মহীনের আশায় আশায় - সৈকত বন্দ্যো ভার্সন । এটা এখানে মায়ের কাছে মাসির গল্প শোনালেও লিখতে হচ্ছে। অনেক শ্রুতিকথা মাথায় এলো। যেখানে সাক্ষী শুধু সুরকালা দুটি কান।
বিশেষ করে মনে পড়ছে বাঁকাশ্যাম দাসের গানের কথা, যিনি গ্রাম থেকে শ্রীনিকেতনে আসতেন প্রতি বূধবার, বাবাদের আত্মীয়সম সহকর্মী শ্যামাপ্রসন্ন সেনকর্মকার মশাই গানের ব্যাপারে শেষকথা ছিলেন, শচীনকর্তার ভক্ত ছিলেন, তবু তিনি বাঁকাশ্যামকাকু এলে গানে আপত্তি করতেননা, নিজে বাউল খুব পছন্দ করতেননা, আসলে নিজে বাউন্ডুলে হলেও হিপি ঝোঁক মোটে সইতে পারতেননা।
একচিলতে কোয়ার্টারে র বারান্দায় একবার বাঁকা শ্যামের গান রেখর্ড করেছিলেন জাপানি গবেষক ইয়োকো হায়াসি, যিনি নাম জিজ্ঞেস করলে বলতেন , ওনার নাম ইয়োকো মানে সাগরিকা।
কলকেতে বাঙালি জ্যামিং ভক্ত রা আদিতে বাবার প্রসাদের সঙ্গে বব মার্লে, সনাতন দাস শোনার পরে, মধ্যে গৌতমবাবু কে আর একটু পরে গৌর ক্ষ্যাপাকে পেয়েছিলেন। ৭-৮ এর দশকের শান্তিনিকেতনে তার ব্যত্যয় হয়নি। ৯ এর দশকের বছর কুড়ি পরে প্রকাশ অনেক কেই রাধারাণীর মতোই ধন্য করেছিল। গৌতম চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের গান কে অনেক ভালোবাসা য় নানা ভাবে আরো বিস্তারিত করেছেন সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে গৌতমবাবু যেন ফ্লামেঙ্কো নাচের সুর, রবীন্দ্রনাথ, বাংলা রাগপ্রধান, আজানের সুর সবকিছু কেই একেবারে অবিশুদ্ধ নাগরিক বাঙালির কনফিউজড ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরে বাড়ছেন। মানে আমার বদ্ধকালার কানে তেমনই শোনালো।
আমরা যখন শান্তিনিকেতনে বেড়ে উঠছিলাম তখন পরিবারে গ্রহণযোগ্য মাকে বলা যায় এমন গান বলতে বাউল, রবীন্দ্রনাথ, লালন শুনছিলাম আর বাবার বন্ধু দের কাছে বা লায়লার বড়দাদা বাবজুদাদাদের বাদল সরকারের নাটকে ব্যবহৃত হ্যামাঙ্গ। একটু লুকোনোর বয়স হলে সিগারেটের দোকানে বিবিধভারতী এবং মেলার সময় অশালীন আলকাপ অথবা পাড়ার রেডিও দাদাদের কাছে প্রিসলে , বিটলস আর আবা। তো বিশুদ্ধতা আমাদের কপালে সেই থেকেই নেই। বাঙালি র কপালেও কোনদিনই ছিল না। সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান শুনে আরো অনেক প্রিয় এবং গোপনীয়তানির্ভর অনাচারের কথা মনে পড়লো, সেসব খুবই আ্যডাল্ট গল্প। :-)))গানের এক্সপেরিমেন্ট টেকনিকালিটি পছন্দ হোক না হোক , বিজেপি অধ্যূষিত বিশুদ্ধ ভারতবর্ষের শহরগুলি র কোনো না কোনো গোপন কোণে বা হেডফোনে এ গানের অবিশুদ্ধ এবং অবিশ্বাস্য ভালোবাসা কে অস্বীকার করা কঠিন হবে।
ইউটিউবে গানটি অনেকদিন ধরে আছে। আমি সবে শুনেছি। সার্চ : আশায় আশায় বসে আছি saikat bandopadhyay
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।