ভাটে অনেকদিন পর আবার এই নামে লগিন করলাম, অনেক কিছু ঘটছে চারপাশে,পিএইচডি অ্যাকাডেমিয় ওয়ার্লড আর শাশুড়ি আর মমতা ব্যানার্জির ছড়িয়ে লাট করা-এই তিনটেই এখন একদম লেটেস্ট হট টপিক বোধহয়,কিন্ত একটু রসভঙ্গ করে যাই,একটা পরামর্শ চাওয়ার ছিল।
তো আমি ইনস্টায় ইয়েস উই এক্সিস্ট ,দ্য গেসি ফ্যামিলি এসব কমিউনিটি পেজ গুলির প্রোফাইল ফলো করি,তো সেখানে একটি পোস্টের কমেন্টের থ্রেড থেকে একটি ইনস্টা চ্যাট রুমে অ্যাড হয়েছি ,টিনেজার ইয়ং অ্যাডাল্ট রেনবো ফোক দের জন্য-সে এক্কেরে চাঁদের হাট,৭২ রকম জেন্ডারের সাড়ে চুয়াত্তর জন না থাকলেও মোটামুটি সারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন নন-বাইনারি আমব্রেলার মানুষরা আছেন সেখানে, আমি বাংলা থেকে ক্যুইর গে ফেমবয় ,বা কাশ্মীর থেকে ট্রান্সওম্যান ,আসাম থেকে ট্রান্সম্যান বা এলাহাবাদ ,রাজস্থান,হরিয়ানা থেকে বিভিন্ন সেক্সুয়ালিটির ক্যুইর পার্সনরা এমনকি একজন স্ট্রেট অ্যালি মেয়েও (মোল ও হতে পারে ,আমার ভরসা নেই বাপু ,এমন দশা হয়েছে এখন cis-het(hate) কোন মানুষকে এখন চট করে বিশ্বাস হয় না,তারা অ্যালি বলে পরিচয় দিলেও মাঝে মাঝে ইন্টারনালাইজড হোমোফোবিয়া ঠিকই বেরিয়ে আসে ,তাই সবসময়ই সন্দেহ আর অবিশ্বাস হয়,আর হোমোফোব দের তো কথাই আলাদা-এ নিয়ে একটা পর্ব পরে লিখব আলাদা করে....আর বাই দ্য রাস্তা ,এখানে যাঁরা যাঁরা মেল করেছিলেন অ্যালি হিসাবে সাপোর্ট দিতে ,তাঁদের অনেক ধন্যবাদ,আরো পরামর্শ ,আলোচনার অপেক্ষায় রইব,তবে একটা জিনিস অবাক লাগল, বাঙালি টিনেজার ,ইয়ং জেনারেশনের তেমন কেউ কি গুরু পড়ে না বা আমার লেখাটা তাদের চোখে পড়েনি সম্ভবত,কারণ সেরকম কোন বাঙালি ক্যুইর সমবয়সী কারোর সাথে কনট্যাক্ট হলে খুব ভালো লাগত এই লেখার সূত্রে...কে জানে :( )...যাই হোক মোটামুটি lgbtqia+ এই কম্যুনিটির মোটামুটি আমব্রেলা টার্ম গুলির আন্ডার যাঁরা আসেন ,তাঁদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন প্রতিনিধি আছেন এই চ্যাট রুমে ,খালি কোন অ্যারো-অ্যাস পার্সন এখনো আসেননি,otherwise we here got the whole lot lmao :))))<333.....
সে যাই হোক ,এখানে মোটামুটি সবাই কমবেশি ক্লোসেটেড,এখানে রীতিমতো তুমুল আড্ডা চলে ,দুঃখ -হাসি ,"অসভ্য" সব কথা ,ছবি শেয়ার,স্ক্রিনশট,স্লাটি জোকস,মেকাপ,হোমোফোবিয়া ,পড়াশোনা সব বিষয়েই কথা চলে,অল্পদিনেই বেশ একটা বন্ডিং গড়ে উঠেছে - তবে টিকলে হয় শেষমেষ :(
সে যাই হোক ,বিস্তর গৌরচন্দ্রিকা হল,আসল কথায় আসি,এই গ্রুপে একটি ১৮ বছর বয়সী ছেলে আছে রাজস্থান থেকে ,সে হল "টপ"
সমপ্রেমী ,কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ুয়া, কিন্ত তার পরিবার তাকে একটি ১৭ বছর বয়সী মেয়ের সাথে এনগেজমেন্ট করাতে চাইছে ,১৪ বছর বয়স থেকেই নাকি রোকা-শাদির কথাবার্তা চলছে,ছেলেটি (ভাইটি :]; আমার ১৯ বছর বয়স ,১ বছরের বড়ো দিদি হই ,সো নট ইন্টারেস্টেড
)অনেক ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে রেখে এখন আর পরিবারকে সামলাতে পারছে না,অথচ যে মেয়ের সাথে বিয়ের কথা চলছে ,তার সাথে যে একবার যোগাযোগ করে কথা বলবে সে সুযোগ ও নেই,কারণ দুই পরিবার ও সমাজ বেশ রক্ষণশীল,আর ছেলেটির বাবার বেশ বড়ো কোম্পানি বা ব্যবসা আছে বোধহয়,বেশ প্রভাবশালী ,তিনি নাকি লকডাউনের সময় মোদিদাদুর সাথে ভিডিয়ো মিটিং করেছেন আর সেই অনুপাতে হিটলার ,ছেলে কামিং আউট তো দূরের কথা, তাঁর পছন্দমতো মেয়েকে তাঁর ঠিক করা সময়ে বিয়ে করতে চাইছে না শুনলেই ছেলেকে মেরে ফেলতে পারে।:(((
তো আমাদের কাছে পরামর্শ চাওয়ায় আমি পরামর্শ দিই পুলিশের কাছে যাবার বা কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে যাওয়ার ,কারণ এখানে দুজনেই অপ্রাপ্তবয়স্ক ,কিন্ত পুলিশ প্রশাসন মোটামুটিভাবে ছেলেটার পরিবারের ট্যাঁকে,আবার পরিবারের রেপুটেশন আহত হলেও তার কোপ পড়বে ছেলেটার উপর ,তাই সে রাজি হচ্ছে না ,তার খালি মতলব সে এনগেজমেন্টের সময় পালিয়ে যাবে ,কিন্ত তাতেও তো বিপদ বেশি বৈ কম নয় ,উপরন্ত মেয়েটাও সংস্কারি রাজস্থানি সমাজে " দো-পড়া" হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যেতে পারে ,তাতে মেয়েটাও বদনামের ভাগী হবে।তাছাড়া এটা তো কোন পার্মানেন্ট বা অন্তত লংটার্ম সলিউশন ও নয়।আমি আরো বললাম ছেলেটাকে যে দেখ ভাই ,তেমন হলে তুই বাবাকে আর পরিবারের বাকি সবাইকে মিথ্যে করে বল যে তুই এখনই সংসার করার কথা ভাবতে চাস না ,তোর বড়ো স্বপ্ন আছে সিভিল সার্ভিস করার বা ভালো শহরে গিয়ে বড়ো চাকরি করে শিক্ষিত ,রুচিশীল,আধুনিক ,সুন্দরী শহুরে ,কর্মরতা মেয়েকে বিয়ে করার-এসব ভুজুংভাজুং গ্যাস দিয়ে আটকা বিয়েটা ,একবার বিয়ে হলে বৃহৎ কেলেঙ্কারি হতে পারে আর জীবনটা "বাধাই দো" সিনেমাও নয় যে লেসবিয়ান কোনো মেয়েকে খুঁজে বন্ধু বানিয়ে ল্যাভেন্ডার ম্যারেজ করা সম্ভব হবে ,বিশেষত এই অল্প সময়ের মধ্যে কোন ওরকম মেয়েকে খুঁজে পাওয়া সম্ভবও নয় ওর পক্ষে রাজস্থানের আধা-শহরাঞ্চলে ,আর বিয়ে যখন সামনের মাসেই ছ তারিখে--সব মিলিয়ে বিশাল ঘোঁট পাকিয়ে আছে।
আমি শেষ পর্যন্ত একটা খুব মরালি ডিগ্রেডিং পরামর্শ দিলাম ,লাস্ট স্ট্র হিসেবে , সেটা হল -ওরই কোন বন্ধুকে দিয়ে মেয়েটার চরিত্র সম্বন্ধে একটা কুৎসা চিঠি লিখে ছেলেটার নিজের বাড়িতে আর মেয়েটার বাড়িতে পাঠাতে,যাকে সাদা বাংলায় বলে ভাঙচি দেওয়া বিয়েতে ,তাহলে যেরকম কনজার্ভেটিভ পরিবার বলে মনে হল সব কথা শুনে ,বিয়েটা ভেঙে গেলেও যেতে পারে।কিন্ত এই সাজেশনটা দিয়ে আমার নিজেরই খুব খারাপ লাগছে ,নিজে একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের নামে কুচ্ছো তুলে চরিত্র হনন বা তার পরিবারের নামে কালি লাগিয়ে বিয়ে ভাঙার পরামর্শ দিতে কারোরই ভালো লাগবে না,কিন্ত এক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুবই জটিল ,এটাই হয়তো শেষ উপায় ,নইলে এ বিয়ে হলে ছেলেটার জীবনও নষ্ট ,মেয়েটার ও ,ও পরিবার সমাজে জানাজানি হলে ছেলেটার প্রাণসংশয় হতে পারে উপরন্ত এটা বাল্যবিবাহ ও বটে।
কেউ অন্য কোন সুপরামর্শ দিতে পারেন কি? খুব উপকার হয় তাহলে।
পুনশ্চ:-looking through the rainbow glass এর পরের পর্ব এই ইস্টার উইকের ছুটিতেই দিয়ে দেবার চেষ্টা করব ,এই কলেজে যাওয়া-আসা,ইন্টারনাল সব মিলিয়ে বড়ো ব্যস্ত ছিলাম,সেই যবে কলেজ খুলেছে-প্রায় দু হপ্তা ধরে বড়ো ধকল যাচ্ছে :(...সেই মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ছুটি ছিল ,লেখা শুরু করেছিলাম আর শেষ করতে পারছি না,গদ্য লিখতে বসলেই এত কথা একসাথে মাথায় আসে যে সব ভাবনা চিন্তা একসাথে ঠেলাঠেলি করে জট পাকিয়ে বেরোতে চায় ,আর প্রোক্র্যাস্টিনেট করতে থাকি,ভাবনার জট ছাড়িয়ে আগে পরে ঠিকঠাক করে লিখতে প্রবল আলিস্যি লাগে ,এইজন্য গদ্য বেশি লিখিও না,কবিতা লেখা ঢের বেশি সোজা কাজ ,যাই বলো ।যাহোক ,আশা করছি ,নববর্ষে নতুন একটা দুটো পর্ব লেখা দিতে পারব।