এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • বসন্তের লাল ওড়না। ছোট গল্প।

    লেখক শংকর হালদার লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৪ আগস্ট ২০২৩ | ২৯৬ বার পঠিত
  • নাম্বার :- ১
    বসন্তের লাল ওড়না।
    লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা ।
    { শান্তিনিকেতনে ভ্রমণ কালীন বাংলা সাহিত্যের লেখক শংকর হালদার শৈলবালার প্রথম রচিত ছোট গল্প। সম্পাদক শান্তনু দাস।}
    রচনার শ্রেণী :- সামাজিক। বসন্ত উৎসবে রঙের খেলায় ভালোবাসার ছোঁয়া ছোট গল্প।
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

    ◆ প্রকৃতির নিয়মে শীতের শেষে ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে বসন্তের আগমন ঘটে। চারিদিকে হালকা বাতাস বয়ে চলে গাছে গাছে ফুল ফুটে ওঠে।

    ◆ গোলক বৃন্দাবন, বৈকুণ্ঠ লোক, ব্রহ্ম লোক, স্বর্গলোক, দেবলোক, ও পাতাল লোক সহ ইত্যাদি ইত্যাদি লোকের বাসিন্দা সহ মর্ত্যলোকের মানুষেরা রঙের উৎসবে মেতে ওঠে। রং মেখে ও অন্যকে রং মাখিয়ে রঙিন মনকে আরো রঙিন করে তোলে।

    ◆ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিময় জায়গা শান্তির নিকেতনে প্রতি বছর রাঢ় বঙ্গে বসন্ত উৎসব পালিত হয়। প্রকৃতির লীলা খেলায় বসন্তের আগমনে মেতে উঠে নর-নারী, শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবাই মেতেছে আনন্দ উল্লাসে দোল উৎসবের রঙে।

    ◆ গৌড়বঙ্গ নবদ্বীপ ও মায়াপুর শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্ম তিথি উপলক্ষে বৈষ্ণব ধর্মীয় মতো দোল ও হোলি উৎসব পালিত হয়ে থাকে।

    ◆ বাসন্তী মজুমদার দক্ষিণ বঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বনভূমি থেকে বসন্তের আনন্দ উপভোগ করতে শান্তিনিকেতনে উপস্থিত হয়।

    ◆ মাথার উপর খোলা আকাশ চারপাশে বনভূমি, বসন্তের আগমনে মৃদু মৃদু বাতাসে বনভূমির ঘাসের উপর বসে বন্ধুদের সাথে গল্প করা সহ কবি ও সাহিত্যিকদের আগমনে সাহিত্যের চর্চা।

    ◆ নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ পাখিদের কোলাহল ছাড়া আর কিছু নেই, চারিদিকে বিভিন্ন লতাপাতা ও গাছ-পালায় সম্মোহিত প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। বিভিন্ন বনফুলের গন্ধে মনের মাঝে প্রকৃতির ভালোবাসার নতুন ছোঁয়া লাগে।

    ◆ বনের মাঝে বিভিন্ন ধরনের পাখির কিচিরমিচির শব্দের মাঝে কোকিল জানায়, কুহু কুহু সুরে প্রকৃতির অন্তরে বসন্ত আসিল, রৌদ্রের তাপে চোখ গেলো, প্রিয়জনের সাথে কথা কথা কও ও বউ কথা কও সহ বিভিন্ন ধরনের সুরের মাধ্যমে জানতে থাকে।

    ◆ বনের মাঝে ঘুরতে ঘুরতে বুনো ফুলের মিষ্টি গন্ধ নাকে ভেসে আসে আর বনের মধ্যে দিয়ে কোপায় ও খেয়াই নদীর ধারা বসন্তের আগমনে আনন্দে ছল ছল শব্দ করে বয়ে চলেছে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানব জাতি কে তার বুকে জলকেলির মাধ্যমে আলিঙ্গনের আহ্বান জানায়।

    ◆ নদী তার শব্দের তরঙ্গের মাধ্যমে জানায়, বসন্তের রঙের আবির মেখে আমার বুকে এসো আর লীলার ছল করে জলকেলির মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করে। মনের যত ময়লা মাটি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেবো।

    ◆ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত শান্তিনিকেতন বনভূমির মাঝে বসন্তের উৎসবের আয়োজন। দূরের পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে মাইকের আওয়াজ ভেসে আসছে, হোলির সেই বিখ্যাত গান বসন্ত এসেছে রং দেব না তা কি কখনো হয়?

    ◆ সকল বয়সের নারী পুরুষ মিলিত হয়ে, রঙিন মনে প্রকৃতি সাজো সাজো রবে বিভিন্ন রঙের খেলায় মেতে উঠেছে। চারদিকে ফুলে ফলে ভরে উঠেছে প্রকৃতির এক অপরূপ সুন্দর্য।

    ◆ চেনা ও অচেনা সকল কিশোর-কিশোরী যুবক-যুবতী ও বয়স্ক ব্যক্তিরাও প্রকৃতির লীলাময় বনের মাঝে বসন্তের উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে। কবি-সাহিত্যিক তাদের কাব্য চর্চা ও সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত।

    ◆ বাসন্তী হাতে রঙ নিয়ে একজন অচেনা যুবকের গালে রং মাখিয়ে দিয়ে বলে :- বন্ধু; বসন্তের আগমনের কারণে সবার মনে রঙের ছোঁয়া লেগেছে কিন্তু আজ তোমাকে কে রং দেবোনা তা কি কখনো হয়?

    ◆ প্রকৃতির মনে রং লেগেছে শুধু তোমার-আমার নয়, চারিদিকে গাছে গাছে ফুটে উঠেছে নতুন ফল ও ফুলে আর কচি কচি পাতা।

    ◆ অচেনা যুবক বাসন্তির মুখে ও মাথায় রং মাখিয়ে দিতে থাকে। আর সেই মুহূর্তে
    হাওয়ার মনে লেগে দোল, বাসন্তীর গায়ের ওড়না কে উড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওড়না হাওয়া কে জড়িয়ে ধরে, আপন মনে উড়তে থাকে।

    ◆ বাসন্তী বলে :- হে হাওয়া ওড়না নিয়ে যাচ্ছে কোথায়! বুকের লজ্জা নিবারণ করবে কেমন করে?

    ◆ ওড়না দাও-ওড়না দাও বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়াতে শুরু করে।

    ◆ হাওয়ার ইচ্ছা অনুসারে উড়ন্ত ওড়না আপন গতিতে এগিয়ে যেতে যেতে ভাবে, ওড়না কে কেন্দ্র করেই বসন্ত আগমনে হোক দুটি হৃদয়ের মিলন।

    ◆ ওড়না হাওয়ায় উড়তে উড়তে বসন্ত নামক এক যুবককে দেখতে পেয়ে আনন্দিত হয়ে নড়েচড়ে খেলা করতে শুরু করে। ওড়না হাওয়ার গতিতে বসন্তের মাথা উপর পাক খেতে খেতে চোখ মুখ ঢেকে দেয়।

    ◆ যুবক বসন্ত আনন্দিত মনে ভাবে :- বসন্তের আগমনের উৎসবে প্রকৃতির লীলা খেলায় হাওয়াই উড়ে এসেছে কোন সুন্দরী রমণীর অসাধারণ ওড়না খানা।

    ◆ কোন যুবতী মনে বসন্তের রঙের দোল লেগেছে আর ভালোবাসার ছোঁয়ার ওড়না উড়িয়ে দিয়েছে। তার স্পর্শে আমার মনে লেগেছে দোল কিন্তু সেই যুবতী কে বিশাল মনের মাঝে কোথায় পাব তারে।

    ◆ যুবতী বাসন্তী মুক্ত আকাশে মুক্ত পরিবেশে বন্ধন বন থেকে মুক্ত হয়ে মনের আনন্দে
    রঙয়ের ছোঁয়া আর আবিরে আবিরে অপরূপা রঙয়ের সুন্দরী হয়ে উঠেছে।

    ◆ বাসন্তী ওড়নার পাওয়ার জন্য উপরে দিকে তাকিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। আনন্দের জোয়ারে চলতে চলতে অসাবধানতার কারণে অসমতল রাস্তায় গর্তের মধ্যে পা পড়ার কারণে ছিটকে গিয়ে চোখ মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা এক যুবকের সাথে ধাক্কা লাগে।

    ◆ হঠাৎ করে ধাক্কা লাগার জন্য যুবকের স্বপ্নের রাজকন্যার হারিয়ে যায়, আর চিৎকার করে উঠে বলে কে কে। দুজনের মুখোমুখি সংঘর্ষের মাধ্যমে প্রকৃতির ধরাতলে পড়ে যায়। বাসন্তী ভয়ে আতঙ্কে বসন্ত কে জড়িয়ে ধরে আর লাল মাটিতে গড়াগড়ি দিতে দিতে নিচের দিকে চলতে থাকে।

    ◆ গড়াতে গড়াতে চাষ দেওয়া জমির মধ্যে থেমে যায়। বাসন্তীর বুকের উপর বসন্ত নামের এক যুবকের দেহ। বাসন্তী চোখ মেলে তাকায় আর যুবক বলে, বসন্তের রঙের ছোঁয়ায় ভালোবাসা ও অন্তরঙ্গ।

    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    ◆ রচনা কাল :- ২ মার্চ ২০১৮ সাল (১৭ ফাল্গুন ১৪২৪ বঙ্গাব্দ) হোলি ও বসন্ত উৎসব। শান্তিনিকেতন, বোলপুর, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ।
    ◆ সংশোধনের তারিখ :- ১ আগস্ট ২০২৩ সালে। আশ্রম খাটুরা-দোলন ঘাটা, মাঝদিয়া, নদীয়া।
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন