এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • “অজেয়” পিরামলের পীড়াদায়ক তথা নরখাদক পুঁজিবাদ 

    Debaprasad Bandyopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৭৯৭ বার পঠিত
  • দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়
    আখর বন্দ্যোপাধ্যায়

    আগাম নিবেদনঃ

    এই লেখাটা মাগনা পড়ে যাঁরা আমাদের মতামতের সঙ্গে সহমত হবেন, তাঁদের কাছে একটাই অনুরোধঃ আমাদের এই লেখাটার জন্য খাটা-খাটনির মজদুরি মোতাবেক “বিনিময় মূল্য” (হায়, সবই শর্তাধীন বিনিময়ী বন্দোবস্ত) হিসেবে নিচের এই লিঙ্কটা টিপে পিটিশনে দয়া করে স্বাক্ষর দেবেন। এইটুকু প্রত্যাশা আমরা আপনাদের কাছে করতেই পারি এবং আপনারা সই করলে আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। https://chng.it/9sPMNHBy

    ।। শূন্য ।।

    আমার একটা ব্যারাম হয়েছে। ব্যারামটার নাম Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders 6 (DSM 6)- এ মিলবে না। আমি নিজেই তাই এই বিমারির নাম রেখেছিঃ Canniballistic Savage Capitalism! অবাক হবেন না পাঠক — এই টাকা-চিহ্ন-নির্ভর অর্থনীতিতে আমার মতো পরজীবী পাতি ফিনান্স বুর্জোয়ার হাল খুব খারাপ। “বাঁ দিকের বুক পকেটটা সামলাতে সামলাতে” হৃদয়ঘটিত ব্যারাম ধরলো।

    গভীর কোমার মধ্যে কি স্বপ্ন দেখা যায়? জানি না। তবে, আমি দেখলুম আমার মানিব্যাগ কেপমার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। আর এক বিশাল দৈত্যাকার মানুষ আমাকে, আমার শরীরকে খেয়ে ফেলতে চাইছে। কে এই নরখাদক? কে এই কোট-প্যান্টুল পরা জংলি?

    ঘোর সেই কোমার মধ্যে আমি গুঙিয়ে উঠলুম। এসি ঘরের ভেতরেও আমি দরদর করে ঘামতে ঘামতে বোধহয় জেগে উঠলাম। না, আমি আইসিইউতে নেই, ভেন্টিলেশনে নেই — অথবা আছি। এটাই আমার শোবার ঘর। সিডেটিভ, মদ, গাঁজা খেয়ে ঘুমোলে এরকমই সব স্বপ্ন ধেয়ে আসে। নিরস্ত্র আমি হাঁপাতে হাঁপাতে হাতিয়ার খুঁজি। এই নরখাদক জংলিটাকে মারতেই হবে। ওরা তালিবানকে অস্ত্র দেয়, ওরা আনন্দমার্গীদের অস্ত্র দেয়, ওরা তথাকথিত মাওবাদীদের হাতে অস্ত্র দেয় — কিন্তু আমাকে স্বোপার্জিত পেন ছাড়া আর কোনো অস্ত্রই তারা দেয় না। ‘পেইন’ থেকে পেন হয়ে ওঠে আমার পেন-ইস। এই পেন-ইস নরখাদকের ফ্যালাসকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে চায়—GM বা গাঁ* মেরে দিতে চায়।

    হাতের কাছে একটা চিঠি আসে। রাজার চিঠি। কে যেন চেঁচিয়ে বলে ওঠেঃ “আসামী হা-জি-র!” আমি ওই নরখাদকের নাকি মানহানি করেছি। আমার নামে মোকদ্দমা চলছে। অথচ আমি জানিনা আমার অপরাধ কি। তাই, কাফকার বইটা ছুঁড়ে জঞ্জালের বাক্সে ফেলে দিই।

    এমন অ-সময়ে দেখি কী RBI-এর লোগো থেকে কেঁদো বাঘটা বেরিয়ে আমার দিকে ধেয়ে আসছে। গুপি-বাঘার মতো যে গান গেয়ে বাঘটাকে থামিয়ে দেবো, সে ক্যালিও আমার নেই। “পায়ে পড়ি বাঘমামা, করো নাকো রাগ মামা, তুমি যে এঘরে কে তা’ জানতো”! অতএব, “এবার কেটে পড়ি, ভেগে পড়ি…।”

    ।। এক ।।

    মানহানির মোকদ্দমা

    …তাকিয়ে দেখি, আমার আশেপাশে চারদিকে ভিড় জমে গিয়েছে। একটা সজারু এগিয়ে এসে ফোঁৎফোৎ করে কাঁদছে আর একটা শাম্‌লাপরা কুমির মস্ত একটা বই দিয়ে আস্তে আস্তে তার পিঠ থাব্‌রাচ্ছে আর ফিস্‌ফিস্‌ করে বলছে, ‘কেঁদো না, কেঁদো না, সব ঠিক করে দিচ্ছি ।’ হঠাৎ একটা তকমা-আঁটা পাগড়ি-বাঁধা কোলা ব্যাং রুল উচিয়ে চীৎকার করে বলে উঠল- ‘মানহানির মোকদ্দমা।’

    বেশ বড়ো মাপের একটা ঝাড় খেয়েছি ইয়ে মানে কেস খেয়ে গেছি। এই ঝাড় খাওয়ার নিজেকে বেশ ‘সেলিব’ ‘সেলিব’ মনে হচ্ছে। আমার মতো আর আরো পাঁজ্জনের নামে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাদের মতো আসামীদের নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ফেবু, টুইটার, লিঙ্কডিনের মতো ঘ্যাম সামাজিক গণমাধ্যমের নাম। তাহলে নিজেকে সেলিব ভাববো না মহাই?

    কেন আমাদের মতো অন্যের মান-ইজ্জত লুটে নেওয়া চুনোপুটি লোকেদের নাম জুড়লো এই সব ঘ্যাম ব্যাপারিদের সঙ্গে? আমরা ‘নাকি’ একযোগে অজয় পিরামলের আদ্দছেরাদ্দ করেছি। এক অর্থে করিচিই তো এবং ‘যাহা কহিব, তাহা সত্য কহিব’ এমত লাল কিতাব ছুঁইয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াই কহিতেছি! কিন্তু কে বে’ এই অজয় পিরামল?

    উইকিতে সার্চ মারলে তাঁর ‘পবিত্র ও নির্মল’ চরিত্তিরটা জানতে পেরে যাবেন। আর আমি এখানে তেনার সম্বন্ধে যাহা যাহা লিখিবো, তাহা উইকির এডিটরের দৌলতে হাওয়া হইয়া উইড়া গেসে গিয়া। যাক্কলা, href="http://onceinabluemoon2021.in/2023/03/26/revealing-the-controversies-about-the-piramal-group-additions-on-wikipedia/">উইকিও ওয়াশিং মেশিন হয়ে গেলো গো! হায়, হায়, পরান (আসলে কইতে চেয়েছিলুম, ‘ঝাঁট’) যায় জ্বলিয়া রে।

    পরান জ্বলবেই বা না কেন? তিনি ত্বক-সংক্রান্ত মলম-নির্মাতা — দাদ হাজা চুলকুনিতে দেয় আরাম। আমি তো পিরামল ফার্মার বানানো টেটমোসোল সাবান বগল-কুঁচকি এবং বিশেষ গোপনাঙ্গে (‘গোপন’ ব্যাপারটা সাংস্কৃতিক নির্মাণ) দগদগে ঘায়ে আচ্ছা করে দলি আর ঘষি, ঘষি, ঘষি… আর একরকম sado-masochist যন্তরনা আর আহ্লাদ অনুভব করি — এ যেন নিছক ব্লোজবের থেকেও বেশি আনন্দের। এদিকে শিল্প বিপ্লবের পর বিগত আড়াইশো বছরে আমার আকাশ-ছাদ (ওজন-স্তর) ফুটিফাটা হয়ে গিয়ে ক্রমান্বয়ে ইউভি রশ্মি ছড়াচ্ছে। তাই, টেটমোসোল কী আর কামে লাগবে!

    যখন আমাদের মনে খুব তেজ আসে, তখন শখ করে অনেক রকম জিনিস আমরা চিবিয়ে কিম্বা চেখে দেখি - যেমন, পেনসিল রবার কিম্বা বোতলের ছিপি কিম্বা শুকনো জুতো কিম্বা ক্যামবিসের ব্যাগ। শুনেছি আমার ঠাকুরদাদা একবার ফুর্তির চোটে এক সাহেবের আধখানা তাঁবু প্রায় খেয়ে শেষ করে ছিলেন। কিন্তু তা বলে ছুরি কাঁচি কিম্বা শিশি বোতল, এ সব আমরা কোনদিন খাই না। কেউ কেউ সাবান খেতে ভালোবাসে, কিন্তু সে সব নেহাৎ ছোটখাট বাজে সাবান। আমার ছোটভাই একবার একটা আস্ত বার্‌-সোপ খেয়ে ফেলেছিল - ‘বলেই ব্যাকরণ শিং আকাশের দিকে চোখ তুলে ব্যা ব্যা করে ভয়ানক কাঁদতে লাগল। তাতে বুঝতে পারলাম যে সাবান খেয়ে ভাইটির অকালমৃত্যু হয়েছে।’

    পিরামলের ল্যাক্টোক্যালামাইন নিয়েও আম্মোও একই কতা কইবো। আবার নিরন্তর কীটনাশকযুক্ত খাবার খেয়ে অম্বুলে ফিল করলেই, ওদের তৈরি পলিক্রল ঢকঢক করে মেরে দিই। গাঁজা-ভাঙ খেয়ে ভাবের ঘোরে থাকলে এমনটাই হয় কিনা!

    “ভাব এক্কে ভাব, ভাব দুগুণে ধোঁয়া,
    তিন ভাবে ডিসপেপ্‌শিয়া — ঢেঁকুর উঠবে চোঁয়া।”

    তবে হ্যাঁ, পিরামলের গর্ভনিরোধক দাওয়াই I Pill আমার অন্তরঙ্গাদের আমারই ক্যালামির জন্যই বেশ কয়েকবার হেব্বি কাজ দিয়েছে। তাদের শারীরিক কী ক্ষতি হয়েছে বা হয় নি তা’ জেনে আমার কী কাম? এই পুঁজি-পণ্য-বিনিময় মূল্য নির্ভর সমাজে সবই তো disposable—ব্যবহার করো আর ফেলে দাও। এ ফেলে আমাকে, আমি ফেলি ওকে। ‘কাম’ খতম, পয়হা হজম।
    পিরামল ফার্মার Brand Ambassador ছিলেন আমাদের দাদা, সৌরভ গাঙ্গুলি আর Piramal Capital & Housing Finance Limited (PCHFL)-এর Brand Ambassador হলেন গিয়ে আমাদের চেনা নবীন ডন শাহরুখ খান।

    ।। দুই ।।

    অজয় পিরামলের কুচ্ছো

    অজয় পিরামল মালটা বিলিয়নেয়ার শুধু নয়, মুকেশ আম্বানির (বিজেপির বড় আদরের দুটি মাত্তর ধনপতি শেঠেদের একজন মায়ের ভোগে গেছে, আর অবস্থাগতিক যা বুঝছি, তাতে আরেকজন যাবে যাবে করছে!) জামাই-এর বাপ। সেই যে মনে নেই, সাতশো কোটি টাকা খরচা করে আম্বানির মেয়ে ঈশার সঙ্গে পিরামলের ছেলে আনন্দের বে’ হল! কি অসভ্য সুন্দর সে অনুষ্ঠান! ঐশ্বর্যের দারিদ্র্য, নাকি দারিদ্র্যের ঐশ্বর্য? ধুস্, এসব হলো গিয়ে ডিপ্লোম্যাটিক বে’— দুই পরিবারের মধ্যে মিতাক্ষরার নিয়ম মোতাবেক সম্পত্তির প্রবাহ, যা কিনা দায়ভাগ-অনুসারী হিঁদুরা পাবেন না। তাহলে হিঁদুর ঐক্য কেমনে সম্ভবে? এই সব জানলে চাড্ডিদের Uniform Civil Code-এর “হিঁদু” প্রবক্তাদের একবগগা ছাতাটা ছেতরে যাবে!

    এই অজয় পিরামল লোকটার নামে বিস্তর অভিযোগ থাকলেও, জয় শ্রীরামের দয়ায় সেসব অভিযোগ আস্তাকুঁড়ে চলে যায়। ধাপে ধাপে কইছি মহাই, শুনুন।

    তিনি পরমবৈষ্ণব — শ্রী শ্রী রাধানাথ স্বামীর (ইস্কন?) শিষ্য বটেক। তার মানে অহিংস!

    তিনি ইন্সাইডার ট্রেডার অর্থাৎ কিনা এক কোম্পানির গুপ্ত খপর অন্য কোম্পানিতে সের দরে বেচাকেনা করছিলেন, যেমনটি করতেন হর্ষাদ মেহতা। কিন্তু, সেবির এমত অভিযোগ ধোপে টেকেনি—আম্বানির হবু বেয়াই বলে কতা, শাসক দলের অতি ঘনিষ্ঠ তো বটেই! তাই, এমন গুরুতর প্রমাণিত অভিযোগ থেকে পিরামল রেহাই পেয়ে গেলেন। ৬ লাখ টাকার জরিমানা তাঁকে আর দিতে হল না। অতএব, তিনি নিরপরাধ (২০১৬)। অথচ রজত গুপ্ত আমেরিকায় এই একই কম্ম করে ১৩.৯ মিলিয়ন ডলারের জরিমানা দিয়ে জেলে গেসলেন। অবশ্য তাঁর বিচারের সময় স্বয়ং জাজও নাকি কেঁদে ফেলেছিলেন।

    তিনি নিসর্গসন্ত্রাসী (Eco-terrorist)। ২০১৮ নাগাদ তেলেঙ্গানার দিগওয়াল গেরামে তেনার ওষুধের ফ্যাক্টরি জল দিচ্ছিলো বিষিয়ে। আর সেকি দুর্গন্ধ চাদ্দিকে। ছোটোলোকেরা এসব সহ্য না করতে পেরে ব্যাপক বিদ্রোহ করে বসলো। এসব তো গেরামের ছোটোলোকেরা মেনে নেবে না। তাই কর্পোরেট সোশাল রেস্পন্সিবেলিটির খাতিরে রেডি হল তাঁর সর্বজল প্রকল্প। গেরামে গেরামে বসে গেলো Water ATM যন্তর বা Vending Machine! Reverse Osmosis-এর মতোন খতরনক প্রক্রিয়ায় ‘বিশুদ্ধ’ জল বিলি করতে শুরু করলেন তিনি। পুঁজিবাদ এমন করেই সমস্যা বানিয়ে নিয়ে তার টেক-নির্ভর কুইক-ফিক্স সমাধান বানিয়ে রোজগার করে। সবুজ পুঁজিবাদের দস্তুর এমনই। এনারা কেইন্স নামক এক অর্থশাস্ত্রীর কথা মেনেই কাজ করেন। বেরোজগারির সমাধান বাৎলেছিলেন তিনি এই ভাবেঃ এক জায়গায় খুঁড়ে একটা টাকার ঘড়া বসাও, আবার সেটাকে খুঁড়ে তোলো।

    এইভাবেই পিরামল কাজ করে যায়। যেমন তার কোম্পানি Piramal Realty মুম্বাইয়ের আরবসাগরতীরে একের পর এক রিয়েল এস্টেট বানিয়ে যাচ্ছেন। এখানে যেসব জাল-জুয়াচুরি হচ্চে, তার পর্দাফাঁস করেছেন কৃষ্ণরাজ রাও। তার থেকে বড় কতা, ভারতবর্ষে সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল গোলকের ওম ব্যাপক বাড়ার দরুণ ভয়ানক বিপদগ্রস্ত। এই ব্যাপারটা খেয়াল না রেখেই পিরামল মুম্বাই এলাকাতেই একের পর এক গগনচুম্বী অট্টালিকা তুলে চলেছেন অথবা তুলতে উদ্যত। অতিধনী ক্রেতা এই বিধ্বস্ত তটে ফ্ল্যাট কিনে মরে মরুক! তাতে পিরামলের বা* ছেঁড়া যাবে! সাধে কি আর হেনরি জর্জ ১৯শতকের শেষের দিকেই বলেছিলেনঃ উন্নয়নের মানেই হলো রিয়েল এস্টেটের প্রোমোটারদের “unearned increment” (অনর্জিত উদ্বৃত্ত) অর্থাৎ উপরি পাওনা বেড়ে ওঠা।

    EXPOSING PIRAMAL REALTY: KRISHNARAJRAO

    ২০১৮ সালের কথা। তিনি বিজেপির মন্ত্রী পীযূষগোয়েলের কোম্পানি ব্যাপক বেশি দামে কিনে বিস্তর কম দামে বিক্কিরি করেছেন (Flashnet Scam)। এই না হলে ক্রোনি ক্যাপিটালিজম? হুঁ হুঁ বাবা, যতই তুমি না চেনো, এ লোকটা এলিতেলি লোক নয়, নইলে ব্রিটেনের মহারাণির কাছ থেকে CBE খেতাব পায়! [1]Flashnet Scam-এর খপরটা ফাঁস করে The Wire। পিরামল মানহানির হুমকি দেয়। আজ পাঁচ বৎসরকাল অতিক্রান্ত হইলেও সেই মানহানির মোকদ্দমা করে উঠতে পারে নি পিরামল। আমাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার বেলাতেও, নিশ্চিত জানি, এই RBI-পোষিত কাগুজে বাঘের (Paper Tiger) দৌড় কদ্দূর!

    ।। তিন ।।

    পিরামলের Dewan Housing Finance Corporation Limited (DHFL)-এর জবরদখল বেত্তান্ত

    এবার পিদিম জ্বালানোর আগে সলতে পাকানোর দরকারি কাজটা সারি। হঠাৎ এমন মালের পোঁঙায় লাগতে গেলুম কেন আমরা? মুখে কম্যুনিজমের বুলি ঝাড়ি, পুঁজিপতিদের খতম করবো না? সে মুরোদ অবশ্যি আমার নেই—ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, আমি কিনা আমি নিধিরাম সর্দার! তা’ কিনা আম্বানি-পিরামল পরিবার Z+ Security-তে থাকে। এরকম শ্রেণিশত্তুরকে তো বোম মেরে উড়িয়ে দিতে পারবো না, আর তা’ছাড়া কম্যান্ডো ট্রেনিং-ও নেই! প্রশ্ন হল এঁদের দেহ খতম করলেই কি বুর্জোয়া ভূতের মনন (Hauntology) খতম হবে? তাই, গান ফ্রন্ট ছেড়ে পেন ফ্রন্টে গিয়ে পিরামলের কাদা ঘাঁটতে শুরু করলুম। কিন্তু কেন? ধীরে ধীরে কই বৎস্, ক্যাঁচালের ইতিবৃত্ত কই আমি এক কথাবণিক, শ্রবণ করহ। চাড্ডিরা এই বেত্তান্ত শুনতে শুনতে আমাকে ‘লিবারাণ্ডু’, ‘সেকু-মাকু’ ইত্যাদি অভিধায় অভিহিত করতেই পারেন, তাতে আমার কাঁচকলা!

    পিরামলসাহেব পীযূষগোয়েলের Flashnet Scam-এর মতোই আরেক কেলো করে বসলেন। অবশ্যি, সেটা আদৌ ‘কেলো’ কিনা তা’ ভবিষ্যৎ কইবে।

    ২০১৯-এর কথা। লোকসভা নির্বাচন আসবে আসবে করছে। এমন সময় ১৮ই জানুয়ারি, ২০১৯-এ পিরামল বলে বসেন যে NBFC Sector-এ দুটো জবরদস্ত ধাক্কা লাগতে চলেছে। পরেরদিনই Cobrapost বলে একটি সংবাদ সংস্থা একটা রিপোর্টের মাধ্যমে ঘোষণা করে যে Dewan Housing Finance Corporation Limited (DHFL) কোম্পানিটা ঠিকঠাক ধারশোধ না দায়ে লাটে উঠতে চলেছে—ইয়ে মানে, গণেশ উল্টোতে চলেছে। পিরামল আগে থাকতে ব্যাপারখানা জানলেন কেমনে? শুধু তাই নয়, Cobrapost-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী দাউদ-ইকবাল মিরচির মতো আতঙ্কবাদী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি DHFL-এর কাছ থেকে বিপুল টাকা চাঁদা[2] নিয়েছে। এর থেকে ঠাওর করা যায় যে চাড্ডিদের হিঁদুয়ানি একটা বিরাট ভাঁওতা- তার আড়ালে সন্তর্পনে কাজ করে চলে বাজারী মৌলবাদী প্রক্রিয়াঃ খোলা বাজারে ব্যক্তি-পুঁজির মুক্ত প্রবাহ…

    কিন্তু, তা বলে দাউদ-মিরচির মতো “সন্ত্রাসী” মোছলমানদের সঙ্গে হিঁদুত্ববাদীদের গা ঘেঁষাঘেঁষি? পরমহিঁদু চাড্ডিদের জাত যাবে না তাতে? আরে দূর মহাই, টাকার আবার জাতপাত কী? (রক্তেরও নেই—এ কতা কে আর কারে কয়!) কিন্তু প্রগাঢ় ইস্লামোফোবিয়ার নফরৎ-এর মড়ক লেগেছে। এই দেখুন না, এবারের মানে ২০২৩-এর বাজেটে দেড়লক্ষ কোটি (এই পরিমাণটা সংখ্যায় লিখুন তো দেখি! কেমন এলেম আছে বুঝবো! আমি আগাম বলে দিলুম, আমি পারবোনেকো! আপনিও আমার মতোন ফেল-ফেল্টু-ফেলু হয়ে যাবেন) টাকার ঋণ মাথায় নিয়ে মহান ভারত (হিঁদুরাষ্ট্র-অভিগামী) সরকার আফগানি্স্তানের তালিবান সরকারকে ২০০ কোটি টাকা দানখয়রাত করেছে। জয় শ্রী রাম। মেরা ভারত মহানের ভারতমাতার অপগণ্ড সরকারবাহাদুর অর্থনীতি বলতে যা বোঝে তা’ ফিস্কাল অডিটিং আর ট্যাক্সোর পয়হায় মস্তি মারা। আরে বাপু, ফের কই, চাড্ডিদের pop মুখোশ হল উগ্র সন্ত্রাসী ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ। আর ভেতরে ভেতরে এরা পুঁজির বড়ো খেলায় মাতোয়ারা। অর্থাৎ কিনা ধর্মীয় উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রমুখন (foregrounding) আর বাজারী মৌলবাদের প্রমুখবন্ধ (foreclosure) - এর লীলেখেলায় এদের ওস্তাদি দেখবার মতোন, শেখবার মতোন।

    তা’ হল কী, দাউদ-ইকবাল মিরচির সঙ্গে ঢলাঢলি করে DHFL- এর মতোন সংস্থা থেকে Terror funding করে তোলা তোলার ব্যাপারটা একটু বুঝেশুনে নিতে চাইলুম। RTI করলুম। ঘাঁটা জবাব এলো

    তখন করলুম কি ডঃ মোহন ভাগবত আর নাড্ডাবাবুকে কইলুমঃ যেসব সংবাদ মাধ্যম এসব আজেবাজে খপর ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মোকদ্দমা করে দাও। আজ এক বছর হয়ে গেলো। রাত কত হল? উত্তর মেলে না। তাহলে কি ধরে নেবোঃ মৌনম্ সম্মতি লক্ষণম্?

    যাকগে যাক, আবার DHFL-এর ঘটনাক্রমের প্রসঙ্গে আসি, ক্রোনির ক্রোনোলজি সমঝাই। ক্রোনি ক্যাপিটালিজম এবং ছায়া অর্থনীতির ভূমিকাকে সহজ-সরলভাবে বোঝার জন্য এই চলচ্ছবিটা দেখে নিতে পারেনঃ

    KISSA CRONY KA VIEW HERE

    এবার হলো কি, আম্বানির রিলায়েন্স নিপ্পন লাইফ ইন্সিয়োরেন্স কেস করে বসলো DHFL-এর বিরুদ্ধে বম্বে হাই কোর্টে। এর ফলে ২০১৯-এর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ সেই কোর্ট আদেশ দিলো যে DHFL আর কোনোরকম লেনদেন করতে পারবে না। আরে বাপু, DHFL বড়ো বাড় বেড়েছিলো। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তাদের অবদান বিশাল। একি আর প্রতিদ্বন্দ্বী হাউসিং ফিনান্স কোম্পানির সহ্য হয়? মানে, আন্দাজে কইঃ HDFC-র দীপক পারেখের ঝাল লেগে গেছিলো (অগস্ট ২০২৩ এর প্রথমেই যখন HDFC ব্যাঙ্ক আর হোম লোন জুড়ে গেলো, তখন পিরামলের বিবৃতি প্রকাশ পেলো। এর ফলে, ’২৩ এর অগস্টের প্রথমেই পিরামলের নানান কোম্পানির শেয়ার দর ব্যাপক কমতে থাকে)! পুঁজিপতিদের ভেতরেও যে একে অপরকে ল্যাং মারে—হেই কথাডাও তো খেয়াল রাখতে হবে, নাকি? শ্যাম বেনেগালের ‘কলযুগ’ ফিলিমটা দেখে অবস্থা-ব্যবস্থা বুঝে নিন।

    ব্যাস! আটকে গেলো সাধারণ FD-NCD Holder (যাঁরা মূলত ফিনান্সিয়াল বুর্জোয়া)-দের পাওনা-গন্ডা। আরে মহাই, জীবনে কখনো শুনেচেন -- স্বাধীন ভারতে কারোর FD-র টাকা মার গেছে (ডানকান কোম্পানি এমন নজির তৈরি করতে চলেছিলো ২১ শতাব্দীর প্রথম দশকে)? আর DHFL তো সঞ্চয়িতা-সারদা-আল্কেমিস্টের মতো পঞ্জি স্কিম নয়— রীতিমোতন সরকার -অনুমোদিত AAA+ রেটেড NBFC কোম্পানি। আর কারা এই কোম্পানির FD Holder? ভারতীয় বায়ুসেনা, উত্তরপ্রদেশের পাওয়ার কর্পোরেশন, রামকৃষ্ণ মিশন[3], একাধিক কেরেশ্চান এন জি ও, সরকারি আমলা…।

    এরপরে বসলো হোমরা-চো(ম)রাদের মিটিং। ঠিক করা হলো DHFL-কে প্রয়াত অরুণ জেঠলির কৃপায় তৈরি নবীন Insolvency and Bankruptcy Code (IBC, ২০১৬ সাল থেকে লাগু এই কোড বিগত সাত বছরে অন্তত ৩৫বার এই বেমক্কা কোডের সংশোধন হয়েছে। তাহলেই বুঝুন এই কোডের অস্থির স্থিতাবস্থা!!! [4]-র আওতায় নিয়ে আসা হবে। হলোও তাই। বরখাস্ত হলেন পুরোনো মালিকেরা। তৈরি হলো Committee of Creditors (CoC) ২০১৯-এর নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যেই। চালু হলো DHFL নামক তথাকথিত “দেউলিয়া” কোম্পানিকে নিলিমে বিক্কিরি করার জন্য হাঁক পাড়া —। সে এমনি-তেমনি বিচার নয়, তাতে এসে জুটলো বড়ো বড়ো দিশি ব্যাঙ্ক, দেউলিয়া-বিশেষজ্ঞ পেশাদার (Bankruptcy Professionals) এবং বাঘা-বাঘা দিশি-বিদিশি কর্পোরেটেরা। নিলেমের সাজানো লড়াই শুরু হলো আদানি গ্রুপ, ওকট্রি ক্যাপিটাল, পিরামলের কোম্পানি --- এঁদের মতোন আরো উনিশবিশটা অতিধণীর মধ্যে। নিলেমে দর হাঁকার আগেই কেউ কেউ হাওয়া বুঝে কেটে পড়লো। তবে দিনের শেষে কেমনে জানি গুরুত্ব পেয়ে গেলেন কেবলই পিরামল সাহেব (মনে রাখবেন, পিরামল সবার আগে এটা প্রেডিক্ট করেছিলো ২০১৯-এর জানুয়ারিতে; এই স্ক্যামের ব্যাপারটা যে প্রাক-নির্ধারিত, তা এই অনুষঙ্গেই বুঝে নিতে হবে তো!)। তাঁর Resolution Plan পাশ হলো বিপুল ভোটে, তবে সেখানে থাকলো না পুরোনো মালিকদের (কপিল আর ধীরাজ ওয়াধোয়ান) উপস্থিতি কিংবা বলবার সুযোগ। পিরামলের পরিকল্পনা (স্ক্রিপ্ট রেডিই ছিলো) মোতাবেক FD Holder-দের বিনিয়োগ করা টাকার মাত্র ২৩.০৭% মিলবে আর NCD Holder-রা পাবে দেয় টাকার ৪০%। বাকিটা গিলে নেবেন পিরামল। আহাঃ কী সোন্দর পরিকল্পনা।

    এমন সময় গাছের একটা ফোকর থেকে কি যেন একটা সুড়ুৎ করে পিছলিয়ে মাটিতে নামল। চেয়ে দেখি, দেড় হাত লম্বা এক বুড়ো, তার পা পর্যন্ত সবুজ রঙের দাড়ি, হাতে একটা হুঁকো, তাতে কল্‌কে-টল্‌কে কিচ্ছু নেই, আর মাথা ভরা টাক। টাকের উপর খড়ি দিয়ে কে যেন কি সব লিখেছে।
    বুড়ো এসেই খুব ব্যস্ত হয়ে হুঁকোতে দু-এক টান দিয়েই জিজ্ঞাসা করল, ‘কই, হিসেবটা হল ?’
    কাক খানিক এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, ‘এই হল বলে।’
    বুড়ো বলল, ‘কি আশ্চর্য ! উনিশ দিন পার হয়ে গেল, এখনো হিসেবটা হয়ে উঠল না?’ কাক দু-চার মিনিট খুব গম্ভীর হয়ে পেনসিল চুষল, তারপর জিজ্ঞাসা করল, ‘কতদিন বললে?’
    বুড়ো বলল, ‘উনিশ ।’
    কাক অমনি গলা উঁচিয়ে হেঁকে বলল, ‘লাগ্‌ লাগ্‌ লাগ্‌ কুড়ি।’
    বুড়ো বলল, ‘একুশ।’ কাক বলল, ‘বাইশ।’ বুড়ো বলল, ‘তেইশ।’ কাক বলল, ‘সাড়ে তেইশ।’ ঠিক যেন নিলেম ডাকছে। ডাকতে ডাকতে কাকটা হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমি ডাকছ না যে?’ আমি বললাম, ‘খামখা ডাকতে যাব কেন?’
    বুড়ো এতক্ষণ আমায় দেখেনি, হঠাৎ আমার আওয়াজ শুনেই সে বন্‌ বন্‌ করে আট দশ পাক ঘুরে আমার দিকে ফিরে দাঁড়াল। তারপর হুঁকোটাকে দূরবীনের মতো করে চোখের সামনে ধরে আনেকক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর পকেট থেকে কয়েকখানা রঙিন কাচ বের করে তাই দিয়ে আমায় বার বার দেখতে লাগল। তারপর কোত্থেকে একটা পুরানো দরজীর ফিতে এনে আমার মাপ নিতে শুরু করল, আর হাঁকতে লাগল, ‘খাড়াই ছাব্বিশ ইঞ্চি, হাতা ছাব্বিশ ইঞ্চি, আস্তিন ছাব্বিশ ইঞ্চি, ছাতি ছাব্বিশ ইঞ্চি, গলা ছাব্বিশ ইঞ্চি।’
    আমি ভয়ানক আপত্তি করে বললাম, ‘এ হতেই পারে না। বুকের মাপও ছাব্বিশ ইঞ্চি, গলাও ছাব্বিশ ইঞ্চি? আমি কি শুওর?’
    বুড়ো বলল, ‘বিশ্বাস না হয়, দেখ।’ দেখলাম ফিতের লেখা-টেখা সব উঠে গিয়েছে, খালি ২৬ লেখাটা একটু পড়া যাচ্ছে, তাই বুড়ো যা কিছু মাপে ছাব্বিশ ইঞ্চি হয়ে যায়।


    এখানে একটু ভিন্ন অথচ অনুষঙ্গিত প্রসঙ্গে যাই। খেয়াল করে দেখবেন, যেসব অতিধনী ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বিপুল টাকা ঝেড়ে বিদেশে আরামসে কেটে পড়েছে (৫০ জনের মধ্যে ৪৯ জনই কার্যগতিকে, প্যারোকিয়াল হয়েই না হয় কইছি, গুজরাটি। ইঞ্জিরিতে এঁদের মতোন মহান ব্যক্তিকে বলা হয় “Superrich Wilful Defaulter”), তাঁদের ৬৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুব[5] হয় P(l)andemic-এর হয়রানির দুঃসময়ে। শাসকদল না সাহায্য করলে এমনভাবে পগার পার সম্ভব? দলের রোজগারের খাতিরে এসব তো কত্তেই হয়—যে খেলার যেমন নিয়ম! ইন্টারপোলের খাতায় ঋণখেলাপিদের কয়েকজনের নামে লাল মার্কা দেওয়া থাকলেও, কয়েকজনের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে/হচ্ছে। এমনকী বাজারে জোর গুজব, ব্যাঙ্কের দস্তাবেজ থেকেও এনাদের নাম মুছে দেওয়া হচ্ছে। মাঝেসাজে বিজয় মাল্যর মতো ঋণখেলাপিদের (১১ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ী ধার) নামে লোকদেখানি মামলামোকদ্দমা হয় বটে, তবে তাঁরা গরহাজির হলে ২০০০ টাকা (কী বিশাল টাকা! বাপরে! ২০০০ টাকার নোট তো বাতিল![6]) জরিমানা করা হয়। ঋণখেলাপিদের টাকার খানিকটা অংশ পার্টি ফান্ডে ঢোকে। তবেই না বিজেপির এত্তো সম্পদ! আর উড়ে যাওয়া পাখিদের যে টাকা ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হয়েছে, তা অদ্ভুত এক ক্ষতিপূরক প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের ঘাড় ভেঙে তোলা হয়। বর্তমান ভারতে পরপর ব্যাঙ্করাপ্সির ঘটনা এইজন্যই ঘটে চলেছে এবং আরো ঘটবেও।

    পুঁজিপতিরা আবার অন্যভাবে এই পার্টিকে চাঁদা দেওয়ার দস্তুরটা ঠিকঠাক করে নেন মানে ক্ষতিপূরণ করেন। যদি ‘জনঅরণ্য’-মুভির সোমনাথকে মনে রাখেন, তাহলে ব্যাপারটা বুঝবেন। সোমনাথের মতোন ছাপোষা ভদ্দরলোকও এক টেবিলে বসে তিনখানা কোম্পানি খুলতে পারে। একে বলা হয় ‘শেল কোম্পানি’। প্রত্যেক পুঁজিপতিদেরই এরকম শেল কোম্পানি থাকে। এখানে টাকার নক্কা-ছক্কা হয় এবং বলা বাহুল্য, পার্টিকে চাঁদা দেওয়া বাবদ ক্ষতি মেটানো হয় । কেউ ধরা পড়ে, কেউ বা ধরা পড়েনা। সবই শাসকের মর্জি। ওয়াধোয়ানরা নাকি বান্দ্রায় এরকম এক শেল কোম্পানি খুলে (পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে “The Bandra Books”) একধরণের ক্ষতিপূরক প্রক্রিয়ার ভেতরে নাকি ঢুকতে চাইছিলো (যদিও অভিযোগ এখনো অব্দি প্রমাণিত হয়নি)। ওয়াধোয়ানরা এখন জেল খাটচেন রানা কাপুরের Yes Bank-এর কেলেঙ্কারির সঙ্গে জুড়ে থাকার জন্য। ওয়াধোয়ানরা (যদিও তাঁরা কখনোই ধোয়া তুলসী পাতা নন! “প্রতিদ্বন্দী”-র সিদ্ধার্থর কথামতোনই বলতে হয়ঃ অতো বড়ো কোম্পানির মালিক, সে কিভাবে ভালো হয়?) এক জাঁতাকলের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন!

    Mousetrapped: An Open Letter to the Wadhawan Brothers VIEW HERE

    না, না, এসব কিসসু ঘটে নি রামরাজ্যে—২০১৬-র হঠাৎ বিমুদ্রীকরণের ‘সাফল্য’-এর পর DHFL-এর মতো ঘটনা ঘটতেই পারেনা, পারেনা…। কেননা পোধানমন্ত্রীর বিমুদ্রীকরণের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী (১)কালো টাকার এমত লেনদেনের সমাপ্তি ঘটিয়াছে—মানি লন্ডারিং করা অসম্ভব; (২) পুলোয়ামায় ৪০ জন জওয়ান সন্ত্রাসী আক্রমণে মারা যান নি, কেননা বিমুদ্রীকরণের দরুন ভারতমাতায় কোনো সন্ত্রাস নেই। জওয়ানরা মরেছে গোদিকে নির্বাচনে জেতানোর জন্য মানে sympathy vote কেনার জন্য [অতো RDX বোঝাই গাড়ি কি এলো নাগপুর (মনে রাখবেন, এটা RSS-এর সদর-দপ্তর) থেকেই?!] --; (৩) জালিয়াতি কারেন্সি নোটস নেই আর। ২০০০ টাকার নোটস তো জালই হয়নি! এই না হলে মো-শার সাফল্য!

    এখানেই একটা কূটাভাসের কথা পাড়ি। অন্ধ্-গন্ধ্ ভক্তকুল জানে যে ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গার মহানায়ক কে। তাই তেনাকে খুবই ভক্তিছেরাদ্দ করে। এবার সর্বোচ্চ আদালত যখন বলে দিলো ও ব্যাটার কোনো ভূমিকাই নেই, তখন অন্ধ্-গন্ধরা পড়লো মহা ফাঁপরে। তক্কের খাতিরে মহানায়ক তো আর মহানায়ক রইলেন না।

    তাই ভারতে সন্ত্রাস নেই, কালো টাকা নেই, জাল নোটস নেই। শুধু এটুকু মনে রাখলেই চলবে যে প্রায় শ’খানেকের ওপর মানুষ মারা গিয়েছিলেন সে সময় আর হয়রান হয়েছিলেন আপামর জনসাধারণ এবং ব্যাঙ্ককর্মী—কেউ বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে, কেউবা টাকা গুনতে নাজেহাল হয়েছেন। href="https://onceinabluemoon2021.in/2023/01/06/the-crack-in-the-majoritarian-indian-politics/">ভারতের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারকের বেঞ্চে একজন বাদে (জাস্টিস নাগরথনা) বাকি ক’জন এই বিমুদ্রীকরণকে সঠিক বলে মেনে নিয়েছেন

    তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে, DHFL-এর মতো কেলেংকারি আদৌ ঘটে নি—সবই মিথ্যে-মায়া। DHFL-এর FD Holder-দের পাওনা ৪.৫ হাজার কোটি টাকার বকেয়া পাওনার ২৩.৭% দিয়েই খালাশ মহামহিম সরকার বাহাদুর। বাকি টাকা গায়েব। হিমালয়ের যোগি পরিচালিত শেয়ারের ফাটকা বাজারে না গিয়ে অথবা Mutual Fund-এর মতো ছদ্মবেশী শেয়ারে বিনিয়োগ না করে, DHFL-এর FD Holder-রা তো ভারি অন্যাই করে ফেলেছে। তাঁদের তাই বিগত সাড়ে তিন বছর ভিন ধাঁচের ‘Capital’ Punishment ভোগ করতেই হচ্ছে।

    এমন অন্যায্য কাজ তো আর এমনি এমনি করেন নি DHFL-এর FD Holder-রা! কেবল তাঁদের স্রেফ বাজারে অনভিজ্ঞতা, বেশি সুদের লোভ আর ফিস্কাল অডিটিং-এ মূর্খামিকে দুষলে হবে? দাউদ-ইকবাল মিরচির সঙ্গে চাড্ডিদের সাঁট না হয় “অজানা”ই রইলো। কিন্তু নয়া ডন শাহ রুখ খানকে তো ভুললে চলবে না। আগেই বলেছি, তিনি ছিলেন DHFL-এর Brand Ambassador। তাই আমাদের ভেবে দেখতেই হবে যে এই মসীহা ডন কি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে FD Holder-দের প্রতারণা করেন নি কি? Consumer Protection Act, 2019 -এ ব্যাপারে কী কয়? “False and Misleading Advertisements”করলে/দিলে তো শাস্তি হবার কথা! যেজন্য মিঠুনদা সারদার মত ponzi scheme কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে গিয়ে তৎক্ষনাৎ ১.১৫ কোটি টাকা Enforcement Directorate(ED)-এর হাতে তুলে দিলেন। বঞ্চিত FD Holder-রা ভেবেছিলেন মিঠুনদার মতোই ডন এসে বলবেন, “ম্যায় হুঁ না”!

    অনুনয়-বিনয়কে খানসাহেব তো পাত্তাই দিলেন না। যখন ডন কিহোতে কিসসুটি করলেন না, তখন প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত DHFL FD-Holder-রা চেনা কিছু লব্জ (arrest, boycott) ব্যবহার করতে শুরু করলেন।

    মজার ব্যাপার হল গিয়ে পিরামল এবার তাঁদের দুটি কোম্পানির Brand Ambassadors হিসেবে চাইলেন রাহুল দ্রাভিড় আর ফারান আখতারকে। DHFL FD Holder-রা তাঁদের পিরামলের কুচ্ছোর বেত্তান্ত কয়ে অনুরোধ করলেন, এই বিজ্ঞাপনী চক্করে পড়ে তাঁদের কপালে কলঙ্করেখা গজাবে। রাহুল দ্রাভিড় যেমন মহিলা কুস্তিগিরদের বেলায় মুখ খোলেন নি তেমনি এখানেও FD Holder-দের কথায় কানই দিলেন না।

    কিন্তু, শাবানা আজমি-জাভেদ আখতার সহ ফারহান FD Holder-দের টুইট করা মাত্তর ফারহান আর পিরামলের ধারকাছ মাড়ালেন না।

    Bhaag Farhan Bhaag from the Piramal Group: a humble appeal to Mr. Farhan Akhtar VIEW HERE

    যাক গে যাক, আবার ফের বিজ্ঞাপনের ঢাকঢোল সেরে DHFL-পিরামল বেত্তান্তে আসি। কিসের বিনিময়ে লাভ করলো এই ভায়া আম্বানি মোদি-শাহর পরমমিত্র মুকেশ আম্বানির বেয়াই পিরামল? ৪৫ হাজার কোটি টাকার DHFL-এর সম্পত্তি মায় সমস্ত পরিকাঠামো পিরামল অনায়াসেই কিনে ফেললে ১ টাকার বিনিময়ে। হচ্চেটা কি? হর্ষাদ মেহতা এবং সত্যমের থেকেও এটা বড়ো দুর্নীতি। একুনে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকার [7] DHFL-এর সম্পত্তি (কে কিভাবে এর হিসেবনিকেশ করলো?অস্বচ্ছ, অস্বচ্ছ, অস্বচ্ছ!!!) মাথায় তুলে নিলো পিরামল! ভাবা যায়!

    অথচ এমন কুচ্ছোর (কেচ্ছা+কুৎসা) কতা আম জনতা জানেই না। কেন? গদি মোদিয়া এবং অ-গদি মিডিয়ারাও (আশ্চর্য ব্যাপার বটেক!) এমন খপর বের করে না। একমাত্তর কংগ্রেস ছাড়া [8] এ নিয়ে সংসদ ও সংবাদমাধ্যমে কতা কয়নি অন্য কোনো বিরোধী দল। আর সোশাল মিডিয়া (এখন এই মাঁচাকে গণতন্ত্রের পাঁচোয়া স্তম্ভ বলা হচ্ছে। কেননা মূলধারার ছাপা আর বৈদ্যুতিন মাধ্যম, যা কিনা গণতন্ত্রের চার নম্বর স্তম্ভ) বলতে মানি লাইফের সুচেতা দালাল (ইনি হর্ষাদ মেহতার কেলেঙ্কারি ধরেছিলেন), দেশনীতি আর ফিনান্স সার্ভিস[9] ছাড়া এতো বড়ো কেলোর কীর্তি নিয়ে কেউ তেমন উচ্চবাচ্য করেনি। করলেও পিরামলের তরফে ঝোল টেনে কতা কয়েচে।
    আর আমরা এইসব কুচ্ছো একের পর এক ইঞ্জিরি ভাষায় বের করে যাওয়াতেই আমাদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর আমরাও এমন খ-এর ছেলে যে পিরামলের মামলা যে লিগাল ফার্ম করলো, সেই DSK Legal-কে নিয়ে শুরু করলুম ব্যাপক তামাশা, কেননা আমরা আগেই জানতুম যে ১০০ কোটি টাকার ব্যাপারটা ধোপে টিকবে না। (দ্রঃ পরিশিষ্ট-১)

    RBI অন্ধ ধৃত-‘রাষ্ট্র’-এর মতোন রাবার স্ট্যাম্প বা সম্মতিসূচক ছাপ মেরে দেয় এই প্ল্যানের ওপরে ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১-এ। পিরামলের তো ভারি মজা। মজা RBI-এর গবর্নর শক্তিকান্ত দাসেরও। তিনি ইতিহাসের এমএ। তাহলে তো তাঁকে দিয়ে বিজেপির মনোমত “ইতিহাস” লিখতে দিলেই হতো—মুঘল-এ-আজম ফিলিমটার খালি নাম বদলালেই হল বা ফিলিমটাকেই বয়কট করলেই যথেষ্ট। টাকাপয়হার কারবারে তিনি আবার কেনো? বিজেপির সুব্রমনিয়ম স্বামীই হোন আর নোবেলজয়ী বিনায়ক বাঁড়ুজ্জেই হোন, শক্তিকান্তবাবুকে নিন্দেমন্দ করতে ছাড়েন নি। তাঁদের মতে ইনি শুধু দুর্নীতিগ্রস্তই নন, ফিস্কাল অডিটিং-এর খেলাতেও অপটু। তাই এনাকে পুতুল বানিয়ে খেলা অতি সহজ।

    এই approval নিয়ে আসার লীলেখেলায় পেত্থম বাধ সাধলো National Company Law Tribunal (NCLT: সর্বনিম্নতম quasi বা আধা-আইনি সংস্থা)-র প্রথম অধ্যাদেশ। ১৯শে মে, ২০২১-এ তারা বলে বসলো—ওহে RBI এবং তার CoC, পুরোনো মালিকদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী FD-NCD-র ধারক-বাহকরা পুরো টাকা ফেরত পাবেন। তাই, সেই পুরোনো মালিকদের কথা আবার ভেবে দেখা হোক। ১০ দিনের মধ্যে জবাব চাই। পিরামলের তো মাথায় হাত।

    NCLT’S FIRST ORDER-ON-DHFL

    আশ্চর্য লাগে এই ভেবে যে CoC আর অন্যান্য ঋণদাতা ব্যাঙ্করা এমন অপ্রত্যাশিত উলট পুরাণ মেনে নিতে পারলেন না। তাঁরা কইলেন, IBC-র লাগু হওয়ার পর এ আবার কেমন কতা? Bad বা good যেমনই precedent তৈরি হোক না কেন, সত্যি is always সত্যি (সত্যের দাবি যদিও করে থাকেন রাজনৈতিক নেতারা এবং ধর্মীয় গুরুরা!) কোদালকে তো কোদালই কইবো বাপু। কোথায় কী! বরং পিরামলের তথা IBC-র পক্ষে সওয়াল করলেন CoC। ভাবা যায়! কী মুশকিল— ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলো তাঁদের প্রাপ্য টাকাপয়হা ফেরৎ চাইছেন না! এ কেমন কতা রে ভাই? RBI-নিযুক্ত CoC যে একটা প্রাক্-নির্ধারিত ভাঁওতা, তা আমরা একটু বাদেই টের পাবো।
    পিরামল সহ CoC কইলেন, “তবে চলো ভাই, NCLT-র আদেশের উত্তর না দিয়েই এর পরের ধাপে যাই”।

    তাই ১০ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়া তো দূরের কতা, পিরামল-CoC ছুট লাগালেন NCLT-র পরবর্তী ধাপ National Company Law Appellate Tribunal (সর্বনিম্নতর quasi বা আধা-আইনি সংস্থা NCLAT)-এ এবং মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই NCLAT-কে দিয়ে একটি নয়া অধ্যাদেশ জারি করিয়ে ২৫শে মে, ২০২১-এ NCLT-র বক্তব্য স্থগিত করা হলো।
    NCLAT-First ORDER

    এইভাবে ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া হল নাকি? এ আবার কি ধরণের আইনি অসহযোগ? এটা Contempt of Court হয়ে যাচ্ছে নাকি? মজা হল এই যে তাঁরা NCLT-র আদেশ উল্লঙ্ঘন করছেন, তাঁরাই আবার ফের পুনরায় এই NCLT-র দ্বিতীয় আদেশ মেনে DHFL দখল করবেন। সবুর করুন পাঠক, এ বড়ো জটিল খেলা—একুশে আইনের খেলা। আস্তে আস্তে সবটাই কইবো।

    শিব ঠাকুরের আপন দেশে,
    আইন কানুন সর্বনেশে !
    কেউ যদি যায় পিছ্‌লে প'ড়ে
    প্যায়দা এসে পাক্‌ড়ে ধরে,
    কাজির কাছে হয় বিচার —
    একুশ টাকা দণ্ড তার ৷৷

    সেথায় সন্ধ্যে ছ'টার আগে,
    হাঁচতে হ'লে টিকিট লাগে ;
    হাঁচ্‌লে পরে বিন্‌টিকিটে —
    দম্‌দমাদম্ লাগায় পিঠে,
    কোটাল এসে নস্যি ঝাড়ে —
    একুশ দফা হাঁচিয়ে মারে ৷৷
    কারুর যদি দাঁতটি নড়ে,
    চারটি টাকা মাশুল ধরে,
    কারুর যদি গোঁফ গজায়,
    একশো আনা ট্যাক্‌সো চায় —
    খুঁচিয়ে পিঠে গুঁজিয়ে ঘাড়,
    সেলাম ঠোকায় একুশ বার ৷৷

    চলতে গিয়ে কেউ যদি চায়,
    এদিক ওদিক ডাইনে বাঁয়,
    রাজার কাছে খবর ছোটে,
    পল্টনেরা লাফিয়ে ওঠে,
    দুপুর রোদে ঘামিয়ে তায়
    একুশ হাতা জল গেলায় ৷৷
    যে সব লোকে পদ্য লেখে,
    তাদের ধ'রে খাঁচায় রেখে,
    কানের কাছে নানান্ সুরে,
    নামতা শোনায় একশো উড়ে,
    সামনে রেখে মুদীর খাতা
    হিসেব কষায় একুশ পাতা ৷৷

    হঠাৎ সেথায় রাত দুপুরে,
    নাক ডাকলে ঘুমের ঘোরে,
    অম্‌নি তেড়ে মাথায় ঘষে,
    গোবর গুলে বেলের কষে,
    একুশটি পাক ঘুরিয়ে তাকে
    একুশ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখে ৷৷

    এর পর NCLT বেচারা ৭ই জুন, ২০২১-এ তাঁদের দ্বিতীয় অধ্যাদেশে পাশ করিয়ে দিলেন (বাধ্য হলেন?) পিরামলের অসম-বিষম প্রস্তাব। এই অধ্যাদেশের বলেই পিরামল এখন নাকি মালিক। বুঝুন অবস্থা, যে NCLT-র প্রথম আদেশের জবাব তাঁরা দিলেন না, সেই NCLT-র দ্বিতীয় আদেশের জেরে পিরামল DHFL-এর মালিক হলেন। একেই কয় “Adverse Possession” বা Squatter’s Right। মনে রাখবেন পাঠক, সর্বনিম্ন আধা আদালত হল গিয়ে এই NCLT। এবেলায় তো “Error in jurisdiction vs. Excessive Jurisdiction”VIEW HERE কথাটা উঠলো না!

    তবে কী কারণে না জানি এর পর থেকে পিরামলের কোম্পানির নাম বদলে বদলে যাচ্ছে। কখনো বা Piramal Capital & Housing Finance Limited (PCHFL) কখনো বা Piramal Finance—সামাজিক গণমাধ্যমে বা কোম্পানির একই প্যাডে দুদুটো নাম ব্যবহৃত হচ্ছে। কেন? আমরা যখন এ ব্যাপারে RTI করলুম। তখন প্রায় মাসাধিক কাল এই কোম্পানির সোশাল মিডিয়া পেজগুলো থমকে দাঁড়িয়ে গেছিলো।

    এরপরে সব কেমন জানি অন্যদিকে ঘুরে গেলো। ভুলিয়ে দেওয়া হলো কিছুকালের জন্য FD-NCD Holder-দের আইনানুগ ন্যায্য দাবিসমূহ। সেপ্টেম্বর ২০২১ নাগাদ পিরামল দাবি করলেন তিনি DHFL-এর “বৈধ” মালিক। অথচ পুরো কেসটিই তখনো আইনি প্রক্রিয়ার জটাজালে আবদ্ধ। বহু সংস্থা এবং ব্যক্তি কেস করেছেন দিল্লি হাইকোর্টে। এখন তাঁরা ছুটেছেন সুপ্রিম কোর্টে। কিভাবে এড়িয়ে যাবেন পিরামল এত্তোসব ঝুটঝামেলা? অতোই কি সোজা বিচারাধীন অবস্থায় নিম্নতম আধা-আদালত NCLT-র দ্বিতীয় আদেশ মেনে মালিকানা নেওয়া? তানাশাহি সরকারের তথা শাসকদলের সঙ্গে সাঁট না থাকলে এমন অজেয় হতে পারতো কি অজয় পিরামল! শুধু তাই নয়, তিনি একটাকায় DHFL-এর সমস্ত সম্পত্তিই কিনলেন না, দস্যু রত্নাকর হিসেবে ঠাওরালেন আগের মালিকদের—তাদের পাপের ভাগিদার হতে চাইলেন না পিরামল, যেমনটা হতে চায়নি রত্নাকরের আত্মীয়রা। একেবারে আইনানুগ পথে আগের মালিকের পুরোনো পাপ থেকে রেহাই পেলেন তিনি।[10]

    আমি শ্লেটখানা তুলে দেখলাম খুদে খুদে অক্ষরে লেখা রয়েছে - ‘ইয়াদি কির্দ অত্র কাকালতনামা লিখিতং শ্রীকাক্কেশ্বর কুচকুচে কার্যঞ্চাগে। ইমারৎ খেসারৎ দলিল দস্তাবেজ। তস্য ওয়ারিশগণ মালিক দখলিকার সত্ত্বে অত্র নায়েব সেরেস্তায় দস্ত বদস্ত কায়েম মোকরবী পত্তনী পাট্টা অথবা কাওলা কবুলিয়ৎ। সত্যতায় কি বিনা সত্যতায় মুনসেফী আদালতে কিম্বা দায়রায় সোপর্দ আসামী ফরিয়াদী সাক্ষী সাবুদ গয়রহ মোকর্দমা দায়ের কিম্বা আপোস মকমল ডিক্রীজারী নিলাম ইস্তাহার ইত্যাদি সর্বপ্রকার কর্তব্য বিধায় - ‘আমার পড়া শেষ না হতেই বুড়ো বলে উঠল, ‘এসব কি লিখেছ আবোল-তাবোল ?’ কাক বলল, ‘ওসব লিখতে হয়। তা না হলে হিসেব টিকবে কেন? ঠিক চৌকসমত কাজ করতে হলে গোড়ায় এসব বলে নিতে হয়।’ বুড়ো বলল, ‘তা বেশ করেছ, কিন্তু আসল হিসেবটা কি হল তা তো বললে না?’

    তা’হলে এখানে Joseph K আদতে কে? কে নানান আইনি দরজায় বারংবার খটখটাচ্ছে? চৌকিদার থুড়ি দারোয়ানদের ম্যানেজ করে ‘কে’ বিচারালয়ের সামনে আগে গিয়ে পৌঁছচ্ছে? কাদের ট্রায়াল হবে? ৭৭ হাজার এফডি হোল্ডারস নাকি পিরামলের? এইসব এফডি-এনসিডি হোল্ডাররা আপাতত কোনো অন্যাই না করেই ভিন্ন “ক্যাপিটাল” পানিশমেন্ট বিগত সাড়ে তিন বছর ধরে পেয়েই চলেছে। এতো দেখি, “ন্যাড়ার তিনমাস জেল আর সাতদিনের ফাঁসি”-র মতোন ব্যাপার।

    কিন্তু — খেলা শেষ হয় নি তখনো। ২৭শে জানুয়ারি, ২০২২, 63 Moons-এর করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ এক বৈপ্লবিক রায় দিলেন NCLAT, যেখানে সাফ-সাফ বলে দেওয়া হলোঃ CoC, তার Resolution প্রক্রিয়া, এবং পিরামলের প্ল্যান—এগুলো বাস্তবত বেআইনি তথা সামঞ্জস্যহীন। মানে, পুরো প্রক্রিয়াই বরবাদ? শুধু তাই নয়, IBC-র ৬৬ নং ধারাকে হেলায় বেমালুম চেপে গেছে প্রাজ্ঞ CoC সদস্যরা।


    NCLAT-SECOND-ORDER-27-01-2022

    তার মানে, RBI এবং RBI-নিযুক্ত CoC পদে পদে ভুল করেছে এবং বেআইনি কাজ করেছে (দ্রঃ পরিশিষ্ট-২)। মনে রাখতে হবে, Resolution Professional-রা Public Servants বৈ আর কিছু নন[11]। এই কেসে RBI-নিয়োযিত মুখ্য প্রশাসক R. Subramaniakumar আর FD-holder-দের নির্বাচিত প্রতিনিধি Charu Sandeep Desai-এর তাহলে তো হাজতবাস নিশ্চিত।

    এই ছোট্ট মুভিটা দেখে নিন। ওয়েবে আন্দোলন কেমন করে করতে হয় তা’ হয়তো খানিকটা মালুম হবে।

    RELIGION-BUSINESS-POLITICS-GANGSTERS AND THE OTHER

    পিরামলের তো বিরাট বিপদ। এবার তিনি হাই কোর্টে না গিয়ে তিনি সরাসরি ছুটলেন ১লা মার্চ, ২০২২-এ সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নাড়তে। সুপ্রিম কোর্ট ১১ এপ্রিল, ২০২২-এ স্থগিত করলো NCLAT-র সেই মোড়-ঘোরানো রায়। কি হলো এরপর? যে দেশে পাঁচ হাজার ওপর মামলা আজও অব্দি মুলতুবি আছে, সেখানে দু’দুবার পিরামল ঝটাপট নিজের পক্ষে রায় পেলো কিভাবে? উমর খলিদ, বিলকিস বানুদের মামলা পিরামলের মতো জলদি খতম হয় না—সুবিচারও এনারা পান না। স্ট্যান স্বামীকে বিচার না পেয়েই মরতে হয়। এ তো মজা মন্দ নয়!
    এইটা কি blanket stay order, অর্থাৎ চিরকালিন স্থগিতাদেশ? এর আগেও পিরামল সাহেব ওই দিগওয়াল ঘটনায় (আগেই কয়েচি) ক্ষেত্রে নিজের জন্য কোর্টে স্থগিতাদেশ নেয়, আর গ্রিন ট্রাইবুনালের কাছে চূড়ান্ত বকুনি খায়। তারপরেও শত ধৌতেন কয়লা, ন গচ্ছতি ময়লা!

    এর থেকে বোঝা যায় যে আমাদের এই India নামক পশুখামারে কিছু পশু অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই পাত্তা পায়! (এখন দেখা যাক I.N.D.I.A. কি করে!) শাসকের সঙ্গে জোট না বাঁধলে কী আর এসব কম্মো করা যায়?

    ।। চার ।।

    ব্যাপারটা তবে কী মানব অধিকার লঙ্ঘনের?

    আজকের ভারতের রাজনৈতিক অভিধানে “মানব অধিকার” শব্দদ্বয় খুঁজতে গিয়ে বিপদে পড়লুম। এই দুটি শব্দের সহাবস্থান নেই। অকারাদি ক্রমে “অধিকার” শব্দটাও লোপাট। তবে সংসদে কী কী শব্দ বাতিল বা অকথ্য তার একটা লিস্টি বের করেছে গদি সরকার বাহাদুর। অঘোষিত জরুরি অবস্থা এই Orwellian State-এ! মনপ্রাণ খুলে কথা কওয়াও যাবে না। ‘স্বাধীনতা’, ‘ভুখমারি’, ‘মানসিক সুখ’ ইত্যাদির যে সব সূচক বিদেশ থেকে বেরোচ্ছে, তাতে লাস্টের দিক থেকে ভারত ফার্স্টের কাছাকাছি চলে এসেছে। আঘাতে আঘাতে আহত ভারত- “মাতা”।

    Human Rights Compromised in India under the Oligarchic Regime VIEW HERE

    এই পুরো ব্যাপারটা একটা Financial Abuse-এর ঘটনা বা Business-Related Human Rights লঙ্ঘনের কিসসা বলেই কিছু DHFL FD Holder-রা চাইলেন সরাসরি National Human Rights Commission (NHRC)-তে এ নিয়ে আবেদন করবেন। করাও হলো। কিছুদিন বাদে কয়েক লাইনের উত্তর এলোঃ এই কেসটি Property or Contractual obligation-সম্পর্কিত ব্যাপার, তাই NHRC-র এতে কিস্যুটি করবার নেই।

    ব্যাপারখানা কি? আবেদন করার সময় তো দেখা গেছিলো Business and Human Rights বলে আলাদা একটি ক্যাটাগোরি রয়েছে এঁদের ওয়েবসাইটেই। তবে? আসলে ব্যাপার কি জানেন, NHRC-র মাথায় অরুণ কুমার মিশ্র নামের এখন যিনি বসে আছেন তিনি আমাদের মোটাভাইয়ের দোস্ত, যে দোস্তকে অবসর-পরবর্তী (post-retirement) কাজে জেনে-শুনে বহাল করেন শাসক গোষ্ঠীই। এমন অবসর-পরবর্তী কাম কোনো ‘এলিতেলি’ লোক পায়না- শাসকের অতিঘনিষ্টরাই পায়। অতএব, এই “দোস্তি”র খাতিরে, অরুণ সাহেব শাহজির প্রশংসায় সর্বদা পঞ্চমুখ। তাই, শাসক বিজেপির ভেতরের কথা ফাঁস হয়ে যেতে পারে এমন দিকে কোনো ঘটনা গেলে এই “দোস্ত”-কে তো তাকে সঙ্গে সঙ্গে রুখে দিতেই হবে, সে যে করেই হোক। তাই এমনতর ঘটনা।

    আবেদন ও প্রত্যুত্তরগুলো এখান থেকে দেখে নেওয়া যাবেঃ

    FINANCIAL ABUSE OF THE DHFL VICTIMS BY THE CoC FOR DHFL: COMPLAINT TO THE NHRC VIEW HERE

    Second
    Third

    এর পরেও কি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় ভরসা রাখবার কোনো যুক্তি আছে? ভরসা রাখি কিভাবে?

    Do you have faith in the Contemporary Indian Judiciary? VIEW HERE

    কিন্তু, এ কথাও মনে রাখতে হবে “International law is the vanishing point of jurisprudence”>আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে এই Business-related Human Rights রক্ষে করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখা Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights (OHCHR)-এর। যেকনো ব্যক্তি এবং সংস্থা এখানে আবেদন করতে পারেন, যদি তাঁর বা তাঁদের বাণিজ্য-সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। কিন্তু মজার কথা হলো এই, একটা শর্ত আছেঃ স্বভূমির যাবতীয় আইনী দরওয়াজা কপাট বন্ধ করলে তবেই এই সর্বোচ্চ সংস্থায় আবেদন করা যেতে পারে, তাঁদের the United Nations Guiding Principles on Business and Human Rights-এর ভিত্তিতে।

    এই ব্যবস্থাটির কথা ভারতবর্ষে কেউই প্রায় জানেন না। অথচ Vodafone, Amazon বা Cairn Energy-র মতোন সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গিয়ে সুবিচার পেয়েছে। ওয়াধোয়ানরাও সিঙ্গাপুরের International Arbitration Centre -এ গিয়ে সুবিচার পেতে পারেন, তাঁদের কথামোতাবেক ফিরতে পারে FD-NCD Holder-দের মার যাওয়া সম্পূর্ণ টাকা, মায় ক্ষতিপূরণ পর্যন্ত।

    Cairn Energy wins arbitration award VIEW HERE

    Vodafone Wins International Arbitration Against India in $2 Billion Tax Dispute Case VIEW HERE

    Future Retail v/s Amazon: Why Amazon won the case in SIAC in 2020 and Supreme Court in 2021? VIEW HERE

    আর পারা যায় না!

    “তবু পারি নে সঁপিতে প্রাণ ।
    পলে পলে মরি সেও ভালো, সহি পদে পদে অপমান ।।
    কথার বাঁধুনি, কাঁদুনির পালা— চোখে নাহি কারো নীর ।
    আবেদন আর নিবেদনের থালা ব’হে ব’হে নত শির ।
    কাঁদিয়ে সোহাগ, ছি ছি একি লাজ! জগতের মাঝে ভিখারির সাজ—
    আপনি করি নে আপনার কাজ, পরের ' পরে অভিমান ।।
    আপনি নামাও কলঙ্কপশরা, যেয়ো না পরের দ্বার—
    পরের পায়ে ধ’রে মান ভিক্ষা করা সকল ভিক্ষার ছার ।
    ‘দাও দাও’ ব’লে পরের পিছু পিছু কাঁদিয়া বেড়ালে মেলে না তো কিছু—
    মান পেতে চাও, প্রাণ পেতে চাও, প্রাণ আগে করো দান।।”

    ।। পাঁচ ।।

    পিরামলের বিপদআপদ

    হঠাৎই ২৮শে জুন, ২০২৩, BianLian নামের একটি আন্তর্জাতিক Ethical Hacking (বা ভিন্নমতে, cybercriminal) সংস্থা সেঁধিয়ে যায় পিরামলের database-এ, Ransomware-জাতীয় software-এর মাধ্যমে। ভারতবর্ষের কোনো কর্পোরেটের ওপর এই তাদের প্রথম আক্রমণ। সবাইকে ছেড়ে পিরামলের মতোন এরম অ-জনপ্রিয় চুনোপুটি পুঁজিপতিকে তারা ধরলো কেন? এর আগেও ২০২৩-এরই মার্চ মাসে data breach ঘটানো হয় পিরামল ফার্মার সাইবার-সদর দপ্তরে! এই ভাবে তথ্য-ডাকাতি করেই তারা পুঁজিপতিদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে। পুঁজিপতিরা সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে আছে ভেবোনা কমরেড, একটু দরদি (হাঃ হাঃ হাঃ) হয়ে তাকাও তাদের দিকে, বুইতে পারবে যে তাদের মাথার ওপরেও Damocles-এর খাঁড়া ঝুলছে—যে কোনো সময় তাদের পাশবিক মগজ ছ্যাঁদা করে দেবে। পুঁজিপতির Psychoanalysis না করলে তাদের ধ্বসানো যাবে না!
    THE PSYCHOANALYSIS OF A CRONY BILLIONAIRE: AJAY PIRAMALVIEW HERE

    সেদিন ইউটিউবে চোখে পড়লো পিরামলের একটি সাক্ষাৎকার। বিষয়ঃ Animal Instinct in Entrepreneurship—উদ্যোক্তার পশু প্রবৃত্তি?! এর মানে কি? আজকাল ‘পাশবিক’ কথাটাও রাজনৈতিকভাবে বেঠিক। পশুদের কাজকম্মকে পাশবিক বলাটা মানে পশুর আচার-আচরণকে ঘেন্না করা। কিন্তু পুরোনো মানেতে যদি ধরি, তাহলে এই আঁতেপ্রেনরদের (সংখ্যায় ২%) প্রবৃত্তিকে পাশবিক বললেও পশুদের অপমান করা হয়। এই পশুসম ‘মানুষেরা’ তাদের শ্বদন্ত আর থাবায় লুকোনো নখ বের করে “অন্য” মানুষদের (অন্য ৯৮%) কাঁচা চিবিয়ে খাবলে খাবলে, ঠুকরে ঠুকরে সাবাড় করে দেয়।

    এই পশুপ্রবৃত্তিকে চাগাড় দেওয়ার জন্য ঘ্যাম জায়গায় সেমিনার হচ্ছে। ভাবতে কেমন ভালো লাগে না বেশ? বুর্জোয়া ম্যানেজমেন্টের এই পাশবিকতার ট্রেনিং সেন্টার আদতে নরখাদক পুঁজিবাদ বা Cannibal Capitalism! এর মধ্যে থাকে চূড়ান্ত anthropophagia অথবা নিজ-প্রজাতি-ভক্ষণের কামনা (একরকমের যন্তর বনে গিয়েঃ desiring machine)। “কাক কাকের মাংস খায়না” বলে প্রবাদ আছে। কিন্তু, যুদ্ধবাজ মানুষ “অপর”/ “অন্য” মানুষের মাংস খেয়েই চলে। তাই তারা সোজাসাপ্টা বলেই দেয়ঃ animal instinct অথবা animal spirit চাগাড় দেওয়ার কতা।

    “…universal energy which breaks through every limitation and bond and sets itself up as theonlypolicy, theonlyuniversality, theonlylimitation, and theonlybond. But then, as it continues to develop, it is forced to cast off its hypocrisy and step forth in all its cynicism. This it does, without troubling its head for one moment about all the apparent contradiction to which this doctrine leads, by developing in a more one-sided way, and, thus, more sharply and more logically, the idea of labor as the sole essence of wealth, by showing that the conclusions of this doctrine, unlike the original conception, are anti-human…”

    এই কামনা থেকে কেবল যে গরীব-গুর্বদের খেয়ে ফেলে বড়ো পুঁজি, তাই শুধু নয়। বরং ছোটো ছোটো বিভিন্ন পুঁজিকে নিজের মধ্যে পুরে ফেলে সে। নিজের বর্বরতাকে “অন্য” অপরের ওপরে চাপিয়ে দিয়ে সেই অন্যকে “বর্বর” সাব্যস্ত করে নিজেকে পোস্কের দেখানোর চেষ্টা চালায়। এটাই হলো বর্বরতার পুঁজিবাদ বা জংলি পুঁজিবাদের (Savage Capitalism) লক্ষণ।

    “How you cling to your purity, young man! How afraid you are to soil your hands! All right, stay pure! What good will it do? Why did you join us? Purity is an idea for a yogi or a monk. You intellectuals and bourgeois anarchists use it as a pretext for doing nothing. To do nothing, to remain motionless, arms at your sides, wearing kid gloves. Well, I have dirty hands. Right up to the elbows. I’ve plunged them in filth and blood. But what do you hope? Do you think you can govern innocently?”
    -- Dirty Hands, Act V, Jean Paul Sartre

    এই “নোংরা হাত” (Dirty Hands) ধুয়ে ফেলবার ক্ষেত্রে কামে লেগে যায় রাধানাথ স্বামীর মতোন ধর্ম-ব্যবসায়ীর দল। তারা স্বীকৃতি দেয় এ সমস্ত “পাপ” কাজের একরকম “cleansing ritual”-এর মাধ্যমে (“…the holy water with which the priest consecrates the heart-burnings of the aristocrat”???)—যার মূলে থাকে অসম জিনিসকে সমান করে ফেলা প্রাতিভাসিক টাকা রূপকের প্রধান ভূমিকা।

    আমি এর “বাইরে” বা আউটসাইড খুঁজছি। Sa-va-ge-এর ভেতরে করে চলেছি Savage-এর সন্ধান।

    পরিশিষ্ট-১

    মানহানি সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণের জন্য নিম্নোল্লেখিত লিঙ্কগুলো দেখতে পারেনঃ


    পরিশিষ্ট-২

    [1] এই সবকটা কুচ্ছোর বেত্তান্ত মিলবেঃ An Old Sinner? the deeds of a paramavaiṣṇava, AjayPiramal আর Piramal’s “(Il)legal” Operations Not Found OnWiki

    [2] আপাতত ২৭.৫ কোটির হিসেব পাওয়া যাচ্ছে (বড্ডো কম টাকা—বিজেপির খাঁই অনেক বেশি), বাকিটা হাওয়া—অজ্ঞাত এবং অজ্ঞেয়। কেননা PM CARES Fund-ই হোক অথবা Electoral Bond—তুমি বাপু RTI করে এনিয়ে কিসসু জানতে পারবেনা—সব পার্টির মুখেই এক রাঃ চোপ শ্লা ট্যাক্সো-পেয়ার, পলিটিকাল পার্টি কখনই পাব্লিক অথরিটি নয় যে সে তার তহবিলের হাঁড়ির খপর তো মায় দেবে। এই একটা ব্যাপারে ভারতের সব পার্টি এক্কাট্টাঃ পার্টির তহবিলে কে কতো চাঁদা দিলো, তা’ তোমার মতো নাদানের জানার দরকার নেই—তুমি কোন হরিদাস পাল হে? দ্রঃ RTI Deceased: The State Of DemocraticUnfreedom

    [3] রামকেষ্ট মিশন আর DHFL-এর অনুষঙ্গ বুঝতে হলে দেখুন: আমার বৈধ বৌ-এর কুমারী পুজো-দর্শন, সত্তার সংকট এবং ভারতের ছায়া রাজ-অর্থনীতি

    [4] SARFAESI (2002)-র মতোন আইন থাকতে IBC-র দরকারটা কি ছিলো?

    [5] ‘মকুব কথাটার দু দুটো আইনি পরিভাষা আছেঃ Write-off আর waive-off। প্রথম ক্ষেত্রে, অধমর্ণকে সাময়িক সুযোগ দেওয়া হয় ধার শোধ করার জন্য আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ধার শোধ করার প্রশ্নই নেই--ব্যাঙ্ক থেকে মাল সাবাড় হয়ে গেলো। আমার তো এই দুটো পরিভাষা মাঝেসাজেই গুলিয়ে যায়।

    [6] অথচ এই নোটস ছাপতে প্রতি নোট পিছু ৪.৫৮ টাকা খরচা হয়েছিলো। বিমুদ্রীকরণের সময় যেমন ২০০০ আর ৫০০, ২০০ টাকার নোটের জন্য ATM-এর ধাঁচা বদলাতে হয়েছিলো, এবার তেমনি ২০০০ টাকার জন্য মেশিনের গঠন পাল্টাতে হবে। কাট মানির আদান প্রদান হবে!)

    [7] সংখ্যায় এটা লিখতে পারবেন? আমি তো আরো পারবো না। ৬৮ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে যেসব ধনপতিরা কেটে পড়লো, তাদের ব্যাপারটাও আমার মতো উজবুক ঠিক বুইতে পারে না। আমরা ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিতে গেলে জুতোর সুখতলা খসে যায়, আর এনারা দিব্য ঘুরে বেড়াচ্ছে ব্রিজভূষনের মতোন। এ কেমন একুশে আইন মাইরি।

    [8] सुप्रिया श्रीनेत ने मोदी से लिया बड़ा पंगा , Supriya Shrinate Exposed Modi on DHFL Banking Fraud VIEW HERE
    DHFL Bank घोटाले का मोदी-BJP Connection Exposed, BJP Received Over Rs 27.5 Crore As Donations, Modi VIEW HERE

    [9] DHFL Resolution: Piramals Profit Plentifully, Pittance for the Rest! VIEW HERE
    Supriya Shrinate Exposed Modi on DHFL Banking Fraud VIEW HERE
    DHFL Bank घोटाले का मोदी-BJP Connection Exposed, BJP Received Over Rs 27.5 Crore As Donations VIEW HERE

    [10] IBC 32A দ্রঃ
    “…the liability of a corporate debtor foran offence committed prior to the commencement of the corporate insolvency resolution process shall cease, and the corporate debtor shall not be prosecuted for such an offence from the date the resolution plan has been approved by the Adjudicating Authority under section 31…”

    [11] A Resolution Professional essentially comes within the meaning of ‘Public Servant’ under Section 2(c) of the Prevention of Corruption Act, 1988, and Section 233 of the IBCdoes not in any manner protect where he has beenapprehended red-handed with the bribe amount(in Sanjay Kumar Agarwal Vs. Central Bureau of Investigation, Anti-Corruption Bureau, Dhanbad – Jharkhand High Court).
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৪523265
  • খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আরো সচেতনতা দরকার এই বিষয়ে।
  • ?? | 2405:8100:8000:5ca1::d3:***:*** | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫৩523270
  • এত হাবজা গাবজা লেখা আর এত লিঙ্ক মূল কথা  কেউ একটু সামারি করে দেবেন?  
  • DPB | 193.43.***.*** | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪২523655
  • সারাংশ 
     This paper vents out its anger on the face of savage capitalism that thrives through the cannibalistic instinct. It particularly focuses on the case of one such savage capitalist: Mr. Ajay Piramal, and reflects upon his deeds from the perspective of a self-reflexive account in the context of the biggest financial scam of post-independent India, i.e., the DHFL scam. It interrelates the matter with various human rights concerns, corporate psychology, authoritarian personality, shadow economy etc. In particular, DHFL scam is posed as a case study to understand the contemporary Indian political economy dominated by crony and monopoly capitalism as well as religious fundamentalism. It is a case study of a Indian billionaire, Mr.Ajay Piramal to display the contemporary India's chaosophic cannibalistic savage political economy, which (market fundamentalism) is foreclosed by foregrounding the religious fundamentalism. How can a subject get rid of such inhuman situation?
  • DPB | 193.43.***.*** | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৪523656
  • এই লেখাটা মাগনা পড়ে যাঁরা আমাদের মতামতের সঙ্গে সহমত হবেন, তাঁদের কাছে একটাই অনুরোধঃ আমাদের এই লেখাটার জন্য খাটা-খাটনির মজদুরি মোতাবেক “বিনিময় মূল্য” (হায়, সবই শর্তাধীন বিনিময়ী বন্দোবস্ত) হিসেবে নিচের এই লিঙ্কটা টিপে পিটিশনে দয়া করে স্বাক্ষর দেবেন। এইটুকু প্রত্যাশা আমরা আপনাদের কাছে করতেই পারি এবং আপনারা সই করলে অনেক পীড়িত মানুষ  আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। https://chng.it/9sPMNHBy
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন