এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চিঠি

    RW
    অন্যান্য | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১১৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • RW | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:১২729056
  • গোপাল সোমের মুখপুস্তিকা থেকে

    সূর্য্য সেন স্ট্রীট দিয়ে যাচ্ছিলাম , একটা চিঠি কুড়িয়ে পেলাম । - এক পিতৃব্যের চিঠি , কস্যচিত্ অনুপযুক্ত ভাইপো সমীপে । স্পষ্টতঃ , সেটি প্রাপকের কাছে পৌঁছয়নি । যাতে পৌঁছোয় , সেজন্য ফেসবুকে পাবলিক করে দিলাম । -

    “ পরম কল্যানবরেষু বাবা মুকুন্দ ,
    যদ্যপি ডাকনামেই তুমি অধিক পরিচিত , অত্র পত্রের শুরুতে তোমাকে পুরা নামেই সম্বোধন করিলাম । আট বৎসর হইতে চলিল তুমি বাড়ি-ছাড়া , প্রয়োজনে তোমার দেখা পাওয়া ভার , অপিচ , অপ্রয়োজনে , অকাজে এবং সকল অনর্থে তোমার দৃশ্য এবং অদৃশ্য উপস্থিতি বিলক্ষণ টের পাই । অগত্যা এই পত্র।
    বাবা মাকু , তোমাকে স্মরণ করাইয়া দেওয়ার প্রয়োজন নাই , মন্দবুদ্ধি কেরামতের নানান অন্যায় কার্য্যে তোমার প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ প্রশ্রয় আমরা কেহই সুনজরে দেখিতাম না । তাহাকে তুমি মহাসমাদরে আমাদের ভদ্রাসনের একাংশে স্থান দিতে অগ্রণী ভূমিকা লইয়াছিলে । স্বীকার যাই , আমাদেরও আপত্তি ছিল না । কিন্তু সেই বিষবৃক্ষ অধুনা মহীরূহ হইয়া আমাদের ভদ্রাসন গ্রাস করিতে উদ্যত । কি অভিপ্রায়ে কে জানে , তাহাকে তাল দিতেছে আমাদের-ই জ্ঞাতি কন্যা কল্যানীয়া পটলি !
    পটলি আমার স্বর্গত জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার শ্যালিকা – কন্যা , আর তুমি , আমার ভ্রাতুষ্পুত্র , - সেই হিসাবে তুমি ও পটলি মাসতুতো ভাই-বোন ।
    তবে এইস্থলে তোমাকে এক অপ্রিয় সত্যের সম্মুখীন করাইতে বাধ্য হইতেছি । - সেই দুর্যোগময় দিনে ছিন্নমূল হইয়া আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বৌদিদি সহিত এদেশে আসেন । পরিতাপের বিষয় , পলায়নকালে আমার বৌদিমণি কতিপয় স্বভাব-ধর্ষক যবন দ্বারা উপর্যূপরি ধর্ষিতা হইয়াছিলেন । সময় বহিয়া গেল , যথাকালে তুমি জন্ম লইলে । কিছুটা লোকলজ্জায় , কিছুটা পারিবারিক ঔদার্য্যে আমরা ভ্রাতুষ্পুত্র হিসাবেই তোমাকে গ্রহণ করিলাম । তথাপি , হায় , জিনের প্রভাব অমোঘ। অচিরে তোমার কার্য্যকলাপ তোমার ঔরসের সাক্ষ্য দিতে শুরু করিল । আমরা ভবিতব্য হিসাবেই ইহাকে মানিয়া লইয়াছিলাম । কিন্তু বিপদ ক্রমাগত ঘনীভূত হইতেছে , - সেই কারণেই এই পত্র ।
    বাবা মাকু , কেরামতকে লইয়া পটলি ও তোমার রহস্যময় , সন্দেহজনক সম্পর্কের কথা কাহারো অবাদিত নহে । পটলির বাম কুঁচকি , কেরামতের ডান কুঁচকি ও তোমার পায়ুপার্শ্বের দাদ যে তোমাদের পারস্পরিক সম্বন্ধের সাক্ষ্য বহন করিত , তাহা সবার জানা । কিন্তু সমস্যা এখন আর কম ক্ষতিকর দাদে সীমাবদ্ধ নাই ।
    লজ্জা এবং পরিতাপের বিষয় , পটলি আমাদেরই জ্ঞাতি । তথাপি কেরামতের সহিত তাহার নির্লজ্জ , অবৈধ সঙ্গম-সহবাস আমাদের অধোবদন করিয়াছে । কামতাড়িত অঙ্গনার বিচারবুদ্ধি লোপ পায়। সে বর্তমানে কেরামতের সহযোগে আমাদের ভদ্রাসনটি কুক্ষিগত করিতে উদ্য়োগী । আমরা কি আবার বাস্তুচ্যুত হইব ? বড় আতঙ্কে কালাতিপাত করিতেছি ।
    তবে সম্প্রতি গুরুদেব আসিয়াছিলেন । তিনি আশার কিরণ দেখাইয়াছেন । তাঁহার মতে , পটলির কুঁচকির দাদ ইতিপূর্বেই অধিক সংক্রমণকারী “সাপুরেটিং একজিমায় “ রূপান্তরিত হইয়াছিল ,তাহাতে বিষাক্ত স্বার্থরস ক্ষরিত হইতেছিল । উচ্ছৃঙ্খল দিনযাপনের ফলে বর্তমানে পটলির সেই ক্ষত “অটো ইমিউন ডেফিসিয়েন্সী সিনড্রোমে “ পরিণত হইয়াছে । পটলি জনসমর্থনরূপী প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাইতেছে দ্রুত । তাহার অন্তিম সময় আগতপ্রায় । আশা রাখি , অদূরভবিষ্যতে আমরা তাহার অত্যাচার হইতে নিস্কৃতি পাইব ।
    তবে কেরামত থাকিয়া যাইবে । সে রক্তবীজের বংশধর ।
    বাবা মুকুন্দ , আশা রাখি , তোমার দাদের অবস্থার অবনতি হয় নাই । দুর্ভাগ্যবশতঃ তোমার ধমনীতেও রক্তবীজের শোণিত কিয়দংশে বহমান । এই অবসরে , এই সংকটকালে , ঘুরিতে না পারিলেও একবার ঋজু মেরুদন্ডে উঠিয়া দাঁড়াও , এই প্রার্থনা করি । নিজ স্বার্থ ও স্বাস্থ্যের কারণে কেরামতের সহিত তোমার সমকামী সম্পর্ক হইতে ফিরিয়া আইস । তুমি তোমার ধর্ষক জন্মদাতার পথাবলম্বী হইবে , না গর্ভধারিনী জননীর ঋণ শোধ করিবে , তাহা তোমার বিবেচনা ।
    ইতি ,
    আশীর্বাদক ,
    সনাতন ভট্টশালী ।।“
  • RW | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:১২729057
  • (১)
    ট্রাম্প এক্সিকিউটিভ অর্ডার ঃ 13769 - এক্ষেত্রে সাতটা মুসলিম দেশের স্বরণার্থী এবং ভিসা ব্যান করা হয়েছিল। উল্লেখ্যে আমেরিকান সংবিধানেও ধর্মের ভিত্তিতে ডিসক্রিমিনেট করা যায় না।

    এবার আসি সুইডেনের সাম্প্রতিক ইতিহাসে। সুইডেন একদা ইউরোপের সব থেকে লিব্যারাল দেশ ছিল ইমিগ্রান্ট-বিশেষত স্মরনার্থীদের জন্য। ২০১৬ সাল থেকে তা বদলাতে শুরু করে। এত বেশী সিরিয়ান এবং আফগান রিফিউজি সুইডেনে আশ্রয় নেয়, বর্তমানে সুইডেন তার ইমিগ্রেশন আইনই বদলে দিয়েছে। আশ্রয় দিলেও রিফিউজি স্টাটাস দিচ্ছে না। যাতে তারা ইমিগ্রেশন স্টাটাস না পায়। সুইডেন ডেমোক্রাট পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল হেস পরিস্কার ভাবেই তথ্য দিয়ে দেখিয়েছিলেন সুইডেনে রেপ স্টাটিস্টিক্সের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ইমিগ্রান্টদের যোগ। এবং তার ভিত্তিতেই তারা সুইডেনে মুসলমান রিফিউজি ঢোকা "প্রায়" বাতিল করেছেন।

    ইংল্যান্ডে সদ্য নির্বাচিত বরিস জনসন ত খুব পরিস্কার ভাবেই বলেছেন ইসলামোফোবিয়ার পুরোটাই রিয়াকশন। মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক আচরনের জন্য। ইংল্যান্ড ও কড়া আইন আনতে চলেছে। ইটালিও তার ৫০০,০০০ মূলত মুসলিম ইমিগ্রান্টদের তাড়াবে বলছে।

    ইউরোপের কোন দেশের দিকে তাকাই? ডেনমার্ক, নরওয়ে, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, পোলান্ড- এমন দেশ পাওয়া মুশকিল যারা মুসলিম বিরোধি আইন আনে নি। এবং আরো কড়া আইন আনছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ।

    ঠিক আছে। এদের ছেরে দিলাম। মুসলমানদের আসল দেশ সৌদি আরব পর্যন্ত পাকিস্তানি মুসলিম ইমিগ্রান্টদের ফেরত পাঠাচ্ছে। সিকিউরিটি রিস্ক!

    এই প্রশ্নটা করা উচিত। ইউরোপের এইসব দেশগুলোতে অনেক ভারতীয় এবং বাংলাদেশী হিন্দুরাও মাইগ্রেট করেছে। যদি বরিস জনসন আন্টি-ইমিগ্রান্টই হবেন তা উনি হিন্দু ভারতীয়দের কাছে টানছেন কিন্ত ইংল্যান্ডের মুসলিমদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন কেন?

    একটা গন্ডগোল ত আছেই। ভারতে ৭০০ বছর থাকার পরে, যদি ইনারা শুধু ধর্মের কারনে নিজেদের আলাদা জাতি ভাবেন, তাহলে ত নেশন স্টেটের ভিত্তিটাই নড়ে যাবে! মহম্মদ আলি জিন্না এবং আল্লামা মহম্মদ ইকবাল -যাদের পাকিস্তান জন্মের কৃষ্ণ বলরাম বলা যায়- তারা নিজেরা দ্বিতীয় কি তৃতীয় প্রজন্মের প্রজন্মের মুসলিম। জিন্নার ফ্যামিলি ছিল গুজরাটি হিন্দু আর ইকবালের কাশ্মীরী ব্রাহ্মন। ইসলাম কি এমন আলাদা যে এক জন হিন্দু থেকে মুসলমান হলেই অন্য "জাতি" এবং তার ভিত্তিতে "দেশ" গড়ার স্পর্ধা পান? এই প্রশ্নের উত্তর না পেলে, এই সমস্যা থেকে যাবেই।

    ভারত ভুলে যান। এখন বেলজিয়াম, সুইডেন, ফ্রান্স সর্বত্রই মুসলমানরা আলাদা পার্টি খুলছেন। যাদের দাবী ইসলামিক জীবন ধারা এই দেশগুলিতে আনতে হবে। নইলে তারা সেই দেশের মধ্যেই আলাদা দেশ ভাগ দাবী করবেন! এখন এই সব তত্ত্ব বা পার্টিগুলিকে আপনি উন্মাদ, মুসলমানদের মধ্যে আউটলায়ার বলবেন? এরা ত সিট ও জিতছে। সব থেকে বড় কথা একাধিক সমীক্ষাতে দেখা যাচ্ছে মুসলমানদের ৬০-৮০% নানান দেশে শরীয়া আইনেই থাকতে চাইছে।

    এখন এই পরিস্থিতিতে এইসব দেশগুলিও মুসলমানদের অভিবাসন বা ইমিগ্রেশনের বিরুদ্ধে কখনো প্রত্যক্ষ্য কখনো পরোক্ষ বিল আনছে। ভারতের ক্যা, মোটেও গ্রীষ্মের দুপুরে রাস্তায় কা কা করে ডাকা একাকী কাক না! গোটা বিশ্ব জুরেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিবাসন আইন কড়া হয়েছে। ভারত ব্যতিক্রম কিছু করে নি। লিব্যারালরা চেঁচাতেই পারেন। কিন্ত বাস্তব এবং তথ্য বলছে, ভারতের ক্যা গ্লোবাল ট্রেইন্ড।

    কিন্ত পরিস্কার ভাবে এটাও ভাবতে হবে সব মুসলমান সমান না। সবাই তার নিজেদের মতন। মুসলমান মানেই এই বা ওই- এই ধরনের স্টিরিওটাইপিং ঠিক না-কিন্ত ধর্মের প্রশ্ন উঠলেই দেখা যাছে মুসলমানদের ৯০% + চিন্তা ভাবনা না করেই প্রশ্নাতীত আনুগত্য দেখাচ্ছে। এটা খুবই ভয়ংকর ট্রেন্ড।। ধার্মিক জীবন খারাপ না। অনেক ধার্মিক মুসলমানই মহান। কিন্ত অন্ধ আনুগত্য সমাজ এবং সহনাগরিকদের জন্য ভয়ংকর।

    (২)
    এবার মূল সমস্যায় আসি। কিসের জন্য মুসলমানরা অন্যদের থেকে মানে অন্য ধর্মের লোকেদের থেকে নিজেদের আলাদা ভাবে। এই ধাঁধার সমাধান না হলে, বাকীগুলোও সমস্যাই থেকে যাবে। আমি এটা নিয়ে যা ভেবেছি-লিখছি। ঠিক হবে মানে নেই। তবে এটি নিতান্তই আমার মতামত।

    আমি নিহিলিজমের দৃষ্টিতেই ধর্মকে দেখি। ব্যপারটা এমন। আমাদের জীবনে প্রতিদিনই অসংখ্য সমস্যা এবং সাফারিং। জীবন মাত্রই সমস্যা সংকুল। সুতরাং এত কষ্টের মধ্যেও, সংগ্রামের মধ্যেও আমরা বেঁচে থাকতে চাইছি- তার কারন প্রত্যেকেরই বাঁচার একটা "পারপাস" আছে। অর্থাৎ সবাই কিছু না কিছু উদ্দেশ্যেই বেঁচে থাকে। যাদের ছেলে মেয়ে আছে, তাদের অবশ্য এত ভাবনা নেই। ছেলেমেয়েদের বড় করার বাইরে অধিকাংশ লোকই হায়ার পারপাস নিয়ে ভাবে না।

    মুশকিল হচ্ছে বিজ্ঞান বা দর্শন -কোন কিছুই জীবনের উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিত তার উত্তর দিতে ব্যর্থ। কারন এর উত্তর হয় না। জীবনের সত্যিই কোন পরম উদ্দেশ্য নেই। কিন্ত পরম উদ্দেশ্য নেই, তাই জীবন অর্থহীন- এমন ভেবে বসলে এত সংগ্রামের মধ্যে বাঁচার ইচ্ছাটাই হারিয়ে যাবে। এটাকে বলে এক্সিটেন্সিয়াল নিহিলিজম।

    সুতরাং প্রথাগত ধর্মগুলো, মানুষকে একটা হায়ার পারপাস বা জীবনের উদ্দেশ্য দিয়ে থাকে। সেগুলো যতই রূপকথা বা অবৈজ্ঞানিক হৌক না কেন - মানুষ যদি পরজন্ম বা বেহস্তে বিশ্বাস না করে, সে এই কঠিন সংসারের লাঙল টানবে কি করে?

    এই নিহিলিজমের মানসিক অস্থিরতা বা হতাশা ( ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন ও বলতে পারেন) থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অধিকাংশ মানুষ একটা আধ্যাত্মিক হায়ার পারবাসের সন্ধান করে। যা কিছু হচ্ছে ঈশ্বরের ইচ্ছায় হচ্ছে ভাবলে ডিপ্রেশন আসার চান্স কম!

    উনবিংশ শতাব্দিতে ধর্ম যখন বিজ্ঞানের কাছে বাতিল হচ্ছে, নিৎসে বল্লেন আচ্ছে ইশ্বরকে ত তোমরা মেরে ফেললে-বদলে সাধারন লোকগুলোকে দিলে কি? তাদের ত জীবনের একটা পারপাস না থাকলে, তারা অস্থিরতায় ভুগবে!

    এই জন্য বিজ্ঞান প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে নিহিলিজম থেকে উদ্ধার পেতে ধর্ম ছারাও আরো তিনটি পথের দেখা মেলে।

    প্রথমত হেডোনিজম। ভোগবাদ। অর্থাৎ চার্বাক মতে ধার করে খাও দাও গেল, যৌনতা নিয়ে থাক। মানে জীবনের অসার অস্তিত্বর প্রশ্ন যাতে তোমাকে তাড়া না করে, তার জন্য রঙীন জীবন। কনজিউমারিজম, নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি, লিব্যারালিজম- সব কিছুর উৎপত্তিই এই হেডোনিজমে।

    দ্বিতীয়ত আইডিয়ালিজম। অর্থাৎ একটা আদর্শকে জীবনের উদ্দেশ্য করে এই অস্তিত্বের সংকট কাটানো। এই ভাবেই লোকে কমিউনিউস্ট বা ন্যাশানালিজমের প্রতি প্রশ্নাতীত আনুগত্যে ভাসে। কারন ঐ স্বপ্নটাই তার জীবনসাথী। তার জন্যে সে হাজার কিছু আত্মত্যাগে প্রস্তুত।

    তৃতীয়টা নিৎসের দেওয়া। অতিমানব, সুপারম্যান বা উবেরমেন্স। এটির অপব্যাখ্যা নাৎসিরা করেছে। সঠিক ভাবে দেখতে গেলে দুইভাবে সুপারম্যান সম্ভব - একশন সুপ্যারম্যান। ধরুন যারা স্পোর্টস বা সেনানায়ক। অন্যদিকে এস্থেটিক সুপারম্যান। যার সিনেমা, কবিতা, সাহিত্য গান বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে অনন্য অবদান রাখছেন।

    ধর্মের বাইরেও অতীতে নিহিলিজম আটকাতে আরো দুটি দর্শন ছিল। স্টয়শিজম এবং বুদ্ধিজম। এর দুটোরই প্রতিপাদ্য- বেদনা যন্ত্রনাকে কেন ভয় পাচ্ছ? এরা নিজের অস্তিত্বকে দুটো স্তরে ভাংতে বলে। লোয়ার আর আপার। নিজের হায়ার সেলফ দিয়ে লোয়ার সেলফের যন্ত্রনাকে দেখ। বিশ্লেষন কর। সেখান থেকে বাইরে এস। স্টয়সিজম কিন্ত পাশ্চাত্য সভ্যতার ভিত। ক্রিষ্ঠান ধর্ম না।

    এবার ইসলামের সমস্যায় আসি। আল্টিমেটলি এই যে সব রাজনৈতিক দন্দ আমরা দেখি- তার সবটাই রেসপন্স টু নিহিলিজম হিসাবেই ভাবা যায়। আবার নিহিলজম কাটাতে কেউ একটা পথ নিচ্ছে তা কিন্ত না। কেউ একই সাথে আইডিয়ালিস্ট এবং ধার্মিক-দুই হতে পারে। ইসলামের সমস্যা হচ্ছে এরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের পথ একমাত্র পথ এটা জোর করে চালাতে যাবে। এর জন্য ইসলামকে একই সাথে আদর্শবাদ এবং ধর্ম -দুটো ভাবেই প্রোমট করছে। হিন্দুত্ববাদ এরই কাউন্টার রেসপন্স।

    মুশকিল যে বর্তমানে ক্যাপিটালিস্ট ওয়ার্ল্ড হেডোনিজম ছাড়া চলবে না। অর্থনীতি চলে হেডোনিজমে। মানে ভোগবাদে। এদিকে রাজনীতি দখল করে আছে আইডিয়ালিস্টরা। আর পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যায় কিছু উচ্চমানের মানুষ। ইসলাম এসব কিছুই স্বীকার করে না। তারা হেডোনিজমের চূড়ান্ত বিরোধি। মোদ্দা কথা নিহিলিজমের ভয়েড কাটানোর জন্য যে আধুনিক চিন্তাগুলো- তার সবকিচ্ছুই তারা বর্জন করছে। ফলে বাকী সবার সাথে এদের সংঘর্ষই স্বাভাবিক।

    অন্য ধর্মও হেডোনিজম বিরোধি-কিন্ত ইসলাম জোর করে তা বন্ধ করতে চায়। ফলে ক্যাপিটালিজমের সাথে ইসলাম এখন পুরো সাংঘর্ষিক। কমিউনিজমের মৃত্যুতে এই মুহুর্তে ক্যাপিটালিজমের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় শক্তি হিসাবে ইসলামিস্টরাই আছে।

    এই দ্বন্দ চলবে আরো কিছুদিন। যদ্দিন না মুসলমান দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংস্কার না হয়। পাশ্চাত্যের ক্যাপিটালিস্ট লোভই ইজিপ্ট, ইরান, সিরিয়া আফগানিস্থান ইত্যাদি দেশগুলিতে রাজনৈতিক সংস্কার করতে বাধা দিয়েছে। এখন নিজেরাই তার ফল ভুগছে। পাপ তার বাপ কে কি ছাড়ে?

    #BipPal
  • সৈকত রায় মহাশয় | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:২৬729058
  • সুইডেনের বাসিন্দা হিসেবে কিছু প্রতিবাদ রেখে যাই -

    ১ সুইডেনের ২০১৬ সালের ইমিগ্রেশন ল চেঞ্জ রোলড ব্যাক হওয়া শুরু হয়েছে।

    https://www.thelocal.se/20190619/sweden-rolls-back-strict-rules-on-family-reunification

    আর সেই পুরানো ল বলে "বর্তমানে সুইডেন তার ইমিগ্রেশন আইনই বদলে দিয়েছে। আশ্রয় দিলেও রিফিউজি স্টাটাস দিচ্ছে না। যাতে তারা ইমিগ্রেশন স্টাটাস না পায়" এমনটা ঠিক নয়। তিন বছরেরে পারমিট, আর তিন বছর পরে আরেকবার বিবেচনা। এই ছিল সেই চেঞ্জ। সেটা অবশ্য এখনও রোলব্যাক হচ্ছে না। তবে অদূর ভবিষ্যতেই হয়ে গেলে কেউ আশ্চর্য হবে না।

    ২ সুইডেন ডেমোক্রেটিক পার্টি (sverigedemokratrna) একটা অত্যন্ত দক্ষিণপন্থী পপুলিস্ট দল। কিছুদিন আগেও এনারা নাৎসি সিম্প্যাথাইজার হিসেবে খ্যাত ছিলেন। এনাদের সীট শেয়ার সুইডেনের সিকিভাগও নয়। লাস্ট পনের বছর ধরে এঁদের লীডার জিমি অকেসন (Åkesson) । আর পার্টি সেক্রেটারি রিচার্ড ইয়মশফ। মাইকেল হেস নামে কোন বরিষ্ঠ নেতা আছেন কিনা আমি জানি না। তা এমত পার্টির এরকম মাঝারি মানের অফিশিয়াল কি বলেছেন তাকে সুইডেনের প্রতিনিধি ধরে নেওয়া সম্ভবত অন্যায়।

    বাকি মুসলমান-বিদ্বেষ আপনার নিজের, আমার তা নিয়ে কিছু বক্তব্য নেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন