বিনেশ ফোগতের ওজন ১০০ গ্রাম বেশি। তাঁকে তাই এই অলিম্পিক থেকে বাতিল করা হল। তিনি কোনো পদকই পাবেন না। এই খবরটা কমবেশি সবাই জানেন এখন। এবং, এই ঘটনাটা স্বাভাবিক নয়। এটা ষ-ড়-যন্ত্র।
অলিম্পিকে কোনো প্রতিযোগীর সরকারিভাবে ওজন পরীক্ষার আগে ইনহাউজ ওজন পরীক্ষা হয়। টিমের ডাক্তার, কোচ, ডায়েটিশিয়ান ও অন্যান্যরা তার মানে আগেই জেনে গেছিলেন, বিনেশ ওভার-ওয়েট। তাহলে তাঁরা স্ট্র্যাটেজিকভাবে বিনেশের নাম প্রত্যাহার করলেন না কেন? অসুস্থতার অজুহাতে বিনেশ নাম তুলে নিতে পারতেন। তাহলে রুপো অন্তত নিশ্চিত হত।
নাকি, ইনহাউজ ওজন পরীক্ষায় বিনেশের ওজন বেশি দেখায়নি! সেক্ষেত্রে, হয় ওজন পরীক্ষার যন্ত্র খারাপ। এবং, ওজন পরীক্ষা তো আজই প্রথম হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে অন্যান্য ক্ষেত্রেও অলিম্পিক বোর্ডের সঙ্গে ভারতীয় দলের ইনহাউজ ওজন ট্যালি মেলেনি। সেক্ষেত্রে মেশিন বদলানো হল না কেন?
নাহলে বলতে হয়, অলিম্পিক বোর্ডের তরফে ভুল বা অন্যায় কিছু ঘটেছে। সেক্ষেত্রে, মেনে নেওয়া হল কেন এই সিদ্ধান্ত? ভারত তো তাঁদের সমস্ত প্রতিযোগীদের প্রত্যাহার করে নিতে পারত। এমন ঘটনা বরদাস্ত করা যায় নাকি!
যদি না, সবটাই সাজানো চিত্রনাট্য হয়। অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় কোনো প্রতিযোগীর ওজন রাতারাতি বাড়ে না। ফাইনালের আগে তো নয়ই। এটা ঘটানো হল। বিনেশকে ঘিরে আমাদের সকলের প্রতিবাদ বহুগুণ বাড়ানো উচিত।
শুনলাম, সংসদে বিরোধীরা এতে সরকারের হাত দেখছেন। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী তড়িঘড়ি একটা ট্যুইট করে বিনেশকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন। তাতে বৃহত্তর পর্যায়ে প্রতিবাদ বা আইনি লড়াইয়ের কোনো ইঙ্গিত নেই। যেন, তিনি নিশ্চিত এটা স্বাভাবিকভাবেই ঘটেছে। সবটা একসুতোয় জুড়ে দেখলে অন্তর্ঘাতের ছবিটা স্পষ্ট হবে আরো।
এই অলিম্পিকে ভারতের এক বক্সারকে হারানো হয়েছে অন্যায়ভাবে। এক কুস্তিগির নিশ্চিত জয়ের মুখ থেকে ছিটকে গেছেন আঙুল মটকে ভেঙে যাওয়ায়। সেই 'দুর্ঘটনা'-ও সন্দেহের বাইরে নয়। কিন্তু বিনেশের ঘটনার অভিঘাত সবচাইতে বেশি। খেলায় স্বপ্নভঙ্গ থাকে। কিন্তু, এমন অন্তর্ঘাতের মতো ঘটনা খেলার পরিধি ছাপিয়ে যায়।
কে না জানে, বিনেশ ফোগত এই দেশের আর পাঁচটা সাধারণ খেলোয়াড়ের মতো নন। এই অতিরিক্ত পরিচয়টা তিনি নিজেই তৈরি করেছেন।
ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত।