এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পর্যায় সারণির ইতিকথা: দেড়শ বছর পেরিয়ে 

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ১২ জুলাই ২০২৩ | ৩২২ বার পঠিত
  • ।। ১ ।।
    স্থান রাশিয়া, কাল উনিশ শতকের মাঝামাঝি। পাত্র ক্রমশ প্রকাশ্য। আপাতত পায়ে চলার এক অনবদ্য গল্প দিয়ে শুরু করি এই কথালিপি। সে এক অনন্য অনন্ত যাত্রা। অশ্রুতপূর্ব কাহিনি। প্রথম শুনলে বা পড়লে একেবারে শিশু সাহিত্য রূপকথার মতোই লাগে। ১৮৪৮ সালের এক বসন্তে চোদ্দ বছরের এক পুত্র আর ষোল বছরের এক কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে কোন সুদূর এক অনির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে চলেছেন সদ্য বিধবা এক মা। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে এসেছেন প্রথমে মস্কোতে, তারপর সেখানে মনস্কামনা পূর্ণ না হওয়ায় আবার রওনা দিয়েছেন সন্ত পিতার্সবুর্গের দিকে। দূরত্বটা এই সুযোগে জেনে রাখা দরকার: সাইবেরিয়া থেকে মস্কো ২১৯০ কিলোমিটার মাত্র; আর মস্কো থেকে পিতার্সবুর্গ ৬৯০ কিমি। সেকালে এই সমগ্র দূরত্ব অধিকাংশ জায়গায় অতিক্রম করার মতো গাড়ি ঘোড়া ছিল না। রেল পথ ছিল না। যেখানে ছিল, সেখানে গাড়ি ভাড়া করার বা দেবার মতো অর্থবলও সেই রমণীর ছিল না। অতএব তাঁদের ছখানা পা-ই সেই সুদীর্ঘ পথে ভরসা। পথচলার ক্লান্তি, অপর্যাপ্ত আহার, ক্ষুধাতৃষ্ণা, প্রায় লাগাতার অনিদ্রা, রাতে আশ্রয়ের অভাব—কোনো কিছুই সেই পথিকদের লক্ষ্যের অভিমুখে অভিযান সেই দিনগুলিতে থামাতে পারেনি। মা মারিয়া দিমিত্রিয়েভনা কর্নিলেভা চেয়েছিলেন বুদ্ধিমান লেখাপড়ায় আগ্রহী তাঁর এই একমাত্র ছেলেকে উচ্চশিক্ষার কোনো স্কুলে ভর্তি করতে, যাতে সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে বড় হতে পারে। ছেলে কলেজে সুযোগ পাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই প্রথমে তার মায়ের, তারপর তার সেই দিদির মৃত্যু হয়। এক বড় পরিবারের মধ্যে বেঁচে থাকল কেবল সেই পুত্র সন্তান। [McQuarrie, Rock, and Gallogly (2011), B-3; also see: Partington 1972, 892] 
     
    তবে মাসের পর মাস ধরে তিনজনের সেই হাঁটা সার্থক হয়েছিল এক দিন। সেই বালক যেদিন যুবক। প্রায় কুড়ি বছর পরে। ১৮৬৯ সালে। যখন তিনি প্রথমে রুশ ভাষায় এবং অল্প দিন পরে জার্মান ভাষায় লেখা এক বিজ্ঞান পত্রে তাঁর পর্যায় সারণি প্রকাশ করলেন। হ্যাঁ, আপনারা ঠিকই ধরেছেন, আমি যাঁর কথা বলছি তাঁর নাম দ্‌মিত্রি ইভানোভিচ মেন্দেলিয়েভ (১৮৩৪-১৯০৭), আজ প্রায় সকলেই তাঁর নাম এবং কাজের কথা জানেন, কম বা বেশি।
     

     
    অন্য সব কিছু না জানলেও আজকের দিনে শুধু সেই কাহিনিটুকু জানার জন্যই পর্যায় সারণি স্কুলের উঁচু ক্লাশের ছাত্রদের পড়া দরকার। নবম দশম শ্রেণিতেও। আবার শুধু মাত্র সেই পড়ার সুযোগটুকু বন্ধ করে দেবার জন্যই এনসিইআরটি-র ইয়েটা একবার মলে দেওয়া দরকার।
     
    রসায়ন শাস্ত্রে পর্যায়সারণির ভূমিকা অনেকটা জীববিজ্ঞানে কার্লোস লিনিয়াসের ১৭৩৫ সালে প্রকাশিত উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের সারণিটির মতোই। এক জায়গায় অনেকটা তথ্য যেন ঠেসে পুরে দেওয়া আছে। সেই সঙ্গে ইতিহাসও। মৌলিক পদার্থগুলিকে যেন এক সঙ্গে তাদের বংশকৌলীন্যে জানবার সুযোগ ঘটে। একবার বুঝে নিতে পারলে অনেক দিন আরও অনেক কিছু মনে রাখতে সুবিধা হয়।
     
    আসলে, জ্ঞানের জগতে তথ্যের পরিমাণ ক্রমাগত যত বাড়তে থাকে, ততই তাকে এক দিকে শ্রেণিকরণের মাধ্যমে সুবিন্যস্ত করে নিতে হয়, বোঝা এবং মনে রাখার সুবিধার জন্য। বিভিন্ন ভাগে রেখে সাদৃশ্য ও অসাদৃশ্যগুলিকে মাথায় রেখে। অপর দিকে তাদের সারণিকরণের মাধ্যমে এক ধরনের দ্রুতপাঠ্য সারমর্ম তৈরি করে নিতে হয়। এক ঝলক দেখেই যাতে অনেক কিছু মনে পড়ে যায়।
     
    এই রকম সারণিতে আত্মগোপন করে থাকে ইতিহাস। কবে কী করে কিসের থেকে কী হয়েছিল। কিংবা কেমন করে এত সব জানা গিয়েছিল। কিংবা দুটোই।
     
    বিজ্ঞান পড়ে বুঝতে হলে বিজ্ঞানের ইতিহাসও একই সঙ্গে পড়তে হয়। নইলে বিজ্ঞানীদের বিশেষ ধরনের প্রাণী (বা মুনি ঋষি ইত্যাদি), দৈব গুণে গুণান্বিত, ক্ষণজন্মা চরিত্র বলে মনে হতে থাকে। ফ্যারাডে একবার বলেছিলেন, সাধারণ লোকে তো জানে না, এক একটা বিষয়ে বিজ্ঞানীদের উত্থাপিত দশটা প্রস্তাবের নটাই যুক্তিতর্ক তথ্যের কাটাকুটিতে বাদ চলে যায়, একটা হয়ত কোনোমতে টিকে যায়। ফ্রান্সের সেই বিশিষ্ট রসায়নশাস্ত্রী লুই পাস্তুর এক বার তো একটা প্রবন্ধই লিখে ফেললেন, On the usefulness of historical methods in teaching science! তাতে তিনি বলেন যে আবিষ্কার পড়ার পাশাপাশি সেই আবিষ্কারের ইতিহাস পড়তে বসলে তবেই পাঠক সেই সময়ের সমস্যাগুলির মুখোমুখি গিয়ে বসে পড়বেন। কোনো এক কালে কে কোন সমস্যার কীভাবে সমাধান করেছিলেন জানতে গিয়ে তাঁরা নিজেদের কালের সমস্যার সমাধান করার রাস্তা খুঁজে নেবেন। [Cited, Ackerknecht 1948]
     
    স্পেন্সার উইয়ার্ট ছিলেন আমেরিকার ইন্সটটিউট অফ ফিজিক্স-এর পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাস কেন্দ্রের পরিচালক। ১৯৮৬ সালে একটি নিবন্ধে তিনি লেখেন, “The history of science is the story of a community of people with ordinary human flaws who fumble their way to new ideas and then verify them, aided chiefly by hard work and intellectual honesty. Without some knowledge of the history of science, students naturally imagine that science is the story of a few great men who somehow came upon their truths in a flash of genius. . . . Authentic history replaces the old, sterile marble statues of scientists with real men and women. One can watch these people, still vividly alive to the informed mind, struggling with new ideas with all the confusion of the most ignorant student. It is only where such real people are found that real science can be found.” [Weart 1986]
     
    বিজ্ঞানী নামক এই রক্তমাংসের মানুষগুলিকে চিনবার প্রয়োজনেই, তাঁদের বিজ্ঞান সাধনার সাফল্য ও ব্যর্থতা সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতাগুলিকে জানার জন্যই বিজ্ঞানের ইতিহাস পড়তে হয়। জানার ইতিহাস জানতে হয় (এই ব্যাপারে আরও কিছু কথা পরে বলতে হবে)।

    আমাদের বসবাসের জন্য প্রাপ্ত এই দুনিয়াদারির চরিত্র এমনই যে এখানে সব জিনিসেরই একটা শুরুয়াতি থাকে। দুনিয়া নিজে ছাড়া অনাদি বলে কেউ নেই। অনন্তও কেউ হবে না। বাকি সকল জিনিসেরই ইতিহাস খণ্ড খণ্ড। কালের ক্যানভাসে প্রতিটি খণ্ডের কোথাও একটা শুরু হয়। সুতরাং পর্যায়সারণিরও আছে। এমনকি সেই শুরুরও আবার একটা শুরু আছে। আসলে রসায়ন শাস্ত্রের জগতে সে এক লম্বা ইতিহাস। বস্তুজগতকে বোঝার ইতিহাস। বস্তুকে চেনার ইতিবৃত্ত। প্রথমে ভেঙে ভেঙে, তার পর জুড়ে জুড়ে। চলুন, আমরাও সেই দীর্ঘ জানা-অজানার পথ পরিক্রমা কিঞ্চিৎ সংক্ষেপে সেরে আসি।
    প্রাচীন কালে সভ্যতার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন দেশের মানুষের মাথায় জগতের মূল উপাদান খোঁজার একটা ঝোঁক বা আগ্রহ দেখা দেয়। গ্রিকরা বলত চারটে উপাদান: জল মাটি আগুন আর হাওয়া। ভারতে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আরও একটা—আকাশ। ক্ষিতি অপ তেজ মরুত ব্যোম। তারই নাম পঞ্চ ভূত। ভূত মানে পদার্থ। এই জ্ঞান নিয়ে সারা বিশ্বের মানব জাতি প্রায় ইউরোপীয় রেনেশাঁসের দোরগোড়া অবধি চলেছিল। পঞ্চদশ শতাব্দের মাঝামাঝি। খুব একটা অসুবিধা হয়েছে বলে জানা যায়নি।
     
    বহু কাল আগেই মানুষ পৃথিবীর নানা জায়গায় কয়েকটি ধাতুও আবিষ্কার করেছিল। সর্ব সাকুল্যে আটটা: সোনা রূপা তামা লোহা সিসা টিন দস্তা পারদ। আঠেরো শতকে ফ্রান্সের প্রসিদ্ধ রসায়নবিদ আতোয়াঁ লরেঁত দ্য ল্যাভোয়াশিয় যখন সমস্ত পদার্থকে মৌলিক ও যৌগিকে ভাগ করলেন, তখন বোঝা গেল, সুদূর অতীতেই মানুষ এই আটটা মৌলিক ধাতু খুঁজে পেয়েছিল। আর পেয়েছিল একটাই মাত্র অধাতু মৌল—গন্ধক। বহু দিন পর্যন্ত মৌলিক পদার্থ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান এর বেশি আর এগোতে পারেনি।
     
    আর এই হচ্ছে কারণ যে বিশ্বের কোনো দেশের জ্যোতিষীরা কখনই অষ্ট ধাতুর বাইরে গিয়ে দশ বা দ্বাদশ ধাতুর আংটি তাবিজ ধারণ করতে বলতে পারেনি। জ্যোতিষের জ্ঞান যে সময়টাতে শেষ হচ্ছে, তার পরেও বহুকাল অবধি মানুষের ধাতু জ্ঞান আট কদমের বেশি এগোতে পারেনি। এখনও জ্যোতিষ এই জায়গায় আটকে আছে। কেন না, চেম্বারে সর্বাধুনিক কম্পিউটার নিয়ে বসলেও তার যে মান্য শাস্ত্ররাশি, সেখানে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দের পরের খবর কিছু নেই। আর ঢোকানোর অনুমতিও নেই।
     
    সে যাক গে। জ্যোতিষ এখানে আমাদের বিবেচ্য নয়।  
     
    সেই ল্যাভোয়াশিয় যখন ফ্রান্সে রসায়ন শাস্ত্রকে তার প্রাচীনতর স্তর অবরসায়ন (alchemy)-এর যুগ থেকে বের করে এনে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে আধুনিক বিজ্ঞানের আকারে দাঁড় করাচ্ছেন, তখন তিনি হাতের সামনে কটা মৌল পেয়েছিলেন? অনেকেই শুনলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন, তাঁর ১৭৮৯ সালে প্রকাশিত “রসায়নের প্রাথমিক পরিচয়” বইতে মোট ২৬টি মৌলের নাম ছিল। সংখ্যাটিকে তিনি সামান্য বাড়িয়ে নিয়েছিলেন আলো এবং তাপকেও মৌলিক পদার্থ হিসাবে গণ্য করে। ঊনবিংশ শতাব্দের গোড়ায় জন ডালটন পেয়েছিলেন ৩৬টি মৌলের নাম ও পরিচয়। ১৮৫০ সাল নাগাদ সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৫৮। ১৮৬০ সালের দিকে মেন্দেলিয়েভ অধ্যাপনার পাশাপাশি সন্ত পিতার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন গবেষণা শুরু করেছেন তাঁর সামনে ছিল ৬৩টি মৌল।
     
    অর্থাৎ, বোঝা যাচ্ছে, বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন মৌলিক পদার্থ আবিষ্কার করে চলেছেন। তখন থেকেই মৌলিক পদার্থগুলোকে তাদের কোনো আরও অন্তর্নিহিত ধর্মের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ ও সারণিবদ্ধ করা যায় কিনা রসায়নবিদদের মধ্যে তার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। ইতালির বিশিষ্ট রসায়ন বিজ্ঞানী স্তানিশ্লাও ক্যানিজ্জারোর নেতৃত্বে জার্মানির কার্লসরুয়েতে ১৮৬০ সালে রসায়ন শাস্ত্রের উপর প্রথম এক বড় আকারের আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জার্মানির জুলিয়াস লোঠার মেয়ার এবং রাশিয়ার মেন্দেলিয়েভ। দুজনেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে উদ্দীপিত হন এবং মৌলিক পদার্থের একটা সাধারণ পরিচিতি সারণি নির্মাণ করতে উদ্যোগী হন।
     
    ডালটন যখন ১৮০৩ সালে বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর বিভিন্ন বলে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন, তখন বিজ্ঞানীদের অনেকেই হালকা থেকে ভারি পরমাণুগুলিকে পাশাপাশি বা পর পর সাজিয়ে দেখতে চাইলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট ছক পরিলক্ষিত হয় কিনা। জার্মানির জোহান ডোয়েবেরেইনার ১৮১৭ সালে একটা সরল ছক দেখতে পেয়েছেন বলে জানালেন। ক্রমিক পারমাণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন তিনটি করে মৌলগুচ্ছ নিলে তাদের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত সাদৃশ্য দেখা যায়: যেমন, লিথিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম; ক্লোরিন, ব্রোমিন, আয়োডিন; ক্যালশিয়াম, স্ট্রনসিয়াম, বেরিয়াম; সালফার, সেলিনিয়াম, টেলুরিয়াম; ইত্যাদি। দ্বিতীয়টির বৈশিষ্ট্যগুলিকে প্রথম ও তৃতীয়র গড় হিসাবে খানিকটা যেন ধরে নেওয়া যায়। তথাপি, বিজ্ঞানীরা দেখলেন, এই ত্রয়ী নীতি নিয়ে খুব বেশি কাজ গুছিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। এর ভিত্তিতে আগে পরে আর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। ফলে অচিরে এটি পরিত্যক্ত হল।
     
    ১৮৬২ সালে একজন ভূতত্ত্ববিদ একটা টেবিল বানিয়ে আনলেন এবং ফরাসি বিজ্ঞান আকাদমিকে দেখালেন (নীচের ছবিতে দেখুন)। তিনি হলেন আলেজাদ্রঁ অমিল বেগুয় দ্য শাঁকুরতোয়া। তিনি একটা সিলিন্ডারের মডেলে ধাপে ধাপে উপর থেকে নীচের দিকে নামিয়ে মৌলগুলিকে সাজালেন। তাঁর এই মডেল ছিল এক অর্থে ত্রিমাত্রিক—সময়ের তুলনায় যা ধারণাগতভাবে অনেকটাই এগিয়েছিল। কিন্তু তিনি পর্যায় এবং গ্রুপগুলিকে কোনো নিয়মের আলোকে মেলাতে সক্ষম হলেন না। ফলে সেকালে এর আর তেমন মর্যাদা জুটল না।
     
    ১৮৬৬ সালের দিকে ইংল্যান্ডের জন নিউল্যান্ডস তিনের বদলে এক অষ্টক ছাঁচের কথা বললেন। মৌলগুলিকে যদি তাদের পরমাণু ভারের ক্রমানুসারে সা রে গা মা পা ধা নি স্টাইলে সাজানো যায়, তাহলে প্রতি আট নম্বর মৌলটির মধ্যে এক নং মৌলের সাদৃশ্য দেখা যাবে। কিন্তু দেখা গেল, এক একটা সারিতে সাতটা করে মৌলকে পরমাণু ভারের ক্রমানুসারে সাজালে দুএকটা স্তম্ভের ক্ষেত্রে নিউল্যান্ডসের বক্তব্য খাটে, অন্যান্য স্তম্ভের বেলায় তা একেবারেই খাটছে না। অনেকেই সেই টেবিল নিয়ে খানিক হাসাহাসিও করলেন। বাইরের লোকেদের যাই ধারণা হোক, বিজ্ঞানীদের মধ্যেও পরস্পরের উদ্দেশে  হাসিঠাট্টা ব্যঙ্গ বিদ্রূপের চল ভালোই আছে।
     
    তবে বলে রাখা ভালো, শেষ পর্যন্ত কে হাসবে তা আগে থেকে বলা যায় না। দুই দশক পরে, ১৮৮৭ সালে রয়াল সোসাইটি তাঁকেও এই কাজের জন্য ডেভি মেডেল প্রদান করে।
     
    আর তার পরেই এগিয়ে এলেন মেন্দেলিয়েভ। জীবনানন্দের কথায় যিনি হাজার বছর ধরে না হলেও কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে পৌঁছেছেন মৌলিক পদার্থগুলির বংশ পরিচয়ের সামনে।
     


    তবে তিনি একা নন, আরও একজন ছিলেন খুব কাছাকাছি।
     
    সেই সব কথাও বলতে হবে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন