আসলে আমারও তো স্বপ্ন ছিল। কার না স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে হয় না?তবে আমি ছিলাম অন্য প্রকৃতির। সেই বিশ বছর বয়স থেকে ঘরছাড়া হয়েছি, কোনও দিল একটা পয়সাও নিজের খাবার বা পড়াশুনোর বা জামাকাপড় কি বাসস্থানের জন্য মায়ের কাছ থেকে নিইনি, তবুও হঠকারিতা হোক কি ইম্পালসিভ বা ইমোশনাল সিদ্ধান্ত নেবার বিলাসিতা করতে পেরেছি। আমারও কি ডিপেন্ডেন্টের সংখ্যা কম ছিলো? মোটেই না। তবু দুম করে চাকরি ছেড়ে দেওয়া বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে চাকরি খোওয়ানোর ঘটনা কম ঘটেনি জীবনে। সেইজন্যই ঐ কথাগুলো গোড়াতেই লিখলাম, হয়ত মেয়েমানুষ বলেই অপমান হজম করে নিয়ে, হে হে করে হেসে শেকহ্যান্ড করে পুরোনো এম্পলয়ারের কাছে কোনও দিনও ফিরে যাবার কথা ভাবি নি।
কর্মক্ষেত্রে গেলেই তো বেশি বেশি করে বর্ণবৈষম্য এবং তার সুচারু প্রয়োগগুলোর সঙ্গে পরিচয় ঘটে।
মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে ব্যাপারটা এইরকম, যে সমস্যাকে তুমি ইনভাইট না করলে সে তোমার কাছে আসবে না। কিংবা, তুমি হয়তো ওরকম ভাবছ, আসলে ব্যাপারটা সেরকম না।
এর পাল্টা উত্তর দেওয়াই যায়। সমস্যাকে ইনভাইট করা জিনিসটা যে কী, তা আমি জানতাম না, এখনও জানি না, বা সম্ভবত আমার বুদ্ধি বিবেচনার বাইরের কোনও বিষয় । কিন্তু সেকেন্ড পয়েন্টটা নিয়ে আমার বেশ আপত্তি আছে। "তুমি হয়তো ওরকম ভাবছো" ব্যাপারটাও বেশ গোলমেলে। প্রায় কোয়ার্টার শতাব্দী পরে এই দুটো ধাঁধার মতো বাক্যবন্ধের উত্তর আমি পেয়েছি। শুধু তাইই নয়। রেসিজমের বিরুদ্ধে যে লড়াইটা আমার জারি ছিল নানান সময়ে, সেটা ফাইনালি জিতে গেলাম। নানান সময়ে আমি বাঘাবাঘা উকিলের পরামর্শ নিয়েছি, কিন্তু তারা পথ দেখাতে পারেনি। তাদের সকলেরই বক্তব্য ছিলো মোটামুটি একই ধাঁচের — আমরা জানি এগুলো হয়, কিন্তু আদালত মানবে না। যারা এগুলো করে, তারা অত্যন্ত সুচারুভাবে প্রমাণ না রেখে এগুলো করে। রেসিজম তো দূরের কথা কর্মক্ষেত্রে বুলিইং ও আপনি প্রমাণ করতে পারবেন না। বরং অন্য চাকরি খুঁজুন। কী সুন্দর সলিউশন না?
কোনও কেসই তাই নথিভুক্ত হয় না, আর নথিভুক্ত না হলে যা হয়, লাই ... ড্যাম লাই... হয়ে স্ট্যাটিসটিক্স বলে এদেশে এসব খারাপ জিনিসের সংখ্যা খু উ উ ব কম।
কিন্তু অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমার যেটা বাড়ছিল, সেটার নাম হচ্ছে সাহস।
যে ঘটনার কথা লিখতে চলেছি, সেটা গেল মাসের একটা সাফল্যের খবর আমার। বলা যেতে পারে অ্যাচিভমেন্ট। এইটে করে উঠতে না পারলে নিজের ওপরই একটা ক্ষোভ থেকে যেত। তবুও চাকরি জীবনে যখন খুব বেশি সময় বাকি নেই হাতে, একটা খোয়লে নতুন চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য, সেই সময়েই আমি রিস্ক নিয়েছি এই লড়াইটা করবার। আবারও। তবে এবার আমি জিতে গেলাম। কীভাবে পারলাম সেসব তো লিখবোই। এসব লিখতে গেলে আরও বেশ কিছু ঘটনা ইত্যাদি আগে বলে নিতে হবে।