ভারতবর্ষ কি অখণ্ড একটা অস্তিত্ব? টিভিতে যেমন দেখায়? এই নিয়ে আগেই কথা হচ্ছিল, কিছুতে ছবিতে গল্পও থাকুক।
পুং ও নারীর সংখ্যানুপাতঃ
লেখাপড়ায় লিঙ্গবৈষম্যঃ
সাক্ষরতাঃ
জন্মহারঃ
তফশিলি জাতির উপর অপরাধঃ
অস্পৃশ্যতার মাপজোকঃ
এ ছাড়া আরও অনুরূপ তথ্যাবলী আছে। আপাতত এই কটাই থাক। সবকটাতেই দেখবেন সমস্যাজনক এলাকা বলে চিহ্নিত একটিই এলাকা। গোবলয়। তা, পয়েন্ট একটাই। টিভি যখন দেখায়, 'ভারতে অস্পৃশ্যতার অভিশাপ' বা অনুরূপ কিছু, তখন, সেটি মূলত একটি এলাকার অভিশাপ। বাকি এলাকা সমস্যামুক্ত এমন না, কিন্তু অভিশাপটি একটি এলাকারই। টিভি এবং ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্র অবশ্য তেমন বলেনা। কারণ, এখন ইন্ডিয়া দ্যাট ইজ ভারত, দ্যাট ইজ হিন্দুস্তান। হিন্দি-হিন্দু-হিন্দিস্তান।
এবার ভারতবর্ষকে সমতল, সমসত্ত্ব -- এই থিয়োরি আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা আপনার ব্যাপার। গোবলয়ের সংস্কৃতি এখন ভারত রাষ্ট্র শাসন করে। সেটাই আপনার সংস্কৃতি, না, গোবলয়কে তার সমস্যা নিজেকে সামলাতে হবে বলবেন, হিন্দুস্তানই ভারতবর্ষ নয়, বলবেন, সেও আপনার ব্যাপার।
লিংক দিতে ভুলে গেছি,
India and the Indian: Western theories of nationhood don't capture country's complex realities, writes Samrat
https://www.firstpost.com/india/the-idea-of-the-indian-western-theories-of-nationhood-do-not-capture-indias-complex-realities-6794521.html
এই ভারতবর্ষ সত্যি চিনিনা। চিনিনা বলতে স্বচক্ষে দেখিনি। অনুরাগ কাশ্যপদের সিনেমায় দেখেছি অবশ্য।
সত্যি সত্যি সামনে এসে বলবে, রাজনৈতিক মস্তানি, তাও আমাদের আশেপাশে হতে পারে তা ভাবতে পারি, কিন্তু জাতপাত নিয়ে এরকম?
এটা আবার একজন হাইপ্রোফাইল নেতাকে বলা। চিফ। ভীম আর্মি। অন ক্যামেরা বলা।
অফ ক্যামেরা, কোনরকম ক্ষমতাহীন মানুষের উপর কী চলতে পারে, কল্পনা করতেও অসুবিধে হচ্ছে, কারণ এই ভারতবর্ষ চোখে দেখিনি। নিজের শহর, রাজ্যের বাইরে যাইনি, গ্রামেগঞ্জে ঘুরিনি, এমনও নয়। তাও দেখিনি, আমার দেখার চৌহদ্দির মধ্যে ভারতবর্ষে।
বাংলায় বিজেপি এলেও দেখতে পারি। এরকম মানসিকতা কোথাও লোকজনের মধ্যে লুকিয়ে নেই তা আর কীকরে বলি। কিন্ত এগুলো এখনো অনেকেই অন্তয় সামাজিক নর্ম অনুযায়ীই খারাপ মনে করে। এখনো। আর সমস্যা হল, কিছু জায়গায় সেটাই সামাজিক নর্ম।
তবে, এসব অঞ্চল থেকেই আবার এত খোলা মনের, দারুণ ভাবনাচিন্তা করা প্রগতিশীল মানুষজন দেখেছি, ভাবি তারা নেহাতই ব্যতিক্রম, সংখ্যালঘু কি সত্যিই? আর ওই পরিবেশ থেকে ব্যতিক্রম হতে গেলে কি অনেক বেশি চাপ নিতে হয়? নাকি অপ্রেসডদের মধ্যে কিছুটা স্বাভাবিকভাবেই আসে?
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=195082128662570&id=101924361311681
সন্জয় রাজৌরা জাঠ। কিন্তু ওরকম মুক্ত চিন্তাভাবনার লোকজন তো এখন পশ্চিমবঙ্গেও দেখিনা।
অন্য টইয়ে এই নিয়েই লিখেছিলাম ,সব উড়ে গেল !
এ তো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার, সর্বত্রই কিছু অন্য চিন্তার লোক থাকবেন। জনসমষ্টির চেতনার তো একটা বন্টন আছে। সবাই একরকম হবে কেন। সৌদি আরবেও যখন কিছু মুক্তচিন্তার লোক পাওয়া যায়, গোবলয়ে যাবেনা কেন? কিন্তু সেটা যেমন ঠিক, তেমনই এটাও ঠিক, যে, এতে করে বৃহত্তর জনসমষ্টির চেতনার স্তর পাল্টে যায়না।
বৃহত্তর জনসমষ্টির চেতনার স্তরটা কি এমনিই আমরা জানি। এই যেমন পশ্চিমবঙ্গের এক আধটা প্রত্যন্ত এলাকা বাদে, অস্পৃশ্যতা বস্তুত নেই। ছবিতেও দেখুন, চিত্রটা যা দেওয়া আছে, তা হল ৫% এর কম। পাঁচ নয়, তার নিচে। ও আমরা এমনিই জানি, এক-াধটা বাড়িতে পুরোনো ঠামুমা-দিদিমারা কেউ কেউ ছোঁয়াছুঁয়ি অভ্যাস করেন, তা ছাড়া ব্যাপারটা নেই। গোবলয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখুন সংখ্যাটা ৫০% এর উপরে। ৫০ নয়, তার উপরে। এই বিপুল পার্থক্যকে তো চোখ ঠেরে এড়িয়ে গিয়ে লাভ নেই।
এইটা খুবই জানা খবর। নতুন কিছু না। এই জন্যই গোবলয়কে গোবলয় বলা হয়। ক্যাটল ক্লাসের সঙ্গে তার ন্যূনতম যোগাযোগও নেই। তার পরেও তো গোবলয়েও কিছু মুক্তমনা লোকজন থাকবেনই। আছেনও। পয়েন্টটা হল, তাঁদের লড়াই তাঁদেরই লড়তে হবে। আমরা সমর্থন দিতে পারি, কিন্তু একটা আঞ্চলিক সমস্যাকে ওন করে নিতে পারি না।
ভারতীয় মিডিয়াজগৎ এবং রাজনীতিতে এই বোঝাপড়াটা, বা স্বীকৃতিটাই দেওয়া হয়না, যে, সমস্যাগুলো আঞ্চলিক। দিল্লির মুক্তমনা বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে একটা ব্যাপার কখনও দেখিনি। এমন একটা হাবভাব, যেন এটা সবার সমস্যা, সবাইকেই সমাধান করতে হবে। গোবলয়ই ভারত, দ্যাট ইজ ইন্ডিয়া। আসলে তো তা নয়, একক যেমন বলেছে, প্রত্যেকেরই আলাদা সমস্যা আছে। অস্পৃশ্যতাটা পশ্চিমবঙ্গে নেই, কী করা যাবে। জাত-পাতের অন্য ফর্ম আছে, সে নিয়ে কথ বলাই যেতে পারে। কিন্তু দিল্লির মিডিয়া বলছে, আর আপনি অস্পৃশ্যতা দুরীকরণ আন্দোলনে নেমে পড়লেন, এ খুবই হাস্যকর। ওতে করে উত্তরপ্রদেশের অস্পৃশ্যতা এক কড়িও কমবেনা। সমস্যা সমাধানের প্রথম উপায় হল, সমস্যাকে চিহ্নিত করা এবং অ্যাকাউন্টেবল কে, সেটা দেখা। এই তথাকথিত প্যান-ইন্ডিয়া দৃষ্টিভঙ্গী সেটাই করতে দেয়না।
যে লেখা থেকে এই ম্যাপটা - তার লিংক