত্র তুমি;
    যেমন কানীন কর্ণে, কুন্তী দয়াহীনা,
    বিসর্জ্জিল জল মাঝে, নির্ম্মাল্যের মত।
    অথবা সুসভ্য কোন জনপদে যথা,
    আছে রীতি প্রসূতীরা প্রসবি সন্তানে
    ত্যজিয়া অপত্য স্নেহ সঁপে ধাত্রী করে।
    তেমনি গো মধুস্বরা পিক কুলেশ্বরি!
    অবিদ্যা বায়সী নীড়ে রাখিলা আমারে -
    অণ্ডকালে, না করিলা তত্ত্ব আর ফিরি।

    এটি অমিত্রাক্ষর ছন্দ নিশ্চয়ই কিন্তু মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা নয়। এটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের "বীরাঙ্গনা" কাব্যের উত্তরে অমৃতাক্ষর ছন্দে লেখা "বীরাঙ্গনা পত্রোত্তর" কাব্যের একটি অংশ। লেখক বরাক উপত্যকার সাহিত্য জগতের এক উজ্জ্বলতম কবি ও সাহিত্যিক যিনি নিজ সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন তাঁর আধুনিক কবিমনস্কতায়। বরাক উপত্যকায় সাহিত্যে আধুনিকতার উন্মেষ তাঁর হাত ধরেই হয়েছিল, তিনি শিলচর শহরের এক সুযোগ্য সন্তান 'সাধক কবি' শ্রীযুক্ত রামকুমার নন্দী মজুমদার। তাঁর পিতৃপুরুষেরা রাঢ়বঙ্গ থেকে প্রথমে ময়মনসিংহ জেলার বনগ্রামে এবং পরে সেখান থেকে শ্রীহট্ট জেলার (সিলেট জেলা) বেজুড়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন। ভূমধ্যিকার বা ভূস্বামী হওয়ার কারণে তাঁর পূর্বপুরুষেরা মজুমদার উপাধি পেয়েছিলেন।
     
    তাই নন্দী বংশ পরিচিতি লাভ করে নন্দী মজুমদার বংশ হিসেবে। রামকুমারের পিতা ছিলেন সেই নন্দী মজুমদার বংশের দশম উত্তর পুরুষ। রামকুমারের পিতা শ্রীযুক্ত রামসন্তোষ নন্দী মজুমদার উত্তরাধিকার সূত্রে যে জমিজমা পেয়েছিলেন তা রক্ষা করতে পারেননি বাস্তব বিষয়-বুদ্ধির অভাবে। সেই কারণে বেজুড়া গ্রাম থেকে বসবাস গুটিয়ে চলে আসতে হয় পাশের পাটলি গ্রামে। এখানেই ১৮৩১ সালে রামকুমারের জন্ম হয়। সাত বছর বয়সে তাঁর মায়ের মৃত্যু ও আশৈশবের দারিদ্র তাঁকে বাধ্য করে নিজের পাটলি গ্রামের পাশাপাশি মাতুলালয় বুড়ীশ্বর গ্রামেও শিশুকালের অনেকটা সময় কাটাতে। তাঁর বাবা, মায়ের মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। পাঁচবছর বয়সে প্রথাগত হাতেখড়ি হলেও তাঁর পড়াশুনার কোনো বন্দোবস্ত করতে পারেননি তাঁর বাবা দারিদ্রের কারণে।
     
    শুধুমাত্র সেই সময়ের রীতি অনুযায়ী বছরখানেক তাঁর ফারসি ভাষা শিক্ষা হয়েছিল। তাঁর বাবা রামসন্তোষ নন্দী মজুমদারের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সহোদর গৌরচন্দ্র মুন্সী সেইসময়ে ত্রিপুরার নৃসিংহপুর মহকুমায় ওকালতি করতেন। এই মুন্সী মহাশয় রামকুমারকে ফারসি ভাষা শিক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু বছরখানেকের মধ্যে মুন্সী মহাশয়ের মৃত্যু হলে রামকুমারকে আবার পাটলি গ্রামে ফিরে আসতে হয়। এরপরে তাঁর বাবা নিকটস্থ গুণীয়াউকের জমিদার গোলাম রসুল মিঞার বাড়ীতে পড়াশুনার ব্যবস্থা করেন। গোলাম রসুলের ভাই এমদাদ আলী ছিলেন রামকুমারের সমবয়সী। গোলাম রসুল দুজনের শিক্ষার জন্য দশ টাকা বেতনে একজন মুন্সী নিয়োগ করেন এবং এক ব্রাহ্মণ কর্মচারীর বাড়ীতে রামকুমারের খাবারের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু এমদাদ আলী ইংরেজী শিক্ষার জন্য কুমিল্লায় চলে গেলে এই শিক্ষারও ইতি ঘটে এবং কিছুদিনের মধ্যেই রামকুমারকে পাটলি গ্রামে ফিরে আসতে হয়। পাটলি গ্রামে ফারসি শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাঁকে বাংলাতেই গ্রামের অন্যান্য ছেলেদের সাথে পড়াশুনা কোনোরকমে চালিয়ে যেতে হয়। দারিদ্রের কারণে খুব নির্বিঘ্নভাবে সেই পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এরপরে সংস্কৃত শিক্ষাও করেছিলেন রামকুমার কিন্তু কখন, কিভাবে এবং কতদূর সেই সংস্কৃত শিক্ষা হয়েছিল তাঁর সেই ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়না। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ফারসি, সংস্কৃত ও বাংলা ভাষা শিক্ষা ছাড়া আধুনিক শিক্ষার কোনো সুযোগই যে তিনি পাননি এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। সেই মানুষটিই কিন্তু পরবর্তীতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের "বীরাঙ্গনা" কাব্যের উত্তরে "বীরাঙ্গনা পত্রোত্তর" কাব্য লিখেছিলেন। প্রথাগত শিক্ষার অভাববোধ তাঁর চিরকালই ছিল, বিশেষকরে ইংরেজী ভাষা না জানার কারণে পাশ্চাত্য ভাষার ভান্ডার তাঁর কাছে একেবারেই বন্ধ ছিল।

    চরম দারিদ্রের কারণে তাঁকে নিতান্ত কিশোর বয়স থেকেই কাজের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়তে হয় এবং কাজের সন্ধানে তিনি শিলচর শহরে চলে আসেন। শিলচর শহরে তখন তাঁর পিতৃব্য শ্রীযুক্ত হরগোবিন্দ মজুমদার মহাশয় তহশীলদারের কাজ করতেন। এই কাকার চেষ্টাতেই তিনি প্রাইভেট মোহরার কাজ পেয়ে যান মাসিক তিন টাকা বেতনে। তখন তাঁর কাকা হরগোবিন্দ মজুমদার মহাশয় নিজেই মাহিনা পেতেন মাসিক দশ টাকা। সুতরাং তিন টাকা মাহিনা নেহাৎ মন্দ ছিলনা। চাকুরী পাওয়ার পরে রামকুমারের সংসার জীবনের উদ্বেগ অনেকটাই দূর হয়। পোশাক-পরিচ্ছদের আড়ম্বর কোনোদিনই ছিলনা তাঁর, কাকার বাড়ীতেই আহারের বন্দোবস্ত হয়ে যেত, ফলে মাহিনার পুরো টাকাটাই তিনি বাবার সাহায্যের জন্য পাঠিয়ে দিতেন। আবার উদ্বেগ দূর হওয়ার কারণে তিনি, তাঁর ছোটবেলা থেকে সংগীতের যে আগ্রহ ছিল, সেই সংগীত চর্চায় মনোনিবেশ করলেন। ঐসময়ে পশ্চিম থেকে একজন সংগীত ওস্তাদ (নাম জানা যায়না) শিলচর শহরে এলে রামকুমার তাঁর কাছে সংগীত শিক্ষা শুরু করেন। রামকুমারের নিজের কাছে বাবাকে টাকা পাঠানোর পরে কোনো টাকা থাকতো না বলে তিনি ওস্তাদজীর গাঁজা তৈরী করে দিতেন আর পদসেবা করতেন। বিনিময়ে শাস্ত্রীয় সংগীত আর বিভিন্ন যন্ত্রের বাদন পদ্ধতি শিক্ষা করতেন। সংগীত চর্চা আর অফিসের চাকুরী একসাথে চলতে থাকে তাঁর। আবার বিভিন্ন জায়গায় যা তথ্য পাওয়া যায় তাতে রামকুমার চাকুরীক্ষেত্রে দক্ষতার সাথে ক্রমশ নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তহশীলের কাজে তিনি কিছুকালের মধ্যেই দক্ষতা ও পটুতা অর্জন করলেন। তাঁহার সুন্দর হাতের লেখা, বুদ্ধিমত্তা ও কাজের মধ্যে লেগে থাকার মানসিকতা সকলের মন জয় করে নেয় অল্প সময়ের মধ্যেই। সকলের মুখেই রামকুমারের প্রশংসা শোনা যেতে লাগে। যেসমস্ত হিসাব তাঁর চেয়ে অভিজ্ঞ মোহরা-রা করতে কষ্টবোধ করতো সেইসব হিসাব রামকুমার অতি অনায়াসেই করে দিতেন। এরফলে রামকুমারের মনে কিছুটা অহংকারের জন্ম হয়েছিল নিশ্চয়ই। তিনি সিনিয়র কর্মীদের অনুরোধ উপেক্ষা করতে লাগলেন। এর ফল হলো মারাত্মক, তহশীলের সমস্ত কর্মচারীরা রামকুমারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন এবং রামকুমারের মোহরার কাজটি গেল। অবশ্য তাতে রামকুমারের তেমন ক্ষতি হয়নি, কারণ কিছুদিনের মধ্যেই কালেক্টরী অফিসের প্রধান মোহর মুন্সী রামচরণ গুপ্ত মহাশয় তাঁকে ডেকে নিজ সেরেস্তায় নিয়োগ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মুন্সী মহাশয়ের এবং কালেক্টরী অফিসের সকলের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠলেন।
     
    এরপরে তিনি মাসিক চার টাকা বেতনে স্থায়ী হলেন। তাঁর ২৮ বছর বয়সে পদোন্নতি পেয়ে মাসিক মাহিনা ৬ টাকা হয়। এরপরে ৬ টাকা বেতনের পদে স্থায়ী হলে তিনি আমলা বলে মান্যতা পান। এরপরে সরাইল পরগনার সুহেলপুর গ্রামের শ্রীযুক্ত শম্ভুনাথ দত্ত মহাশয়ের ছয় বছর বয়সী কন্যার সাথে তাঁর বিবাহ হয়। রামকুমারের ক্ষুরধার বুদ্ধি, অতিরিক্ত পরিশ্রমের ইচ্ছা, কর্মকুশলতা এবং নতুন নতুন বিষয় শেখার অদম্য বাসনা তাঁকে কর্মজীবনে উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধির কারণ ছিল। এরপরে জেল বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল নিয়ম করেন যে, জেলের সমস্ত হিসাব আনা, পাইয়ের বদলে দশমিক ভগ্নাংশে করতে হবে। তৎকালীন কাছাড়ের ডেপুটি কমিশনার মেজর স্টুয়ার্ট ছাড়া অন্য কেউই দশমিক ভগ্নাংশের কাজ জানতেন না। মেজর সাহেব আমলাদের ডেকে দশমিক ভগ্নাংশের পদ্ধতি শেখানোর চেষ্টা করলে একমাত্র রামকুমারই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এতে তিনি মেজর সাহেবের কৃপাদৃষ্টির মধ্যে পড়ে যান। কিছুকালের মধ্যে মাসিক ৮ টাকা বেতনের এসিস্ট্যান্ট একাউন্টেন্টের পদ উপর থেকে মঞ্জুর হয়ে এল। কিন্তু অফিসের বড়বাবুর এক ইংরেজী শিক্ষিত আত্মীয়কে পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে পেয়ে রামকুমার আর ওই পদের জন্য দরখাস্ত করেননি। কিন্তু মেজর সাহেব রামকুমারকে দিয়ে দরখাস্ত করিয়ে নিয়ে তাঁকে ওই পদে বহাল করলেন ওই বড়বাবুর সমস্ত রকমের ওজর আপত্তি উপেক্ষা করে। এর কিছুকালের মধ্যেই আবার রামকুমারের পদোন্নতি হয় এবং তিনি মাসিক ২০ টাকা বেতনের একাউন্টেন্টের পদে অস্থায়ীরূপে বহাল হন যা পরবর্তীতে স্থায়ী হয়। মেজর সাহেব রামকুমারের কাজে এতটাই প্রীত ছিলেন যে তিনি সুযোগ পেলেই রামকুমারের উন্নতির চেষ্টা করতেন।
     
    এরপরে ১৮৬৪ সালে কলকাতার কন্ট্রোলার জেনারেলের অফিস থেকে আদেশ আসে ১লা নভেম্বর থেকে মনি অর্ডার প্রথা চালু করার জন্য। মনি অর্ডারের কাজ বাবদ কমিশন পাওয়া যাবে এবং সেই কারণে কিছু বেশী রোজগার হবে বলেই মেজর সাহেব রামকুমারের ওপরে সেই কাজের দ্বায়িত্ব দিলেন। মনি অর্ডারের এডভাইস ইংরেজীতে করতে হবে বলে রামকুমার এবার ইংরেজী শিক্ষার শুরু করলেন। মাস ছয়েক পরে যখন মেজর সাহেব মনি অর্ডার অফিস পরিদর্শন করলেন তখন তিনি রামকুমারের কাজ দেখে যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন। এরমধ্যে ফৌজদারী পেশকারের পদ খালি হলে রামকুমার ওই পদে কাজ করার ইচ্ছা সাহেবের কাছে পোষণ করেন। ওই পেশকার পদের বেতন ছিল ৩৫ টাকা আর রামকুমার তখন বেতন পেতেন ২০ টাকা এবং মনি অর্ডারের কমিশন বাবদ ১০ টাকা অর্থাৎ মোট ৩০ টাকা। সাহেব রামকুমারের কাজে এতটাই সন্তুষ্ট ছিলেন যে তিনি তৎক্ষণাৎ রেভিনিউ বোর্ডে রিপোর্ট করলেন যাতে সুপারিশ করেছিলেন একাউন্টেন্টের বেতন ৪০ টাকা করা হোক। এরপরে একাউন্টেন্টের বেতন ৩৫ টাকা হয়েছিল এবং মনি অর্ডারের কমিশন সহ রামকুমার মাসে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পেতেন। এরপরে ১৮৬৫ সালে রেভিনিউ বোর্ডের নির্দেশ জারি হয় যে একাউন্টেন্ট অফিসের সমস্ত কাজকর্ম ইংরেজী ভাষায় হবে। যারা ইংরেজী জানেনা তাদেরকে পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা নিয়ে বিদায় নিতে হবে। এতে রামকুমার পড়েন মহাবিপদে। তিনি মনি অর্ডারের এডভাইস করতে পারার মতো ইংরেজী জানেন। কিন্তু মেজর সাহেব রেভিনিউ বোর্ডকে রিপোর্ট দিলেন যে, "আমার একাউন্টেন্ট কোনও স্কুলে পড়ে নি কিন্তু নিজে নিজে এইরূপ ইংরেজী শিক্ষা করেছে যে একাউন্টেন্টের কাজ চালাতে পারে। সুতরাং আমি তাকে বহাল রাখলাম।" তাই রামকুমারের কোনোরকম অসুবিধা হলোনা। এরপরে রামকুমার আরও যত্ন নিয়ে ইংরেজী শিক্ষা শুরু করলেন। এরপরে আমলাদের বেতন বৃদ্ধি হয় এবং একাউন্টেন্টদের বেতন ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়। নয় বছরের বেশী সময় যোগ্যতার সাথে একাউন্টেন্টের কাজ করার পরে তিনি মাসিক ৬৫ টাকা বেতনে খাজাঞ্চির কাজে নিযুক্ত হন। এরপরে খাজাঞ্চির বেতনও বেড়ে মাসিক ৮০ টাকা হয়। ১৮৮৯ সালে রামকুমার নন্দী মজুমদার মহাশয় চাকুরী থেকে অবসর নেন এবং তাঁর মাসিক পেনশন স্থির হয়ে ৩৯ টাকা ৫ আনা ৩ পাই। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছরের চাকুরী জীবনে তিনি কখনও কোনোদিন ভর্ৎসিত বা দণ্ডিত হননি। ভুল যে তিনি চাকুরী জীবনে করেননি তা নয় কিন্তু, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসভাজন ছিলেন বলে এবং তাঁদের সুনজরে ছিলেন বলে সেইসমস্ত ভুল ত্রুটি তাঁরা মার্জনা করে দিতেন। রামকুমারের শিক্ষাগত যোগ্যতা যা ছিলো সেইসময়ে সেই একই যোগ্যতায় অন্যান্য কর্মচারীরা সরকারী অফিসে চাকুরীতে ঢুকে বেশিরভাগই ২০ থেকে ২৫ টাকা মাসিক বেতনের বেশী পৌঁছতে পারতেন না। কিন্তু রামকুমার নিজের নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে অনেক উঁচু জায়গায় পৌঁছেছিলেন।

    এখানে উল্লেখ্য যে স্থানীয় মানুষের মনে ধারণা আছে যে রামকুমার নন্দী মজুমদার মহাশয় ডাক ও তার বিভাগে কাজ করতেন। মনি অর্ডারের কাজ করতেন বলেই নিশ্চয়ই এইরকম ধারণা পোষণ করেন তারা (তিনি মনি অর্ডার পেড ক্লার্ক ছিলেন বলেই বলা হয়)। কিন্তু এটা সঠিক নয়। কারণ ১৮৬৪ সালে প্রথম মনি অর্ডার মারফত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা চালু হয় কিন্তু সাধারণ মানুষ এইভাবে টাকা পাঠাতে পারতো না তখন। সম্পূর্ণভাবে সরকারী টাকা পাঠানোর মাধ্যম হিসেবেই ১৮৬৪ সালে মনি অর্ডার প্রথা চালু হয়েছিল। সেই কাজ করতো ডেপুটি কমিশনারের অফিস। তখন অবশ্য রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার এই ধারণা আসেনি। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বা প্রাদেশিক ব্যবস্থা চালু হয় ১৯১৯ সালে Government of India Act, 1919 এর মাধ্যমে। কিন্তু অফিস হিসেবে ডেপুটি কমিশনারের অফিস এবং ডাক ও তার বিভাগের অফিস সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। এক সরকারী খাজাঞ্চি (Treasury) থেকে অন্য সরকারী খাজাঞ্চিতে টাকা পাঠানোর মাধ্যম হিসেবেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু সারা দেশে তখন মোট ২৮৩ টি সরকারী খাজাঞ্চি ছিল, ফলে এক খাজাঞ্চি থেকে অন্য খাজাঞ্চিতে টাকা পাঠানো খুব ঝামেলার ছিল এবং যেহেতু সাধারণ মানুষ এই ব্যবস্থায় টাকা পাঠাতে পারতো না তাই এই ব্যবস্থা জনপ্রিয়ও হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু ঝামেলার হলেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা পাঠানোর মাধ্যম হিসেবে মনি অর্ডার প্রথা সফল প্রথা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং সেই কারণে তৎকালীন ডাক ও তার বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল মন্টেথ (Monteath) সাহেব ১৮৭৮ সালে সরকারের কাছে প্রস্তাব রাখেন যে ডাক বিভাগের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা চালু করলে অনেক সুবিধা ও লাভজনক হবে এই ব্যবস্থা। কারণ সেই সময়ের মোট ৫৫০০ টি ডাকঘর থেকে অনেক সুবিধাজনক ভাবে টাকা এক খাজাঞ্চি থেকে অন্য খাজাঞ্চিতে পাঠানো যাবে এবং পাশাপাশি আপামর জনসাধারণের জন্যেও এই ব্যবস্থা চালু করা যাবে। তৎকালীন কন্ট্রোলার জেনারেল সাহেব এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করলেও সরকার বাহাদুর মন্টেথ সাহেবের এই প্রস্তাবের মঞ্জুরী দেয় ২৭.১১.১৮৭৯ তারিখে। ০১.০১.১৮৮০ তারিখ থেকে ডাক ও তার বিভাগে মনি অর্ডারের কাজ শুরু হয়। রামকুমার নন্দী মজুমদার মহাশয় যেহেতু ১৮৬৪ সাল থেকেই মনি অর্ডারের কাজ করতেন অর্থাৎ মনি অর্ডার প্রথা শুরুর সময় থেকেই, ফলে তিনি ডাক ও তার বিভাগে কাজ করতেন এই ধারণা সঠিক নয়।

    চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পরে রামকুমার কাশী চলে গিয়েছিলেন কিন্তু কবে গিয়েছিলেন সেই ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট তারিখ বা সাল পাওয়া যায়না। ১৩০৯ বঙ্গাব্দের ৩ রা অগ্রহায়ণ (১৯০২ খ্রিস্টাব্দ) তিনি তাঁর পেনশন স্থানান্তরের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন। ফলে মনে করা যায় ১৯০২ সাল বা তার কাছাকাছি সময়ে তিনি কাশী গিয়েছিলেন। সেখানেই ১৯০৪ সালে তিনি স্বজ্ঞানে স্ত্রী ও বড় ছেলের সামনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

    সাহিত্যক্ষেত্রে রামকুমার প্রাচীন ও নব্য উভয় সাহিত্যেই লব্ধপ্রতিষ্ঠ ছিলেন। তাঁর সার্বিক সাহিত্য কীর্তিকে তিন ভাগে ভাগ করেন গবেষকেরা:

    ১. প্রাচীন সাহিত্য
    ২. নব্য সাহিত্য
    ৩. গান ও কবিতা

    রামকুমার যে পরিবেশে তাঁর বাল্য ও কৈশোরের সময় কাটিয়েছেন তা ছিল লোকায়ত ঐতিহ্যের সাহিত্য বা প্রাচীন সাহিত্য চর্চা ও সৃষ্টির অনুকূল। তাঁর শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি খেলাধুলার চেয়ে রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি পাঠের আসরেই বেশী যাতায়াত করতেন। রামায়ণ, মহাভারতের গানই তাঁর ধ্রুপদী সংগীত শিক্ষা ও চর্চার মানসিকতার মূল শিকড় ছিল। আবার ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে যে নব্য ভাবনার সূচনা হয়েছিল তার আধার ছিল মূলতঃ ইংরেজী ভাষার বিভিন্ন বই। এদিকে রামকুমারের ইংরেজী ভাষার শিক্ষা শুরুই হয়েছিল তাঁর চাকুরী জীবনের মধ্যবর্তী পর্যায় থেকে, যখন তাঁর মানসিক গঠন একটা স্থায়ীরূপ নিয়ে নিয়েছে। সেই কারণেই প্রাচীন সাহিত্যের প্রতি তাঁর অনুরাগ থেকেই গিয়েছে। প্রাচীন সাহিত্যের অন্তর্গত তাঁর রচনাগুলো হলো সখীসংবাদ, কবির গান, পাঁচালী, যাত্রাপালা ইত্যাদি এবং উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো:

    ১. পাঁচালী (কলঙ্ক ভঞ্জন, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর দ্বন্দ্ব, ১৩০৫ সালের বোধন)
    ২. যাত্রাপালা (দাতাকর্ণ, নিমাই সন্ন্যাস, সীতার বনবাস, বিজয়-বসন্ত, পদাঙ্ক-দূত, কংসবধ, উমার আগমন, মার্কণ্ডেয় চন্ডী, রাসলীলা, দোলযাত্রা, ঝুলন যাত্রা, ভাগবতীর জন্ম)

    নব্য সাহিত্যে রামকুমারের রচনাগুলোর স্পষ্টতঃ দুটো ধারা পাওয়া যায়, ১. আখ্যান কাব্য এবং ২. গদ্য আখ্যান। আখ্যান কাব্যের মধ্যে পড়ে, বীরাঙ্গনা পত্রোত্তর কাব্য, ঊষোদ্বাহ কাব্য, নবপত্রিকা কাব্য। গদ্য আখ্যানের মধ্যে পড়ে 'মালিনীর উপাখ্যান'। রামকুমারের গানগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যায়। সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে রচিত বস্তুনিষ্ঠ গান আর কবির একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ সমৃদ্ধ গান। প্রথম ধারার গানগুলোর কাব্যমূল্য এমন কিছু নেই কিন্তু ঐতিহাসিক মূল্য আছে। যেমন ১৮৯৭ সালে শিলচর অঞ্চলে যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল, সেই ভূমিকম্প নিয়ে তাঁর গান -

    ঝিঁঝিট, কাওয়ালী
    ভূমিকম্প
    শিবে, একি অবিচার
    করিবে কি সৃষ্টি তব
    অকালে সংহার ।।
    তেরশত চারিসনে
    জ্যৈষ্ঠের ত্রিশ দিনে,
    শনিবার অপরাহ্নে
    সবে চমৎকার ....।।

    আর কবির একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ সমৃদ্ধ গানগুলো অধিকাংশই রামপ্রসাদী গানের ভাবাদর্শে রচিত। সার্থক ও জনপ্রিয় সংগীত রচনার জন্য রামকুমারকে "সাধক কবি" আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছিল। তাঁর সংগীত সংকলনের নাম "পরমার্থ সঙ্গীত"। ব্যক্তিনিষ্ঠ গানগুলো কবির সুগভীর অনুভূতি ও আন্তরিকতায় সমৃদ্ধ। রামপ্রসাদী সুরে রামকুমারের একটি জনপ্রিয় গান হলো:

    মনরে তোরে বলি আমি।
    ও কার জমা খরচ লেখছ তুমি।।
    হিসাবের মুহুরি হয়ে পরের হিসাব লেখছ তুমি।
    করে নিজের হিসাব দেখলে নারে
    লাভ খেসারত ফাজিল কমি।।...

    'ঊষোদ্বাহ কাব্য' প্রসঙ্গে কবির জীবনীকারের লেখা, "নানারসের সৃষ্টি ও তদ্দ্বারা দেশ ভাসাইতে সংকল্প করিয়া কবি রামকুমার শ্রীমদ্ভাগবদ হইতে বাণরাজ কন্যা ঊষার সহিত শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র অনিরূদ্ধের পরিণয় বৃত্তান্ত গ্রহণ পূর্বক এক রসাল কাব্য রচনা করিতে লাগিলেন। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ১। প্রমোদবন ২। স্বপ্ন ৩। বরপ্রাপ্তি বর্ণন ৪। আলেখ্য দর্শন ৫। সুর সমিতি ৬। হরণ ও ৭। সম্মিলন এই কয়টি সর্গে 'ঊষোদ্বাহ' কাব্যর প্রথম খণ্ড সমাপ্ত হইল। পাণ্ডুলিপি পাঠ করিয়া কবির বন্ধু-বান্ধবেরা এরূপ উৎসাহিত হইয়া উঠিলেন যে, তাঁহারা চাঁদা করিয়া ছাপা খরচ তুলিয়া ফেলিলেন। এইরূপে সমগ্র গ্রন্থ রচিত হইবার পূর্ব্বেই 'ঊষোদ্বাহ'-এর প্রথম খণ্ড মুদ্রিত ও প্রচারিত হইল।" প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে ঊষোদ্বাহ কাব্য রচনার পরে রামকুমার এবং তাঁর বন্ধু-বান্ধবদের উদ্যোগে এটি কলকাতার এক প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়। এতদূর থেকে বইটির প্রুফ সংশোধন করে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে বইটিতে প্রচুর ভুল থেকে যায় মুদ্রণে। সেইসময়ে বইটির সমালোচনা হয়েছিল অনেক এবং সমালোচকেরা মুদ্রণজনিত ভুলগুলোকেও কবির ভুল বলেই উল্লেখ করেছিলেন। রামকুমার সেকারণে খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন এবং আশাহত হয়েছিলেন।

    রামকুমারের একমাত্র গদ্য আখ্যান "মালিনীর উপাখ্যান"-এর প্রেক্ষাপট ছিল - রামকুমার ছিলেন কবি ভারতচন্দ্রের কাব্যাদর্শে উদ্বুদ্ধ এবং প্রথম জীবনে তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষারীতির পক্ষপাতী ছিলেন না। বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষারীতি ও সৃষ্ট কয়েকটি চরিত্রের সমালোচনা করে তিনি 'বলদমহিমা' নামে একটি পুস্তিকা রচনা করে বঙ্কিমচন্দ্রকে পাঠিয়ে দেন। রামকুমারের জীবনচরিত থেকে জানা যায়, "সহৃদয় বঙ্কিমবাবু এই গ্রন্থের সমালোচনায় 'বঙ্গদর্শন'-এ শুধু এই মাত্র লিখিয়াছিলেন "এই গ্রন্থে গ্রন্থকার বলদেরই পরিচয় দিয়াছেন""। পরবর্তীতে রামকুমার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন এবং বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি এমন অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলেন যে সম্পূর্ণ বঙ্কিমী ভাষায় এক উপন্যাস লিখেছিলেন যার নাম, "মালিনীর উপাখ্যান"।

    "বীরাঙ্গনা কাব্য"-এর অনুসরণে মিত্র ও অমিত্রছন্দে রামকুমারের তৃতীয় রচনা ছিল "নবপত্রিকা কাব্য" যেখানে নয়টি সর্গে কাব্যগ্রন্থটি বিভক্ত - উত্তানপাদের প্রতি সুনীতি, ভীমের প্রতি দ্রৌপদী, রামের প্রতি জানকী, যযাতির প্রতি দেবযানী, মাধবের প্রতি সুলোচনা, কর্ণের প্রতি পদ্মাবতী, রাবনের প্রতি মন্দদরী, অর্জুনের প্রতি সুভদ্রা, নলের প্রতি দময়ন্তী। দুর্ভাগ্য এই যে কাব্যটি মুদ্রিত হয়নি।

    রামকুমারের সাহিত্যসৃষ্টির সম্ভার হয়তো আরও অনেক ছিল, কিন্তু তাঁর সৃষ্টিগুলোর বিশদ বিবরণ কিছুই পাওয়া যায়না। কোন লেখা কবে কোথায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল বা তাঁর সাহিত্যসৃষ্টির পূর্ণাঙ্গ দলিল কিছুই পাওয়া যায়না। যেটুকু পাওয়া যায় তারও কিছু সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই, সর্বসাধারণের কাছে সেইগুলোও সহজলভ্য নয়। কিছু কিছু গবেষকের কাছে নিজস্ব সংগ্রহে আছে মাত্র, তাও সমস্ত সৃষ্টিগুলো নেই। তাঁরা রামকুমারের কিছু কিছু সৃষ্টি এককভাবে বহন করে চলেছেন মাত্র। তাঁদের অবর্তমানে সেইগুলোও নিঃশেষ হয়ে যাবে হয়তো এই পৃথিবী থেকে, আশঙ্কা এটাই। রামকুমারের যে সৃষ্টি তাঁকে খ্যাতি ও সাহিত্যিকের আঙিনায় এনে দিয়েছিল এক লহমায় সেই "বীরাঙ্গনা পত্রোত্তর কাব্য" সম্পর্কেও একই কথা প্রযোজ্য। তাঁর লেখা "পরমার্থ সঙ্গীত"-এর বাইরে কোনো ভক্তিধারার গান সংরক্ষিত হয়নি। কিছু কিছু গানের নিদর্শন কিছু স্থানীয় পুরোনো পত্রপত্রিকায় বা স্থানীয় কিছু গবেষকের কাছে পাওয়া গেলেও সেগুলো এতই বিক্ষিপ্ত রকমের যে পূর্ণাঙ্গ বই আকারে প্রকাশ করার মতো অবস্থাতেও নেই। তাঁর লেখা পাঁচালির অবস্থাও একইরকম। আফসোস হয় তাঁর মতো একজন গুণী ব্যক্তি, যিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই (কারণ যেটুকু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর হয়েছিল তা খুবই সংক্ষিপ্ত ও বিক্ষিপ্ত) সাহিত্য, গান, পাঁচালী, যাত্রাপালা ইত্যাদি রচনায় উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছেছিলেন, এমনকি অমৃতাক্ষর ছন্দেও তিনি কাব্য রচনা করেছিলেন, বর্তমান প্রজন্মের কাছে অপরিচিত হয়ে গেছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আর জানবেই না যে, এই নামের কোনো ব্যক্তি শিলচর শহরে বসবাস করতেন এবং বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কৌতুহলী | 103.249.***.*** | ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৪:২২534424
  • দারুণ। অনেককিছু জানলাম। রামকুমার মজুমদারের কোন বই এখন পাওয়া যায়?
  • Surajit Dasgupta | ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৫:১৯534427
  • শিলচরে পাওয়া যায় ব্যক্তিগত সংগ্রহে। সিলেট বা বাংলাদেশেও হয়তো পাওয়া যেতে পারে। শিলচরের ডঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য্য মহাশয় লিখছেন উনাকে নিয়ে। প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন