কালনিমে, আপনার কথা বুঝেছি। তবে আপনার দুটো পোস্টের প্রেক্ষিতে আমার বেশ কয়েকটা কথা বলার আছে। ছোট করে বলার চেষ্টা করি।
প্রথমত মূল বক্তব্যটা ভারত রাষ্ট্রের দিক থেকে বলা। তিনটে দেশ, অনেক সীমান্ত, বাড়তি সমস্যা, খরচ – যেটা ডট বললেন এবং অন্য দেশকে কাঠি করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। ইত্যাদি। বাংলা বাঙালীর দিক থেকে বলিনি।
দুই হচ্ছে, বাংলা বাঙালীর দিক থেকেও, র২হ তো বললেনই, সমস্যার কিছু সমাধান হয়েছে কি, উল্টে আমাদের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অনেক ক্ষতি হয়েছে, সবাই জানে বিস্তারিত দরকার নেই।
আর ভাগটাও তো ঘটি বাঙাল লাইনে হয়নি, এপারে ওপারের মানুষ এসে একটা নতুন জনমিশ্রণ তৈরি হল, এতে একটা নড়চড় তৈরি হয়, হবেই। নতুন লোকেরা তাদের মতো জায়গা পরিবেশ তৈরি করবে, পুরোনোদের তার সঙ্গে মানাতে হবে। বেশ এক দুটো জেনারেশন চলে যায় স্থিতিশীলতা আসতে। এটা মানসিকতা সংস্কৃতির বিরাট পার্থক্য না থাকলেও হবে। হঠাৎ জোর করে হাওড়ার অর্ধেক লোক হুগলি আর হুগলির অর্ধেক হাওড়ায় করে এদিক ওদিক করে দিলেও একটা সাময়িক অসুবিধে তৈরি হবে।
তিন হল কলকাত্তাইয়া বাবু নিয়ে। এটা খুব সুপারফিসিয়াল একটা বস্তু, বা একটা আর্থ সামাজিক অংশ। কিন্তু কলকাতা বাসী বলে কি কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী হয়? কলকাতার ও যেকোনো বড় শহরের জনগোষ্ঠী তো একটা ever changing demography, আজকের কলকাতার (টালা থেকে টালিগঞ্জ, হুগলি-টালির নালার ও শিয়ালদা লাইনের মধ্যের অংশই ধরুণ, অর্থাৎ কোট আনকোট প্রপার ক্যালকাটা, বেহালা বাদ) পঞ্চাশ শতাংশ হয়তো দশ বছর আগে কোনো একটা জেলা বাসী ছিল, আর আজকের অনেক জেলা বাসী আগামীর কলকাতা বাসী। পঞ্চাশ বছর আগে যারা কলকাতায় বাবু ছিল তারা ও তাদের ছেলে মেয়েরা আজ লন্ডনের বা শিকাগোর বাসিন্দা, পঁচিশ বছর আগে যারা কলকাতায় বাবু ছিলেন তারা অনেকে আজ দক্ষিণে নগরশ্রেষ্ঠ লুরু শহরেতে শিফট হয়ে ওখানে প্লাম্বিং বা ডিস ওয়াশিং এর কাজ করেন।
তো উপেক্ষা করার ব্যাপারটা যেমন কলকাতা বাংলার বাকিদের করে তেমনি ঢাকা বাকি বাংলাদেশকে করে দিল্লি বাকি ভারতকে করে আর নিউ ইয়র্ক বাকি বিশ্বকে করে। আবার তেমনই জেলার সদর বাকি জেলাকে করে, গঞ্জের লোকেরা প্রত্যন্ত গ্রামের লোকেদের করে। একেবারেই ubiquitous একটা ব্যাপার, কলকাতার বিশেষত্ব কিছু তো নয়।