কথা হচ্ছে-- জাতীয় আন্দোলনে সামিল হতে কংগ্রেসের সদস্য হওয়া অনিবার্য নয়। ওনার নেতাজির ফরওয়ার্ড ব্লকও পছন্দ নয়।
শুধু শচীন সান্যালই নয়, নেতাজিও জুন ১৯৪০ এ সাভারকরের বাড়ি গিয়ে আলোচনা করেন যাতে ইংরেজের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড ফ্রন্ট তৈরি করে ওদের তাড়াতে আন্দোলন/সংগ্রাম করা যায় ।
তখন নেতাজি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে ফরওয়ার্ড ব্লক বানিয়ে ফেলেছেন। অনেক কংগ্রেস বিরোধীরা তাতে যোগ দিয়েছেন। তারপর কী হল?
নেতাজি জার্মানিতে বসে তাঁর বইয়ে ( Indian Struggle, page 34) লিখলেন--"Mr Savarkar seemed to be oblivious of the international military situation and was only thinking Hindus could secure military training by entering Britain's army in India".।
সাভারকরের আন্তর্জাতিক সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে কোন ধারণা নেই। উনি খালি হিন্দুদের ব্রিটিশ ফৌজে ঢুকিয়ে অস্ত্র শিক্ষা দেবার চিন্তায় মশগুল।
একই পাতায় নেতাজি লিখেছেন জিন্নার সঙ্গেও তাঁর ব্যর্থ আলোচনার কথা। জিন্নাও খালি মুসলমানদের আলাদা রাষ্ট্রের চিন্তায় মশগুল, ইংরেজের বিরুদ্ধে কোন সংযুক্ত আন্দোলনের ইচ্ছা নেই।
.অগাস্ট ১৯৪২শে নেতাজি জার্মানি থেকে কুইট ইন্ডিয়া সমর্থনের আপিল করে বললেন যে এই আন্দোলন দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে। দেশজুড়ে দেশপ্রেমের জোয়ার। এই সময় সবার যোগদান চাই।
. ----"I would request Mr. Jinnah, Mr. Savarkar and all those leaders who still think of a compromise with the British to realise once and for all that in the world of tomorrow there will be no British Empire. -----The supporters of British Imperialism will naturally become non-entities in a free-India. " (Testament of Subhas Bose, pp-21-24).
জিন্না এবং সাভারকরের মত ব্রিটিশের সঙ্গে সমঝোতাবাদীদের শেষবারের মত অনুরোধ করছি, বুঝে দেখুন--কালকের বিশ্বে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের চিহ্ন থাকবে না।
তখন নেতাজি কংগ্রেসের সংগে নেই।
সাভারকরের সমস্যা অন্য। উনি নেতাজির সংগেও যেতে পারেন না। কারণ পুণের পরশুরাম কলেজের সভায় মুখ্য অতিথির ভাষণে খোলাখুলি বললেনঃ
"Bose didi not differ very much from Mahatma Gandhi, except that he went further to woo the Muslims". ( Bombay Chronicle, 4 August, 1939)
আমার কথা, নেতাজি অসুখের অজুহাতে কোন রকমে ছাড়া পেয়ে একমাসের মধ্যে পালিয়ে জার্মানি গেলেন।
সান্যাল ভগত সিংদের রিক্রুট করে হিন্দুস্থান রিপাব্লিকান আর্মি গড়ে তুলে স্যান্ডার্স হত্যা এবং আরও বড় করে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ধরা পড়ে ফের কালাপানি গেলেন। একই কথা ত্রৈলোক্য মহারাজের সম্বন্ধে।
ওদিকে ১৮ই এপ্রিল ১৯৩০ শে চট্টগ্রামে সূর্য সেন এবং তাঁর সাথীরা আর্মারি এবং ট্রেজারি দখল করে ১৪ দিনের জন্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করে ইন্ডিয়ান রেভ্লুশনারি গভরন্মেন্টের পতাকা তুললেন।
তারপর জালালাবাদ পাহাড়ের সংঘর্ষে ৮০ জন ব্রিটিশ সৈনিক মারা গেল এবং প্রীতিলতা ও ১৪ জন বিপ্লবী শহীদ হলেন। মাস্টারদার ফাঁসি হল, অনেকের কালাপানি।
কিন্তু সাভারকর ভারতে এসে কোন সশস্ত্র সংগ্রাম করলেন? চুলোয় যাক কংগ্রেস।