এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  স্মৃতিচারণ   স্মৃতিকথা

  • এল ডোরাডো

    যোষিতা লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | স্মৃতিকথা | ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৯৯০ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৭ জন)
  • এখানে লিখব সোনার দেশ সুইটজারল্যান্ডের নানান অভিজ্ঞতা ও মানুষের কথা।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:১৪744428
  • ডট,
    শেফ ভিকাস খান্না। এখন ছটা মিশেলিন স্টার আছে ওঁর। কিন্তু বলেছিলেন যে ফ্রান্সে ছিলেন একটা সময়ে। ওখানকার কোনো রেস্তোরাঁয় শুধু ডেলিভারি বয় বা ডিশ ওয়াশার,এই কাজ ছাড়া করতে দেওয়া হতোনা। বাদামী গায়ের রঙের কারণে।
  • . | ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৪৫744429
  • বোঝো!
    এবার আরও গল্প আসবে। 
    মিঃ খান্না খ‍্যাতির শিখরে উঠে স্বীকার করলেন ব‍্যাপারটা। নইলে চাপা পড়ে যেত সত‍্যটুকু।
  • সমরেশ মুখার্জী | ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩৯744645
  • ৩.৩.২৪ অবধি পড়ে পরবর্তী পর্বে‍র জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। বেশ কয়েকবার ঢুঁ মেরেছি। তারপর আমি‍ও গুরুতে অনিয়মিত হয়ে গেছি। 
     
    লেখাটা বুকমার্ক করা ছিল। আবার ঢুকে একটানা ২৪.১.২৫ অবধি পড়ে গেলাম। কাছ থেকে দেখে, অনুভব করে, বিশদে লেখা এমন সুলিখিত বৃত্তান্ত পড়ে গোল্ডিজীর জন্য মনটা ভারী হয়ে গেল। এক্ষেত্রে গোল্ডিজী নিছক একজন ব্যক্তি নন, এমন পরিস্থিতিতে থাকা বহু মানুষের প্র‍তিভূ। তবে এসব সত্ত্বেও ওনার অন্ত‍রে শ্বেতাঙ্গপ্রীতি রয়ে গেছিল - এটা পড়ে একটু অবাক লাগলো।
     
    সটান আঙ্গিকে লেখা এই আঁখো দেখা হাল পড়তে বেশ লাগছে। ইউটিউব ভিডিও‍তে ছবির মতো প্রাকৃতিক সুন্দর দেশটি দেখতে ভালোই লাগে। কিন্তু বিশেষ, উচ্চ যোগ্যতা না থাকা তৃতীয় বিশ্বের সাধারণ মানুষের ওখানে বাস করার অভিজ্ঞতা এমন প্রত্যক্ষদর্শী‍র বিবরণ ছাড়া জানা সম্ভব নয়। 
     
    লেখা চলুক। অপেক্ষা করবো।
  • . | ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৩৬744654
  • হ‍্যাঁ, গোল্ডিজি অচিরেই আবার প‍্যাটেলের রেস্টুরেন্টে পুনর্বহাল হয়ে গেলেন। এটা অদ্ভুত কিছু নয়, অন্তত আমার দেখা অভিজ্ঞতার মধ্যে এ জিনিস পুরুষদের মধ্যে বেশ কমন। পুরুষদের মধ্যে এরকম ছেটোখাটো আত্মসম্মানবোধ চাকরির জগতে তুলনামূলক ভাবে কম দেখেছি। হয়তো তাদের এটা সহজাত ইন্সটিংক্ট। নিজের এবং নিজের পোষ্যদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হয় তাদের বেশিরভাগকেই। সেই চাপের সামনে কর্মক্ষেত্রের টুকটাক কি বড়োসড়ো অপমানকেও সহজেই ভুলে যেতে হয় তাদের। ঠিক যেমন মহানগর সিনেমায় মাধবী ঝোঁকের মাথায় চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারে, স্বামী বেকার জানা সত্ত্বেও সে রিস্কটা নিয়ে ফেলে, আমাদের প্রচলিত সামাজিক বিচারের ভাষায় "একটু ইম্পালসিভ", "ইমোশনাল" আখ‍্যা দিই, ওর স্বামী সেটা হয়ত কখনই করতো না। কখনই কেন, নিশ্চয়ই করতো না। তার ঘাড়ে প্রাথমিকভাবে রোজগার করবার দায়িত্ব আছে যেহেতু। গোল্ডিজিও এর মধ্যেই প‍্যাটেলের করা সমস্ত অপমানের স্মৃতি সময় নামক ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফিকে করে করে প্রায় মুছেই ফেলেছেন। ছেলেমেয়েরা বেড়িয়ে ফিরে যাবার পরে উনি আবারও সেই চেনা কাজের পরিসরে দিন অতিবাহিত করতে লাগলেন।
    এর সঙ্গে মাঝে মাঝেই চড়া সুদে এবং চক্রবৃদ্ধিহারে ঋণ নিতে লাগলেন। ঐ ঋণ পরিশোধ হতো এক দু বছর ধরে। মূল ঋণের চেয়ে সুদের পরিমাণটা বেশিই ছিল, কিন্তু গোল্ডিজি নাচার, ঐ অর্থ দেশে পাঠিয়ে দিয়ে তিনি জমি কিনছেন কিংবা দোকানঘর।
    আমি বলেছিলাম আমার থেকে বিনাসুদে ধার নিতে, পরে সময় করে মিটিয়ে দিলেই হবে, কিন্তু উনি নিতেন না। হয়ত মেয়েমানুষের থেকে টাকা ধার নিতে আত্মসম্মানে বাধত, নয়ত অবাক হতেন এই ভেবে যে বিনাসুদে টাকা দেওয়ার পেছনে আমার নির্ঘাত কোনও মতলোব থাকবে। কিংবা দুটোই হতে পারে কারণ। 
    এদেশে যেহেতু ব‍্যাংকে টাকা রাখলে সুদ প্রায় নেই, উপরন্তু ট‍্যাক্স আছে, ফলে টাকা কমে যায় একটু একটু করে। তাই উনি ব‍্যাংক ফাঁকা করে এবং মাইক্রোক্রেডিটের ঋণের সব টাকা দেশে পাঠিয়ে দেবার নেশায় মেতে উঠলেন।
    দেশে তখন ফুর্তির টাইম। বৌকে ফোনে জানাচ্ছেন টাকা পাঠানো হয়েছে, বৌ জানাচ্ছেন যে প্রথমে এই থোক টাকা দিয়ে বাড়ির পাশের জমিটা কিনে নিয়ে যেটুকু বাঁচবে সেটা দিয়ে বাউন্ডারি ওয়াল বানানোর ব্যবস্থা করবেন। এইরকম সব প্ল‍্যান চলত। গোল্ডিজিতো ধরেই রেখেছিলেন যে বুড়ো বয়সে দেশে ফিরে একটা বিজনেস শুরু করবেন। একটা ক‍্যাফে কাম লাইব্রেরি। কিঞ্চিৎ অংশে বুকশপ। স্বপ্নের মতো সেই বুকশপ বা ক‍্যাফে। স্পষ্ট সেসব দেখতে পেতেন চোখের সামনে। লোকজন ক‍্যাফেতে ঢুকে গরম কফি খেতে খেতে বই পড়ছে। কেউ কেউ একটা দুটো বই কিনেও ফেলল। 
    সেই স্বপ্নের বিজনেস এতটাই বাস্তবের মতো করে কথায় ও ভঙ্গিতে প্রকাশ করতেন তিনি, যে আমি আরাবিকা কফির গন্ধ পর্যন্ত যেন অনুভব করে ফেলতাম।
  • . | ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১২744655
  • আসলে আমারও তো স্বপ্ন ছিল। কার না স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে হয় না?
    তবে আমি ছিলাম অন্য প্রকৃতির। সেই বিশ বছর বয়স থেকে ঘরছাড়া হয়েছি, কোনও দিল একটা পয়সাও নিজের খাবার বা পড়াশুনোর বা জামাকাপড় কি বাসস্থানের জন‍্য মায়ের কাছ থেকে নিইনি, তবুও হঠকারিতা হোক কি ইম্পালসিভ বা ইমোশনাল সিদ্ধান্ত নেবার বিলাসিতা করতে পেরেছি। আমারও কি ডিপেন্ডেন্টের সংখ‍্যা কম ছিলো? মোটেই না। তবু দুম করে চাকরি ছেড়ে দেওয়া বা অন‍্যায়ের প্রতিবাদ করে চাকরি খোওয়ানোর ঘটনা কম ঘটেনি জীবনে। সেইজন্যই ঐ কথাগুলো গোড়াতেই লিখলাম, হয়ত মেয়েমানুষ বলেই অপমান হজম করে নিয়ে, হে হে করে হেসে শেকহ‍্যান্ড করে পুরোনো এম্পলয়ারের কাছে কোনও দিনও ফিরে যাবার কথা ভাবি নি। 
    কর্মক্ষেত্রে গেলেই তো বেশি বেশি করে বর্ণবৈষম্য এবং তার সুচারু প্রয়োগগুলোর সঙ্গে পরিচয় ঘটে।
    মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে ব‍্যাপারটা এইরকম, যে সমস্যাকে তুমি ইনভাইট না করলে সে তোমার কাছে আসবে না। কিংবা, তুমি হয়তো ওরকম ভাবছ, আসলে ব‍্যাপারটা সেরকম না।
    এর পাল্টা উত্তর দেওয়াই যায়। সমস‍্যাকে ইনভাইট করা জিনিসটা যে কী, তা আমি জানতাম না, এখনও জানি না, বা সম্ভবত আমার বুদ্ধি বিবেচনার বাইরের কোনও বিষয় । কিন্তু সেকেন্ড পয়েন্টটা নিয়ে আমার বেশ আপত্তি আছে। "তুমি হয়তো ওরকম ভাবছো" ব‍্যাপারটাও বেশ গোলমেলে। প্রায় কোয়ার্টার শতাব্দী পরে এই দুটো ধাঁধার মতো বাক‍্যবন্ধের উত্তর আমি পেয়েছি। শুধু তাইই নয়। রেসিজমের বিরুদ্ধে যে লড়াইটা আমার জারি ছিল নানান সময়ে, সেটা ফাইনালি জিতে গেলাম। নানান সময়ে আমি বাঘাবাঘা উকিলের পরামর্শ নিয়েছি, কিন্তু তারা পথ দেখাতে পারেনি। তাদের সকলেরই বক্তব্য ছিলো মোটামুটি একই ধাঁচের — আমরা জানি এগুলো হয়, কিন্তু আদালত মানবে না। যারা এগুলো করে, তারা অত‍্যন্ত সুচারুভাবে প্রমাণ না রেখে এগুলো করে। রেসিজম তো দূরের কথা কর্মক্ষেত্রে বুলিইং ও আপনি প্রমাণ করতে পারবেন না। বরং অন‍্য চাকরি খুঁজুন। কী সুন্দর সলিউশন না? 
    কোনও কেসই তাই নথিভুক্ত হয় না, আর নথিভুক্ত না হলে যা হয়, লাই ... ড‍্যাম লাই... হয়ে স্ট‍্যাটিসটিক্স বলে এদেশে এসব খারাপ জিনিসের সংখ্যা খু উ উ ব কম। 
    কিন্তু অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমার যেটা বাড়ছিল, সেটার নাম হচ্ছে সাহস।
    যে ঘটনার কথা লিখতে চলেছি, সেটা গেল মাসের একটা সাফল্যের খবর আমার। বলা যেতে পারে অ‍্যাচিভমেন্ট। এইটে করে উঠতে না পারলে নিজের ওপরই একটা ক্ষোভ থেকে যেত। তবুও চাকরি জীবনে যখন খুব বেশি সময় বাকি নেই হাতে, একটা খোয়লে নতুন চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য, সেই সময়েই আমি রিস্ক নিয়েছি এই লড়াইটা করবার। আবারও। তবে এবার আমি জিতে গেলাম। কীভাবে পারলাম সেসব তো লিখবোই। এসব লিখতে গেলে আরও বেশ কিছু ঘটনা ইত্যাদি আগে বলে নিতে হবে।
  • . | ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:২১744657
  • বাংলাদেশ স্টাইলের চেয়েও কয়েক কাঠি এগিয়ে ধুলিয়ানের অ‍্যাটাক স্টাইল। পুকুরের জল, খাবার জলের ট‍্যাংকে বিষ মেশানো হয়েছে। এমনিতে খুন বোমা গুলি লুঠতরাজ আগুন জ্বালানো তো করেইছে, তবে জলে বিষ মেশানোটা নতুন আইডিয়া। এগিয়ে বাংলা।
  • . | ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:২২744658
  • ভুল জায়গায় পোস্ট। এটা ভাটিয়ালিতে লিখতে চেয়েছিলাম।
  • . | ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০২:৪৯744661
  • মানুষ যে কোনওমতেই উদ্ভিদ নয়, এইটুকু, শুধু এইটুকুই মন থেকে উপড়ে ফেলতে ফেলতে অভিবাসীদের কম সে কম একটা প্রজন্ম কেটে যায়। অন্তত ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষদের তো বটেই। তারা শিকড় নামক একটি ধারণার বোঝা বহন করে চলে দীর্ঘ সময় ধরে, এই অদৃশ্য বোঝাটির ভার বেশ ভালোই। এই বোঝার মধ্যে রয়েছে তার জমিয়ে রাখা নানান ধ‍্যান ধারণা এবং অসংখ্য কনফিউশন। শুধু যে এই বোঝাটি বয়ে চলার দায় সে নিজের কাঁধে চাপিয়ে প্রবাসী জীবন ধারণ করে তাইই নয়, এই বোঝাটিকে নিজের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে বা কমিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের কাঁধেও তুলে দিতে চায়, রিলে রেসের দৌড়বাজের মতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরবর্তী প্রজন্ম রাজি হয় না এতে, আর যদিবা জোরাজুরিতে রাজি হয় ও বা, এই বোঝাটি তাদের কাঁধে কনফিউশনের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। 
    অথচ এই শুকনো শেকড় বাকড়ের বোঝাটুকু যে তাদের জীবনে কোনও বনৌষধির মতো নিরাময়ক ঔষধির মতো ব‍্যবহারে আসবে না, তা তারা হয়তো বুঝতেও পারে না।
    বুঝতে পারে না যে মানুষ উদ্ভিদ নয়। মানুষ উদ্ভিদ হয়ে জন্মালে সে রাস্তাঘাট তৈরি করতে যেত না, জলপথে বা আকাশপথে পাড়ি জমাতো না দূরের দেশে, বহু দূরের কোনও দেশে। সে বেড়াতে যেত না, অভিবাসী হয়ে ওঠাও তার ক্ষমতার বাইরে থাকত। অন‍্য পরিবেশে, অন‍্য আবহাওয়ার মধ্যে সে প্রবল শীতে বা অসহ‍্য গরমে, কিংবা ঝড়ে বৃষ্টিতে মরে গিয়ে নিঃশেষ হয়ে যেত।
    সে শিকড় বয়ে নিয়ে যেতে পারে না, যেটা বয় সেটা মরা শেকড় বাকড়, তবে সঙ্গে করে যেটা নিয়ে যায় সেটা তার মাতৃভাষা, কিছুটা খাদ‍্যাভ‍্যাস, কিছু স্মৃতি এবং ধর্ম, কিছু পরিমাণ মূল্যবোধ, যেগুলো ক্রমশই পরিবর্তিত হতে হতে ক্রমে ফিকে হয়ে হয়ে মিলিয়ে যাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। এবং কিছু কিছু সে ছড়িয়ে দেবে নতুন দেশ্র নতুন সমাজে, যতটুকু সে পারবে তার সাধ‍্য ও সদিচ্ছার জোরে। 
    কিন্তু শিকড় আমার সেথায় গেঁথে রয়েছে — এই মনোভাব নিয়ে চললে প্রথম প্রজন্ম কনফিউশনের ত্রিশঙ্কু হয়ে ঝুলতে থাকবে জীবনের শেষ মুহূর্ত অবধি। 
    এ আমার দেখা এবং অনুভবের থেকে তৈরি হওয়া উপলব্ধি। এর ঠিক ভুল বিচার বিশ্লেষণ নানান ভাবে হতেই পারে।
     
  • . | ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:২৬744663
  • এল ডোরাডোতে আসবার সময়ে আমার লাগেজ ছিল মেরেকেটে বারো কিলো, সুটকেসের ওজন সহ। বিশ কি বাইশ কেজি অ‍্যালাওড থাকত তখন ফ্লাইটে এক্সেস ব‍্যাগেজ চার্জ না দিলে। জিনিস আমার বরাবরই কম থাকে, ভারি মালপত্র সঙ্গে রাখলে ছুটোছুটি দৌড়োদৌড়িতে বাধা হয়ে ওঠে। দুসেট কাপড়জামা, অল্প কিছু দরকারি জিনিস, জরুরি কাগজপত্রের ভার, এইসবের বাইরে যা নেব সবটাই এক্সেস ব‍্যাগেজ হয়ে যাবে ছুটেছুটির জীবনে, পায়ে বেড়ির মতো ঠেকবে। এসবের ওপরে আবার শেকড় বাকড় বওয়া! আমি নেই, আমি নেই ওসব আতিশয্যে।
    অনেক দেখেছি। শেকড়ের টান বলে যেটা মনে করে করা হয়, সেটা আসলে স্থাবর সম্পত্তির ওপরে অসীম মায়া। এই মায়া যত বাড়বে, দূরের ভূমির স্থাবর সম্পত্তি তোমায় টেনে রাখবে শেকড়ের মতো। সম্পত্তির ওপর মায়া থাকা স্বাভাবিক মনোভাব। সেই টানের ফলে অভিবাসী নতুন দেশটাকে পুরোপুরি কাছের করতে পারে না। প্রবাসী হয়েই কেটে যায় অন্তত প্রথম প্রজন্মটুকু কতকটা অনিশ্চয়তায়, কতকটা অনির্ভরতায়, জানা অজানা আতঙ্কে তে বটেই, নাগরিকত্ব পরিবর্তনের পরেও অনিশ্চয়তা মনের ভেতর থেকে মুছে ফেলা দুষ্কর হয়ে ওঠে, কেবলই মনে হতে থাকে শিকড় টানছে আমায় পেছনের দিকে, অতীতের দিকে, স্থাবর যেটুকু পড়ে রয়েছে ঐ পুরোনো বাসভূমিতে, বা যা হয়তো নিজেই তৈরি করে রেখেছি একটু একটু করে, যদি কখনো ফিরে যেতে হয় সেই আশঙ্কায়। 
    মুখে এরকম বললে সুবিধে হয় নিজেকে বোঝানোর যে, আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের টান, বুড়ো বাপ মা বেঁচে থাকলে তাদের দেখে রাখার টানেই আমি দেশে শিকড় তৈরি করেছি, কিন্তু সত‍্যিই কি তাই? অত টান থাকলে বাস্তবিকই দেশ ছাড়বে না কেও। এ সবই নিজেকে ভুলিয়ে রাখার জন‍্য নিজের জন‍্যই ঘুমপাড়ানি গান গাওয়া। 
    তুমি তোমার গোটা সংসারটুকু সঙ্গে করে নিয়ে বিদেশে থাকতে চললে চিরতরে, অথচ মুখে বলবে যে তুমি উদ্ভিদ, তোমার শিকড় রয়ে গেছে সেইখানে যেখানে তুমি জন্মেছো বড়ো হয়েছো, এ তোমার দ্বিচারিতা, কোনও এক ছদ্ম অপরাধবোধ থেকে এই নিজেকে প্রবোধ দেবার চেষ্টা। এই ব‍্যাগেজ তোমার পরবর্তী প্রজন্ম কেন বইতে চাইবে?
    সকলে তো গোল্ডিজির মত গোটা সংসার মানে আক্ষরিক অর্থেই দারা পুত্র পরিবার এবং কন‍্যাকে দেশে রেখে একাই অন‍্যদেশে অনির্দিষ্টকালের জন‍্য যায় না। বিশেষ করে যে সমস্ত দেশ বিদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের পরবর্তীতে নাগরিকত্ব দেবার অপশন খোলা রাখে। 
    অবশ‍্যই ভালোভাবে খেয়ে পরে থাকার জন্য মানুষ মাইগ্রেট করে অন‍্য দেশে, এতে অন‍্যায়ের কিছুই নেই। কেউ সেটা অকপটে স্বীকার করতে পারে, কেউ লজ্জা পায়, অন‍্য কারণ দেখাতে চায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন