অকপট ফিডব্যাক:
১. ভাট, খেখা, হপা, বুবুভা - কোনো বিভাগেই মন্তব্য করে সংশোধনের উপায় নেই। গুরুকর্তাদের কাছে নিবেদন - এটার অপশন থাকা উচিত। তাহলে কিছু সংশোধনী লেজুড় পোষ্ট করতে হয় না। খেখা, হপাতে মূল লেখা এডিট করা যায়। “টইপত্তর” এ তা সম্ভব নয়। কেন নয়? জানা নেই। তাই এই টইতে রায়পুরের জনসংখ্যা চার কোটিই থেকে যাবে। খেখা, হপা, বুবুভায় লেখার ওপর বহু মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য দেখা যায়। “টইপত্তর” এও তাই। তাহলে টইপত্তর নামক আর একটি বিভাগ খোলার কী কারণ? খেখা, হপাতে লগইন করেই লিখতে হয়। যদি টইতে লগইন না করেও লেখা যায় তাহলে সেটা কারুর টইতে লেখার কারণ হতে পারে। কিন্তু বর্তমান লেখক এটা লগইন করেই লিখেছেন। উনি খেখা এবং হপাতেও লেখেন। তাহলে এটা কেন টইপত্তরে লিখলেন? বুঝলাম না।
২. লেখাটিতে কিছু শব্দবন্ধ (জুগাড়মেন্ট, পুলিশপাড়ার বাক্যালংকার ইপ্র) বেশ লেগেছে। কিছু বাক্যচয়ন Rustic ফ্লেবারবাহী। যেমন ফুগগা বাঈ চোখ মেরে বলে—ওখানে তো আদ্দেক থানাকে লুকিয়ে রেখেছি, খালি তুমিই বাকি।
৩. ফুগগা বাঈ যে নতুন ননভেজ জোক শোনায় সেটা বটতলা মার্কা হলেও আমার খাসা লেগেছে। অকাট্য সত্য। গরদের ধুতি পাঞ্জাবী পরে ম্যানহোল ইনস্পেকশনে নামা যায়না। তাই উপলব্ধি করেছি আদিশঙ্করার অদ্বৈতবাদ ব্যাখ্যাকারী ঋদ্ধ লেখক বাবুলাল গলির আখ্যান আঁকতে তদানুযায়ী লেখ্যভঙ্গি ধারণ করেছেন।
৪. তবে ভালো লাগেনি ঐ ছড়ার এবং আরো কিছু কথার বঙ্গানুবাদ। বলিউডের দৌলতে এবং অশার দাপটে আশা করা যায় গুরুর অধিকাংশ ঋদ্ধ পাঠক ফুগগার হিন্দি অনুবাদ ছাড়াই বুঝবেন। গালিবের চোস্ত উর্দু শ্যায়রী হলে অন্যকথা - তখন আমার মতো গোলা পাঠকের জন্য তার সোজানুবাদ স্বস্তিদায়ক।
৫. লেখাটির অকপট আঙ্গিক কিছুটা মলয় রায়চৌধুরী সদৃশ। তবে তা প্রয়াত লেখকের গুরুতে পোষ্টিত (০৯.১০.২৩) “পিসতুতো বোনকে চুমু খাবার চুক্তি”র মতো আড়ালহীন নয়। গুরুচণ্ডালি প্রকাশিত “অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা” বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের ওপর জনৈকা অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুস্তক আলোচনার মত সাহসীও নয়। অনামিকার ঐ আলোচনা গুরুচণ্ডা৯ ফেসবুক গ্রুপে রিজেক্ট হয়েছিল। তাই মরাচৌ সেটির লিংক ওনার হপার পাতায় পোষ্টেছিলেন (৫.৯.২৩). কুণালের বাংলায় অশ্লীল জোকটি এই লেখায় মরাচৌ গোত্রের আড়ালহীন সাহসিকতার প্রকাশের ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।
৬. অজিতের রেগে যাওয়া, অতদিন রায়পুরে গেঁড়ে বসে থেকে হঠাৎ বদলি নিয়ে উজ্জয়িনী চলে যাওয়া এসব থেকেই খুগগার শিশুর পিতৃত্ব নিয়ে পাঠকের সন্দেহ থাকেনা। তাই লেখাটা - “ওরা চাঁদনী রোশনীদের মুখে খবর পেয়েছে যে ফুগগা বাঈয়ের শিশুটি মারা গেছে, ধনুষ্টংকার হয়েছিল। ও এখন বেশির ভাগ সময় ঘরেই থাকে। নিজেকে বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা করে নিয়েছে।” - এখানেই শেষ হয়ে গেলেও মন্দ হোতো না।
৭. তা না করে, এযাবৎ পুরুষের লালসা নির্ভর জীবনযাপন করে ফুগগার মধ্যে প্রথমে মাতৃত্ব আরোপ করে পরে ধোঁকেবাজ অজিতের জন্য গোটা পুরুষজাতটার ওপর বীতশ্রদ্ধভাব আরোপ করলেন লেখক। তাতে কী ফুগগার কোনো উত্তরণ সাধিত হোলো? কে জানে! কিন্তু এসব প্রক্রিয়ায় অন্তিমে এলো আর একটি মরাচৌ গোছের সংলাপ যা লেখাটিতে লেপন করলো ছত্তিশগড়িয়া গাঢ় মাটির প্রলেপ।
৮. অন্তিমে বর্ণিত ঘটনার একটু ছায়া দেখেছি মঁপাশার একটি গল্পে। নাম মনে নেই। বহুদিন আগে পড়েছি। সেখানে ট্রেনযাত্রায় সদ্য মা হওয়া কোনো মহিলার দুগ্ধভারে ব্যথাতুর হয়ে ওঠে স্তন। অথচ সঙ্গে তখন তার শিশুটি নেই। সে একাই কোথাও গেছিল। তখন ফিরছিল ঘরে। তারই অনুরোধে তার স্তন পান করে এক পুরুষ সহযাত্রী। সেই গল্পের তাৎপর্য মনে নেই। কিন্তু ঘটনাটি এমন বিচিত্র লেগেছিল, যে এটুকুই মনে আছে।
৯. অন্তিমে বর্ণিত ঘটনার সরাসরি ছায়া দেখেছি সুনীলের “কিশোর ও সন্ন্যাসিনী” উপন্যাসে। সেখানে এক যুবতি, ব্রহ্মচারী তন্ত্রসাধিকা কোনো বিশেষ সাধনার জন্য বয়ঃসন্ধিতে না আসা এক কিশোরকে দিয়ে নিয়মিত তার স্তন পান করায়। সে দেখতে চায় ঐ সাধনায় গর্ভবতী না হয়েও স্তনে দুগ্ধ সঞ্চার হয় কিনা। এ কী ধরণের সাধনা জানা নেই। তবে তন্ত্রসাধিকার স্তনে দুগ্ধ আসার আগেই একদিন স্তনপানকালে কিশোরের লিংগোত্থান হয়। সাধিকাও ফুগগার মতো সেই কিশোরটিকে সরিয়ে দিয়ে বলে - তোকে দিয়ে আমার আর সাধনা হবে না।
১০. এসব হচ্ছে প্রবৃত্তির ব্যাপার, যা ফুগগা বুঝতে পারে নি, তন্ত্রসাধিকাও নয়। সাধিকা সাধনা করলেও সেই কিশোরটিতো করছিলো না। তার পুরুষাঙ্গ জেগে উঠতেই পারে। কারণ প্রবৃত্তির প্ররোচনা অবদমন, উপেক্ষা - খুব কঠিন ব্যাপার। সাধারণ মানুষের কম্মো নয়। গল্পের ছলে বা আকারে ইংগিতে নয় - প্রবৃত্তি, প্রবণতা বিষয়ক এমন কিছু প্রসঙ্গ সরাসরি আলোচনা করেছি আমার “দোলজ্যোৎস্নায় শুশুনিয়ায়” লেখায় ৪ থেকে ১৩ পর্বে। ভেবেছিলাম কেউ হয়তো কোনো পার্সপেক্টিভ জানাবে। আজ অবধি গুরুর কোনো ঋদ্ধ পাঠক কোনো মতামত করেনি। হয়তো ঐ বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা কারুর পছন্দ হয়নি।