প্রায় এক বছর চার মাস লকডাউনের দরুন ট্রেন বন্ধ, যারা গৃহসহকারীর কাজ করতে কলকাতাতে আসতেন রোজ, ওনাদের সবারই আসা বন্ধ, এখন কাজ নেই, ফলে রোজগারও নেই৷৷
তেমনই একজন এসে উপস্থিত, আজ৷
হঠাৎই আজ একটি ট্রেন চলেছে, তাতে করেই এসেছেন৷৷
ওনার গল্প শুনছিলাম৷৷
ক্লাস ইলেভেনে পড়া ছেলেটির একটি মোবাইলের দরকার ছিল, অনলাইন ক্লাসের জন্য ৷৷ স্কুলের অনলাইন ক্লাস নয়, সে বিষয়ে সরকারী শিক্ষুককুল নেটওয়ার্কের সমস্যার দরুন ভেটো দিয়েছেন পড়ানোতে৷৷
প্রয়োজন প্রাইভেট টিচারের অনলাইন ক্লাসের জন্য, প্রাইভেট পড়ানোর সময় ঔ শিক্ষকগন কোন যাদুবলে নেটওয়ার্ক পেয়ে যান সেটা দিদি বলতে পারলেন না অবশ্য৷৷
শুধু বললেন—"যা টাকা জমিয়েছিনু দিদি, তাই দি ছেলেকে মোবাইল ফোং কিনে দিছি,পড়তি হবে, মাষ্ঠারে বলেছে, হাতে কুন টাকা নি"
চলছে কি করে জানতে চাওয়াতে জানালেন
রেসন ব্যবস্থা থেকে থেকে পান শুধু চাল আর গম——""বাকী কিনতি হয়""—
তাই এখন ওনাদের দুবেলা খাওয়ার বলতে সরকারী ২টাকা দামের চালের ভাত, কুঁচো মাছ আর বাস্তু ভীটের চারপাশ থেকে তুলে আনা শাকপাতা সেদ্ধ—
নদীর ধারে বাড়ি হওয়ার দরুন অল্প জমা জলে জাল ফেলে ওনারা কুঁচো মাছ ধরেন (ফিসারিজ এর আওতায় চলে যাওয়ায় এখন আর নদীতে নেমে মাছ ধরার উপায় নেই)
বাড়ীর পুরুষদেরও কোন কাজ নেই, দিনমুজুরের কাজই করতেন ওনারা, এখন আর সেসব কাজের ডাক পড়ছে না৷৷
বলছিলেন—""জানি না কবে টেরেন চলবে, কবে কাজে আসতি পারবো, না খেতে পেয়ে মরতি হবে গো"
চুপ করে শোনা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না৷৷ অন্তত প্রায় লাখখানেক এরকম প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের জীবন এখন এক বিরাট অনিশ্চিয়তার মুখে৷৷