এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পূর্ব ইউরোপ

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ | ৭২৯ বার পঠিত
  • পূর্ব ইউরোপ। কদিন ধরেই আমার ফেসবুকে পোল্যান্ডের একটা শহরের ছবি দেখছি, ক্র‌্যাকভ, যা উস্কে দিচ্ছে নানারকম স্মৃতি। না, পোল্যান্ড কখনও যাইনি, এমনকি শহরটার নামের উচ্চারণও ঠিক করে জানিনা। কিন্তু তাতে কিছু এসে যায়না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে রুশ উপন্যাস "বসন্তের সতেরোটি মুহূর্ত" পড়েছিলাম, সেই সুদূর কৈশোরে, যা শুরু হচ্ছে সোভিয়েত বাহিনীর হাতে ক্র‌্যাকভ শহরের পতনের দিন থেকে। ওটাই প্রথম লাইন, কারণ শহরটা নাৎসি অধিকৃত পোল্যান্ডের রাজধানী ছিল। সেই সপ্তাহেই সোভিয়েত বাহিনী মুক্ত  করে আউশভিৎস, ম্যাপ না দেখেও জানি, সেটা কাছেপিঠেই। সোভিয়েতরা অবশ্য তখনও জানতনা, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প কী জিনিস, অন্তত ইতিহাস বইয়ে তাইই আছে। ওদিক থেকে আরও একটু পশ্চিমে গেলে প্রাহা। চেক দেশে। উচ্চারণটা জুলিয়ার ফুচিকের বইয়ে পড়া, যে ফুচিক জার্মান কারাগারে মারা যেতে যেতেও লিখে গিয়েছিলেন নোটবই, যা বছর-পঞ্চাশ বছর পরে পড়ি আমি। আরও একটু পশ্চিমে গেলে জার্মানির বুখেনভাল্ড। সেখানেও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প, যা নিয়ে লেখা ব্রুনো আপিজের লেখা বিখ্যাত উপন্যাস 'নেকড়েদের মধ্যে ন্যাংটো'। ওই ক্যাম্পে সুটকেসে ভরে একটি বাচ্চা উপস্থিত হয়, তাকে বন্দীরা বাঁচিয়ে রেখেছিল লালফৌজের আগমন পর্যন্ত।
    এসব লোকজন পড়ত আশির শেষ, এমনকি নব্বইয়ের শুরুতেও। তারপরই তো ঝপাঝপ ভেঙে গেল সবকিছু। তার আগে, কুন্দেরার লেখা হোক, কিসলোভস্কির ছবি হোক, বা আরও পরে 'তিন মাস দু সপ্তাহ সাত দিন' - সবই তো ধূসর। ঢ্যাঙা-ঢ্যাঙা বিচ্ছিরি ফ্ল্যাটবাড়ি, আর এককেন্দ্রিক বিচিত্র ব্যবস্থা। একটা মহত্তম বিজয়কে কীকরে এই পর্যায়ে নামিয়ে আনা গেল, সে এক রহস্য। আর তার ভেঙে পড়াও আরএক রহস্য। আমরা যারা দূর থেকে দেখেছি, হাঁ করে দেখেছি, যে, এভাবেও ভেঙে ফেলা যায়। 
    কাছ থেকেও কেউ দেখেননি তা নয়। এই মুহূর্তে যে বইটি কম্পিউটারে খোলা, সেটি হীরেন সিংহরায়ের লেখা। "পূর্ব ইউরোপের ডায়রি"। গুরুতেই এর অনেক পর্ব বেরিয়েছে। আলাদা করে বলার কিছু নেই, যে,  হীরেনবাবুর সেই ইতিহাসের ভিনদেশে ইণ্টারনেট নেই, জিপিএস নেই, আমাজন ডট কম নেই, আছে লম্বা কাঠের বন্দুক হাতে সশস্ত্র প্রহরী, আছে অটোবানের রাস্তায় হঠাৎ মোড় নেওয়া দুঃসাহসিক অ্যাডভেঞ্চার, আছে গভীর রাতের কড়ানাড়া, আছে হাইকের চিঠি, আর নিশানা হারিয়ে বহুদূর এসে শুনতে পাওয়া, 'ঝাকশেভো? তাম'! 
    বলাবাহুল্য সে ইতিহাস সরলরৈখিক নয়, তার ঋতু-পরিবর্তন, নতুন দিনের আশা, বা ঝড়ের পূর্বাভাষ কিছুই জানান দিয়ে আসে না। যেমন আসেনি ঊননব্বইয়ের নয়ই নভেম্বর - পূর্ব বার্লিনের হাজার হাজার মানুষ ছেনি, হাতুড়ি, শাবল – যা পেলেন, তাই নিয়ে যেদিন গুঁড়িয়ে দিলেন লৌহ-যবনিকা। যেমন আসেনি একানব্বইয়ের ছাব্বিশে ডিসেম্বর - কাস্তে-হাতুড়ি-শোভিত সেই নিশানটি যেদিন বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নেমে গেল ক্রেমলিনের চুড়ো থেকে। 
    পোল্যাণ্ড, পূর্ব জার্মানি, রাশিয়া, এবং কাজাখস্তান – পূর্ব ইউরোপের পালাবদলের এক আশ্চর্য এবং ব্যক্তিগত ইতিহাসের গল্পটা আমরা এবার প্রকাশ করতে চলেছিবইমেলায়। যাঁরা গুরুর এই বইপ্রকাশের পদ্ধতিটা জানেন, তাঁরা এ-ও নিশ্চয়ই জানেন যে, গুরুর বই বেরোয় সমবায় পদ্ধতিতে। যাঁরা কোনো বই পছন্দ করেন, চান যে বইটি প্রকাশিত হোক, তাঁরা বইয়ের আংশিক অথবা সম্পূর্ণ অর্থভার গ্রহণ করেন। আমরা যাকে বলি দত্তক। হীরেনবাবুর বইটি যদি কেউ দত্তক নিতে চান, আংশিক বা সম্পূর্ণ, জানাবেন। এই লেখার নিচে। অথবা guruchandali@gmail.com  এ মেল করে।
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন